ওটিটি প্লাটফর্ম ‘চরকি’-তে মুক্তি পেতে যাচ্ছে আর বি প্রীতম পরিচালিত ৪ পর্বের মিনি সিরিজ ‘সুগার ফ্রি’। বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) রাত ৮টা থেকে এটি দেখতে পারবে বিশ্বের সকল দর্শক।
সুগার ফ্রি সিরিজটির গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন আদনান মুকিত। সিরিজটিতে অভিনয় করেছেন সাবিলা নূর, তামিম মৃধা ও মোস্তাফিজ নূর ইমরান, মনির খান শিমুলসহ প্রমূখ।
বিজ্ঞাপন
লিটন ও নান্নু দুই ব্যর্থ ছিনতাইকারীর স্বপ্ন একদিন দেশের কুখ্যাত সন্ত্রাসী হবেন তারা। কিন্তু দুজনই ভীষণ মানবিক। তাই ছিনতাই করতে গিয়ে নানা সময় অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির শিকার হতে হয় তাদের। এমন ঘটনা নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘সুগার ফ্রি’ সিরিজটি।
সিরিজটি নিয়ে নির্মাতা প্রীতম বলেছেন, “সুগার ফ্রি গল্পের চরিত্রগুলো আমার মতো কথা বলে না। মনে হয় আমি দিন দিন ডার্ক গল্পের দিকে যাচ্ছি। ‘সুগার ফ্রি গল্পটা তার বিপরীত দিকে যাচ্ছে। তাই এই কাজটির মধ্য দিয়ে আমি নিজেকে একটু নিশ্বাস নেয়ার সুযোগ দিলাম। এটা পুরোপুরি ফিল্ম, ফান, ফুর্তিতে ভরপুর একটি সিরিজ।”
বিজ্ঞাপন
চরকির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ১৪ নভেম্বর কমেডি ঘরানার এই সিরিজের পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে। চরকি জানায়, প্রথমবারের মতো নতুন কনটেন্ট হিসেবে এ সিরিজটি দেখা যাবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। কোনো সাবস্ক্রিপশন ফি প্রয়োজন হবে না এটি দেখতে।
‘পুষ্পা টু’র প্রিমিয়ারে নারী ভক্তের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে। সেই আবহ না কাটতেই আরও এক বিপদের মুখে দক্ষিণী সুপারস্টার আল্লু অর্জুন। ‘পুষ্পা টু’ ছবিতে আল্লু অভিনীত চরিত্র ‘পুষ্পা’র সুইমিং পুলে প্রস্রাব করার একটি দৃশ্য রয়েছে। আর সেখানে পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করা এক অভিনেতাকেও ওই দৃশ্যে সুইমিং পুলে দেখা গেছে। আর সেই দৃশ্যই আল্লুর জন্য এবার বিপদ ডেকে আনল।
‘পুষ্পা টু’ ছবির একটি দৃশ্য নিয়েই এবার নায়কের বিরুদ্ধে মামলা করলেন কংগ্রেস নেতা তথা তেলঙ্গানা বিধান পরিষদের সদস্য টি মাল্লানা। শুধু আল্লুই নয়, ছবির পরিচালক সুকুমারের বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন তিনি।
আল্লুর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা সেই কংগ্রেস নেতা ছবির ওই দৃশ্যটিকে ‘অবমাননাকর’ বলে দাবি করেন। তার দাবি, যেভাবে ওই দৃশ্যটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পর্দায়, তাতে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা পুলিশ অফিসারের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে। আল্লু এবং ছবির পরিচালক, দুজনের বিরুদ্ধেই কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও জানান তিনি।
এদিকে ‘পুষ্পা টু’ ছবিটি ঘিরে শুরু থেকেই বিতর্ক। হায়দরাবাদের থিয়েটারে ছবির প্রদর্শনীতে হাজির হন আল্লু। সেখানে অভিনেতাকে দেখতে ৩৫ বছর বয়সি এক নারী পদপিষ্ট হয়ে মারা যান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে এক শিশু। সেই ঘটনায় গ্রেপ্তারও হন আল্লু।
শোবিজের নবীন মুখ নাসরিন অনু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে এখন তিনি টিভি নাটকে অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত! সমসাময়িক বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন মাসিদ রণ
কি নিয়ে ব্যস্ততা যাচ্ছে আপনার?
আমি এই মুহূর্তে পূবাইলে অবস্থান করছি। সবাই জানেন, এই এলাকাটি গ্রামীন পটভূমির নাটকের শুটিংয়ের জন্য প্রসিদ্ধ। আমিও এখানে তেমনি একটি নাটকের শুটিং করছি। এটি চ্যানেল আইয়ের জন্য নির্মিত একটি ধারাবাহিক নাটক, নাম ‘ফুলকুমার’। পরিচালনা করছেন জনপ্রিয় নির্মাতা সালাহউদ্দিন লাভলু। এখানে আমি কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে অভিনয় করছি। চরিত্রের নাম পুষ্প। সহশিল্পী হিসেবে পেয়েছি আমার নাট্যকলা বিভাগেরই দু’জন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক রহমত আলী-ওয়াহিদা মল্লিক জলি দম্পতিকে। এছাড়াও রয়েছেন রওনক হাসান, আখম হাসান, তুষার খান, আরফান আহমেদ, নমিরার মতো গুণী অভিনয়শিল্পী।
এটাই কি আপনার অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক নাটক?
না, ‘ফুলকুমার’ ধারাবাহিকে আমি প্রচলিত ভাষায় নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করছি প্রথমবার। তবে এর আগেও আমি ধারাবাহিক নাটক করেছি। সেটি প্রচারিত হয়েছিলো এনটিভিতে। হাসান রেজাউল পরিচালিত সেই ধারাবাহিকের নাম ছিলো ‘মা বাবা ভাই বোন’। তবে নাটকটি আমি বেশিদিন কন্টিনিউ করতে পারিনি পড়াশুনার জন্য। এখন যেহেতু মাস্টার্স শেষ, তাই অভিনয়ে বেশি সময় দিতে পারবো।
ধারাবাহিক নাটকের মতো বড় প্রজেক্টে কেন্দ্রীয় চরিত্রে কাজের সুযোগটা পেলেন কিভাবে?
এ ক্ষেত্রে নিজেকে ভাগ্যবান বলবো। কারণ, আমার খুব একটা কাঠ-খড় পোড়াতে হয়নি। এমনকি আমাকে অডিশনও নেননি নির্মাতা সালাহউদ্দিন লাভলু। তিনি আমার সম্পর্কে জেনেছিলেন আমার ডিপার্টমেন্টের (নাট্যকলা) একজন শিক্ষকের কাছ থেকে। স্যার হয়তো বলেছেন, অনু ভালো অভিনেত্রী। স্যারের কথার ওপর ভরসা করেই মি. লাভলু আমাকে কাস্ট করেছেন। আমাদের এরইমধ্যে ২০ পর্বের বেশি শুটিং শেষ হয়েছে। এখন চতুর্থ লটের শুটিং চলছে। তাতে আশা করতে পারি, আমার অভিনয়ে নির্মাতা তুষ্ট। তা না হলে তো এতো লম্বা সময় ধরে আমার চরিত্রটি এগিয়ে যেতো না। নতুন বছরেই চ্যানেল আইয়ের পর্দায় ধারাবাহিকটি দেখতে পারবেন দর্শক। আশা করি সবার ভালো লাগবে নাটকটি।
শোবিজের জার্নিটা কবে থেকে শুরু হলো?
আমি তো ছোটবেলা থেকেই সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। আমি বিভিন্ন বছরে শিক্ষা সপ্তাহে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কৃত হয়েছি। সেই সুবাদেই ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার পর চ্যানেল আই-এরই ‘নামতা’ নামের একটি নাটকে অভিনয়ের সুযোগ পাই ২০১৬ সালে। এরপর সৌভাগ্যক্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পছন্দের সাবজেক্ট নাট্যকলাতে চান্স পাওয়া। আমি তখন আর শোবিজের কথা খুব একটা ভাবিইনি। পড়াশুনাটা মন দিয়ে করতে চেয়েছি। তাই রেজাল্টও ভালো হয়েছে। অনার্সে ফার্স্ট ক্লাস সেকেন্ড হই, তবে মাস্টার্সে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হওয়ার গৌরব অর্জন করি। এরমধ্যে দু-একটা টিভি নাটকে কাজ করেছি। সেগুলো কেন্দ্রীয় চরিত্র না। অল্প সময়ের শুটিং ছিলো বলেই করতে পেরেছি পড়াশুনার পাশাপাশি।
নাট্যকলার পড়াশুনার পাশাপাশি কোন থিয়েটার দলের সঙ্গে কি যুক্ত হয়েছেন?
আমি আগেও বলেছি যে, পড়াশুনাটাই ছিলো আমার একমাত্র ধ্যান-জ্ঞান। কারণ আমি বরাবরই চেয়েছি অভিনয় নিয়েই থাকতো। কিন্তু বলতে কষ্ট হয় যে, এখনো আমাদের সমাজে অভিনয়পেশাকে ভালোভাবে নেয় না। তাই আমি পড়াশুনাটা এতোটাই মন দিয়ে করতে চেয়েছি যাতে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারে। আগামীতে পিএইচডি করার পরিকল্পনাও রয়েছে। তবে শিক্ষকতা করলেও আমি অভিনয়টা চালিয়ে যেতে চাই। সেটা মঞ্চ কিংবা ক্যামেরা- যে কোন মাধ্যমেই হতে পারে।
এ পর্যন্ত করা কাজের মধ্যে নিজের প্রিয় কোনটি?
আমি তো খুব বেশি কাজ করিনি টিভিতে। তবে মঞ্চে যে অভিনয়গুলো করেছি সেগুলোতে অনেক বেশি আত্মতৃপ্তি পেয়েছি। যেমন, অনার্সের প্রজেক্ট হিসেবে আমরা করেছিলাম ‘রস পূরাণ’ নামের একটি নাটক। সেখানে আমি রাধা’র চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। আর মাস্টার্সে ‘বিসর্জন’-এর অপর্না চরিত্রে অভিনয় করি। যাত্রা ঢংয়ের সেই নাটকটিও আমার প্রিয়। এছাড়া আমাদের শিক্ষক ইস্রাফিল শাহিনের নির্দেশনার ‘সিদ্ধান্ত’ নামের একটি মঞ্চ নাটক করেছিলাম। সেটি নিয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আমরা গিয়েছিলাম, সেই অভিজ্ঞতাও দারুণ। আগামীতেও মঞ্চে দারুণ কিছু চরিত্রে অভিনয় করতে চাই।
আপনার ‘নাট্যকলার পড়াশুনা’ আর শোবিজে যে ধাচের কাজ করছেন, দুটি দুই মেরুর। কতোটা উপভোগ করছেন?
প্রথমত, আমি সব ধরনের গল্পেই কাজ করে নিজের দক্ষতাকে যাচাই করতে চাই। যাতে দর্শক থেকে পরিচালক- সবাই বুঝতে পারেন যে আমি সব ধরনের চরিত্রে সাবলিল। সে ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত যে কাজগুলো করেছি আমি সততার সঙ্গে অভিনয় করতে চেষ্টা করেছি। একটি দেখেই তো অন্যটিতে ডাক পাচ্ছি।
দ্বিতীয়ত, আমি শোবিজে একদম নতুন। আমার কাছে যে কাজগুলো আসছে সেখান থেকেই তো আমাকে সিদ্ধান্ত হতে হবে কোনটা করবো আর কোনটা করবো না। নিজের মতামত, ভালোলাগা-মন্দলাগার ব্যাপারে কথা বলতেও নিজেকে একটা পর্যায়ে যেতে হবে।
আপনার ক্যারিয়ার প্ল্যান কি?
ওই যে বললাম, অভিনয়ের সঙ্গেই থাকতে চাই। সেটা যে কোনভাবে। শিক্ষকতা করার খুব ইচ্ছে, পাশাপাশি অভিনয়টা চালিয়ে যেতে পারলে খুব ভালো লাগবে। বেসিক্যালি থিয়েটার নিয়েই স্বপ্নের জায়গাটা বেশি। তবে শোবিজের কাজের ফলে যেহেতু বেশি মানুষের কাছে নিজের প্রতিভাবে পৌঁছে দেয়া যায়, তাই সেটির মূল্যও অনেক। ফলে দুই দিকেই ব্যালেন্স করে কাজ করে যেতে চাই।
বছরের শেষে এসে প্রকাশ পেল জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এলিটা করিমের নতুন অ্যালবাম ‘চিনি দেয়ার চামচ’। ৪ গানের এই ইপির সব গান লিখেছেন বরেণ্য গীতিকবি শহীদ মাহমুদ জঙ্গী ও সুর করেছেন প্রখ্যাত সুরকার পিলু খান। আজব রেকর্ডস থেকে প্রকাশিত অ্যালবামটির প্রকাশনা অনুষ্ঠান গতকাল ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ রাজধানীর একটি ক্যাফেতে অনুষ্ঠিত হয়।
এই প্রকাশনা আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন নকীব খান, ফোয়াদ নাসের বাবু, লিটন অধীকারী রিন্টু, আসিফ ইকবাল, বাপ্পা মজুমদার, দিলশাদ নাহার কনা, বাপ্পী খান, শফিক তুহিন, সুমন পাটওয়ারী, বৃন্দাবন দাস ও এলিটার স্বামী নির্মাতা আশফাক নিপুনের তারকারা।
অ্যালবামের ৪টি গান হলো ‘প্রেম হবে দিন শেষে’, ‘ভালোবাসি’, ‘প্রজাপতি’ ও ‘চিনি দেড় চামচ’। সবগুলো গানের শব্দ সংমিশ্রণ করেছেন আমজাদ হোসেন বাপ্পী। গানগুলো শোনা যাচ্ছে আইটিউন্স, স্পটিফাই, অ্যামাজন, ডিজার, স্বাধীন মিউজিকসহ পৃথিবীজুড়ে সব স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে। প্রকাশনা উৎসবে "প্রেম হবে দিন শেষে" গানটির একটি গানচিত্র উন্মুক্ত করা হয়, যা পরিচালনা করেছেন জয় শাহরিয়ার। এছাড়াও দেখানো হয় ‘চিনি দেড় চামচ’ গানের লিরিক ভিডিও।
অ্যালবাম প্রসঙ্গে এলিটা বলেন, ‘যাদের গান শুনে বড়ো হয়েছি তাদের লেখা ও সুরে একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যালবাম করতে পারা আমার জন্য একটি স্বপ্ন পূরণ।’
পিলু খান বলেন, ‘এলিটা আমার পছন্দের কণ্ঠশিল্পী। ওর জন্য গান করতে ভালো লেগেছে। আশা করি শ্রোতারাদের ভালো লাগবে।’
শহীদ মাহমুদ জঙ্গী বলেন, ‘পিলুর সাথে গান করছি ৪ দশক হলো। আমাদের এ যাত্রায় এবার যোগ হলো এলিটা। আশা করি সময়ের স্রোতে এই গানগুলো টিকে থাকবে নিজ যোগ্যতায়।’
বলিউডের আর্ট ঘরানার ছবির প্রবক্তা বললে ভুল হয় না শ্যাম বেনেগালকে। শুধু আর্ট ঘরানা নয়, বানিজ্যিক ধাচের ছবি করেও তিনি সফল হয়েছিলেন। জীবনঘনিষ্ট গল্প, গভীর মানবিকবোধ ও সুক্ষ আবেগ দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলতেন তার সিনেমায়। তার হাত ধরে উঠে এসেছিলেন শাবানা আজমী, নাসিরউদ্দিন শাহ, স্মিতা পাতিলের মতো জাদরেল অভিনয়শিল্পী। শ্যাম বেনেগাল প্রসিদ্ধ তার আইকনিক ক্ল্যাসিক সিনেমা ‘অঙ্কুর’, ‘নিশান্ত’, ‘মন্থন’, ‘মাণ্ডি’, ‘ভূমিকা’, ‘মাম্মো’, ‘সর্দারি বেগম’, ‘জুবাইদা’র জন্য।
গত ২৩ ডিসেম্বর ৯০ বছর বয়সে তার জীবনাবসান হয়। শ্যাম ভারতীয় সিনেমায় এক নতুন যুগের সূচনা করেছিলেন। তার প্রয়াণে ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে একটি যুগের অবসান হলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাকে বলা হয় ভারতীয় সিনেমার অন্যতম স্তম্ভ। গুণী এই নির্মাতার মৃত্যুতে বলিউড, টলিউড ও ঢালিউডে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
শ্যাম বেনেগালের মৃত্যুতে শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়ে টুইট করেছেন বলিউড মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চন। তিনি লিখেছেন, ‘আমরা আরেকজন অদম্য সাহসী নির্মাতাকে হারালাম।’
কিংবদন্তি ভারতীয় অভিনেত্রী শাবানা আজমী লিখেছেন, ‘তিনি আমার কাছে গুরুর মতো। চিন্তায় অনেক আধুনিক ছিলেন।’ শাবানা আজমী এর আগে এক সাক্ষাৎকারে শ্যাম বেনেগালকে নিয়ে বলেন, ‘শুধু অভিনয় নয়, আমি কীভাবে জীবনকে দেখি সেখানেও তার প্রভাব ছিল।’ ৭৪ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘আমি তার সাথেই প্রথম বিদেশে যাই ‘অঙ্কুর’ সিনেমা নিয়ে এবং বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ করি। তিনি আমাকে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে আবিষ্কার করেছিলেন এই সিনেমার মাধ্যমে।’
নির্মাতার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী কাজল। টুইট করেছেন, ‘তার কাজ দিয়েই তিনি বেঁচে থাকবেন। ভারতীয় সিনেমায় তার অবদান অনস্বীকার্য।’
বলিউড সুপারস্টার অক্ষয় কুমার টুইট করেছেন, ‘তিনি ছিলেন অন্যতম অসাধারণ নির্মাতা। সাধারণ একটা চেহারা বা ঘটনাকে তিনি দারুণভাবে কাব্যিক করে তুলতেন।’
বলিউডের আরও অনেক বিখ্যাত তারকার মতো শোকাহত টলিউড অভিনেতারাও শোকাহত । শ্যাম বেনেগালের মৃত্যুতে গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘লেজেন্ডের বিদায়ে শ্রদ্ধা। চিত্রনাট্যের গুরু যিনি বাস্তব চিত্র এবং গভীরতা দিয়ে ভারতীয় সিনেমাকে নিয়ে গেছেন সবকিছুর ঊর্ধ্বে।’
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত শোক জানিয়েছেন এই নির্মাতার মৃত্যুতে। তিনি ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকাকে বলেন, ‘তার মতোই উদার তার প্রতিটি ছবি। যেখানে মানুষের গল্প বলা হয়েছে। যেখানে স্বাধীন যাপনের স্বপ্ন দেখানো হয়েছে।’ ২০২৩-এ মুক্তি পায় শ্যাম বেনেগালের শেষ ছবি ‘মুজিব: দ্য মেকিং অব আ নেশন’। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘রঞ্জন ঘোষের ‘আহারে’ সিনেমায় আমার বিপরীতে আরিফিন শুভকে দেখেছিলেন শ্যামজি। সেখান থেকেই তার ‘মুজিব’ ছবির জন্য শুভকে বেছে নেন।’’
সেই আরিফিন শুভ প্রিয় নির্মাতার মৃত্যুতে ভীষণ কষ্ট পেয়েছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক জানিয়ে লিখেছেন, ‘ওপারে ভালো থাকবেন স্যার।’ সাথে পোস্ট করেছেন সিনেমার শুটিংয়ের সময়ের একটি ছবি।
এই সিনেমার আরেক অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে শোক জানিয়ে বলেছেন, ‘ভারত তথা বিশ্বের সিনেমার মানচিত্রে শ্যাম বেনেগালের মতো প্রতিভা চট করে পাওয়া যায় না। বিরল। দীর্ঘ সময় এমন প্রতিভাবান মানুষ আসে না। সুতরাং, শ্যামের চলে যাওয়া ছবির জগতের জন্য আক্ষরিক অর্থেই বড় ক্ষতি। ওই বয়সেও ছবি তৈরির সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয়ে নজর থাকত শ্যামের।’
ছবির প্রতি শ্যামের এই যে একাগ্রতা, ভালোবাসা তা দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারেননি চঞ্চল। বলেন, ‘বয়সের দোহাই দিয়ে কোনোদিন ছবির সেটে অনুপস্থিত থাকেননি শ্যাম। মনিটরে শুটিংয়ের প্রতিটি শট দেখতেন এবং সবকিছু নিখুঁত হচ্ছে কিনা সেই বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি থাকতো এই নির্দেশকের।’ সব মিলিয়ে, বয়স যে শিল্প তৈরির ক্ষেত্রে কোনও বাধা হতে পারে না, তা শ্যামকে দেখেই বুঝেছিলেন তিনি।
‘মুজিব: দ্য মেকিং অব আ নেশন’ সিনেমার আরেক অভিনেত্রী প্রার্থনা ফারদিন দীঘি শোক জানিয়ে লিখেছেন, ‘শান্তিতে থাকবেন স্যার। আপনার সাথে কাজ করা আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন।’
১৮টি জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত বেনেগাল তার কর্মের মাধ্যমে সাধারণত প্রচলিত সিনেমার ধারার বাইরে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিভিন্ন বিষয়কে গভীর দৃষ্টিতে তুলে ধরতেন। ১৯৭৬ সালে পদ্মশ্রী এবং ১৯৯১ সালে পদ্মভূষণ পুরস্কারে ভূষিত শ্যাম বেনেগালের অবদান ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।