‘আমি হিন্দু, তার জন্য কি মাথা নত করে থাকতে হবে’
সরকার পতনের পর চরম বিপাকে পড়েছেন দেশের সংখ্যালঘুরা। এরইমধ্যে হিন্দু, বৌদ্ধসহ সংখ্যালঘু মানুষের উপাসনালয় ভাঙচুর হয়েছে। যার রেশ এসে পড়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিল্পীদের উপরেও।
গানের দল ‘জলের গান’-এর রাহুল আনন্দর ধানমন্ডির পুরো বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। সেখানে ছিল তার সারা জীবনে তৈরি করা তিন হাজারের মতো বাদ্যযন্ত্র! খুলনা বেতারের একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী শিল্পীর বাড়িও ভাঙচুর হয়েছে।
এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষ, গালমন্দ, হুমকি-ধামকি তো রয়েছেই। আজই এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। কিভাবে তিনি এই দুঃসময় পার করছেন সে কথা তার বয়ানে উঠে এসেছে।
চঞ্চল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এতোটা খারাপ সময়ের ভেতর দিয়ে যাবো, সেটি কল্পনাও করিনি। আমি তো সারাটাজীবন মানুষের বিনোদনের জন্য কাজ করে গেছি। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ তো করিনি। রাজনৈতিক একটিভিটির জন্য কতো ডাক পেয়েছি, কখনও সাড়া দিইনি। চাইলে এমপি-মন্ত্রীও হতে পারতাম। অথচ এখন আমি সেই রাজনীতিরই শিকার। আমার ভক্তরাই আমাকে ভুল বুঝছেন। এই কষ্ট বোঝানোর সাধ্য আমার নেই।’
তার ভাষায় স্পষ্ট, কিছু দুষ্কৃতকারী পরিকল্পনা করে তার বিরুদ্ধে মিথ্যে মন্তব্য প্রকাশ করে তার ভক্তদের চটিয়ে দিয়েছে। অভিনেতা ছাত্রদের আন্দোলন সমর্থন করেননি, সেটা প্রমাণ করার চেষ্টা চলছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গান শোনানোর গল্পটাও ভাইরাল হয়ে আছে সোশ্যালে। সব মিলিয়ে চঞ্চল চৌধুরী প্রচণ্ড অস্বস্তি আর হতাশার মধ্যে আছে।
চঞ্চলের পর এবার একই বিষয় নিয়ে কথা বললেন গুণী নির্মাতা অনিমেষ আইচ। তিনি একটু আগেই ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমি সবসময় পূর্ববর্তী সরকারের সমালোচনা করে গেছি। কারো অনুগ্রহ চাই নাই, চাবো ও না নিশ্চয়ই। আমি জন্মগতভাবে হিন্দু। তার জন্য কি আমাকে মাথা নত করে থাকতে হবে? আমি সবসময় সত্যের পক্ষে ছিলাম, আছি। যদি আমাকে জানতে চান, তবে ঘুরে আসুন আমার ফেইসবুক প্রোফাইলে অথবা আমার জীবনচারন। বাংলাদেশে আমার যেন মরণ হয়। আমি ভালোবাসি তোমাদের, যারা বাংলাদেশের ক্ষুধিত পাষান।’
সংখ্যালঘুদের প্রতি এই অন্যায় কেন? এ নিয়ে এখনি কথা বলার সময়। নয়তো বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে পাওয়া সরকারের অনেক বড় দায় থেকে যাবে।