‘মহানায়ক’ নেই ৪০ বছর
৫৩ বছরের জীবন যুদ্ধে অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায় ৩২ বছর ছিলেন উত্তম কুমার। তবে উত্তম কুমার নামটা মোটা কালিতে খোদাই করে লিখতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে তাঁকে। এরপরের গল্প সবার জানা; নায়ক থেকে হয়েছেন মহানায়ক। বাংলা ভাষার চলচ্চিত্রে সৃষ্টি করেছেন ইতিহাস।
১৯৮০ সালের আজকের দিনে আপামর বাঙালিকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জামান এই মহানায়ক। সেই হিসাবে মহানায়ক নেই ৪০ বছর।
১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর, কলকাতার ৫১ নম্বর আহিরীটোলায় নানাবাড়িতে জনগ্রহণ করেন উত্তম কুমার। কলকাতার সাউথ সাবার্বান স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন এবং পরে গোয়েঙ্কা কলেজে ভর্তি হন। কলকাতার পোর্টে চাকরি নিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও গ্র্যাজুয়েশন শেষ করতে পারেননি তিনি।
এই সময়টাতে উত্তম কুমার মঞ্চে অভিনয় করতেন। ধীরে ধীরে তাঁর ঝোঁক বাড়ে রুপালি পর্দার দিকে। তাঁর সর্বপ্রথম অভিনীত সিনেমা ‘মায়াডোর’। যদিও শেষ পর্যন্ত সিনেমাটি মুক্তি পায়নি।
এরপর ১৯৪৮ সালে নীতিন বোস পরিচালিত ‘দৃষ্টিদান’ সিনেমায় অভিনয় করেন উত্তম কুমার। এটাই তার অভিনীত প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা। তবে ‘কার পাপে’সহ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। তবে সে সময় ব্যবসাসফল হয়নি। ফলে একটা পর্যায়ে তার নামই হয়ে গিয়েছিল ‘ফ্লপ মাস্টার’। সে সময় তিনি হতাশায় সিনেমা ছাড়াও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
তবে সে সময়কার স্ত্রী গৌরী দেবীর পরামর্শে তিনি চাকরি ছেড়ে শুধুই সিনেমায় মন দেন। সে সময় তিনি ‘বসু পরিবার’ সিনেমায় অভিনয় করে দৃষ্টি কাড়েন। ১৯৫৩ সালে নবাগতা অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের সঙ্গে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ সিনেমার মাধ্যমে তিনি প্রথম সফলতা পান। এরপর আর পিছনে ফিরতে হয়নি উত্তম কুমারকে।
উত্তম কুমার সর্বমোট ২০২টি সিনেমাতে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে ৩৯টি ব্লকবাস্টার হিট, ৫৭টি সুপারহিট ও ৫৭টি সিনেমা ব্যবসাসফল হয়েছে। তাঁর অভিনীত সর্বশেষ সিনেমা ‘ওগো বধূ সুন্দরী’।