যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা কেন্দ্র থেকে পালিয়েছে ৪০ বানর, পুলিশের সতর্কতা
ফিচার
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের একটি গবেষণা কেন্দ্র থেকে ৪০টি বানর পালিয়েছে। আলফা জেনেসিস সাইট নামের একটি কোম্পানি বানরগুলোকে তত্ত্বাবধান করছিল।
কোম্পানিটি জানায়, বানরগুলোকে মস্তিষ্কের রোগের চিকিত্সাসহ ক্লিনিকাল ট্রায়ালের জন্য যত্নসহকারে লালন-পালন করা হচ্ছিল।
বিজ্ঞাপন
এরই মধ্যে বানরগুলোকে উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
ফেসবুকে এক পোস্টে সতর্ক দিয়ে পুলিশ জানায়, বুধবার রাতে ইয়েমাসির আলফা জেনেসিস সাইট থেকে পালিয়ে যাওয়া বানরগুলো উদ্ধারে চেষ্টা করা হচ্ছে। এদের ধরতে থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরা এবং ফাঁদের ব্যবহার করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সতর্কবার্তায় আরও জানানো হয়, আবাসিক এলাকাগুলোতে প্রাণীদের প্রবেশ ঠেকাতে বাড়ির দরজা ও জানালাগুলো আটকিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
চার্লসটন থেকে প্রায় ৫০ মাইল (৮০ কিলোমিটার) পশ্চিমে ইয়েমাসিতে স্থানীয়দের বলা হয়েছে বানরদের কাছে না যেতে এবং বানরগুলো দেখা মাত্রই ৯১১ নম্বরে কল দেওয়ার অনুরোধও জানানো হয়েছে।
কোম্পানিটি ১০০ একরের বেশি জায়গায় চিকিৎসাসংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং বিভিন্ন গবেষণার কাজে বানরসহ বিভিন্ন প্রাণী লালন–পালন করে।
বানরের কোন জাতটি পালিয়েছে তা প্রকাশ করা হয়নি। তবে ফার্মের সাইট বলে, এতে ম্যাকাক এবং ক্যাপুচিন প্রজাতির বানর রয়েছে।
যদিও কোম্পানিটির তত্ত্বাবধান থেকে প্রাণীদের পালানোর ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৬ সালে ১৯টি বানর পালিয়েছিল। পরে ৬ ঘণ্টা পর সেগুলো আবার উদ্ধার করা হয়েছিল।
যুক্তরাজ্যে কর্মসপ্তাহকে ঢেলে সাজানোর এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। দেশটির শতাধিক প্রতিষ্ঠান কোনো বেতন না কেটেই সব কর্মীদের জন্য সপ্তাহে চার দিন কর্মদিবস চালু করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ৫ হাজারেরও বেশি কর্মী রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর নীতি নির্ধারকেরা আশা করছেন, তাদের এ উদ্যোগ দেশে রূপান্তরমূলক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সপ্তাহে চার দিন কর্মদিবসের সমর্থকেরা বলেছেন, সপ্তাহে পাঁচ দিন কর্মদিবসের প্রথাটি বহু পুরোনো। এ প্রথা থেকে বের হয়ে আসা উচিত। চার দিন কর্মদিবস চালু হলে বরং প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদনশীলতা বাড়বে।
ফোর ডে উইক ফাউন্ডেশনের প্রচারণা পরিচালক জো রাইল বলেছেন, শত শত ব্রিটিশ কোম্পানি ও একটি লোকাল কাউন্সিল ইতিমধ্যেই সপ্তাহে চার কর্মদিবসের রীতি চালু করেছে। এতে করে কর্মী ও মালিক কারোই ক্ষতি হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, হাতে ৫০ শতাংশ বেশি অবসর সময় থাকা মানে সপ্তাহে তিন দিন মানুষ সুখী ও পরিপূর্ণ জীবনযাপনের স্বাধীনতা পাবে।
গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বের নানা দেশে কর্মক্ষেত্রে সপ্তাহে কার্যদিবস কমানো নিয়ে আলোচনা চলছে। করোনা মহামারি চলাকালীন লাখো কর্মী ঘরে বসে কাজ করায় কার্যদিবস কমানোর বিষয়টি আরও জোরদার হয়ে উঠেছে। এতে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হয়।
করোনাকালীন সময়ে পরীক্ষামূলকভাবে ৪ দিনের কর্মসপ্তাহ চালু করেছিল যুক্তরাজ্য। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই এখন চার দিন কর্মসপ্তাহের নিয়মটিকে স্থায়ী করেছে।
ফোর ডে উইক ক্যাম্পেইন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি চলতি বছরের শেষের দিকে সরকারিভাবে স্পেন ও স্কটল্যান্ডেও একই ধরনের প্রকল্প শুরু হতে যাচ্ছে।
গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গত বছর যুক্তরাজ্যের ৬১টি প্রতিষ্ঠান পরীক্ষামূলকভাবে ৬ মাসের জন্য সপ্তাহে চার দিনের কর্মদিবস চালু করেছিল। এক বছর পর এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৪টি প্রতিষ্ঠান নিয়মটি এখনো চালু রেখেছে। অন্যদিকে ৩১টি প্রতিষ্ঠান ছয় মাস পরই নিয়মটিকে স্থায়ী করেছে।
পরীক্ষামূলকভাবে পরিচালিত এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত ৫৫ শতাংশ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বলেছেন, সপ্তাহে চার দিন অফিস চালু করার পর দেখা গেছে, কর্মীরা ৮০ শতাংশ সময়ের মধ্যেই তাদের শতভাগ কাজ সেরে ফেলেন। এই নতুন নিয়ম প্রতিষ্ঠানে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
এছাড়া ৮২ শতাংশ কর্মী বলছেন, তারা আগের চেয়ে বেশি সুস্থতা বোধ করেন। এই নতুন নিয়ম তাদের স্বাস্থ্যের ওপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অন্যদিকে ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বলেছে, তাদের কর্মীদের চাকরি ছাড়ার হার কমেছে। ৩২ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বলেছে, তাদের কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় উন্নতি হয়েছে। আর ৪৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বলেছে, তাদের কর্মীদের উৎপাদনশীলতার উন্নতি হয়েছে।
কাজের ক্ষেত্রে শৃংখলা, নিয়মানুবর্তিতা মেনে চলা প্রতিটি পুলিশেরই কর্তব্য। আর এসবের অমান্য করলে শাস্তিও অবধারিত। তবে সেটা যে কেবল ব্যক্তির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য এমনটা কিন্তু হয়। নিয়মটি কুকুরের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য। শুনতে অবাক লাগলেও এমনটাই ঘটেছে 'ফুজাই' নামে এক চীনা পুলিশ কুকুরের সাথে।
চীনের স্থানীয় গণমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের (এসসিএমপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিউটি টাইমে ঘুমিয়ে এবং বাটিতে প্রস্রাব করার অপরাধে বছর শেষে বোনাস হারিয়েছে 'ফুজাই' নামে এক চীনা পুলিশ কুকুর। আর এ ঘটনা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
জন্মের পরপরই উত্তর চীনের শানডং প্রদেশের ওয়েইফাংয়ে পুলিশ কুকুর প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে যোগ দেয় ফুজাই। চার মাস বয়সী কুকুরছানা হিসেবে ফুজাইকে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে রিজার্ভ এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন অপারেটর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর কয়েক মাস পরেই ফুজাই চীনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
ফুজাইয়ের বোনাস কেড়ে নেওয়ার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছে ওয়েইফাং পাবলিক সিকিউরিটি ব্যুরো। সংস্থাটি 'করগি পুলিশ কুকুর ফুজাই এবং এর কমরেডস' অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করে, যার ৩৮৪,০০০ এরও বেশি ফলোয়ার্স আছে। ভিডিওটিতে ফুজাইকে পারফরম্যান্স রিভিউয়ের জন্য একজন পুলিশ অফিসারের সামনে বসে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ অফিসারটি বেশ হাস্যজ্জ্বোলভাবে তাকে তার সেবার পুরষ্কার হিসেবে একটি লাল ফুল, টিনজাত স্ন্যাকস এবং খেলনা উপহার দেন। তবে তার অপকর্ম জানার পর দ্রুত তার কাছ পুরষ্কার কেড়ে নেওয়া হয়।
এ সময় পুলিশ অফিসারটি ফুজাই কে বলেন, এ বছর তুমি (ফুজাই) দারুণ পারফর্ম করেছ। তুমি পুলিশ কুকুরের জন্য স্তর ৪ মূল্যায়ন পাস করেছেন। শুধু তাই নয়, তুমি সফলভাবে বিভিন্ন সুরক্ষা কাজ সম্পন্ন করেছেন এবং ওয়েইফাংয়ের পুলিশ কুকুরদের প্রচারে উল্লেখযোগ্যভাবে সহায়তা করেছ। তবে তোমার সাম্প্রতিক আচরণের কারণে, কর্মক্ষেত্রে ক্লান্ত হয়ে পড়া এবং নিজের বেসিনেই প্রস্রাব করার কারণে, আমাদের সমালোচনা করতে হয়েছে এবং জরিমানা হিসেবে তোমার স্ন্যাকস বাজেয়াপ্ত করতে হয়েছিল। তুমি শুধু লাল ফুলটাই রাখবে।
ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার সাথে সাথে নেটিজেনরা প্রতিক্রিয়া জানান। তারা ফুজাইয়ের বোনাস ফেরত দেয়ার জন্য দাবি জানান।
এক নেটিজেন লিখেছেন, বেচারা ফুজাই সারা বছর কঠোর পরিশ্রম করেছে, কিন্তু বছরের শেষে বোনাস হারিয়েছে। আমি নিজের সাথে অনেক কিছুই রিলেট করতে পারছি।
আরেকজন নেটিজেন লিখেছেন, সে (ফুজাই) তার নিজের বাটিতে প্রস্রাব করেছে, তার বসের বাটিতে নয়। আমার বন্ধুকে তার ভুলের জন্য শাস্তি নিতে দিন কিন্তু তার পরিবর্তে অবিলম্বে তার বোনাস ফেরত দিন!
সামাজিক মাধ্যমে নেটিজেনদেন সমালোচনার পর অ্যাকাউন্টটি তাদের আশ্বস্ত করে আরেকটি ভিডিও পোস্ট করেছে। সেখানে জানানো হয়েছে ফুজাইয়ের স্ন্যাকস বাজেয়াপ্ত করার পর, তার পরিবর্তে অফিসার ফুজাকেই নববর্ষের একটি প্যাকেজ উপহার দেয়া হয়েছে।
দোকানিরা পসরা সাজিয়ে বসে আছেন পাউরুটি নিয়ে। তবে এটি যেমন তেমন রুটি নয় একেকটা রুটির ওজন ১ কেজির উপরে। দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও বেশ মজাদার।
নাটোর সদর উপজেলার তেবাড়িয়া হাটে প্রতি সপ্তাহের শুধু রোববার দেখা মিলবে এমন অদ্ভুত রুটির। আশেপাশের মানুষের পছন্দের তালিকায় আছে এই ঐতিহ্যবাহী নৌকারুটি। কেউবা হাটের মধ্যেই খাচ্ছেন আবার কেউবা বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন।
বাপ-দাদার হাত ধরে হাটে এসে এই রুটি খেয়েছেন অনেকেই, এখনো হাটে এলে রুটির সাথে মিষ্টি খান মানুষ । এক সময় প্রচুর পরিমানে পাওয়া যেত এই রুটি কিন্তু কালের বিবর্তনে শুধুমাত্র রোববারে তেবাড়িয়া হাটেই দেখা মিলে এই রুটির। বাপ দাদার শেখানো রুটি ও মিষ্টি বিক্রি ব্যবসা করে যাচ্ছেন এখানকার দোকানিরা।
একাধিক ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তারা জানায়, ভোর থেকেই শুরু হয় তেবাড়িয়ার হাট, প্রতি রোববারের হাটে বিক্রির উদ্দেশ্যে আগেরদিন থেকে প্রস্তুত করা হয় এক কেজি ওজনের এই নৌকা রুটি। বাবা-দাদাদের কাছ থেকে শেখা এই পেশা আর ছাড়তে পারেনি অনেকেই আর এভাবেই চলে সংসার। তারা জানায়,আগের মত আর বিক্রি হয়না ফলে এখন সংসার চালানো খুব কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
আরিফ নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, ছোটবেলায় বাবার সাথে এই হাটে অনেক এসেছি এখন একা একা আসি এই হাটে বন্ধুদের নিয়ে। রুটির পাশাপাশি এই হাটে নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক জিনিসপত্র পাওয়া যায়। ১ কেজি ওজনের এই রুটি খেতে বেশ সুস্বাদু ও মজাদার।
তেবাড়িয়া এলাকার বৃদ্ধ শামসুল হক ( ৬০) বলেন, এই নৌকা রুটি অনেক আগে থেকে এ হাটে নিয়ে আসে দোকানিরা। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন থেকেই বাবার হাত ধরে হাটে এসে এই রুটি খেয়েছি। এ হাটে অনেক বয়স্ক বিক্রেতা আছে যারা আমাকে চিনে। কতদিন এই রুটি থাকবে জানিনা যতদিন বেঁচে আছি নিয়মিত খাবো।
আধুনিক ফাস্টফুডের ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী খাবার গুলো, একদিন হয়তো বিলীন হয়ে যাবে সেদিন আর বেশি দূরে নয় তাই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো সংরক্ষণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
সৃষ্টির ঊষালগ্ন থেকেই ফুল মানুষকে মুগ্ধ করে এসেছে। ফুলের রঙ, সৌন্দর্য, গন্ধ মানুষকে করেছে আকৃষ্ট। ফুল শব্দটি শুনলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে গোলাপ, বেলি, রজনীগন্ধা ইত্যাদি নানা সুন্দর সুগন্ধযুক্ত ফুল। এসব ফুলের ঘ্রাণ পাগল করে আমাদের। নানা আচার অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয় ফুল। প্রিয়জনকেও ফুল উপহার দেওয়ার প্রচলন আমাদের মাঝে অনেক পুরোনো। তবে পৃথিবীতে এমন কিছু ফুল রয়েছে, যার গন্ধ অতি জঘন্য। এসব ফুলের সৌন্দর্য দেখে কাছে গেলে নিজ থেকেই আপনি হাত দিয়ে নাক চেপে ধরতে বাধ্য হবেন। কারণ এসব ফুলের গন্ধে নাড়িভুঁড়ি উল্টে আসতে পারে আপনার। চলুন আজকে জেনে নিই বিশ্বের সবচেয়ে দুর্গন্ধযুক্ত এমন একটি ফুল সম্পর্কে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।
বিশ্বের সবচেয়ে দুর্গন্ধময় এ ফুলটির নাম অ্যামোরফোফালাস টাইটানিয়াম। এই ফুলটি ‘লাশ ফুল’ (Corpse flower) নামেই সবচেয়ে বেশি পরিচিত।
সিডনির একটি গ্রিনহাউসে জন্মানো এই ফুলটিকে দেখতে ভিড় জমিয়েছে অসংখ্য দর্শনার্থী। অদ্ভুত এই ফুল থেকে মৃত পচনশীল মানবদেহের তীব্র গন্ধ বের হয়। ফুলের কাছে আসলে আপনার মনে হবে আপনি কোনো পঁচা গলা লাশের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। এজন্যই এটি ‘লাশ ফুল’ নামে পরিচিত। দর্শনার্থীরা এটাকে কেউ কেউ পঁচা মাংসের গন্ধ হিসেবে বর্ণনা করেছেন আবার অনেকেই পঁচা খাবার, ঘামযুক্ত মোজা বা এমনকি রসুনের গন্ধ বলেও উল্লেখ করেছেন।
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রার বনাঞ্চল থেকে এসেছে এই উদ্ভিদটি। সিডনির রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনের কর্মীরা আদর করে এর নাম দিয়েছেন ‘পুট্রিসিয়া’। পুট্রিসিয়ার প্রভাবশালী ‘ভক্তরা’ নিজেদের পরিচয় দেন ‘পুট্রিসিয়ান’ হিসেবে। দর্শকদের জন্য সেখানে লাল গালিচা ও ভেলভেট দড়ি দিয়ে সজ্জিত স্থানে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এই উদ্ভিদের ফুল ফোটার প্রক্রিয়া প্রাকৃতিকভাবে সাত থেকে দশ বছর সময় নেয়। ডিসেম্বরে যখন এর ফুল দেখা যায় তখন এর উচ্চতা ছিল মাত্র ২৫ সেন্টিমিটার (১০ ইঞ্চি)। কিন্তু পররবর্তীতে ফুলের স্পাইকটি ধীরে ধীরে খোলার সাথে সাথে এটি ১.৬ মিটার (৫ ফুট ৩) লম্বা হয়েছে। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত এই ফুলের তীব্র পঁচা গন্ধ আশেপাশের এলাকার ছড়িয়ে থাকে। তবে ভালো খবর হলো, এই ফুলটি চার থেকে পাঁচ বছর পর মাত্র একবার ফোটে এবং ফোটার পর ২৪-৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত তাজা থাকে!
তবে মজার বিষয় হলো রয়্যাল সিডনি বোটানিক গার্ডেনে এই বিরল প্রজাতির ফুলটি বিশ্বব্যাপী প্রায় এক হাজার অনুরাগীকে আকৃষ্ট করেছে। তীব্র পঁচা গন্ধ সত্ত্বে গ্রিন হাউজে জড়ো হয়েছিল কয়েক হাজার মানুষ। দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি, ২০২৫) । অবশেষে দর্শনার্থীদের জন্য এটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
গ্রিন হাউজের মুখপাত্র সোফি ড্যানিয়েল বলেন, তীব্র গন্ধের কারণে দর্শনার্থীদের জন্য বমির ব্যাগ রাখা উচিত কিনা তা নিয়ে আমরা প্রথম দিকে আলোচনা করেছিলাম। তবে এতে কারও ক্ষতি হয়েছে বলে শুনিনি।
লাশ ফুল মাত্র এক থেকে তিন দিন ফোটে, যদিও এর জন্য এক দশক সময় লাগে।
মিস ড্যানিয়েল বলেন, এগুলো খুব কমই খোলে, তাই খুব কমই ফুল ফোটে। কেননা, এই ফুলের প্রস্ফুটন একটি বিরল ঘটনা। কারণ, প্রস্ফুটনের জন্য পরিপূর্ণতা পেতে এই ফুলের সময় লাগে ৫ থেকে ১০ বছর।
তিনি আরও বলেন, দর্শনার্থীরা ফুলের কাছাকাছি যেতে চেয়েছে, কেউ কেউ ফুলের সামনে সেলফি তুলেছে, কেউ আবার ঝুঁকে ঘ্রাণ নিয়েছে। এক তরুণী পুট্রিসিয়ার সামনে মাথানত করে অভিবাদন জানান।