সবুজবাগ বরদেশ্বরী মন্দির শ্মশানে হবে সুবীর নন্দীর শেষকৃত্য

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সুমন শেখ/ বার্তা২৪.কম

ছবি: সুমন শেখ/ বার্তা২৪.কম

সকলকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন দেশবরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী। মঙ্গলবার (৭ মে) সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ‘একুশে পদক’ জয়ী এই শিল্পী।

বুধবার (৮ মে) সকালে তার মরদেহ ঢাকায় এসে পৌঁছায়। পরে সকাল ১১টায় তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। যেখানে বরেণ্য এই শিল্পীর প্রতি শেষ বারের মতো শ্রদ্ধা জানিয়ে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে সর্বস্তরের মানুষ।

বিজ্ঞাপন

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সুবীর নন্দীর মরদেহ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নেওয়া হয় এফডিসিতে। সেখান থেকে নেওয়া হবে রামকৃষ্ণ মিশনে। দুপুরে সবুজবাগে বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশানে একুশে পদক পাওয়া সংগীতশিল্পীর শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান সুবীর নন্দীর একমাত্র মেয়ে মৌ নন্দী।

সেই সঙ্গে সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং তার বাবার আত্নার শান্তি কামনা করেন তিনি বলেন, আমার বাবার প্রতি আপনাদের ভালোবাসা ও তার প্রতি আপনাদের শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে আমি প্রণাম জানাচ্ছি- তিনি ব্যক্তিগতভাবে টেক্সট করে আমাদের সমবেদনা জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: ফুলে ফুলে সুবীর নন্দীকে শেষ শ্রদ্ধা

যোগ করে মৌ বলেন, সবাই আমার বাবার সঙ্গে ছিলেন কিন্তু আমরা শেষ পর্যন্ত তাকে ফিরিয়ে আনতে পারিনি। এই ২৪ দিন যথেষ্ট ফাইট করেছেন সে। কিন্তু একটা সময় আর পারেনি। কিছুক্ষণ পরে আমার বাবার শেষকৃত্য করবো আমার বাবার জন্য প্রার্থনা করবেন।

গত ১৪ এপ্রিল রাতে সিলেট থেকে ঢাকায় ফেরার পথে ট্রেনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সুবীর নন্দী। এরপরই তাকে ঢাকার সিএমএইচে নেওয়া হয়। সিএমএইচের জরুরি বিভাগে থাকাকালীন হার্ট অ্যাটাক করেন তিনি। পরে তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৩০ এপ্রিল সিঙ্গাপুর নেওয়া হয় একুশে পদকপ্রাপ্ত এই শিল্পীকে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের এমআইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।

১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার নন্দীপাড়ায় সুবীর নন্দীর জন্ম। তিনি সিলেট বেতারে প্রথম গান করেন ১৯৬৭ সালে। এরপর ঢাকা রেডিওতে সুযোগ পান ১৯৭০ সালে। রেডিওতে তার প্রথম গান ‘যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়’।

বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রে গান গেয়েছেন সুবীর নন্দী। ১৯৮১ সালে তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ প্রকাশিত হয়। চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম গান করেন ১৯৭৬ সালে ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রে। ১৯৭৮ সালে মুক্তি পায় আজিজুর রহমানের ছবি ‘অশিক্ষিত’। এ সিনেমায় সাবিনা ইয়াসমিন আর সুবীর নন্দীর কণ্ঠে ‘মাস্টার সাব আমি নাম দস্তখত শিখতে চাই’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।

সুবীর নন্দী ৪০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আড়াই হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন। স্বীকৃতি হিসেবে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।