দোরগোড়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, তারকারা কে কার পক্ষে
বিনোদন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দোরগোড়ায় চলে এসেছে। আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এই মহাযজ্ঞ। এবারের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনের আগে পুরো দেশ দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে। প্রত্যেকে চান তার পছন্দের প্রার্থী জয়লাভ করুক।
হলিউড তারকারাও এর বাইরে নন। তারা বরং নিজেদের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাচ্ছেন। দুই প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে নেমেছেন হলিউড তারকারা। কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন, কেউ হাজির হয়েছেন তহবিল সংগঠনের আয়োজনে।
বিজ্ঞাপন
গত মাসেই বিশ্বের শীর্ষ গায়িকা টেইলর সুইফট সমর্থন জানান কমলা হ্যারিসকে। ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে কমলার প্রতি সমর্থনের কথা জানান এ সময়ের বিশ্বসংগীতের অন্যতম বড় তারকা। ইনস্টাগ্রামে সেই পোস্টে সুইফট লিখেছেন, ‘আমি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমলা হ্যারিস ও টিম ওয়ালজকে ভোট দেব।’
২৮ কোটি ৩০ লাখ অনুসারীর উদ্দেশে ৩৪ বছর বয়সী মার্কিন গায়িকা আরও বলেন, ‘আমি কমলা হ্যারিসকে ভোট দেব। কারণ, তিনি অধিকারের জন্য লড়াই করেন এবং আমি বিশ্বাস করি, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য একজন যোদ্ধার প্রয়োজন। আমি মনে করি, তিনি একজন প্রতিভাধর নেত্রী এবং আমি বিশ্বাস করি, আমরা এই দেশে আরও অনেক কিছু অর্জন করতে পারব, যদি আমরা বিশৃঙ্খলা না করে শান্ত হয়ে পরিচালিত হই।’
বিজ্ঞাপন
এ সময়ের আরেক জনপ্রিয় গায়িকা বিয়ন্সেও কমলার পক্ষে। কেবল তা–ই নয়, কমলার নির্বাচনী প্রচারে নিজের গান ব্যবহারের অনুমতিও দিয়েছেন বিয়ন্সে।
সম্প্রতি কমলার নির্বাচনী প্রচারে পারফর্ম করেন অস্কারজয়ী অভিনেত্রী অ্যান হ্যাথওয়ে। এদিন প্রথমবারের মতো খোলাখুলিভাবে কমলাকে সমর্থনের কথা জানান এই অভিনেত্রী।
রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে সব সময়ই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন জর্জ ক্লুনি। গত জুলাই মাসের শেষের দিকেই তিনি কমলার পক্ষে কথা বলেছেন। তখন সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘ঐতিহাসিক এই সফরে আমি কমলার পাশে আছি।’ এখানেই শেষ নয়, গত সেপ্টেম্বরে সুইফট যখন কমলাকে সমর্থনের ঘোষণা দেন, ক্লুনি সেটারও প্রশংসা করেছিলেন।
গত ৭ সেপ্টেম্বর কমলা হ্যারিসকে সমর্থনের ঘোষণা দেন অভিনেতা রবার্ট ডি নিরো। কমলাকে সমর্থন দিয়ে ‘রোমাঞ্চিত’ অনুভব করছেন বলেও জানান প্রখ্যাত এই হলিউড অভিনেতা। তবে কমলার সমর্থকদের অতি আত্মবিশ্বাসী না হতেও সতর্ক করে দেন তিনি।
এ ছাড়া কমলা হ্যারিসের পক্ষে প্রচারে নেমেছেন জনপ্রিয় র্যাপার এমিনেম। গত মঙ্গলবার মিশিগানের ডেট্রয়েটে এক নির্বাচনী প্রচারে কমলার হয়ে কথা বলেন ৫২ বছর বয়সী এই গায়ক। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
সম্প্রতি নিজের ইনস্টাগ্রামে কমলা হ্যারিসের পক্ষে সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছেন অভিনেত্রী সারা জেসিকা পার্কারও। ক্যাপশনে লিখেছেন, যারা যুক্তরাষ্ট্রকে ভালোবাসেন, তাদের কমলার পক্ষেই থাকা উচিত। এ ছাড়া কমলাকে সমর্থন জানিয়েছেন লিজ্জো, ম্যাট ডেমন, জেন ফন্ডা, বেন স্টিলার, জেনিফার লরেন্সের মতো প্রথম সারির তারকারা।
অন্যদিকে, তারকা শেফ পাউলা ডিন আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্পের পক্ষে প্রচারও চালিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্পের পক্ষে আছেন অভিনেতা ডেনিস কোয়েড, জন স্কেইনডার। জন তো গত বছর জো বাইডেন নিয়ে মন্তব্যের জন্য প্রবলভাবে সমালোচিতও হন; তখনই তার রাজনৈতিক অবস্থানও স্পষ্ট হয়। ট্রাম্পের সমর্থনে ডেনিস বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প যা করেছেন, তার সবই আমার পছন্দ।’
সংগীত তারকা জেসন আলডিনও ট্রাম্পের বড় সমর্থক। গত জুলাই মাসে তিনি ট্রাম্পের ছবি পোস্ট করে লিখেছিলেন, ‘যোদ্ধাদের দেখতে এমনই হয়।’ অভিনেতা ও গায়ক জাকারি লিভাইও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টকে সমর্থন করছেন।
এ ছাড়া ট্রাম্পকে সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছেন অ্যাম্বার রোজ, জেসন আলডিন, স্টিভ ওয়েন, রোসানে বার, জন ভোয়েট, ৫০ সেন্ট প্রমুখ।
গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অভিনেতা মুশফিক আর ফারহান। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গতকাল শুক্রবার রাতে তাকে আইসিউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) নেওয়া হয়।
একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, নাটকের শুটিংসেটে ফারহান হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শুক্রবার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এরপর তাকে দ্রুত আইসিউতে নেওয়া হয়। সাফা কবিরের সঙ্গে নাটকের শুটিং করছিলেন ফারহান। শুটিং শেষের দিকে এই ঘটনা ঘটে। শুটিং প্যাকড আপ ঘোষণা করার পর সবাই ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এসময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। প্রচণ্ড শীত শীত অনুভূত হচ্ছিল তার। নাটকের প্রোডাকশন টিম দ্রুত ৫-৬টি কম্বল দিয়ে তার শীত নিবৃত করা যাচ্ছিল না। এরপরই তাকে রাজধানীর আদাবর থানাধীন এলাকার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতাল সূত্র বলছে, অভিনেতা মুশফিক আর ফারহান জ্বর ও শরীর ব্যাথা নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। আজ বিকেলে তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে চিকিৎসকেরা বিস্তারিত জানাবেন।
আজ এই অভিনেতার নাটকের শুটিং ছিল। সেই শুটিং বাতিল করা হয়েছে। কী কারণে শুটিং বাতিল করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি মুশফিক আর ফারহানের হাসপাতালে ভর্তির খবর জানাতে চাইছেন না। পরে সেই হাসপাতালের জনসংযোগ বিভাগ দেশ রূপান্তরকে বিষয়টি নিশ্চিত করে।
একটু আগেই একাধিক মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এ সময়ের জনপ্রিয় নাট্য অভিনেতা মুশফিক আর ফারহান। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গতকাল (শুক্রবার) রাতে নাকি তাকে আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) নেওয়া হয়!
সেই খবরে বলা হয়েছে- মুশফিক আর ফারহানের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, জ্বর ও শরীর ব্যাথার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শুক্রবার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এরপর তাকে দ্রুত আইসিইউতে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বার্তা২৪.কম থেকে ফারহানের ফোনে কল দিলে সেটি তিনি বা অন্য কেউ ধরেনি। এরপর ঘটনাটি নিয়ে জানতে ফারহানের অনেক নাটকের নায়িকা সামিরা খান মাহির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি নিজেও খবরটি শুনে ঘাবড়ে গেছি। তাই তাড়াতাড়ি প্রথমে ফারহানের ফোনেই কল করি, কিন্তু তাকে পাইনি। পরে তার পরিবারের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। কিন্তু তাদের কেউই আমার ফোন ধরেননি। তাই আমিও বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছি। এরচেয়ে বেশিকিছু এখন বলতে পারছি না। বিস্তারিত জানলে আপনাকে জানাবো।’
হাসপাতালের বিছানা থেকে আর ঘরে ফেরা হলো না জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত খ্যাতিমান চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমানের। ১০ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে শুক্রবার রাত ১টা ৩৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই নায়িকা। তবে মৃত্যু নিয়ে এবার বেঁধেছে রহস্যের জাল।
শেষ বিদায়ের জন্য অভিনত্রেীকে সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে গোসল সম্পন্ন করা হয়। সে সময় তার শরীরের নানা জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখা যায় বলে গণমাধ্যমকে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে। এরপর অঞ্জনার মরদেহ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে নেওয়া হলে, সেখানেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়।
গত বছরের ডিসেম্বর থেকেই অসুস্থ ছিলেন এই নায়িকা। এরপর শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন না হলে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। চিকিৎসকের পরামর্শে চেকআপের পরে তার রক্তে ইনফেকশন ধরা পড়ে। এক সপ্তাহের বেশি সময় চিকিৎসা নিলেও কোনো উন্নতি হয়নি অঞ্জনার। পরে বুধবার (০১ জানুয়ারি) তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে অঞ্জনাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন অঞ্জনা। চিত্রনায়ক ও প্রযোজক সোহেল রানার হাত ধরে সিনেমায় পা রাখেন তিনি। অঞ্জনার অভিনয় জীবন শুরু হয় ১৯৭৬ সালে বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। তবে তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র শামসুদ্দিন টগর পরিচালিত ‘দস্যু বনহুর’। রহস্যভিত্তিক এ ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন সোহেল রানা।
২০ দিনের মতো অসুস্থ থেকে অবশেষে জীবন যুদ্ধে পরাজিত হলেন ঢালিউডের অন্যতম সফল অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান। শুক্রবার দিনগত রাত ১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
দক্ষ অভিনয়, গ্ল্যামার, ফ্যাশন সেন্স আর নৃত্যে পারদর্শীতার জন্য তিনি হয়ে উঠেছিলেন আশির দশকের লেডি সুপারস্টার। তার নামে অসংখ্য সিনেমা সুপারহিট বাম্পারহিট হয়েছে। সেই ছবির তালিকা নিজের ফেসবুকে মাঝে মধ্যেই পোস্ট করতেন এই নায়িকা। বয়স সত্তর পেরোলেও চির যৌবনা এই তারকা মৃত্যুর ক’দিন আগ পর্যন্ত কাজ করে গেছেন। কোন অনুষ্ঠানে গেলে স্বভাবসুলভ কারিশমা দিয়ে হয়ে উঠতেন মধ্যমণি। গল্প আড্ডা হাসি আর মিষ্টি ব্যবহারে ভরিয়ে রাখতেন সবার মন। তাইতো এই নায়িকার বিদায়ে ফেসবুক যেন হয়ে উঠেছে অঞ্জনাময়। অনেক শিল্পীই তো চলে যান, কিন্তু অঞ্জনাকে ঘিরে ফেসবুকে যতো পোস্ট না সচারচর দেখা যায় না। শোবিজের তারকারা এই শিল্পীকে ঘিরে জানিয়েছেন শোকবার্তা। সেখান থেকে কিছু পোস্ট তুলে ধরা হলো-
কিংবদন্তি অভিনেতা সোহেল রানার হাত ধরে ঢালিউডে মাত্র ১৬ বছর বয়সে নায়িকা হয়ে আবির্ভাব হয়েছিলো অঞ্জনার। সেই সোহেল রানা আজ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘না ফেরার দেশে চলে গেল অঞ্জনা। চলচ্চিত্র জগতের একটা আলো নিভে গেল। আল্লাহ তোমাকে বেহেস্ত নসিব করুন গেল।’
ঢালিউডের বর্তমান মেগাস্টার শাকিব খান লিখেছেন, ‘অঞ্জনা ম্যাডামের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।’
দুই বাংলার নন্দিত অভিনেত্রী জয়া আহসান অঞ্জনার পুরনো দিনের একটি ছবি শেয়ার করে তার ফ্যান পেজে লিখেছেন, ‘লেজেন্ডারি অ্যাকট্রেস অঞ্জনা রহমান ম্যাডামের আত্মার শান্তি কামনা করি।’
ঢালিউড কুইন শাবনূর লিখেছেন, ‘আমার অগ্রজ সহকর্মী, জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা ও নৃত্যশিল্পী শ্রদ্ধেয় অঞ্জনা রহমান আর আমাদের মাঝে নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিঊন)। আমাদের সকলের প্রিয় অঞ্জনা আপার এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করা গুণী এই শিল্পীর অকাল মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তার রূহের মাগফেরাত কামনা করছি।’
প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা মিশা সওদাগর লিখেছেন, ‘কিংবদন্তি বাংলাদেশি চিত্রনায়িকা অঞ্জনা আপা আর নেই। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন..’
অঞ্জনার মৃত্যুর খবর শুনে জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পূজা চেরী লিখেছেন, ‘ভেতরটা ধঁক করে উঠলো, ভালো থাকবেন আপনি যেখানেই থাকুন।’
জনপ্রিয় উপস্থাপক ও নির্মাতা দেবাশীষ বিশ্বাস লিখেছেন, ‘‘ঢাকা শহর আইসা আমার আশা ফুরাইসে, লাল লাল নীল নীল বাত্তি দেইখা নয়ন জুড়াইসে’ আশা ফুরানোর আগেই আপনার জীবন ফুরিয়ে গেলো, নয়ন জুড়ানোর আগেই আপনার নয়ন বন্ধ হয়ে গেলো! আপনি চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে। আমার বাবা দিলীপ বিশ^াসের পরিচালিত ‘জিঞ্জির’, ‘আনারকলি’ এবং ‘অংশীদার’- এই তিন তিনটি সুপারহিট চলচ্চিত্রের নায়িকা হয়ে আপনি ছিলেন আমার বাবা মা তথা আমাদের পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এরপর আমার কর্মজীবনে কতশত অনুষ্ঠানে আপনার সাথে দেখা হওয়া, একসাথে কাজ করার সৌভাগ্য হওয়া, সবই স্মৃতি হয়ে গেলো! কোন মৃত্যুই কাম্য নয়, কিন্তু প্রবীণ হয়েও এত উচ্ছ্বল, চঞ্চল, আনন্দদায়ক নবীন প্রাণের অকালপ্রয়াণ মেনে নেয়া ভীষণ কষ্টকর! এরকমই প্রানোচ্ছ্বল কাটুক আপনার পরপার জীবন, আমার প্রিয় অঞ্জনা আন্টি।’’
চিত্রনির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক লিখেছেন, ‘না ফেরার দেশে চলে গেলেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত চলচ্চিত্র শিল্পী অঞ্জনা রহমান। শোক ও শ্রদ্ধা আপনার জন্য।’
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী শাহনূর লিখেছেন, ‘প্রিয় অঞ্জনা দিদিকে সকাল ১১টায় শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তার মরদেহ বিএফডিসিতে নিয়ে যাওয়া হয়। বাদ জহুর বিএফডিসি প্রাঙ্গনে ১ম জানাজা এবং দ্বিতীয় জানার জন্য তেজগাঁও চ্যানেল আই-এ নিয়ে যাওয়া হবে, সর্বশেষ বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে। আমার ভীষণ কষ্ট লাগছে, বিদায় মুহূর্তে দিদিকে একটা বারের জন্য দেখতে পেলাম না। আমি এখন আমেরিকাতে আছি। আপনারা সবাই দিদির জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করেন। আমিন।’
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক লিখেছেন, ‘আমাদের সকলের প্রিয় মানুষ, প্রিয় অভিনেত্রী, অঞ্জনা আপু ইন্তেকাল করেছেন। আপনি অনেক ভালো মানুষ ছিলেন আপু। মিস করবো আপনাকে।’
জিঙ্গেল কিং’খ্যাত রিপন খান লিখেছেন, ‘অঞ্জনা আপা আর নেই! আমাকে তিনি আর কখনো হিরো বলে ডাকবেন না! না ফেরার দেশে চলে গেলেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত চলচ্চিত্র শিল্পী সবার প্রিয় অঞ্জনা রহমান।’
অভিনেতা সাজু খাদেম লিখেছেন, ‘বৈচিত্রময় জীবন ছেড়ে চলে গেলেন চিত্র নায়িকা অঞ্জনা।’
এ প্রজন্মের চিত্রনায়িকা তানহা তাসনিয়া লিখেছেন, ‘আমি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছি না আপু তোমার হাসিমুখটা আর কোনদিন দেখতে পারবো না! আজকে দেশে এসে ভাবছিলাম তোমাকে দেখতে যাবো, কিন্তু তার আগেই তুমি চলে গেলে! লিভিং লেজেন্ডদের মধ্যে একমাত্র তুমিই সেরা ছিলে, সবার সাথে তোমার সম্পর্ক ভালো ছিলো, কোনো ইগো নেই তোমার! আল্লাহর কাছে দোয়া করি তুমি যেখানেই থাকো ভালো থাকো।’
নব্বই দশকের সাড়া জাগানো চিত্রনায়িকা একা লিখেছেন, ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, না ফেরার দেশে চলে গেলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমান। মেনে নিতে খুবই কষ্ট হচ্ছে, আল্লাহ যেন আপাকে জান্নাতবাসী করেন, আমীন।’
চিত্রনায়িকা বিপাশা কবির লিখেছেন, ‘আহারে আপু কত স্মৃতি, মেনে নিতে পারতেছি না তুমি আর নাই। এতো দূরে আমি পারলাম না তোমাকে দেখতে যেতে.. শেষ দেখাও আর হলো না। আপনারা সবাই আপুর আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া করবেন।’
চিত্রনায়ক আমান রেজা লিখেছেন, ‘আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করুন।’
চিত্রনির্মাতা বুলবুল বিশ্বাস লিখেছেন, ‘দূর থেকে দেখা মানুষটা এত দ্রুত এত দূরে চলে যাবে জানলে আর একটু কাছ থেকে দেখতাম, জানতাম। জানাতাম, আপনি কতখানি এই ইন্ডাস্ট্রির জন্য ছিলেন। বিদায় চিত্রনায়িকা অঞ্জনা।’
সঙ্গীতশিল্পী স্বপ্নিল সজীব শেষের দিকে অঞ্জনা রহমানের সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ট ছিলেন। তার সঙ্গে কাজও করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘কত স্মৃতি তোমার সাথে, কিভাবে ভুলবো? না ফেরার দেশে চলে গেলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র শিল্পী অঞ্জনা সুলতানা। ওপারে ভালো থেকো, আনন্দে থেকো।’
চিত্রনায়ক সাঞ্জু জন লিখেছেন, ‘ওপারে ভালো থেকো অঞ্জনা আপা।’
চিত্রনায়িকা শিরিন শিলা লিখেছেন, ‘আহা এতো সুন্দর হাস্যজ্জ্বল, প্রাণবন্ত মানুষটি নাকি চিরবিদায় জানিয়ে চলে গেলো! অঞ্জনা আপুর কাছে থেকে শিখেছি কিভাবে হাসি মুখে মানুষের সাথে কথা বলতে হয়। কিভাবে মানুষকে সম্মান দিতে হয়! আমার পরিবারের প্রতিটি অনুষ্ঠানে তুমি চলে এসেছো আমার বাসায়। কিছুদিন আগের এই স্মৃতি গুলো দেখে কষ্ট পাচ্ছি। আর দেখা হবে না! ভালো থেকো আপু, আল্লাহ তোমাকে ভালো রাখুক। তোমাকে আমরা কোনোদিন ভুলবো না।’
ফ্যাশন ডিজাইনার পিয়াল রহমান কয়েক বছর আগে অঞ্জনাকে একটি ফটোশুটে একেবারে নতুন রূপে হাজির করে বেশ সাড়া ফেলেছিলেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমার দেখা বাচ্চা একটা মেয়ে, অঞ্জনা আপা ভালো থেকো। এতো মানুষের ভালোবাসা নিয়ে তুমি চলে গেলে, এটাই বা কয়জন পারে।’
জনপ্রিয় মডেল সৈয়দ রুমা লিখেছেন, ‘না ফেরার দেশে চলে গেলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র শিল্পী অঞ্জনা রহমান।’
সঙ্গীতশিল্পী আলিফ আলাউদ্দিনের বাবা কিংবদন্তি সঙ্গীতকার আলাউদ্দিন আলী অঞ্জনার অনেক ছবির সঙ্গীত করেছেন। সেই সুবাদে তাদের ছিলো পারিবারিক সম্পর্ক। তিনি লিখেছেন, ‘আহা অঞ্জনা আন্টি, গত বছর যখন দেখা হলো কত আদর করলেন।’
সাংবাদিক সৈকত সালাহউদ্দিন লিখেছেন, ‘অঞ্জনা আপাও বিদায় নিলেন। আমাদের সোনালী দিন বা যাকে বলি বাংলাদেশের সিনেমার গৌরবের ইতিহাস সে সময়ের আরো একজন আর রইলেন না আমাদের মাঝে। আপাকে দেখতে হাসিখুশী লাগতো। সেজেগুজে পরিপাটি থাকতেন। তা নিয়ে আবার একশ্রেণীর মানুষ হাসিঠাট্টা করতেন। আমরা সিনিয়র সিটিজেনদের এভাবে আসলে বিষন্ন করে ফেলি। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিও সিনিয়র শিল্পীদের নীরবে মেরে ফেলে। আসলে টাকা নয় কাজের ক্ষুধায় তাদের মনটা আসলে মরে যায়। তারা আমাদের সাথে মিশে আনন্দে থাকতে চান। তখন আমরা তাদের সহজ মনে করে ফেলি। তার প্রফাইল ঘুরে আবারও লজ্জা পেলাম। কার কবে জন্মদিন কার কবে মৃত্যুদিন কিছুই ভুলেন নাই। আমরা ভুলে যাই। এই ছবিতে আমাদের দিকপাল অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা ভাইও আছেন। আপা বলতেন আমার ওস্তাদ। কারণ সোহেল রানার ‘দস্যু বনহুর’ সিনেমায় পর্দায় মুখ দেখান অঞ্জনা। আপা বিদায়। একদিন আবার সবাই আমরা এক হবো। ভালো থাকুন। আমিন।’
অভিনেত্রী মনিরা মিঠু লিখেছেন, ‘বেঁচে থাকা অঞ্জনাদের প্রতিদিন মৃত্যু হয়। মরার পর খবর হয়, শেষ প্রাপ্তি হয়।’
এছাড়া অঞ্জনার আত্মার শান্তি কামনা করেছেন চিত্রনায়িকা কেয়া, মিষ্টি জান্নাত, আইরিন সুলতানাসহ শোবিজের বিভিন্ন পেশার মানুষ।