পৈত্রিক ভিটায় ‘প্রার্থনা কুঞ্জ’ করা হলো না এন্ড্রু কিশোরের

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গোপালগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পৈত্রিক ভিটায় এন্ড্রু কিশোর

পৈত্রিক ভিটায় এন্ড্রু কিশোর

জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী এন্ড্রু কিশোর তার পৈত্রিক ভিটা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় একটি প্রার্থনা কুঞ্জ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার মৃত্যুতে জীবনের শেষ ইচ্ছাটা পূরণ হলো না। এমনটাই জানিয়েছেন কোটালীপাড়ায় বসবাস করা এই শিল্পীর আপনজনেরা।

২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে এন্ড্রু কিশোর সস্ত্রীক কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ি ইউনিয়নের চিথলীয়া গ্রামের পৈত্রিক ভিটায় বেড়াতে এসেছিলেন। এ সময় তিনি তার পৈত্রিক ভিটায় একটি প্রার্থনা কুঞ্জ করতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তার কাকাতো ভাই পূর্ণদান বাড়ৈ।

বিজ্ঞাপন

পূর্ণদান বাড়ৈ বলেন, এন্ড্রু কিশোর আমার কাকাতো ভাই। তার বাবার জন্ম কোটালীপাড়ায়। এন্ডু কিশোরের পিতা ক্ষিতিশ বাড়ৈ চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারী পাস করে রাজশাহীতে কর্ম জীবন শুরু করেন। তবে তিনি তার পরিবার পরিজন নিয়ে প্রতিবছরই কোটালীপাড়ায় বেড়াতে আসতেন।

এন্ড্রু কিশোরের অপর এক কাকাতো ভাই এলিও বাড়ৈ বলেন, গত ৭মাস আগে এন্ডু কিশোরের সাথে আমার শেষ কথা হয়েছে। আমাদের এক কাকার মৃত্যুতে অনুষ্ঠান করার জন্য তিনি ১০হাজার টাকা দিয়েছিলেন। আমাদের যে কোন পারিবারিক অনুষ্ঠানে তিনি আমাদের সহযোগিতা করতেন। বিভিন্ন সময়ে ফোন করে আমাদের খোঁজখবর নিতেন।

বিজ্ঞাপন
পৈত্রিক ভিটায় এন্ড্রু কিশোর

সোমবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যায় এই গুণী সংগীত শিল্পীর মৃত্যুতে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় অবস্থানরত তার আপনজনসহ উপজেলাবাসীর মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। উপজেলার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ এই গুণী শিল্পীর এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না। তারা এই শিল্পীর স্মৃতি রক্ষার্থে তার নামে কোটালীপাড়ায় সংগীত একাডেমী বা স্কুল স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও শেখ হাসিনা আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ বাড়ৈ বলেন, সংগীত শিল্পী এন্ড্রু কিশোরের মৃত্যুতে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আমরা চাই এই মহান শিল্পীর নামে কোটালীপাড়ায় একটি সংগীত একাডেমী বা একটি সংগীত স্কুল স্থাপন করা হোক ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, কিংবদন্তি সংগীত শিল্পী এন্ড্রু কিশোরের মৃত্যুতে দেশের সকল সংগীত প্রেমীরাই শোকাহত। দেশের এই মহান সংগীত শিল্পীর পৈত্রিক ভিটা কোটালীপাড়া। এটা সত্যিই কোটালীপাড়াবাসীর জন্য গর্বের। আমরা এই গুণী শিল্পীর স্মৃতি রক্ষার্থে কোটালীপাড়ায় একটি সংগীত একাডেমী বা সংগীত স্কুল স্থাপনের জন্য চেষ্টা করবো।

১৯৭৭ সালে মেইল ট্রেন চলচ্চিত্রের ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তাঁর কেউ’ গানের মাধ্যমে তাঁর প্লেব্যাক যাত্রা শুরু। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। বাংলা চলচ্চিত্রে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে প্লেব্যাক করে। পেয়েছেন ৮বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

সোমবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে রাজশাহী মহানগরীর মহিষবাথান এলাকায় বোনের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ এন্ড্রু কিশোর। পরে রাত ১০টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তার মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়। বরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৫ জুলাই