বাঘের নখর পরার জন্য গ্রেফতার হলেন বিগ বস প্রতিযোগী
ভারতের জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো বিগ বস (কন্নড়) এর একজন প্রতিযোগীকে শোয়ের সেটে বাঘের নখর দিয়ে তৈরি দুল পরার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত ২২ অক্টোবর ভার্থুর সন্তোষ নামে ওই প্রতিযোগীকে বিগ বস এর সেট থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, গ্রেফতারকৃত প্রতিযোগী ভার্থুর সন্তোষ পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে পশুর অঙ্গ পরিধান এবং প্রদর্শনের অভিযোগ আনা হয়েছে যা ভারতীয় আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
পুলিশ জানিয়েছে যে ভার্থুর সন্তোষ তাদের বলেছেন, দুলটি তিনি পারিবারিক উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন ।
এ বিষয়ে দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বন বিভাগ জানিয়েছে ভার্থুর জনপ্রিয় টিভি শোতে মোটা সোনার চেইনে দুল পরে উপস্থিত হওয়ার পরে তারা একটি অভিযোগ পেয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে , বন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানের কলাকুশলীদের মাধ্যমে ভার্থুর সাথে যোগাযোগ করেন এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ।
বেঙ্গালুরু আরবান ডেপুটি কনজারভেটর অফ ফরেস্ট এন রবীন্দ্রকুমার বলেন, যখন আমরা দুলটি পরীক্ষা করেছিলাম, তখন নিশ্চিত হয়েছিলাম যে এটি একটি বাঘের নখ।
ভার্থুর সন্তোষ এখনও প্রকাশ্য বিবৃতি দেননি। তবে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি তাদের বলেছেন যে দুলটি তার পরিবারে কয়েক প্রজন্ম ধরে ছিল।
উল্লেখ্য, ভারতের বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন অনুযায়ী প্রাণীর অঙ্গ প্রদর্শনের অপরাধে তিন থেকে সাত বছরের জেল হতে পারে।
এছাড়া ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ডের পরিসংখ্যান অনুসারে বাঘ একটি বিপন্ন প্রজাতি এবং গত শতাব্দীতে বিশ্বব্যাপী বন্য বাঘের জনসংখ্যা প্রায় ৯৫% হ্রাস পেয়েছে।
ভারতের জাতীয় পশু বাঘ এবং ফেডারেল সরকারের মতে বিশ্বের বাঘের প্রায় ৭৫% দেশটিতে রয়েছে বলে অনুমান করা হয়। প্রাণীর জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাওয়ার পর ভারত ১৯৭০-এর দশকে প্রজেক্ট টাইগার চালু করেছিল।
কিন্তু তারপর থেকে বাঘ সংরক্ষণের জন্য বেশ কয়েকটি সরকারি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে শিকার নিষিদ্ধ করা এবং গ্রামে সচেতনতামূলক অভিযান অন্তর্ভুক্ত ছিল।
২০০৬ সাল থেকে বাঘের সংখ্যায় একটি সুস্থ বৃদ্ধি ঘটেছে। গত বছর ফেডারেল সরকার তার বাঘ শুমারি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে ভারতের বাঘের সংখ্যা ৩,১৭৬। যা ২০১৮ সালের তুলনায় ২০০ বেশি ।
তবে এটাও উল্লেখ করেছে, স্থানীয় বাঘের সংখ্যা কিছু রিজার্ভসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এজন্য ঝাড়খন্ড এবং অন্ধ্র প্রদেশসহ রাজ্যগুলোতে গুরুতর সংরক্ষণ প্রচেষ্টা চালানো প্রয়োজন।