ওস্তাদ রশিদ খান স্মরণে জয় গোস্বামীর লেখা



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
জয় গোস্বামী ও প্রয়াত ওস্তাদ রাশিদ খান

জয় গোস্বামী ও প্রয়াত ওস্তাদ রাশিদ খান

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী ওস্তাদ রশিদ খান আর নেই। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ মঙ্গলবার বেলা ৩টা ৪৫ মিনিটে না ফেরার দেশে চলে গেলেন এই কিংবদন্তি। রশিদ খানের বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।

এই গুণী শিল্পীর অকালে চলে যাওয়ায় সংগীতাঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ২০০৬ সালে পদ্মশ্রী ও ২০২২ সালে পদ্মভূষণ সম্মান লাভ করেন ওস্তাদ রশিদ খান। পদ্মভূষণ পাওয়ার পর তাকে নিয়ে জনপ্রিয় কবি জয় গোস্বামীর একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছিল কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকায়। তার স্মরণে সেই লেখাটি তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য-

‘‘এক সত্যিকারের সুসংবাদ এসে পৌঁছেছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত জগতে। ওস্তাদ রাশিদ খান ‘পদ্মভূষণ’ সম্মান লাভ করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের পক্ষেও এ এক বড় সম্মান, কেননা ওস্তাদ রাশিদ খান কলকাতায় বাস করেন এবং তিনি বাংলার আপনজন। ওস্তাদ রাশিদ খানের গান আশির দশক থেকে শুনে আসছি। তাকে আমি পরিবারের সদস্য বলেই মনে করি। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওস্তাদ রাশিদ খানকে আগেই সঙ্গীত মহাসম্মান ও বঙ্গবিভূষণে ভূষিত করেছেন। সেই সব অনুষ্ঠানে দু’-এক মিনিটের সৌজন্য সাক্ষাতের সূত্রে তাকে পরিবারের সদস্য হিসেবে দাবি করছি না। তার গান আমরা তিন জনে, অর্থাৎ আমি, কাবেরী ও বুকুন, একসঙ্গে শুনে থাকি প্রায়ই। আমাদের ঘরে তার গান পৌঁছনো মানেই তিনি ঘরের লোক হয়ে উঠেছেন।

কবি জয় গোস্বামী

ওস্তাদ রাশিদ খান তার দাদু ওস্তাদ নিসার হুসেন খানের কাছে প্রাথমিক তালিম পেয়েছিলেন এ কথা সকলেই জানি। তবে রাশিদ খানের গাওয়া ছায়ানট রাগের ‘ঝনক ঝনক ঝন নন নন নন বাজে বিছুয়া’ বন্দিশটি যারাই শুনেছেন তারা জানেন, রাগটি তিনি অবিকল ওস্তাদ নিসার হুসেন খানের ধরনে পরিবেশন করেননি। ওস্তাদ নিসার হুসেনের গাওয়া এই বন্দিশটি দ্রুত তিন তালে নিবদ্ধ। অন্য দিকে ওস্তাদ রাশিদ খান বন্দিশটি গেয়েছেন মধ্য লয়ে— অনেক ধীরে চলেছেন তিনি। গানের প্রথম শব্দ ‘ঝনক’ কথাটিতে মধ্য সপ্তকের আরম্ভের সা থেকে মন্দ সপ্তকের পঞ্চম পর্যন্ত নেমে গিয়ে আবার উঠতে থাকে বন্দিশটি। এই অংশে রাশিদ খানের কণ্ঠের গম্ভীর মন্দ্রতা যেন এই বন্দিশটির সূচনায় এক সতেজ সুরদীপ্তি দেয়। আবার মালবিকা কাননের গাওয়া ছায়ানট-এর একই বন্দিশ যারা শুনেছেন, তারা বুঝবেন বড় বড় শাস্ত্রীয় শিল্পীর গান শুনতে শুনতে রাশিদ খান তৈরি করেছেন তার নিজস্ব এক গায়কী। তার মারওয়া রাগে গাওয়া ক্যাসেটটির বিলম্বিত অংশে ওস্তাদ আমির খানকে মনে পড়েছিল বটে— কিন্তু সে-ক্যাসেট বেরিয়েছিল তিরিশ বছরেরও বেশি আগে। পরে আর ওই বিলম্বিত বিস্তারের ধরন রাশিদ খানের গানে প্রবেশ করতে পারেনি।

তার আরও দু’টি বড় গুণবাচক দিক নিশ্চয়ই শ্রোতাদের কানে ধরা পড়েছে- তা হল একই রাগ, তিনি দু’বার ঠিক একই রকম ভাবে পরিবেশন করেন না, রাগটিকে প্রতিবার নতুন রাস্তায় এগিয়ে নেওয়ার দিকে তার সুরকল্পনা কাজ করে। শ্যামকল্যাণ রাগে তার যে সিডি পাওয়া যায়, সেখানে আরম্ভে, আওচারের সময়ে তীব্র মধ্যমটি লাগান একটু দেরি করে। শ্রোতাদের আকুলতা বাড়িয়ে তবে পৌঁছন কড়িমা পর্দাটিতে। আবার কলামন্দিরে একবার শ্যামকল্যাণ রাগে তীব্র মধ্যমে আসতে এতই সময় নিলেন তিনি যে শ্রোতারা ব্যাকুল উঠলেন। ওস্তাদ শাহিদ পারভেজের সেতারের সঙ্গে তার যুগলবন্দির রেকর্ডটি চিরস্মরণীয় হয়ে আছে— রাগ বাগেশ্রীর রূপায়ণে দু’জনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল না— বরং ছিল রাগটির রূপমাধুর্যকে খুলে ধরা, ছিল নানা বৈচিত্র্যপূর্ণ সুরের রাস্তা ধরে ধরে এগোনো।

শরৎ সদনে এক বার গৌড় সারং শুনেছিলাম। রাগের মধ্যে লুকিয়ে থাকা বেহাগের জায়গাটি কেমন ভাবে এসে চলে যায়, তা হঠাৎ চমকের মতো এলেই ফিরিয়ে নিচ্ছিলেন ওস্তাদ রাশিদ খান। অত্যন্ত সংযম ও পরিমিতি বোধের পরিচয় ছিল সেখানে। গৌড় সারংকে কেন ‘দিন কা বেহাগ’ বলা হয়, শ্রোতারা অনুভব করেছিলেন সে দিন।

প্রয়াত ওস্তাদ রাশিদ খান

ওস্তাদ রাশিদ খানের কাছে আমি বিশেষ কৃতজ্ঞ অন্য একটি কারণে। আমি অন্তত দু’বার তার গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনেছি। প্রথম বার শুনেছিলাম গ্র্যান্ড হোটেলে আনন্দ পুরস্কার প্রদানের অনুষ্ঠানে। প্রথমে একটু ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কারণ তিনি শ্রী রাগের আওচার ধরেছিলেন, একেবারে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ধরনে। আমার আতঙ্ক জন্মাচ্ছিল, হয়তো রবীন্দ্রনাথের বাণীর উপর উক্ত রাগটির নানাবিধ সুরকৌশল ও অলঙ্করণ প্রয়োগ করবেন তিনি। রবীন্দ্রগানে বাণীর যে-শুদ্ধতা, তা বুঝি বা ছিঁড়েখুঁড়ে যাবে। রবীন্দ্রনাথ তো তার গানকে বাহুল্যমুক্ত করতেই চেয়েছিলেন। অথচ আশ্চর্য হয়ে দেখলাম, যখন গানের বাণীতে প্রবেশ করলেন, কোথাও একটিও অতিরিক্ত স্বর প্রয়োগ করলেন না। একাগ্র মনে গেয়ে চললেন ‘কার মিলন চাও বিরহী’, শ্রী রাগের আত্মা প্রতিষ্ঠিত হল যেন সংযমী গায়নে। দ্বিতীয় গানটি ছিল ‘কে বসিলে আজি হৃদয়াসনে ভুবনেশ্বর প্রভু’। সিন্ধুরাগে আশ্রিত এই গানের শুরুতে আবারও শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ধরনেই আওচার রাখলেন। কিন্তু গানের বাণীর মধ্যে অতিরিক্ত অলঙ্করণ এল না। প্রথম লাইনের শেষ শব্দ ‘প্রভু’ যখন এল, তখন শুদ্ধ রে থেকে পঞ্চমে গিয়ে তিনি দাঁড়ালেন একটুক্ষণ, আর প্রেক্ষাগৃহ ভরে গেল গভীর সুরের আচ্ছাদনে।

মাতৃভাষা বাংলা না-হলেও, বাংলার বিশ্বকবির গান ওস্তাদ রাশিদ খান যে-বিহিত শ্রদ্ধা নিয়ে নিবেদন করলেন, তা তার প্রতি আরও শ্রদ্ধাবান করে তুলল আমাকে। এই শ্রদ্ধা বাংলার ঘরে ঘরে তার শ্রোতাদের মনে সঞ্চিত আছে। আজ যে সম্মান তিনি লাভ করলেন, তার দ্বারা ওস্তাদ রাশিদ খানের প্রতি আমাদের মতো সাধারণ শ্রোতার ভালবাসাই জয়যুক্ত হল। জয়যুক্ত হল বাংলা।’’

১৯৬৮ সালের ১ জুলাই উত্তর প্রদেশের বদায়ুঁতে জন্ম রশিদ খানের। মূলত শাস্ত্রীয় সংগীত গাইলেও ফিউশন, হিন্দি ও বাংলা ছবিতে জনপ্রিয় গানও গেয়েছেন শিল্পী। বাংলাদেশেও একাধিকবার সংগীত পরিবেশন করেছেন এই শিল্পী।

হাসপাতালে শেষ দেখায় সামিনাকে যা বলেছিলেন শাফিন



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার যে অনুষ্ঠানে গাইতে গিয়ে আর ফিরলেন না শাফিন আহমেদ, সেই মঞ্চে সেদিন গেয়েছিলেন দেশের আরেক জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী সামিনা চৌধুরী। অনুষ্ঠানের চার দিনের মাথায় জানতে পারেন শাফিন আহমেদ চিরতরে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন। শাফিন আহমেদের মৃত্যুর খবর অবিশ্বাস্য ছিল সামিনা চৌধুরীর কাছে। এই খবর সহ্য করাটাও ছিল ভীষণ কষ্টদায়ক।

যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সামিনা চৌধুরী জানালেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বামী ইজাজ খান স্বপনসহ গিয়েছিলেন শাফিন আহমেদকে দেখতে। হাসপাতালে তাদের থাকার অনুরোধ করেছিলেন বলেও জানালেন সামিনা চৌধুরী।

সামিনা বলেন, ‘‘তিন দিন আগে দেখে এলাম শাফিন ভাইকে। বারবার আমাকে আর স্বপনকে থাকতে বলছিলেন। স্বপনকে বললেন, ‘আমাকে ছেড়ে যেয়ো না প্লিজ! আমার সঙ্গে গল্প করো। আমার অনেক ব্যথা হচ্ছে কোমরে। স্বপন, তোমাকে কিছু বলব, বসো।’'

সামিনা আরও বলেন, ‘শাফিন ভাইকে পানি খাওয়াল স্বপন। তারপর তাকে ঘুমের ওষুধ দেওয়া হলো। শাফিন ভাইয়ের অবস্থা দেখে আমাদের চলে আসতে বললেন আয়োজকেরা। কী বলতে চেয়েছিলেন শাফিন ভাই, কে জানে। কোনো চাপা কষ্ট কি ছিল তার ভেতর? দেশের আরেকটি সম্পদ, আরেকটি মেধার বিয়োগ হলো। চোখে শুধু ভাসছে। তোমরা যেয়ো না প্লিজ...আমাকে আর পাবা না।’

;

ম্যানেজারের সঙ্গে প্রেম, ভাঙছে যীশুর ২০ বছরের সংসার?



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
যীশু সেনগুপ্ত ও নীলাঞ্জনা শর্মা দম্পতি

যীশু সেনগুপ্ত ও নীলাঞ্জনা শর্মা দম্পতি

  • Font increase
  • Font Decrease

টলিউড তারকা যীশু সেনগুপ্ত আর সাবেক অভিনেত্রী নীলাঞ্জনা শর্মার দুই দশকের দাম্পত্য জীবন। এত দিন তাদের সম্পর্ককে সবাই আদর্শ মেনে এসেছে। কিন্তু জীবনে কোনকিছুই যে স্থায়ী নয়, কিংবা আমরা বাইরে থেকে যা দেখি তার সবটাই যে সত্য নয় সে কথা আরও একবার হয়তো ঘটতে চলেছে! কয়েক দিন ধরে হঠাৎই টলিপাড়ায় আলোচনায় তাদের বিচ্ছেদের খবর।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, তাদের সম্পর্ক আগের মতো নেই। নীলাঞ্জনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টও সে ইঙ্গিতই দিয়েছে।

দুই কন্যাকে নিয়ে ‍সুখের সংসার ছিলো যিশুর

শিনাল সূর্তি নামের নারীর সঙ্গে নাকি সম্পর্কে জড়িয়েছেন যীশু। এটাই তাদের দাম্পত্য কলহের মূল কারণ। ইতিমধ্যেই নিজের নামের পাশ থেকে সেনগুপ্ত পদবি সরিয়ে ফেলেছেন নীলাঞ্জনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাবাকে আনফলো করে দিয়েছেন বড় মেয়ে সারাও।

এখন প্রশ্ন, সত্যিই কি তাহলে যীশু-নীলাঞ্জনার ২০ বছরের দাম্পত্য ভাঙনের পথেই এগোচ্ছে? যদিও এ বিষয়ে স্পিকটি নট যীশু সেনগুপ্ত। এই পরিস্থিতিতে নীলাঞ্জনার পক্ষে কথা বলেছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী মহুয়া চট্টোপাধ্যায়। নীলাঞ্জনার সঙ্গে মহুয়ার বন্ধুত্ব বহুদিনের। প্রায় দিনই তাদের একসঙ্গে দেখা যায়। এদিকে এই কঠিন পরিস্থিতিতে নীলাঞ্জনার পাশেই দাঁড়ালেন মহুয়া চট্টোপাধ্যায়।

যীশু সেনগুপ্ত

মহুয়া নীলাঞ্জনার উদ্দেশে লিখেছেন, ‘তোমাকে দুর্দান্ত ও শক্তিশালী মানুষ বলেই জানি। খুব গর্ব হয় তোমার জন্য। সব সময়ই তোমার সঙ্গে রয়েছি নীলাঞ্জনা।’ পাল্টা মহুয়া চট্টোপাধ্যায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন নীলাঞ্জনাও।

তবে শুধু মহুয়া চট্টোপাধ্যায় নন, নীলাঞ্জনার পাশে দাঁড়িয়েছেন তার অভিনেত্রী বন্ধু রাগেশ্বরীও। তিনিও নিজের ইনস্টাস্টোরিতে লিখেছেন, ‘একসময় জীবনে কঠিন সময়ে তুমি আমাকে হাত ধরে বাঁচিয়েছিলে, এবার আমার পালা। আজ আমার পালা।’

যীশু সেনগুপ্ত ও নীলাঞ্জনা শর্মা দম্পতি

ইতিমধ্যেই যীশু-নীলাঞ্জনা নাকি বিচ্ছেদের পথেই হাঁটছেন বলে খবর। টলিপাড়ায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, তারা নাকি বিচ্ছেদের বিষয়ে আইনি পরামর্শও নিচ্ছেন। শোনা যাচ্ছে, গুজরাটিকন্যা শিনাল সূর্তির সঙ্গেই নাকি বেশ কয়েক মাস ধরে তারা লিভ ইন সম্পর্কেও রয়েছেন। এমনকি ‘খাদান’ সিনেমার শুটিংয়ের জন্য কলকাতায় এসেও নাকি যীশু নিজের বাড়িতেও ওঠেননি।

প্রসঙ্গত, যীশু এ মুহূর্তে বলিউড, টলিউড ও দক্ষিণি ইন্ডাস্ট্রিতে অন্যতম ব্যস্ত অভিনেতা। কাজের সূত্রে মুম্বাইয়ে বেশির ভাগ সময় থাকতে হয় তাকে।

২০০৪ সালে সাত পাকে বাঁধা পড়েন যীশু-নীলাঞ্জনা। খ্যাতির শিখরে পৌঁছানোর বহু আগেই থেকেই যীশু সেনগুপ্তের সঙ্গে আলাপ নীলাঞ্জনার। যখন তারা বিয়ে করেন, তখন যীশু টেলিভিশনের একজন উঠতি অভিনেতা। নীলাঞ্জনা শর্মাও অভিনয় করতেন। তিনি জনপ্রিয় অভিনেত্রী অঞ্জনা ভৌমিকের মেয়ে। তবে বিয়ের পর সংসারেই মন দেন নীলাঞ্জনা। দুই মেয়ে সারা ও জারাকে নিয়ে ছিল তাদের সংসার।

যীশু সেনগুপ্ত

তথ্যসূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা

;

বায়োপিকের টিজারে টিমোথি যেন অবিকল বব ডিলান!



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
বব ডিলানের বায়োপিকে টিমোথি শ্যালামে ও এলে ফ্যানিং

বব ডিলানের বায়োপিকে টিমোথি শ্যালামে ও এলে ফ্যানিং

  • Font increase
  • Font Decrease

টিমোথি শ্যালামেকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। অভিনয়গুণে অল্প দিনের মধ্যেই দর্শকের মনে শক্ত অবস্থান করে নিয়েছেন কম বয়সী এই হলিউড অভিনেতা। তার অভিনীত ‘ডুন’ ও ‘ওঙ্কা’ সিনেমা দুটি ব্যাপক আলোচিত হয়েছে।

জীবন্ত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী বব ডিলানের বায়োপিক ‘আ কমপ্লিট আননোন’-এর মূখ্য চরিত্রেও দেখা যাবে টিমোথি শ্যালামেকে। প্রকাশ পেয়েছে ছবিটির টিজার। ‘আ কমপ্লিট আননোন’-ও যে বিশ্বজয় করতে চলেছে, তা টিজার দেখেই নিশ্চিত সিনেপ্রেমীরা।

বব ডিলানের বায়োপিকে টিমোথি শ্যালামে

টিজারে ‘আ হার্ড রেইন’স আ-গনা ফল’ গানের কিছু অংশ গাইতে শোনা গেছে টিমোথিকে। মেকআপ, পোশাক আর চুলের স্টাইলে টিমোথি যেন অবিকল বব ডিলান! ছবিটি পরিচালনা করেছেন ‘ওয়াক দ্য লাইন’, ‘ফোর্ড ভার্সেস ফেরারি’, ‘লোগান’ খ্যাত পরিচালক জেমস ম্যানগোল্ড।

টিজারের শুরুতে টিমোথিকে ম্যানহাটনের রাস্তায় হাঁটতে দেখা যায়। এ সময়ে অ্যামেরিকান গায়ন পিট সিগার বব ডিলানের গান প্রথম শোনার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। পিট সিগারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন এডওয়ার্ড নরটন। টিজারে ম্যানহাটনে ডিলানের কিছু প্রিয় স্থান দেখানো হয়েছে। তার মাঝে আছে ক্যাফে হোয়া এবং হোটেল চেলসা। টিজারে ডিলান, হোয়ান বাইজ এবং সিলভি রুশোর ত্রিভুজ প্রেমের ইঙ্গিতও দেয়া হয়েছে।

বব ডিলানের বায়োপিক ‘আ কমপ্লিট আননোন’-এর দুটি দৃশ্যের কোলাজ

১৯৫৯ সালে ক্যারিয়ার শুরুর পর গানের দুনিয়ায় নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন বব ডিলান। ৮১ বছরের জীবনে অনেক কীর্তি গড়েছেন তিনি। সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারও পেয়েছেন এই গীতিকবি। নন্দিত এই গায়ক, গীতিকারের জীবনের প্রথম দিকের ঘটনাবলি তুলে ধরা হবে সিনেমাটিতে।

তথ্যসূত্র : এনডিটিভি

বব ডিলানের বায়োপিকে টিমোথি শ্যালামে

;

শাফিন আহমেদের কিছু বিরল ছবি আর অজানা কথা



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
মা ফিরোজা বেগমের সঙ্গে শাফিন আহমেদ ও হামিন আহমেদ (২০১০) / ছবি : আবেগ রহমান

মা ফিরোজা বেগমের সঙ্গে শাফিন আহমেদ ও হামিন আহমেদ (২০১০) / ছবি : আবেগ রহমান

  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার সেন্টারা হাসপাতালে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ব্যান্ড সংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী শাফিন আহমেদ।

তার মৃত্যুর শোকের আঁচ এখনো পাওয়া যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যে যেভাবে পারছেন প্রিয় শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।

শাফিনকে পেলে এভাবেই মধ্যমণি করে রাখতেন শিল্পীসমাজ। ছবিতে শাফিনের পাশে আসিফ আকবর, শওকত আলী ইমন, শহিদুল্লাহ ফরায়েজী, ফুয়াদ নাসের বাবু, লাবুসহ গানের মানুষরা
 

অনেকেই জানেন না শাফিন আহমেদের জন্ম কলকাতায়। আর তারা তিন ভাই- তাহসিন, হামিন ও শাফিন। বাবা কমল দাশগুপ্ত, মা ফিরোজা বেগম। দুজনেই সংগীতাঙ্গনের কিংবদন্তি। তবে অনেকেই জানেন না, ছেলেবেলায় শাফিন আহমেদের নাম ছিল মনোজিৎ দাশগুপ্ত!

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ১৯৬৭ সালের দিকে গোটা পরিবারসহ পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন তারা। এরপর ভর্তি হন স্কুলে। সেসময়ই পরিবর্তন করা হয় তার নাম। মনোজিৎ দাশগুপ্ত থেকে তিনি হয়ে যান শাফিন আহমেদ।

কিশোর বেলায় মাকে ঘিরে তিন ভাই তাহসিন, হামিন ও শাফিনের হাসিমুখ

নাম পরিবর্তন নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে শাফিন জানিয়েছিলেন, ‘ভারতবর্ষ যখন স্বাধীন হলো, তখন হিন্দু-মুসলিমের মাঝে যে দূরত্ব বা বিবাদ, সেই সময়ে তা প্রবল ছিল। সেখান থেকেই কিন্তু দুটো দেশের জন্ম- ভারত ও পাকিস্তানের। সেজন্য ভারতে থাকাকালীন একজন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে হিন্দু পরিচিতিটা যে রকম প্রয়োজন ছিল, একই রকমভাবে যখন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসলাম তখন দেখা গেল মুসলিম পরিচয়টা খুব জরুরি ছিল। কারণ আমরা স্কুলে ভর্তি হতে পারছিলাম না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাসার ব্যাপারটা ছিল কি, বাবা খুবই প্রগ্রেসিভ একজন মানুষ ছিলেন। ধর্ম নিয়ে তার মধ্যে সে রকম কোনো চিন্তা-ভাবনা ছিল না। উনি গানের জগতের মানুষ, গান নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। আমরা ছোটকাল থেকে বড় হয়েছি আসলে ইসলাম ধর্মকে ঘিরেই। মায়ের কাছ থেকেই এই প্রভাব এসেছে। ইসলাম ধর্মের চর্চাটা বাসায় ছিল। এ ব্যাপারে আব্বার কোনো মন্তব্য ছিল না। উনার কোনো দৃষ্টিভঙ্গি কখনোই তিনি চাপিয়ে দিতে চাননি।’

ছবিটি ২০১২ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ফিরোজা বেগমের স্বামী ও শাফিনের বাবা কমল দাশগুপ্ত’র ১০০ তম জন্মদিন উদযাপন অনুষ্ঠানে তোলা। ফ্রেমবন্দী হয়েছিলেন দেশের চার প্রখ্যাত শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন, সুবীর নন্দী, ফিরোজা বেগম ও শাফিন আহমেদ। একে একে সবাই চলে গেছেন, রয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন (তিনিও বেশ অসুস্থ)। 

শাফিন আহমেদের ডাক নাম ছিল মুনা। পরিবারের অনেকে এ নামেই ডাকে। এ ছাড়া সংগীতাঙ্গনের অনেকে যারা আমাকে ছোটবেলা থেকে চেনে, তখনও এমন তারকাখ্যাতি পাইনি, বয়স ১৭-১৮ হবে; সেই সময়ে যারা চিনতেন তারাও মুনা নামটিই আগে বলেন।

কিংবদন্তি সুরকার কমল দাশগুপ্ত ও প্রখ্যাত নজরুল সংগীতশিল্পী ফিরোজা বেগমের সন্তান শাফিন। যেন সুরের চামচ মুখে জন্মেছিলেন তিনি। বাবার কাছে উচ্চাঙ্গসংগীত আর তবলা, মায়ের কাছে নজরুলসংগীত শিখেছেন। ৯ বছর বয়সে নজরুলের শিশুতোষ গান ‘প্রজাপতি প্রজাপতি’ রেকর্ড করেছেন শাফিন।

কৈশোরে বিটলসসহ বহু ওয়েস্টার্ন অ্যালবাম হাতের নাগালে পেয়েছেন। ইংরেজি গানে মুগ্ধতা জমে; বাড়িতে ড্রামস ও গিটার বাজাতেন। মা-বাবা নাখোশ হননি; বরং আশকারাই দিয়েছেন।

মায়ের সঙ্গে হামিন ও শাফিন

শাফিন আহমেদের মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে প্রখ্যাত গীতিকার ও সুরকার প্রিন্স মাহমুদ বলেছেন, ‘ওনার কণ্ঠটা একদমই আলাদা। অত্যন্ত সুরে গান করেন। একই সঙ্গে বেজ বাজিয়ে গান করা ভীষণ কঠিন কাজ। এটিই তাকে আলাদা করেছে।’

প্রিন্স মাহমুদের লেখা ‘আজ জন্মদিন তোমার’, ‘কী করে সব ভুলে যাই’সহ ১০ টির মতো গান গেয়েছেন শাফিন। মাইলসের বাইরে শাফিনের বেশির ভাগ জনপ্রিয় একক গানের কথা ও সুর করেছেন তিনি।

১৯৭৯ সালে গঠিত হয় বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ড মাইলস। চার দশকের ক্যারিয়ারে ‘ফিরিয়ে দাও’, ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘জ্বালা জ্বালা অন্তরে’, ‘ফিরে এলে না’, ‘হ্যালো ঢাকা’সহ বহু হিট গান উপহার দিয়েছেন শাফিন।

কনসার্টে রীতিমতো ঝড় তুলতেন রক তারকা শাফিন

কনসার্টে রীতিমতো ঝড় তুলতেন রক তারকা শাফিন। গান আর গিটারের তালে শ্রোতাদের হৃদয়ে উন্মাদনা ছড়িয়েছেন। প্রাণশক্তিই তাকে সমসাময়িকদের চেয়ে আলাদা করেছে বলে মনে করেন আরেক ব্যান্ড তারকা মাকসুদ হক।

নব্বইয়ের দশকে কলকাতায় মাইলসের কনসার্টে শ্রোতাদের ঢল নামত। কলকাতার শিল্পীরাও শাফিন আহমেদকে শ্রদ্ধার আসনে বসিয়েছেন। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে কলকাতায় গায়ক অনুপম রায় বলেছেন, মাইলসে শাফিনের গান শুনেই বেড়ে উঠেছেন তিনি। ব্যান্ডটির ভক্ত তিনি। কলকাতার ক্যাকটাস ব্যান্ডের সিধুসহ আরও অনেকেই শাফিনের গানের প্রতি ভালোবাসার কথা জানিয়েছেন।

ব্যান্ড মাইলস-এর সদস্যরা

;