বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) সাংবাদিকদের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শতাধিক সংবাদকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে এই ঘটনার সূত্রপাত।
বিজ্ঞাপন
কে বা কারা এ হামলা করেছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন শিল্পী সমিতির নব নির্বাচিত সভাপতি মিশা সওদাগর।
জানা যায়, এদিন বিকেলে ২০২৪-২৬’র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটি শপথ গ্রহণ করে। সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগরকে প্রথমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু শপথ পাঠ করান। এরপর বাকি সদস্যরা মিশা সওদাগরের নেতৃত্বে শপথ গ্রহণ করেন।
নতুন বিয়ের খবর দিয়ে তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছেন তারকা সংগীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসান খান। গত শনিবার বিয়ের খবর দেন তাহসান। দিনভর সামাজিক মাধ্যমে ট্রেন্ডিংয়ে ছিলেন তিনি। এখনো চলছে তার নববধূকে নিয়ে চুল চেরা বিশ্লেষণ।
তবে বিয়ে নিয়ে আলোচনার মধ্যে ভক্তদের জন্য নতুন গান নিয়ে আসছেন এই তারকা। আজ সন্ধ্যায় গুলশানের এক রেস্তোরাঁয় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন তিনি। ‘একা ঘর আমার’ গানটি নিয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দেবেন এই তারকা।
মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করেছেন চন্দন রায় চৌধুরী। ইউটিউবে অনুপম মিউজিক চ্যানেলে প্রকাশিত হবে। শনিবার পারিবারিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী মেকওভার আর্টিস্ট রোজা আহমেদকে বিয়ে করেছেন তাহসান খান।
স্বৈরাচারী সরকার উৎখাতে ছাত্র-জনতার উত্তাল আন্দোলনের দিনগুলোতে শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে আগুন ঢেলে দিয়েছিলেন র্যাপার হান্নান হোসাইন শিমুল। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে প্রেরণা ও সাহস জুগিয়েছিল হান্নানের ‘আওয়াজ উডা’ গানটি। এ গানের মাধ্যমে পরিচিতি পেয়েছেন তরুণ র্যাপার হান্নান। আন্দোলনের সময় জেলেও যান তিনি।
এবার সেই শিল্পী প্রথম একক অ্যালবাম নিয়ে হাজির হচ্ছেন।অ্যালবামের নাম এখনো চূড়ান্ত করেননি। তবে গণমাধ্যমকে জানালেন, অ্যালবামে মোট নয়টি গান থাকবে। এর মধ্যে কয়েকটি গান রেকর্ড করা হয়েছে।
সম্প্রতি সপ্তম শ্রেণীর ‘ইংলিশ ফর টুডে’ বইয়ে হান্নান ও আরেক র্যাপার সেজানের নাম এসেছে। বিষয়টি নিয়ে হান্নান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘খুবই ভালো লাগার একটি মুহূর্ত। আমরা আগের বইয়ে অনেককে নিয়ে জানতে পেরেছি। পরের প্রজন্ম আমাদের নিয়ে পড়াশোনা করবে, এটা আমাদের জন্য গর্বের মুহূর্ত।’
আন্দোলনের মধ্যে ১৮ জুলাই ‘আওয়াজ উডা’ প্রকাশ করেছিলেন নারায়ণগঞ্জের র্যাপার হান্নান। এরপর গানটি মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। গানটি নিয়ে এর গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘গানটা যখন লিখেছি, তখন শিক্ষার্থীরা রাস্তায় ছিলেন। পরে অল্প কিছু অভিভাবকও নেমেছেন। তবে অনেকে চুপ ছিলেন। কোনো কথা বলছিলেন না, নামছিলেনও না। আওয়াজও তুলতে পারছিলেন না। সেটা দেখেই গানের শিরোনাম করেছি “আওয়াজ উডা বাংলাদেশ”।’ এর মধ্যেই গত ২৫ জুলাই নারায়ণগঞ্জের হান্নানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতে তোলার পর তাকে দুদিনের রিমান্ডেও নেয়া হয়েছিল। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৬ আগস্ট মুক্তি পান এ তরুণ র্যাপার।
সদ্য প্রয়াত কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেতা প্রবীর মিত্রর চার সন্তান। সবচেয়ে ছোট ছেলের নাম সামিউল ইসলাম। ছোট ছেলেকে অকালে হারিয়েছিলেন তিনি। তখন সামিউলের বয়স ছিল ৩০, ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর করেছেন। হঠাৎ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যান সামিউল। জীবদ্দশায় আদরের সন্তানের মৃত্যু তাড়িয়ে বেড়িয়েছে প্রবীর মিত্রকে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রোববার প্রবীর মিত্র মারা যান। যেন প্রিয় সন্তান সামিউলের কাছেই ফিরলেন তিনি। প্রায় ১০ বছর আগে ইউরো দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সামিউলকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেছিলেন এই খ্যাতিমান অভিনেতা।
সাক্ষাৎকারে প্রবীর মিত্র বলেছিলেন, ‘ও (সামিউল) বাইরে খেতে পছন্দ করত। বাইরে থেকে পরোটা নিয়ে এসেছিল। পেটে গ্যাস হয়েছিল। পরে স্ট্রোক হয়ে ছেলেটা মারা গেল। ছোট ছেলের মৃত্যু আমাকে খুব পীড়া দেয়। আমি ওকে ভুলতে পারি না।’
১৯৭৩ সালে অজন্তাকে ভালোবেসে বিয়ে করেন প্রবীর মিত্র। বিয়ের সময় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তিনি। সামিউলের মৃত্যুর আগে ২০০০ সালে স্ত্রী অজন্তা মিত্রও মারা যান। প্রবীর মিত্র বলেন, ‘ওর মায়ের (অজন্তা) সঙ্গে ওর (সামিউল) নব্বই ভাগ মিল ছিল। চোখ, নাক, হাত, গায়ের রং মায়ের কাছাকাছি ছিল।’
প্রবীর মিত্রর চার সন্তানের মধ্যে তিন ছেলে ও এক মেয়ে। মিঠুন মিত্র, ফেরদৌস পারভীন, সিফাত ইসলাম ও সামিউল ইসলাম। সামিউল বাদে বাকি তিনজন বেঁচে আছেন। প্রত্যেকে নিজ নিজ পেশায় প্রতিষ্ঠিত।
আজ সোমবার জোহরের নামাজের পর এফডিসিতে প্রথম জানাজা হয়েছে প্রবীর মিত্রর। দুপুরে তার মরদেহ এফডিসিতে নেওয়া হয়। এরপর চ্যানেল আইয়ে দ্বিতীয় জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে খ্যাতিমান এ অভিনেতাকে।
১৯৪১ সালের ১৮ আগস্ট চাঁদপুরের নতুনবাজার গুয়াখোলায় মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন প্রবীর মিত্র। দাদার বসতবাড়ি কেরানীগঞ্জে। প্রয়াত এ অভিনেতার পুরো নাম প্রবীর কুমার মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হন। স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবরের ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রথম প্রবীর মিত্র ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। যদিও চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে প্রবীর মিত্র ‘নায়ক’ হিসেবে কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। পরে চরিত্রাভিনেতা হিসেবে কাজ করেও তিনি দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন।
‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয়–পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, ‘পুত্রবধূ’সহ চার শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
গতকাল রোববার রাতে অভিমান নিয়েই চলে গেলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের রঙিন সিরাজউদ্দৌলা’খ্যাত প্রখ্যাত অভিনেতা প্রবীর মিত্র। আজ সোমবার জোহরের নামাজের পর এফডিসিতে তার প্রথম জানাজা হয়েছে। এরপর চ্যানেল আইয়ে দ্বিতীয় জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে খ্যাতিমান এ অভিনেতাকে।
গত ৪ তারিখ কিংবদন্তি চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমান চলে যাওয়ার শোক ভুলতে না ভুলতেই প্রবীর মিত্রের চলে যাওয়ার শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েছে শোবিজ অঙ্গন। শেষ বিদায়ে জনপ্রিয় তারকারা ফেসবুকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এই অভিনেতাকে-
ঢাকা অ্যাটাক’খ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা দীপংকর দীপন লিখেছেন, ‘গত কয়েক দিনে আমি টানা মৃত্য সংবাদ শুনে যাচ্ছি। প্রথমত আমার মামাত ছোট ভাই বাপী, এরপর পশ্চিমবঙ্গের পরিচালক আমাদের শুভানুধ্যায়ী অরুণ রায়, সংগীত পরিচালক অম্লান চক্রবর্তীর বাবা আমার গুরুজন, চিত্রনায়িকা অঞ্জনা। আজ পেলাম খ্যাতিমান অভিনেতা প্রবীর মিত্রের প্রয়াণ সংবাদ। প্রবীর মিত্র স্যার ওপারে ভাল থাকবেন। যাদের খবর শুনেছি তারা সবাই কোন না কোনভাবে অসুস্থ ছিলেন। কিন্তু মারা যাবার শরীর খারাপ তাদের ছিল না। আমরা এখন আসলে অসুস্থ হলে আর সারভাইভ করতে পারছেনব না। আমাদের সবাইকে সাবধান হতে হবে। আমি আর কোন মৃত্যুর সংবাদ শুনতে চাই না।’
নির্মাতা ও পরিচালক সমিতির নেতা এসএ হক অলিক লিখেছেন, ‘গত পরশু চলে গেলেন অঞ্জনা আপা, আজকে প্রবীরদা। পরপারে ভালো থাকবেন। এই শূন্যস্থান পূরণ হবার নয়।’
পরিচালক গোলাম সোহরাব দোদুল লিখেছেন, ‘বিদায় কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র।’