এলআরবি ব্যান্ডের সঙ্গে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী বালামের যুক্ত হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় গত ৫ এপ্রিল। এর ১০ দিন না পেরোতেই আবারও খবরের শিরোনামে ব্যান্ডটি। এলআরবি নয়, এখন থেকে ‘বালাম অ্যান্ড দ্য লিগ্যাসি’ নামে কনসার্টে সংগীত পরিবেশন করবেন তারা।
এলআরবি গিটারিস্ট আবদুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ‘এলআরবি ব্যান্ডের প্রাণপুরুষ আইয়ুব বাচ্চুর প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা ও সম্মান রেখে আমরা কাজ করে যেতে চাই। তাই বালামকে যুক্ত করেছি আমরা। কিন্তু আইয়ুব বাচ্চুর পরিবারের সদস্যরা এলআরবি নামটি ব্যবহার না করার জন্য আমাদের কাছে বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন। তাদের সম্মান জানিয়ে আমরা নামটি আর ব্যবহার করবো না। এখন থেকে আমরা বালাম অ্যান্ড দ্য লিগ্যাসি নামে বাজাবো-গাইবো।’
ব্যান্ডটির বর্তমান লাইনআপ: বালাম (ভোকাল ও গিটার), স্বপন (বেজ গিটার) , মাসুদ (গিটার), রোমেল (ড্রামস) ও শামীম আহমেদ (সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার)।
১৯৯০ সালের ৫ এপ্রিল আইয়ুব বাচ্চুর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় এলআরবি। শুরুতে ব্যান্ডটির নাম রাখা হয়েছিল লিটল রিভার ব্যান্ড (এলআরবি)। ১৯৯৭ সালে এলআরবি’র অর্থ দাঁড়ায় লাভ রানস ব্লাইন্ড।
গত বছর ১৬ অক্টোবর রাতে রংপুরে শেষ কনসার্ট করেন আইয়ুব বাচ্চু। ১৭ অক্টোবর ঢাকায় ফেরেন তিনি। ১৮ অক্টোবর সকালে নিজ বাসায় হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুবরণ করেন এই কিংবদন্তি মিউজিশিয়ান।
দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যান্ড এলআরবি’র দলনেতা আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন একাধারে গায়ক, গিটারিস্ট, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক। গিটারের জাদুকর হিসেবে আলাদা সুনাম ছিল তার। ভক্তদের কাছে তিনি ‘এবি’ নামেও পরিচিত।
হাবিব ওয়াহিদকে নতুন শতাব্দির বাংলা গানের অন্যতম আকর্ষণ বলা যায়। তিনি বাংলাদেশের গানে ভিন্নতা এনেছেন। সবচেয়ে বড়কথা তিনি স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। ফলে এ দেশের সব শিল্পী তার সঙ্গে গান করতে চাইবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সবার তো আর সেই সুযোগ হয় না। সেদিক থেকে আতিয়া আনিসা বেশ সৌভাগ্যবান।
গত বছরই তিনি হাবিবের সঙ্গে প্রথমবার গেয়েছিলেন ‘হোক বাড়াবাড়ি’ শিরোনামের একটি গান।
আতিয়া আনিসা নিজেও এ প্রজন্মের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী। পেশাগত সংগীত ক্যারিয়ার অল্প দিনের হলেও তার অর্জনের ঝুলি বেশ পরিপূর্ণ! এরইমধ্যে তিনি সেরা গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছেন। ‘পরাণ’ সিনেমার ‘চলো নিরালায়’ গানটি গেয়ে প্রথমসারির শিল্পীর কাতারে উঠে এসেছেন তিনি। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ায় নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক কনসার্ট শেষ করে দেশে ফিরেছেন আনিসা।
যাই হোক, বছর ঘুরতে না ঘুরতে হাবিব-আনিসা হাজির দ্বিতীয় নিবেদন ‘তোমার আদরে’ নিয়ে। গত ১৭ মে গানটি প্রকাশিত হয়েছে হাবিব ওয়াহিদেও অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে।
অমিতা কর্মকারের কথায় এই গানের সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন হাবিব ওয়াহিদ। আপাতত অডিও ভার্সন বের হয়েছে। নতুন এই গানে কেমন সাড়া পাচ্ছেন জানতে চাইলে আতিয়া আনিসা বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি সত্যিই এতোটা সাড়া আশা করিনি। কারণ এখন সবাই বলেন ভিডিও ছাড়া অডিও গান তেমন কেউ শোনেই না। সে হিসেবে এই গানের অডিওটি দারুণ সাড়া পাচ্ছে। তবে ইউটিউবের কমেন্টে বেশিরভাগ শ্রোতারই অনুরোধ, গানটির যেন ভিডিও করা হয়। তাই আমরা পরিকল্পনা করেছি গানটির ভিডিও প্রকাশ করব।’
আনিসা আরও জানালেন, হাবিব ওয়াহিদের গানের ভক্ত তিনি অনেক আগে থেকেই। তার সঙ্গে কাজ করা মানে নতুন কিছু শেখা, নিজেকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করা। তাইতো দ্বিতীয় গান প্রকাশের আগেই হাবিবের সঙ্গে আরও তিনটি গান করে ফেলেছেন আনিসা। প্রতিটি গানই নিয়েই আশাবাদী তরুণ এই শিল্পী।
সদস্যপদ ফিরে পেয়ে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করলেন জায়েদ খান
বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বিনোদন
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং এ সময়ের ভাইরাল নায়ক জায়েদ খানের সদস্য পদ বাতিল হওয়ার ঘটনা শোবিজে বেশ আলোচিত হয়। তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক নিপুণের নামে জন সম্মুখে আজে বাজে মন্তব্য করার দায়ে তার সদস্যপদ বাতিল করা হয়।
গত ১৯ এপিল জায়েদ খান সমর্থিত মিশা সওদাগর-ডিপজল প্যানেল শিল্পী সমিতির দায়িত্ব নেওয়ার পর অনেকেই ধারণা করছিলেন দ্রুতই জায়েদ তার সদস্য পদ ফিরে পাবেন। তবে একই কারণে যে নিপুণকে উল্টো সদস্য পদ হারাতে হবে সেকথা হয়তো কেউ ভাবনাতেও আনেননি। সম্প্রতি নিপুণও জন সম্মুখে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডিপজলকে নিয়ে কুরূচিকর মন্তব্য করেছেন বলে দাবী মিশা-ডিপজল প্যানেলের। ফলে জায়েদ খানের সদস্য পদ বাতিল হলে নিপুণের ক্ষেত্রে কেন একই সিদ্ধান্ত হবে না জানতে চেয়ে শিল্পী সমিতিতে নোটিশ দিয়েছে বর্তমান কমিটি। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে নিপুণ অবশ্য বলেছেন, তার সদস্যপদ বাতিল করা হলে তিনি আইনের আশ্রয় নেবেন।
যাই হোক আজ জায়েদ খানের সদস্য পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি ডি এ তায়েব জানান, জায়েদ খান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে বক্তব্য দিয়েছিল তার যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা দিয়েছে। তা খতিয়ে দেখার পর সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এক প্রজ্ঞাপনেও বিষয়টি জানিয়েছে শিল্পী সমিতি। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বর্তমান কমিটির সভাপতি মিশা সওদাগরও।
ইতোমধ্যে সদস্যপদ ফিরে পাওয়ার চিঠি পেয়েছেন জায়েদ খান। এরপর তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অন্যায়ভাবে আমার সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু মিশা-ডিপজল ভাই পরিষদ সেই অন্যায় প্রশ্রয় না দিয়ে সঠিক তদন্ত করে সদস্যপদ ফিরিয়ে দিয়েছেন। এজন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’
এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে জায়েদ খান বলেন, ‘তখন নতুন কমিটিকে ফুলের মালা পরিয়ে দিয়ে তিনি (নিপুণ) বলেছিলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। অথচ এত দিন পরে উনার মনে হলো, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। এটা দ্বৈতনীতি! আলোচনায় থাকা অথবা কারও প্ররোচনায় এমন কাজ করেছেন তিনি।’
জায়েদ এটাকে নোংরা মানসিকতা উল্লেখ করে বলেন, ‘শিল্পীরা এত জঘন্য হতে পারে না। তার কারণে শিল্পীদের বদনাম হচ্ছে। আশা করি, শিল্পীরা সবাই মিলে উনাকে প্রতিহত করবে।
দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে তারকারা নানা চরিত্র হয়ে হাজির হন পর্দায়। চরিত্রগুলো কখনো দর্শকে হাসায়, কখনো কাঁদায়, কখনো বিষণ্ন করে আবার কখনো ভাবনার জগতে নিয়ে যায়। এতো এতো চরিত্রের ভিড়ে তারকার কাছে তার অভিনীত সেরা চরিত্র কোনগুলো, তা নিয়ে বার্তা২৪.কমের নতুন বিভাগ ‘তারকার সেরা ৫ চরিত্র’। এ বিভাগের আজকের তারকা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাসিদ রণ
আপনার অভিনীত সেরা ৫টি চরিত্র নিয়ে কথা বলতে চাই...
শিল্পী হয়ে নিজেই নিজের সেরা কাজগুলো নিয়ে বলাটা কঠিন। কারণ সবকটি কাজই তো সর্বোচ্চ অনেস্টি দিয়ে করার চেষ্টা করে থাকি। তারপরও নিজের ভালোলাগা তো বটেই, সেই সঙ্গে দর্শক ও সমালোচকপ্রিয়তার কথা বিবেচনা করে ৫টি চরিত্রের কথা বলছি...
‘দারুচিনি দ্বীপ’-এর জরী
অনেকেই হয়তো জানেন, লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে ‘দারুচিনি দ্বীপ’ সিনেমা দিয়ে আমার পেশাগত অভিনয়জীবন শুরু। হুমায়ূন আহমেদের মতো কথাসাহিত্যিকের গল্প, তৌকীর আহমেদের মতো অভিনেতার নির্মাণ এবং ইমপ্রেস টেলিফিল্মের প্রযোজনায় ছিল ছবিটি। সবমিলিয়ে আমার শুরুটা দারুণ হয়েছিল বলতেই হয়। এই ছবির কেন্দ্রীয় নারী চরিত্র ‘জরী’। সেই চরিত্রে আমি অভিনয় করি। একে তো প্রথম যে কোন কিছুর প্রতি মানুষের আলাদা দুর্বলতা থাকে। তারওপর জরি চরিত্রটি সত্যিই অনবদ্য। একজন তরুণী, যে আবার চোখে দেখে না তার জীবনযাপন, সংগ্রাম, সমাজে অ্যাকসেপ্টেন্স-এর কথা বলা হয় চরিত্রটিতে। শুরুতেই বেশ চ্যালেঞ্জিং একটি চরিত্র করার সুযোগ পেয়েছিলাম। ছবিটি মুক্তির পর সবার কাছ থেকে দারুণ সাড়া পাই। প্রথম ছবির জন্য আমি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারও পাই। সবমিলিয়ে ‘দারুচিনি দ্বীপ’-এর জরি আমার প্রথম পছন্দের চরিত্র।
‘ছুঁয়ে দিলে মন’-এর নীলা
‘ছুঁয়ে দিলে মন’-এর নীলাও আমার খুব প্রাণের কাছের একটি চরিত্র। শুধু এজন্য না যে সিনেমাটি একইসঙ্গে সুপারহিট এবং সমালোচকপ্রিয়। এই চরিত্রটি আমার চোখের সামনে তৈরী করেছিলেন নির্মাতা শিহাব শাহীন। ফলে আমি চরিত্রটির মধ্যে ঢুকে গিয়েছিলাম শুরু থেকেই। এরপর নিজের মধ্যে তা লালন করেছি দীর্ঘদিন। এই চরিত্রে আমি শুধু অভিনয়ই করিনি, এর পুরো লুক কেমন হবে, কি ধরনের সাজ পোশাক হবে সবটাই আমার আইডিয়া ছিল। ফলে এই চরিত্রটির প্রতি আমার দুর্বলতা অণ্যরকম। রোমান্টিক গল্পের ছবি ‘ছুঁয়ে দিলে মন’। আমার আর আরিফিন শুভ’র রোমান্টিক রসায়ন দর্শক খুব পছন্দ করে। তার বাইরেও যে নায়িকা চরিত্রটি আলাদা বৈশিষ্ট্য নিয়ে স্বকীয় হতে পারে সেটি নীলা চরিত্রটি দেখলে বোঝা যায়। এই চরিত্রটি করে আমি মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারের দর্শক জরিপ এবং সমালোচক- দুই শাখাতেই সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পাই।
‘আলতা বানু’র আলতা
‘আলতা বানু’ আমার সাম্প্রতিক কাজ। এটি একটি নারীকেন্দ্রীক সিনেমা। অরুণ চৌধুরীর পরিচালনায় এই ছবিটিও প্রযোজনা করেছে ইমপ্রেস টেলিফিল্মস। এখানে আমি নাম ভূমিকায় অভিনয় করি। একটি আটপৌরে মেয়ের জীবন সংগ্রামের গল্প ‘আলতা বানু’। চরিত্রটিতে অনেক বাঁক ছিল। তাই কাজটি করে আনন্দ পেয়েছি। মুক্তির পর যে সব দর্শক গল্পনির্ভর ছবি দেখতে পছন্দ করেন তারা আমাকে দারুণ ফিডব্যক দিয়েছিলেন।
আমার অভিনীত চলচ্চিত্রের সংখ্যা তো খুব বেশি নয়। তারমধ্যে এই তিনটি চরিত্র বেশি পছন্দ। এছাড়া ‘স্ফূলিঙ্গ’ নামে তৌকীর আহমেদের আরেকটি ছবি করেছিলাম সরকারি অনুদানের। সেখানেও উচ্চবিত্ত পরিবারের ড্রাগ অ্যাডিক্টেড একটি মেয়ের চরিত্র করেছিলাম। সেটিও আমার বেশ ভালো লেগেছিল।
‘ফুলমতি’ নাটকের ফুলমতি
নাটকেই তো সবচেয়ে বেশি অভিনয় করা হয়েছে। তারমধ্যে অনেক চরিত্র আছে খুব প্রিয়। তবে একটি চরিত্র বাছতে বলা হলে সুমন আনোয়ারের গ্রামীণ পটভূমির নাটক ‘ফুলমতি’র কথা বলব। এখানেও আমি নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছিলাম। আফরান নিশো একটি ছোট্ট চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেছিলেন। গ্রামীণ সমাজে একটি দরিদ্র মেয়ে নিজের সম্মান নিয়ে বাঁচতে কি ধরনের ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে তার জীবন্ত চিত্র তুলে ধরেছিলেন সুমন আনোয়ার। চরিত্রটিতে অভিনয়ের অনেক জায়গা ছিল। আমি চেষ্টা করেছিলাম ফুলমতির গহনের জ্বালা পর্দায় মূর্ত করতে। নাটকটি প্রচারের পর ভীষণ সাড়া পেয়েছিলাম সব শ্রেণীর দর্শকের কাছ থেকে।
দর্শক অবশ্য আমার নাটকের মধ্যে সবচেয়ে পছন্দ করেছে শিহাব শাহীনেরই পরিচালনায় ‘নীলপরী নীলাঞ্জনা’র নীলাঞ্জনা চরিত্রটি। তাহসান খানের সঙ্গে এই রোমান্টিক কাজের কথা এখনো দর্শক আমাকে বলে থাকে।
ওয়েব সিরিজ ‘অগোচরা’র হিন্দু বাড়ির বউ
সম্প্রতি ওয়েবেই পছন্দের কাজগুলো করা হচ্ছে। এরমধ্যে একটি চরিত্র বাছতে বললে বিঞ্জের ‘অগোচরা’ ওয়েব সিরিজের চরিত্রটির কথা বলব। জনপ্রিয় থ্রিলার লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন-এর এক ভিন্ন রকম গল্প নিয়ে ওয়েব সিরিজটি পরিচালনা করেছেন সিদ্দিক আহমেদ। প্রযোজনা করেছেন হাসিবুল হাসান তানিম। পুরান ঢাকার আন্ডাওয়ার্ল্ডের গল্প নিয়ে নির্মিত। এ ধরনের গল্পে নারী চরিত্রের খুব একটা কাজ থাকে না। তবে আমাকে প্রধান নারী চরিত্রটি করতে দেওয়া হয়েছিল, যে স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জল। এখানে আমি একটি হিন্দু ঘরের বউ। তবে এই বিভীষিকাময় পরিস্থিতি থেকে সে স্বাধীনভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখে। চরিত্রটিতে গ্রে শেড রয়েছে। তাই কাজটি করে মজা পেয়েছি।
মাঝে কয়েক বছর সিনেমা নির্মাণ করেননি সোহেল আরমান। তবে আগামী পহেলা জুন থেকে নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করছেন জনপ্রিয় এই নির্মাতা। বিরতিহীনভাবে চলবে তার তৃতীয় চলচ্চিত্র ‘সংবাদ’র দৃশ্য ধারণ। সিনেমটিতে অভিনয় করছেন দর্শকপ্রিয় অভিনয়শিল্পী ইরফান সাজ্জাদ, আইশা খান ও সোহেল মন্ডল। গতকাল (১৮ মে) নিজের জন্মদিনে মহরতের মাধ্যমে সিনেমাটির শিল্পীদের পরিচয় করিয়ে দেন নির্মাতা সোহেল আরমান।
সোহেল আরমান ১৯৯২ সালে নির্মাণে নামেন। এ পর্যন্ত তিনি পাঁচশোর অধিক নাটক, বেশকিছু বিজ্ঞাপন ও মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করেছেন। ক্যারিয়ারের তৃতীয় চলচ্চিত্র নিয়ে তিনি বলেন, ‘দুঃখ-আনন্দ নিয়ে আজকের সোহেল আরমানের পথচলা। খোকনের অনেক নাটকে অভিনয় করেছি। হুট করে চার বছর আগে সিনেমা প্রযোজনার কথা জানান। চার বছর পর শুরু। সবাই দোয়া করবেন। আশা করছি, দর্শক দারুণ কিছু পেতে যাচ্ছেন।’
ভয়েস টুডের ব্যানারে নির্মিতব্য সিনেমাটির গল্প লেখার পাশাপাশি প্রযোজনা করছেন এন এ খোকন। তিনি বলেন, ‘সিনেমা পরিচালনা বা প্রযোজনা না করলেও একজন চলচ্চিত্রের কর্মী ছিলাম। একশোর উপরে নাটক প্রযোজনার পাশাপাশি পরিচালনা করেছি। অবশেষে চলচ্চিত্র প্রযোজনায় আসা। সোহেল আরমানের উপর আস্থা আছে বলেই তাকে দিয়ে শুরুটা করেছি। আশা করছি, দর্শকরা ভালো কিছুই পাবে।’
সালাউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘আমজাদ হোসেনের সিনেমা দেখে স্বপ্ন দেখেছি। বাংলা সিনেমায় তাকে বলা হয় গ্রাম বাংলার জীবন। আশা করছি, সংবাদ সিনেমা চলচ্চিত্রের জন্য সু-সংবাদ বয়ে নিয়ে আসবে।’
প্রথমবারের মতো ছোট ভাইয়ের নির্দেশনায় চলচ্চিত্রে কাজ করবেন প্রযোজক, নির্মাতা ও অভিনেতা সাজ্জাদ হোসেন দোদুল। সিনেমাটিতে যুক্ত হতে পেরে উচ্ছ্বসিত তিনি। বলেন, ‘সোহেল আরমান খুব ভালো লিখে। ওর সিনেমায় কাজ করতে পারছি বেশ ভালো লাগছে। বর্তমানে চলচ্চিত্রের জোয়ার বইছে। আমজাদ হোসেনের পরিবারের সবাই যদি বছরে একটি করেও কাজ করি তাহলে চলচ্চিত্র আরও অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারব। সংবাদ যেন বাংলা সিনেমার জন্য অগ্রনী ভূমিকা রাখতে পারে দোয়া করবেন।’
ক্যারিয়রের চর্তুথ সিনেমা নিয়ে ইরফান সাজ্জাদ বলেন, ‘চলতি বছরটি আমার জন্য লাকি। কয়েক বছর পারিবারিক কারণে কাজ থেকে কিছুটা দূরে ছিলাম। এখন সিনেমার ভালো সময় যাচ্ছে। সিনেমা বড় মাধ্যম। মানুষ আমাকে সিনেমার মাধ্যমে চিনুক সবসময় সেটাই চেয়েছি। সেই প্রচেষ্টার মধ্যেই আছি। সংবাদের গল্পটা দুর্দান্ত। চরিত্র শুনেই সিদ্ধান্ত নেই কাজটি করতেই হবে। সবসময় সব চরিত্রের সুযোগ হয় না। সবকিছু মিলিয়ে সিনেমার জোয়ার বইছে। সংবাদ অন্য সিনেমার মতো ভালো লাগার এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি।’
আইশা খান বলেন, ‘সুন্দর একটি গল্পের আইডিয়া নিয়ে এসেছেন খোকন ভাই। আমি সবসময় ভালো নির্মাতার সঙ্গে কাজ করতে চাই। তার মধ্যে সোহেল ভাই একজন। তিনি যখন গল্প বলেছেন চোখ দিয়ে পানি বের হয়েছে। যতবার গল্পটি পড়েছি চোখ দিয়ে পানি পড়েছে। আমি তার লেখার ভীষণ ভক্ত। চরিত্র নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাই না। আশা করি, দর্শকরা নিরাশ হবেন না।’
সোহেল মন্ডল বলেন, ‘সোহেল ভাইয়ের সঙ্গে প্রথম কাজ করছি। গল্প শুনেই মনে হয়েছে এটার সঙ্গে যুক্ত হওয়া দরকার। সিনেমাটি নিয়ে আমি বেশ আশাবাদী।’
ছোট পর্দার দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী তাহমিনা সুলতানা মৌ। ১৯৯৯ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নাটকের মাধ্যমে অভিনয়ে নাম লেখান। এরপর টানা অভিনয়ের মধ্যেই আছেন। অভিনয়ের ফাঁকে বিজ্ঞাপনচিত্রেও কাজ করেছেন। প্রথমবারের মতো কাজ করছেন চলচ্চিত্রে। যে কারণে বেশ উচ্ছ্বসিত তিনি। প্রথম চলচ্চিত্র নিয়ে মৌ বলেন, ‘এটি আমার প্রথম চলচ্চিত্র। নির্মাতা অনেক বিশ্বাস করে আমাকে নিয়েছেন। চেষ্টা থাকবে তার বিশ্বাস রাখার। সংবাদের ভেতর সংবাদ আরও আছে, সঙ্গেই থাকুন।’
সিনেমাটিতে আরও অভিনয় করছেন কাজী খুরশীদুজ্জামান উৎপল, সালাউদ্দিন লাভলু, সাজ্জাদ হোসেন দোদুল, তাহমিনা সুলতানা মৌ, আজম খান প্রমুখ। এসময় প্রযোজক সমিতির সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু সোহেল আরমানকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করেন। অচিরেই তার প্রযোজনায় সোহেল আরমানের পরিচালনায় একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
১৮৭২ সালের জমিদার বাড়ির একটি হারানো গল্পে সিনেমাটি নির্মিত হবে। এর চিত্রনাট্য করেছেন সোহেল আরমান নিজেই। আগামী ১লা জুন শুরু হয়ে ১৩ জুন পর্যন্ত প্রথম লটের শুটিং চলবে বলে জানান নির্মাতা। একই মাসের ২১ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত একটানা কাজ করে শেষ হবে সিনেমার পুরো দৃশ্য ধারণ। আগামী বছর সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।