বিদেশের পর দেশের চলচ্চিত্র উৎসবের জুরি বাঁধন
তার প্রাপ্তির ঝুলি যে কোন শিল্পীকে অনুপ্রানীত করবে। পেয়েছেন দেশের সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার, ডেইলি স্টার ওটিটি অ্যাওয়ার্ড, বািইফাসহ দেশের অন্য সব প্রেস্টিজিয়াস অ্যাওয়ার্ড তো পেয়েছেনই। তবে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন সেরা অভিনেত্রী ক্যাটাগরীতে এশিয়া প্যাসিফিক অ্যাওয়ার্ড জয় করে। তিনিই সেই অভিনেত্রী যার সিনেমা (রেহানা মরিয়ম নূর) বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসের প্রথম সিনেমা হিসেবে কান চলচ্চিত্র উৎসবে অফিসিয়াল সিলেকশন পায়। এবং এখন পর্যন্ত দেশের সেই একটি ছবিই এই সস্মান পেয়েছেন।
এতোক্ষণে বুঝে গেছেন কার কথা বলা হচ্ছে। তিনি আজমেরী হক বাঁধন। যিনি ঘুরেছেন দেশ-বিদেশের বড় বড় চলচ্চিত্র উৎসবে। এরপর তাকে নির্বাচন করা হয় জুরি বোর্ড মেম্বার হিসেবে। ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত আইএমটুমুরো চলচ্চিত্র উৎসব ও ভারতের সম্মানজনক বেঙ্গালরু চলচ্চিত্র উৎসবের জুরি হিসেবে তাকে মনোনীত করা হয় এ বছরের শুরুর দিকে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বাঁধন দিলেন নতুন সুখবর। তিনি এবার দেশের সবচেয়ে বড় উৎসব ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর জুরি হিসেবে মনোনীত হয়েছে।
আগামী ১১ জানুয়ারি শুরু হবে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২৩তম আসর। ৯ দিনব্যাপী উৎসবে প্রদর্শিত হবে ৭৫টি দেশের ২৫০টির মতো সিনেমা। এবারের উৎসবে জুরি বোর্ডের দায়িত্ব দেখা যাবে চলচ্চিত্র অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনকে। আজ উৎসবের ফেসবুক পেজে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
২৩তম ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে ওমেন ফিল্মমেকার বিভাগে জুরি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বাঁধন। এ বিভাগে জুরির দায়িত্বে আরও আছেন লন্ডনপ্রবাসী বাংলাদেশের অভিনেত্রী ও নির্মাতা লিসা গাজী, চিনের মেই পো রেইনবো ফং এবং ইরানি অভিনেত্রী হুদা মোগাাদ্দাম মানিশ।
ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জুরির দায়িত্ব পাওয়াটা সম্মানের বলে মনে করেন অভিনেত্রী বাঁধন। উৎসবে অংশ নিয়ে নতুন অভিজ্ঞতা নিতে উন্মুখ তিনি। বাঁধন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘অনেক বছর ধরে ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজিত হচ্ছে। এমন সম্মানজনক একটি উৎসবে জুরি হিসেবে অংশ নেওয়া আমার জন্য সম্মানের, অনেক আনন্দের। অপেক্ষায় আছি বাকি জুরিদের সঙ্গে কাজ করার।’
বাঁধন আরও বলেন, ‘আমার কাছে ফেস্টিভ্যাল মানেই ইন্টারেস্টিং বিষয়। “রেহানা মরিয়ম নূর” সিনেমার জন্য অনেক ফেস্টিভ্যালে যেতে হয়েছে। কান উৎসব থেকে শুরু করে পৃথিবীর বড় বড় উৎসবে শিল্পী হিসেবে অংশ নিয়েছি। তবে একজন বিচারক হিসেবে ফেস্টিভ্যালে উপস্থিত থাকা, সিনেমা দেখা, সেগুলো বিচার করা খুব চ্যালেঞ্জিং এবং একসাইটিং। নতুন নতুন অনেক মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়, এটাও ভীষণ আনন্দের।’
এর আগে ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত আইএমটুমুরো চলচ্চিত্র উৎসব ও বেঙ্গালুরু চলচ্চিত্র উৎসবে জুরি হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা আছে বাঁধনের। তবে দুই উৎসবেই যোগ দিয়েছিলেন অনলাইনে। এবারই প্রথম সশরীরে কোনো উৎসবের জুরি হিসেবে অংশ নেবেন বাঁধন। তিনি বলেন, ‘কাজ থাকায় ২০২৩ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ব্রাসেলসের আইএমটুমুরো ফেস্টিভ্যালে অনলাইনে যুক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছিলাম। এ ছাড়া ভিসা না দেওয়ার কারণে ভারতের বেঙ্গালুরু উৎসবে জুরি হিসেবে উপস্থিত হতে পারিনি। যদিও কর্ণাটক রাজ্য থেকে আমাদের দেশের ভারতীয় হাইকমিশনের নিকট অনুরোধ করা হয়েছিল আমার ভিসার জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভিসা না পাওয়ায় অনলাইনে যোগ দিতে হয়েছিল। এবারই প্রথম সশরীরে জুরি হিসেবে ফেস্টিভ্যালে থাকতে পারব এটা আমার জন্য অনেক আনন্দের। উৎসবটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সবাইকে উৎসবে এসে দেশ-বিদেশের সিনেমার দেখার আমন্ত্রণ জানাই।’