টাইম ম্যাগাজিনের প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় শাহরুখ, কি বললেন দীপিকা
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বিনোদন
টাইম ম্যাগাজিনের বার্ষিক ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন শাহরুখ খান। বৃহস্পতিবার ২০২৩ সালের এই তালিকা সামনে আসে। পেড্রো প্যাসকাল এবং জেনিফার কুলিজের মতো তারকাদের সঙ্গে সেই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন বলিউডের শাহরুখও। কিং খানকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাঁর পাঠান সহ-অভিনেতা দীপিকা পাড়ুকোন।
গত বছর রেড সি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে শাহরুখ খানের উপস্থিতির একটি ছবি শেয়ার করা হয়েছে টাইম ম্যাগাজিনে। আর বলিউডের নায়কের এই কৃতিত্বে বেজায় খুশি তাঁর ওম শান্তি ওম, চেন্নাই এক্সপ্রেস, হ্যাপি নিউ ইয়ার এবং পাঠান-এর কো-স্টার দীপিকা পাড়ুকোন। একটি ছোট নোটও শেয়ার করে নিয়েছেন ইনস্টাগ্রামে। লিখেছেন, ‘শাহরুখ খানের সঙ্গে প্রথমবার দেখা করার কথা আমি কখনোই ভুলতে পারব না। আমি সবেমাত্র একটি স্যুটকেস এবং একটি স্বপ্ন নিয়ে বেঙ্গালুরু থেকে মুম্বাই এসেছিলাম। পরের জিনিসটি হল আমি তার বাড়িতে বসে আছি! জানলাম আমাকে একটি চরিত্রের জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে, তাঁর বিপরীতে একটি ছবিতে। সেই ঘটনার ১৬ বছর হয়ে গিয়েছে। আমাদের সম্পর্ককে বিশেষ করে তোলে একে অপরের প্রতি ভালোবাসা, বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধা। শাহরুখ খান চিরকাল সর্বকালের সেরা অভিনেতাদের একজন হিসেবে পরিচিত হবেন। কিন্তু যা তাঁকে সত্যি
লেখার শেষে শাহরুখকে ‘বিষ্ময়’ বলতেও ভোলেননি তিনি। লিখেছেন, ‘যারা তাঁকে কাছ থেকে চেনে বা তাঁর প্রতি টান রয়েছে, তাঁরা কখনওই মাত্র ১৫০ শব্দে এই বিষ্ময়, শাহরুখ খানের ব্যাপারে লিখে শেষ করতে পারবে না…’
শাহরুখের সঙ্গে এই তালিকায় আরও রয়েছেন ‘দ্য হোয়াইট লোটাস’ তারকা জেনিফার কুলিজ, ‘এভরিথিং এভরিহোয়ার অল অ্যাট ওয়ান্স’-এর কে হুয়ে কোয়ান, ‘বুকার’ পুরস্কার বিজয়ী লেখক সালমান রুশদি এবং' দ্য লাস্ট অফ ইউ' তারকা পেড্রো প্যাস্কাল।
শাহরুখকে শেষ দেখা গিয়েছিল সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত ‘পাঠান’ ছবিতে। যা বলিউডের সব রেকর্ড ভেঙে দেয়। ১ মাসের সামান্য বেশি সময়ে বিশ্বব্যপী ১০০০০ কোটির ব্যবসা করে ফেলে ছবিখানা। কিং খানের সঙ্গ দিয়েছিলেন সেই সিনেমায় দীপিকা ও জন আব্রাহাম।
এরপর শাহরুখের হাতে রয়েছে জাওয়ান ও ডাঙ্কির কাজ। দুটো সিনেমাই চলতি বছরে মুক্তির কথা ছিল। তবে শেষ পাওয়া রিপোর্ট অনুসারে দুটি ছবির মুক্তিই সামান্য পিছোতে পারে। সঙ্গে সলমন খানের ‘টাইগার থ্রি’ সিনেমায়ও কেমিও করার কথা রয়েছে।
সুপারস্টার শাকিব খানের রজত জয়ন্তীতে যা বললেন জনপ্রিয় তারকারা
মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
বিনোদন
শাকিব খান অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘অনন্ত ভালোবাসা’ মুক্তি পায় ১৯৯৯ সালের ২৮ মে। সেই হিসেবে তার অভিনয় জীবনের ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে গত দুদিন আগেই। এতো বছর পরও তিনি দেশীয় সিনেমার শীর্ষ নায়কের আসনে রয়েছেন। দীর্ঘ এই অভিনয় জীবনে অর্জন করেছেন চারটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। শাকিব খান অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার সংখ্যা ২৪৯। বর্তমানে প্রতিটি সিনেমায় অভিনয়ের জন্য এক কোটি টাকা পারিশ্রমিক নিচ্ছেন শাকিব খান। ঢালিউডের সফলতম এই অভিনেতাকে তার চলচ্চিত্রের রজত জয়ন্তীতে শুভেচ্ছায় ভাসিয়েছেন তার কাছের সহকর্মীরা। তা নিয়ে এই আয়োজন সাজিয়েন মাসিদ রণ
আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রেও তুমি দক্ষতার পরিচয় দিয়েছ
অঞ্জনা, চিত্রনায়িকা
দীর্ঘ ২৫ বছরের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে তুমি অনন্য, একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তুমি ভূষিত হয়ে অলংকৃত করেছ আমাদের এই চলচ্চিত্র অঙ্গনকে। বাংলা চলচ্চিত্রের বরপুত্র, রাজকুমার, বীর, শাহেনশাহ, নবাব, কিংখান, নাম্বার ওয়ান শাকিব খান। এই চলচ্চিত্রশিল্পে তোমার মেধা ও যোগ্যতায় তুমি সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছ জনমনে। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রেও তুমি সুঅভিনয়ের যে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছ তা চির অম্লান। খ্যাতির শীর্ষ সোপানে অধিষ্ঠিত হও। অনেক শুভ কামনা তোমার জন্য।
ঢালিউডকে আরো অনেক কিছু দেওয়ার আছে তোমার
শাবনূর, চিত্রনায়িকা
২৫ বছর ক্যারিয়ার অতিক্রম করলেন ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান। অনেক অনেক শুভ কামনা ও অভিনন্দন! ঢালিউডকে আরো অনেক কিছু দেওয়ার আছে তোমার। এগিয়ে যাও!
সাকসেস পাওয়ার পর তোমার মত পরিশ্রম করতে কাউকে দেখিনি
মিশা সওদাগর, শীর্ষ খল অভিনেতা
তোমার জীবনের প্রথম থেকে আজ পর্যন্ত শেষ শুটিং করা সিনেমার সাথে আমি জড়িত। আমার তিন যুগের অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে চাই, সাকসেসের জন্য সবাই কঠোর পরিশ্রম করে। কিন্তু সাকসেস পাওয়ার পর তোমার মত তুফানি পরিশ্রম করতে আমি কাউকে দেখিনি। ২৫ পেরিয়ে ২৬ এর সফল অগ্রিম শুভেচ্ছা। সুস্থ থাকো, চলচ্চিত্রকে এমন করেই ভালোবাসো।
বির্তকে সময় নষ্ট না করে কাজে জবাব দিয়েছেন
দীপঙ্কর দীপন, নির্মাতা
২৫ বছর ধরে ইন্ড্রাস্ট্রীতে নিজের অবস্থান ধরে রাখা, ক্রমশ নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া, বির্তকে সময় নষ্ট না করে কাজ দিয়ে জবাব দেয়া, নিজেকে সফলতার অনতিক্রমনীয় চূড়ায় নিয়ে গিয়েও না থামা- এমন বৈশিষ্ট্য খুব বিরল। এসব কারণেই শাকিব খান বিষ্ময়কর। অনেক আগে আমি যখন শাকিব খানকে বাংলাদেশের সম্পদ বলে পোস্ট দিয়েছিলাম, তখন যারা আড়ালে হেসেছিল, কটু কথা বলেছিল, তারাও এখন শাকিব খানে মুগ্ধ। শাকিব খানের এই অর্জন, নিজেকে অতিক্রমের ক্ষুধা থেকে শেখার অনেক কিছু আছে।
শাকিব ভাই অভিনন্দন, ভালবাসা। সুস্থ থাকবেন, সাবধানে থাকবেন। কেবল ২৫ হলো, সিনেমা ইন্ড্রাস্ট্রিতে হাফ সেঞ্জুরি মারতে হবে, মনে রাখবেন।
ফুটনোট : আমার প্রিয় দুটো লুকের ছবি দিলাম। আমি আগেও বলেছি আমার কাছে বাস্তবের শাকিব খান কখনো কখনো পর্দার শাকিব খানের চেয়ে অনেক চার্মিং ও ম্যাজিকাল।
এই জয়যাত্রা চলুক অব্যাহত
দেবাশীষ বিশ্বাস, উপস্থাপক ও নির্মাতা
মেগাস্টারকে সিনেম্যাটিক রজত জয়ন্তীর অভিনন্দন! এই জয়যাত্রা চলুক অব্যাহত!
শাকিব খান আছেন তার মতো
ইমন, চিত্রনায়ক
২৫ বছরে পৃথিবীর অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ে গেলেও আমাদের শাকিব খান আছেন তার মতো করে! Congratulations to our Megastar Shakib Khan for your successful silver jubilee career in Dhallywood.
তাকে নিয়েও একটা সিনেমা বানানো যায়
সৈকত সালাহউদ্দিন, সিনিয়র সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক পরিবেশক
শাকিব খান মনে করিয়ে দেন যে চেষ্টা করতে থাকলে নতুন মুখের সংগ্রাম থেকে একসময়ে শীর্ষস্থানে দীর্ঘদিন রাজত্ব করা যায়। তার শুরুটা এক সিনেমায় বাজিমাত ছিলো না। তিনি এসেছেন সিনেমার প্রতিযোগিতামূলক সময়ে। সে সময়ের বড় তারকাদের সাথে কাজ করেও তিনি নিজের সম্ভাবনা জানান দিতে পেরেছেন। এরপর চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে পারিশ্রমিক নিয়ে রেকর্ড গড়েন তিনি। দীর্ঘদিন শীর্ষ অবস্থানের পর ব্যক্তিগত কারণে তিনি অনেক প্রশ্নের মুখে পড়ে যান। সেই সাথে ইন্ডাস্ট্রিতে নিষিদ্ধ করা এবং হামলাও হয়েছে তার উপর। বলতে গেলে পয়েন্ট অফ নো রিটার্ন থেকে তিনি আগের জায়গা ছাড়িয়ে যে উচ্চতায় উঠে এসেছেন সে গল্প দিয়েও একটা সিনেমা বানানো যায়। পর্দায় শুভ পঁচিশ শাকিব খান। একজন মানুষই জানেন তিনি কি ঠিক করেছেন বা ভুল করেছেন। সে হিসাব কষে এগিয়ে যান। আনন্দভুবন-এর প্রচ্ছদের জন্য এই ছবিগুলো যখন তোলা হয়েছিলো তখন তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে জায়গা করে নেয়ার জন্য লড়ছেন। এখনও তার ভালো করার জন্য চেষ্টাটা আছে। আশা সেখানেই।
আপনার সাথে কাজ করা নবীণ পরিচালকের জন্য সিনেমার উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন থেকে কম নয়
তপু খান, নির্মাতা
২৫ বছরের এই পথ চলায় ছোট একটি অংশীদার হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। বাংলা সিনেমার ৬৯ বছরের পথ চলায় ২৫ বছর পর্দায় আর মানুষের মনে রাজত্ব করছেন আপনি। পৃথিবীর চলচ্চিত্র ইতিহাসে এটা একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আপনার এই অর্জনে জাতীয়, সাংগঠনিক বা সামাজিকভাবে যে কোন উদযাপন হতেই পারতো। তবে দেশ এবং দেশের বাইরে সকল মানুষ, দর্শক, ভক্তদের মনে আপনার যেই অবস্থান আপনি তৈরি করেছেন, যে কোনো উদযাপন, পুরষ্কার, মূল্যায়ন তার কাছে খুবই খুবই ক্ষুদ্র।
কাজের মাধ্যমে মানুষের মনের ভালোবাসা আপনার জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন এবং পুরস্কার। সেই ভালোবাসার সীমা পৃথিবীর মানচিত্রে তার অবস্থান কে দিনে দিনে আরো বাড়িয়ে চলেছে। সিনেমার প্রতি আপনার এই ভালোবাসা আর আপনার নিরলস পরিশ্রম রকেটের গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আপনাকে যা অব্যাহত থাকবে বিশ্বের বানিজ্যিক চলচ্চিত্রে বাংলা সিনেমার অবস্থান উন্নত করা পর্যন্ত। চাইলেই তো আর রকেটকে ধরা যায় না। দূর থেকে দেখতে হয়। নির্দিষ্ট গন্তব্যে থামবে সেই শিল্পের রকেট।
একজন মানুষ যিনি সিনেমার জন্য কতটুকু ভাবতে পারে তা আপনার সাথে থেকে দেখেছি আর শিখেছি। আপনার সাথে কাজ করার সময়টুকু যে কোন নবীণ পরিচালকের জন্য সিনেমার উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন থেকে কোন অংশে কম নয়। এই মুহুর্তে ইউ আর দ্য ইন্ডাস্ট্রি। হ্যাপী ২৫ সাকেসসফুল ইয়ার ভাইয়া।
এছাড়া চিত্রনায়িকা তানহা তাসিনয়া, জাহরা মিতু, বিপাশা কবির, সাংবাদিক নাহিয়ান ইমনসহ অনেক ভক্ত দর্শক শুভাকাক্সক্ষী তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
শাকিব খান অভিনীত প্রায় আড়াইশ’ ছবির মধ্যে ৯৪টি সিনেমা ঈদে মুক্তি পেয়েছে। দুই বাংলা মিলিয়ে সিনেমার গানের সবচেয়ে বেশি ভিউ তার দখলে। শাকিব ও মিশা সওদাগর নায়ক-ভিলেন জুটি হিসেবে সর্বোচ্চ ১২৬টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। বাংলাদেশের নায়ক হিসেবে প্রথম প্যান ইন্ডিয়ান ‘দরদ’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। প্রযোজনা সংস্থা ভার্সেটাইল মিডিয়ার তথ্যমতে, ‘প্রিয়তমা’ সিনেমাটি সারা বিশ্বে প্রায় ৪১ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। চলচ্চিত্রের শীর্ষ এই নায়ক দেশ-বিদেশের ৭০ জন নায়িকার বিপরীতে অভিনয় করেছেন। তবে সবচেয়ে বেশি অভিনয় করেছেন অপু বিশ্বাসের বিপরীতে। এই জুটি সর্বমোট ৭২টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। শাকিব খান ও শবনম বুবলি জুটি সর্বমোট ১১টি সিনেমায় অভিনয় করেছে।
শাকিব খানের সিনেমার জীবন বদলে যায় ২০০৬ সালে ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবিটি মুক্তির পর। সিনেমাটি পরিচালনা করেন এফ আই মানিক। তার আগে দর্শকনন্দিত নায়িকা শাবনূরের বিপরীতে ‘গোলাম’ সিনেমায় অভিনয় করেও আলোচনায় আসেন ঢাকাই সিনেমার শাকিব।
চলচ্চিত্র জীবনের ২৫ বছরে চরিত্রের প্রয়োজনে নানান লুকে দেখা গেছে শাকিব খানকে। তবে দর্শক তার ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ লুক বেশি পছন্দ করে। তার এমন লুক প্রথম নজরে আসে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজিত ‘শিকারি’ সিনেমায়। সিনেমাটি মুক্তির পর দর্শক নতুনভাবে তাকে আবিষ্কার করেন। তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ভালবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না (২০১০), খোদার পরে মা (২০১২), আরো ভালোবাসবো তোমায় (২০১৫) ও সত্তা (২০১৭) ছবিগুলোতে।
বেশ কিছুদিন হলো চলতি বছরের ‘৭৭ তম কান চলচ্চিত্র উৎসব’ শেষ হলো। প্রতি বারের মতোই এক গুচ্ছ বলিউড তারকা অংশগ্রহণ করেন সেখানে। চলচ্চিত্র বিষয়ক আয়োজন হলেও অভিনয়ের সঙ্গে ফ্যাশন ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। সেই কারণেই এই উৎসবে ফ্যাশন তারকারাও আসেন। তাছাড়া উপস্থিত তারকা ও শিল্পীরাও নিজেদের একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেন। প্রতিবছরই সাজ-পোশাকে অনন্য হতে শিল্পীদের চেষ্টার কমতি থাকে না। তারপরও তারকাদের ফ্যাশন সেন্স নিয়ে শুধু চর্চাই নয় আলোচনা-সমালোচনাও হয় ব্যাপক। চলতি বছরও বলি তারকাদের অনেকে হয়েছেন নন্দিত আবার অনেকে নিন্দিত।
বিশ্ব সুন্দরীর খেতাব জেতার বদৌলতে হলিউডে রাই সুন্দরীর বন্ধুবৃত্ত বেশ প্রসারিত। তাছাড়াও আন্তর্জাতিক তারকা হিসেবে অনেক আগে থেকেই অন্যান্য এরকম বিশেষ অনুষ্ঠানে যান তিনি। তবে এবারের কান অনুষ্ঠানে গিয়ে আলোচনায় মুখোরিত ছিলেন প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী এবং বলিউড সুন্দরী অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। তবে তার নাম নিন্দিত তালিকাতেই রয়েছে। কান উৎসবের অনুষ্ঠানে ২ দিন ছিলেন ঐশ্বরিয়া। অধিকাংশ দর্শকই ঐশ্বরিয়ার একটি পোশাকও পছন্দ করেননি, তাই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বয়ে যায় সমালোচনার ঝড়।
বেশ কিছুদিন পার হয়ে যাওয়ার পর আবারও আলোচনায় এসেছে ঐশ্বরিয়ার কানের লুকস। তবে এবার লাল গালিচার নয় বরং তার সাজঘরের ছবি আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে এবার আর আগের মতো সমালোচনায় নয় বরং জোয়ার প্রশংসার অনুকূলেই।
মিসেস রাই বচ্চনের এই ছবিকে আবার অনেকে সমালোচনার জবাব মনে করছেন। রেড কার্পেট লুক নিয়ে সমালোচিত হওয়ায় নীরব জবাব দিলেন ঐশ্বরিয়া। যেন জানান দিলেন পঞ্চাশ পার হলেও তার সৌন্দর্য্য একবিন্দু কমেনি।
দেশের অন্যতম শক্তিমান অভিনেতা, নির্দেশক ও আবৃত্তিশিল্পী হুমায়ূন ফরীদির জন্মদিন বুধবার। মৃত্যুর এক যুগ পরও তিনি সমান জনপ্রিয় দর্শকের কাছে। এমনকি তার সহকর্মীরা এখনো তাকে মনে করেন বিভিন্ন কাজের সময়। তেমনিভাবে তাঁর জন্মদিনে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী রুনা খান স্মৃতির ঝাঁপি মেলে ধরেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
নিচের ছবিটি শেয়ার করে রুনা লিখেছেন, ‘‘এটা ছিলো তার সাথে আমার শেষ দেখা। ২০০৯-এর জুলাই বা অগাস্ট। দীপন দা’র ‘মায়ের দোয়া পরিবহণ’ নাটকের সেটে ধামরাইয়ে। তখন রাজেশ্বরী পেটে, ১-২ মাস সবে। চলমান কাজগুলো শেষ করে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে চলে যাই। রাজেশ্বরীর জন্মের পর আমার ছোট-বড় তাবত সহকর্মীদের মধ্যে প্রথম এবং একমাত্র জন যিনি আমাকে প্রথম নিজে থেকে ফোন করেন, স্পষ্ট শুনতে পাই আমি এখনো ফরিদী ভাইয়ের ফোনের ওপাশের গলার আওয়াজ, ‘রুনা.. তোমার সন্তান হয়েছে, অভিনন্দন। সন্তানকে নিয়ে ভালো থেকো।’’
হুমায়ূন ফরীদির চলে যাওয়ার দিনটির কথা স্মরণ করে রুনা লিখেছেন, ‘তিনি যেদিন চলে যান, সেদিন আমার হোতাপাড়া শুটিং ছিলো, ‘সাত-সওদাগর’ নাটকের। শুটিংয়ে না গিয়ে আমি ধানমন্ডি যাই। তার খাটের পাশে, ঘরে, বসার-খাবার ঘরে, নীচে গ্যারেজে সারাদিন দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু একবারের জন্যও তার মুখ দেখিনি, হাত স্পর্শ করিনি।’
হুমায়ূন ফরীদির সঙ্গে প্রথম দেখার স্মৃতি এখনো রুনার মনে জ্বলজ্বলে। তিনি লিখেছেন, ‘‘জীবনে প্রথমবার তার মুখ দেখেছিলাম, তার হাত ধরেছিলাম নিকুঞ্জের কাশবনে, ২০০৪ সালে। শমী কায়সার আপার পরিচালনায় একটি টেলিছবিতে ছোট্ট একটা চরিত্রে কাজ করেছিলাম, শমী আপার বান্ধবী। শিল্পী ছিলেন দিলারা আন্টি, ফরিদী ভাই, শমী আপা আর আমি। প্রথম টেলিছবি ওটা আমার, ক্যামেরার আংগেল বুঝি না, বারবার ক্যামেরার দিকে পেছন দিয়ে দাঁড়াই। তিনি আমার হাত ধরে টেনে ঠিক জায়গায় দাঁড় করিয়ে দিলেন। বললেন, ‘এই মেয়ে এখানে দাঁড়াও, এদিকে তাকিয়ে কথা বলো, ক্যামেরাকে ভয় পাওয়ার কিছু নাই, ক্যামেরা তোমার বন্ধু!’ সেই থেকে অভিনয় জগতে ক্যামেরাই আমার একমাত্র বন্ধু!’’
২০০৮ এ তার পরিচালনায় হুমায়ুন আহমেদের ‘ছায়াবিথী’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘নায়লা’তে নির্বাচিত হন রুনা খান। সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিলো রুনা জনপ্রিয় নয় তারপরও কেনো সে সময়কার জনপ্রিয়দেরকে না নিয়ে রুনাকে ‘নায়লা’ চরিত্রে নিলেন?
তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন ‘‘রুনা জনপ্রিয় নয়, তবে ও আমার চোখে এই সময়ের ফাইনেস্ট অভিনেত্রীদের একজন, সেজন্য সে আমার কাছে ‘নায়লা’ !’’
সবশেষে রুনা লিখেছেন, ‘আপনি আমার কাছে এখনো জীবন্ত ফরিদী ভাই। শুভ জন্মদিন। ভালোবাসা। রুনা খান।’
হুমায়ূন ফরীদি সেই বিরল অভিনেতাদের একজন যাকে অন্য অনেক অভিনেতাই গুরু মনে করেন। তার অভিনয় দক্ষতার এতোটাই উচ্চমার্গীয় ছিল যে, মৃত্যুর এক যুগ পরও তার ঝলক আমরা পাই এ সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতাদের মাঝে। আজ এই প্রখ্যাত শিল্পীর জন্মদিন। বিশেষ দিনে প্রিয় সহকর্মীরা তাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় স্মরণ করেছেন শ্রদ্ধাভরে। তেমনি কিছু শুভেচ্ছাবার্তা ও স্মৃতিচারণা নিয়ে এই আয়োজন সাজিয়েছেন মাসিদ রণ
আজ ‘হুমায়ূন ফরিদী সাধারণ এক অসাধারণ’ বইটি প্রকাশিত হয়েছে
আফজাল হোসেন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
আজ ২৯ মে হুমায়ুন ফরীদির জন্মবার্ষিকী। এই বিশেষ দিনেই প্রকাশ পেয়েছে ‘হুমায়ূন ফরিদী সাধারণ এক অসাধারণ’ নামের বইটি। আহমেদ রেজাউর রহমানের সম্পাদনায় বইটির প্রচ্ছদ করেছি আমি। বইটিতে ফরীদিকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেছেন ৬০ জন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। যারা ছিলেন প্রয়াত অভিনেতার কাছের মানুষ। আমি ছাড়াও তাকে নিয়ে কথা বলেছেন ফেরদৌসি মজুমদার, নাসির উদ্দীন বাচ্চু, রাইসুল ইসলাম আসাদ, ইমদাদুল হক মিলন, জয়া আহসান, আফরান নিশো, জিতু আহসানসহ অভিনেতার পরিবারের সদস্যদের লেখা।
এখনো গভীর রাতে আপনার ছবি আঁকি
চঞ্চল চৌধুরী, অভিনেতা
ফরীদি ভাই আপনার অভাব কখনো পূরন হবার নয়। তাইতো এখনো গভীর রাতে আপনার ছবি আঁকি ক্যানভাসে নানান রেখায় জীবন্ত হয়ে ওঠেন আপনি, স্মরন করি গভীর শ্রদ্ধায় হুমায়ুন ফরীদি..একজনই.. শুভ জন্মদিন ফরীদি ভাই।
ক্যামেরা তোমার বন্ধু
রুনা খান, অভিনেত্রী
জীবনে প্রথমবার তার মুখ দেখেছিলাম, তার হাত ধরেছিলাম নিকুঞ্জের কাশবনে, ২০০৪ সালে। শমী কায়সার আপার পরিচালনায় একটি টেলিছবিতে ছোট্ট একটা চরিত্রে কাজ করেছিলাম, শমী আপার বান্ধবী। শিল্পী ছিলেন দিলারা আন্টি, ফরিদী ভাই, শমী আপা আর আমি। প্রথম টেলিছবি ওটা আমার, ক্যামেরার আংগেল বুঝি না, বারবার ক্যামেরার দিকে পেছন দিয়ে দাঁড়াই। তিনি আমার হাত ধরে টেনে ঠিক জায়গায় দাঁড় করিয়ে দিলেন। বললেন, ‘এই মেয়ে এখানে দাঁড়াও, এদিকে তাকিয়ে কথা বলো, ক্যামেরাকে ভয় পাওয়ার কিছু নাই, ক্যামেরা তোমার বন্ধু!’ সেই থেকে অভিনয় জগতে ক্যামেরাই আমার একমাত্র বন্ধু!
শুটিং হাউজে তিনি ঘড়ি ধরে আসতেন
মৌটুসী বিশ্বাস, অভিনেত্রী
হুমায়ূন ফরীদি স্যারের সঙ্গে প্রথমবার বোধহয় কাজের সুযোগ পেয়েছিলাম মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা এবং আবদুল্লাহ রানার পরিচালনায় টেলিফিল্ম ‘গেস্ট হাউজ’-এ। ফরীদি স্যার, আলী যাকের চাচা, আসাদুজ্জামান নূর চাচা, পারভীন সুলতানা দিতি আন্টি, সুবর্ণা মুস্তাফা আপা, ফজলুর রহমান বাবু ভাইদের মাঝে আমি ২২ বছরের চট্টগ্রাম-ঢাকা করা এক এ্যামেচার।
আজ মনে পড়ছে ফরীদি স্যারের কথা। শুটিং হাউজে তিনি ঘড়ি ধরে আসতেন, কাজ করতেন তারপর সময়মতো চলে যেতেন। তার প্রশ্নের ভয়ে তটস্থ থাকত শুটিং টিম। ধরুন, ক্যামেরাম্যানকে উনি ডাকলেন, ডিওপি বলার চল তখনো শুরু হয়নি। কী ক্যামেরা জেনে তিনি তৎক্ষণাৎ কিছু প্রশ্ন করতেন। বেচারার ধরণী দ্বিখণ্ডিত হলেই বোধহয় ভালো ছিল। বকা দিতেন না। শুধু জিজ্ঞেস করতেন, তারপর নিজেই উত্তর দিয়ে দিতেন। এমন অবস্থায় আমি আগেই আত্মসমর্পণ করতাম আর নানা রকম অভিনয় সংক্রান্ত প্রশ্ন করতাম।
নানাবিধ প্রশ্নের মাঝে একদিন তিনি কিছু বই নিয়ে আসলেন আমার জন্য। কনস্তান্তিন স্তানিস্লাভস্কি-এর দুটো বই সাথে স্তানিস্লাভস্কির ছাত্রী সোনিয়া মুর-এর একটা বই। দিলেন। আমি ‘হা’ হয়ে গেলাম। আমার ‘হা’ আর বন্ধ হয় না। ফরীদি স্যার স্তানিস্লাভস্কির বই দিচ্ছেন আমাকে? কেন?
তাকে জানাই আমি ফটোকপি করে উনার বই ফেরত দিয়ে আসব। তিনি হেসে বললেন, লাগবে না। আমার মুখ তখনো হা হয়েই আছে। তিনি আশ্বস্ত করলেন যে এই বইগুলোর কাজ শেষ। আমার কোনোদিন শেষ হলে যার প্রয়োজন তাকে যেন আমি দিয়ে দেই। আহ্ তিনি যদি জানতেন যে এই প্রয়োজন আমার কখনোই মিটবে না।
বাংলাদেশের 'অভিনয় প্রতিষ্ঠান'
দেবাশীষ বিশ্বাস, নির্মাতা ও উপস্থাপক
বাংলাদেশের 'অভিনয় প্রতিষ্ঠান' হুমায়ুন ফরিদীকে জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা! আমার বাবা'র পর আপনার অভিজ্ঞতালব্ধ সুপরামর্শ আমার এ জগতে চলার পথের পাথেয় হয়ে থাকবে আজীবন! আপনার সাথে উপস্থাপক, সহঅভিনেতা আর সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার সুখ আর সৌভাগ্য নিয়েই কাটিয়ে দিতে চাই বাকী পার্থিব জীবনটাকে!
তিনি সবার গুরু
সাজু খাদেম, অভিনেতা
তিনি শুধু আমার গুরু নন, সবার গুরু। শুভ জন্মদিন ফরীদি ভাই।
নতুন প্রজন্মও ফরীদি ভাইকে শ্রদ্ধাচিত্তে স্মরণ করছে
শাহেদ আলী সুজন, অভিনেতা
হুমায়ুন ফরীদি ভাইয়ের শেষ বিদায়ের এক যুগ হয়ে গেল। তিনি যখন মারা যান, অনেকেই ভেবেছিলেন, ‘লোকজন হয়তো-বা তাকে খুব একটা মনে রাখবে না।’ কিন্তু সময়ের আবর্তে দেখেছি, যারা তাকে সে সময় পছন্দ করতেন, শুধু তারাই নন, নতুন প্রজন্মও ফরীদি ভাইকে শ্রদ্ধাচিত্তে স্মরণ করছে। অভিনেতা কিংবা মানুষ হিসেবে তাকে যারা পছন্দ করতেন, জীবনের বিভিন্ন কিছুতে তারা হুমায়ুন ফরীদিকে রাখতে চান। এ বিষয়টি আমার ভালো লাগে। বাংলা সংস্কৃতির বিভিন্ন অঙ্গনে ফরীদি ভাইয়ের অবদান আছে। আমি মনে করি তিনি থিয়েটারের একজন দিকপাল। টিভি নাটকের ইন্ডাস্ট্রিতে পেশাদারিত্ব প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকা ছিল। আবৃত্তির ক্ষেত্রেও একটা স্বতন্ত্র ধারা তৈরি করেছিলেন। তাই শুধু চলচ্চিত্র-অভিনেতা বললে একটা গণ্ডির মধ্যে তাকে আবদ্ধ করে ফেলা হবে, উনার ব্যাপ্তিটা আরও বিশাল।