তৈমুর লঙ : ঘোড়ার পিঠে বিশ্ববিজয় (পর্ব-২)



আহমেদ দীন রুমি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
অভিযান থেকে ফিরে এসেই শুরু করেছেন নতুন অভিযান

অভিযান থেকে ফিরে এসেই শুরু করেছেন নতুন অভিযান

  • Font increase
  • Font Decrease

 ● পর্ব-১ পড়তে ক্লিক করুন

১৩৮৬ সাল। ক্ষমতায় আরোহণের দেড় দশক পেরিয়ে গেছে তৈমুরের। একসময়ের সর্বস্বহারা যাযাবর ব্যক্তিটি নিজের যোগ্যতা দিয়ে পরিণত হয়েছেন ছোটখাটো এক রাজ্যের অধিপতিতে। কিন্তু অল্পে তুষ্ট হওয়া তৈমুরের স্বভাবে ছিল না। তাই পুনরায় অভিযানে বের হলেন। রক্তাক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হলো আজারবাইজান এবং জর্জিয়ার ওপর। হাতে এলো গিলান, শিরওয়ান এবং লেসজিওয়ানের মতো পার্শ্ববর্তী বহু অঞ্চল।

কারা কুয়ুনলু বংশের ক্ষমতা তখন কারা ইউসুফের হাতে; রাজধানী ভ্যান। অপরিণামদর্শী এই শাসক তৈমুরের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়লে তৈমুর তাকে পরাজিত করে রাজধানী দখল করেন। কারা ইউসুফ পলায়ন করে আশ্রয় নেয় অটোম্যান সুলতান প্রথম বায়েজিদের দরবারে। তৈমুর কিন্তু থেমে থাকলেন না। তৎকালীন মুজাফফারীয় বংশ শাসন করছিল ফারস্- অঞ্চলকে কেন্দ্র করে। শাসনকর্তা জয়নুল আবেদিনকে বশ্যতা স্বীকার করার আহবান জানিয়ে পত্র প্রেরণ করলেন তৈমুর।

নিষ্ঠুরতার অবতার

জয়নুল আবেদিন তার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলটি মনে হয় এবার করলেন। তিনি তৈমুরের দূতকে বন্দী করে রাখলেন। অপমান মনে করে তৈমুর আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিলেন মূল নগরী ইসপাহান। একরকম বিনাযুদ্ধে দখল করে নিলেন তা। বাড়িয়ে দিলেন করের পরিমাণ; কিন্তু শীঘ্রই বিদ্রোহী হয়ে উঠল জনগণ। অতর্কিত আক্রমণে হত্যা করা হলো তৈমুরের তিন হাজার সৈন্যকে। নিহতদের মাঝে তৈমুরের প্রিয় আমীরও ছিলেন।

যুদ্ধের মাঠে তৈমুরের নিষ্ঠুরতা প্রবাদকেও হার মানায়


ক্ষোভে উন্মত্ত হয়ে উঠলেন তৈমুর। বের করলেন তার সবচেয়ে নৃশংস রূপ; যা ইতিহাসে ভীতি তৈরি করে রেখেছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে। প্রত্যেকটি সৈন্যকে নির্দেশ দেয়া হলো, খণ্ডিত মাথা নিয়ে ফিরে আসতে। অনুগত সৈন্যরা ঝাঁপিয়ে পড়ল ইসপাহানবাসীর ওপর। চলল নির্বিচার গণহত্যা। এই হত্যাকাণ্ডে প্রায় সত্তর হাজার ইসপাহানবাসী নিহত হন। মৃতের মাথা দিয়ে তৈরি করা হলো সুউচ্চ মিনার। প্রতিশোধ নিয়ে তৈমুর উদাহরণ সৃষ্টি করলেন—তার সাথে টক্কর দেবার পরিণাম কেমন হতে পারে।

হাফিজ ও তৈমুর: কবি বনাম সম্রাট

নৃশংসতা দেখে ভয়ে মাজাফফারীয় বংশের সকল যুবরাজ আত্মসমর্পণ করল। কেবল শাহ মানসুর পালিয়ে আত্মগোপন করতে সমর্থ হয়। তৈমুর সেখান থেকেই রওনা হলেন সিরাজ দখল করার প্রত্যাশায়। একরকম বিনা বাধায় নিয়ন্ত্রণে এলো সিরাজ। মসজিদে মসজিদে শুক্রবারে তার নামে পঠিত হতে থাকল খোৎবা। ঠিক এই সময়েই দেখা মেলে বিখ্যাত কবি হাফিজের। প্রচলিত আছে, হাফিজের একটি কবিতার প্রতি তৈমুর আকৃষ্ট হয়ে তাকে দরবারে আহবান করেন। কবিতাটি ছিল—
“আগার আঁতুরকে সিরাজী বাদসত্ আরাদ্ দেলে মারা,
বাখালে হিন্দুয়াশ বো বোখশাস্ সমরকন্দ ও বুখারা রা;”
বা,
“সিরাজবাসিনী প্রিয়ার গালের ছোট্ট এক তিলের তরে
বোখরা-সমরকন্দ রাজ্য নির্দ্বিধাতে আসব ছেড়ে।”

ফারসি সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা কবি হাফিজ


তৈমুর হাফিজের প্রতি কটাক্ষের চাহনিতে বলেছিলেন—“আমি এত যুদ্ধ আর এত রক্ত ঝরিয়ে বোখরা আর সমরকন্দকে প্রতিষ্ঠিত করেছি অপার সৌন্দর্য দিয়ে। আর তুমি কিনা কোথাকার কোন মেয়ের জন্য এই সবকে অপমান করো কবিতায়!” হাফিজ পরিস্থিতি টের পেয়ে অসংকোচে বললেন, “দূরদৃষ্টিহীনতার জন্যই তো আজ আমার এই দুর্দশা। এজন্যই আপনি রাজা আর আমি কবি।” বুদ্ধিদীপ্ত জবাবে তৈমুর চমৎকৃত হয়ে তাকে পুরস্কৃত করলেন।

চোখ এবার রাশিয়ায়

পারস্য বিজয় সম্পন্ন হলে তৈমুরের নজর পড়ল গোল্ডেন হোর্ড সাম্রাজ্যের দিকে। ঠিক এই সময়টাতে গোল্ডেন হোর্ডের শাসক ছিলেন মামাই। অন্যদিকে হোয়াইট হোর্ডের শাসনকর্তা ছিলেন উরুস খান। তৈমুর একটা সুযোগ খুঁজছিলেন মাত্র। সেই সুযোগটাই এনে দিল ক্রিমিয়ার মোঙ্গল সামন্তরাজ তকতামিস। গোল্ডেন হোর্ড থেকে পালিয়ে এসে তিনি তৈমুরের আশ্রয় আর সহযোগিতা চাইলেন।

চেঙ্গিস খানের এই বংশধরকে তৈমুর প্রথমে আশ্রয় দিলেন; অতঃপর উরুস খানের দখল থেকে উদ্ধার করতে সাহায্য করলেন। পরপর দুইবার সংঘর্ষ চালিয়েও তকতামিস তার কাছে পরাজিত হয়েছিল। তবে ইতোমধ্যে উরুস খানের মৃত্যু ঘটলে তকতামিসই গোল্ডেন হোর্ডের উত্তরাধিকারীতে পরিণত হলেন। অভিযান চালিয়ে মামাইকে পরাজিত করে রাজধানী সরাই দখল করলেন তিনি।

তকতামিরে অপরিণামদর্শী আচরণই তার পতন ডেকে আনে


তকতামিস ক্ষমতায় এসেছিল তৈমুরের সহযোগিতায়। তথাপি সিংহাসনে বসার পর স্বেচ্ছাচার শুরু করে দিল। প্রকাশ পেতে থাকল চারিত্রিক অন্ধকার দিকগুলো। যাদের সহযোগিতায় তকতামিস রাজ্য পেয়েছে, সেইসব সামন্ত রাজাদের কাছেই কর দাবি করে বসলেন তিনি। অনেকেই দাবি মেনে নিতে অস্বীকার করায় দগ্ধ এবং বিধ্বস্ত করে ফেললেন মস্কো। এই ঘটনার পর তকতামিসের দম্ভ বেড়ে গেল আরো কয়েকগুণ। তৈমুরের অবদানের কথা ভুলে গিয়ে আক্রমণ করে বসলেন তাব্রিজ।

পীপিলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে। তকতামিসও বেড়ে গিয়েছিল অনেক বেশি। তাব্রিজ আক্রমণের পর দশদিন ধরে লুটপাট ও হত্যাকাণ্ড চালানো হলো। বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি হস্তগত করে ফিরে গেল মোঙ্গল নেতা। সংবাদ শুনে মর্মাহত তৈমুর তাকে একটা শিক্ষা দেবার স্থির সিদ্ধান্ত নিলেন। প্রায় দুই লাখ সৈন্যসমেত আক্রমণ করলেন গোল্ডেন হোর্ড সাম্রাজ্যে। তকতামিসের হাড়ে কাঁপুনি লাগল এবার। তৈমুরের কাছে পাঠালেন সন্ধির প্রস্তাব।

কিন্তু তৈমুর ভালোমতোই বুঝতে পেরেছিলেন তকতামিসের দুরভিসন্ধি। তাই শত্রুর শেষ রাখতে নেই-মন্ত্রেই স্থির থাকলেন। ভল্গা নদীর সন্নিকটে তেরেক নামক স্থানে তুমুল যুদ্ধ হলো দুই বাহিনীর মধ্যে। পরাজিত হয়ে পলায়ন করলেন তকতামিস। কোনো কোনো ঐতিহাসিকের মতে, এই যুদ্ধে প্রায় এক লাখ সৈন্য হতাহতের ঘটনা ঘটে। একজন মোঙ্গল নেতাকে শাসনকর্তা নিযুক্ত করে বিজয়ী তৈমুর ফিরে আসেন। কিন্তু বছর তিনেক পরেই তকতামিস আবার সৈন্য সংগঠিত করে আক্রমণ করে বসে। এবার আর তৈমুর থামলেন না। নেহায়েত অপ্রস্তুত থাকার পরেও রণনিপুণতার মধ্য দিয়ে পরাজিত করলেন তকতামিসকে। আর এর মধ্য দিয়ে দেড়শত বছরের গোল্ডেন হোর্ড সাম্রাজ্যের বিলুপ্তি ঘটল। তকতামিসের বাহিনীর অর্ধেক যোগ দিল তৈমুরের সাথে, আর অর্ধেক পালিয়ে গেল ক্রিমিয়া, আদ্রিয়ানোপল ও হাঙ্গেরির বিভিন্ন স্থানে।

আরো একবার পারস্য

১৩৯২ সাল। পারস্যের রাজনৈতিক অবস্থায় তখন সংকট চলছে। তৈমুর বিষয়টা লক্ষ্য করেই অস্ত্রাবাদ ও আমুলের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করে খুররামাবাদ, শুসতার এবং কালাসফিদ দখল করে নিলেন। গত অভিযানে পালিয়ে বেঁচে যাওয়া মুজাফফারীয় যুবরাজ শাহ মনসুর চার হাজার সৈন্যসহ তার গতিপথ রোধ করে দাঁড়াল। তৈমুরের ত্রিশ হাজার সৈন্যের সামনে প্রবল সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করেও পরাজয় মেনে নিতে বাধ্য হলেন। শাহ মনসুরকে বন্দী এবং হত্যা করা হয় পরের বছর ১২৯৩ সালে। সিরাজের ওপর প্রতিষ্ঠিত হলো তার একচ্ছত্র আধিপত্য।

এই দফায় সিরাজ আর বাগদাদ তার নিয়ন্ত্রণে এলো


সিরাজের পর বাগদাদকে পদানত করাটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল। বিশেষ করে তাকরিত দুর্গে হাসান নামের এক দস্যু সর্দার বেশ উপদ্রব করছিল। তৈমুর তাকরিত দখল করে তার সমস্ত অধিবাসীকে হত্যার আদেশ দিলেন। আর সেই সাথে অধিকারে আনলেন কালাত নামের আরো একটি দুর্গ।

বিচ্ছিন্ন অভিযাত্রা

১৩৯৪ সালে তৈমুর নিজের অভিযাত্রার গতিমুখ ঘোরান মস্কোর দিকে। সীমাহীন ধ্বংস আর হত্যার মধ্য দিয়ে দখল করেন ককেশাস অঞ্চলের অস্ত্রাখান। তারপর একে একে অধিকারে এলো সমুদ্র তীরবর্তী ভেনিস, জেনোয়া, বাস্ক, কাটান প্রভৃতি নগরগুলিও। হাজির হলেন বিস্তৃত সাইবেরিয়া পেরিয়ে আলবুর্জ পর্বতমালার কাছে। এই বিজয়ের পর তার কাছে পদানত হলো উত্তরাঞ্চল, উরাল, কাস্পিয়ান সাগর, পারস্য ও ককেশাস।

তৈমুর পরিণত হলেন পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী সাম্রাজ্যের অধিকর্তা হিসাবে


এই মুহূর্তে তৈমুর কোনো নামমাত্র রাজা নয়; ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে থাকা এক পরিণত সম্রাট। যিনি বাকি পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে আছেন নিজের হাতের মুঠোতে আনার জন্য। তখনও ভারত এবং অটোম্যান সাম্রাজ্যের সাথে সংঘর্ষ বাকি। তখনও বাকি তার রূপকথাতে পরিণত হওয়ার আখ্যান। সেই গল্প হবে পরবর্তী পর্বে।

● পর্ব-৩ পড়তে ক্লিক করুন

   

৯৩ বছর বয়সে বৃদ্ধের অবিশ্বাস্য কর্মকাণ্ড



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

  • Font increase
  • Font Decrease

শৈশবে খেলা, কৈশরে পড়ালেখা, যৌবনে চাকরি, মধ্যবয়সে সংসার, বৃদ্ধবয়সে একটা মাথা গোজার ঠাঁই খুঁজে অবসরে সময় কাটিয়ে দেওয়া। কপাল খারাপ থাকলে বিছানাতেই শোয়া বা আধশোয়া থেকে মৃত্যুর দিন গোণা। সাধারণত এভাবেই মানুষের জীবন কেটে যায়। অনেকে আবার মধ্যবয়সের পরেই নানারকম রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অথবা শরীরকে বিভিন্ন রোগের আবাসস্থল বানিয়ে দুর্বল হয়েই বেঁচে থাকেন। তবে খড়ের গাদায় সূচের মতো দু-একজন থাকে যারা একেবারেই ব্যতিক্রম। তেমনভাবেই আলোচনায় এসেছেন ৯৩ বছরের এক বৃদ্ধ।  তার ব্যতিক্রমী জীবনযাপনের ধারাই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে যুসমাজে।     

যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা জন স্টারব্রুক। তিনি একজন ওয়াটার পোলো খেলোয়াড়। এটি মূলত পানির মধ্যে বাস্কেটবলের মতো একধরনের খেলা। এইখেলার সাথে কুস্তি খেলারও কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে। জনের বর্তমান বয়স ৯৩ বছর। এই বয়সেও যথেষ্ট সুস্থ এবং সবল তিনি। সমবয়েসীদের যেখানে সোজা হয়ে দাঁড়াতেও ২ জনের সহায়তা লাগে, সেখানে এখনো ম্যারাথনে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি বেশ দক্ষ সাঁতারুও বটে! ৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাঁতার কাটা অব্যাহত রেখেছেন তিনি।

প্রায় শতাব্দি ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধের এমন কারিশমা দেখে চোখ ছানাবড়া হবার উপক্রম। জন মূলত একজন সাঁতারু। পেশাগতভাবে না হলেও অনেক ছোটবেলা থেকেই তিনি সাঁতার কাটেন তিনি। দেশের সম্মানজনক অনেপ্রতিযোগীতায় একাধিক বার চ্যাম্পিয়নের খেতাবও জেতেন। চাকরি করেছেন ‘ব্রিটিশ আর্মি মেডিক্যাল কর্পস’-। সেখানেও সাঁতারের দক্ষতার কারণে তার বেশ সুনাম ছিল।   

ম্যারাথনে দৌড়াচ্ছেন ৯৩ বছরের জন

তবে সাঁতারের পাশাপাশি এখন ম্যারাথেনেও অংশগ্রহণ করেছেন জন। ৫২ টির বেশি ম্যারাথনের দৌড় শেষ করেছেন তিনি। জানালেন এই বয়সেও তার এমন চ্যালেঞ্জিং সব কাজের অভিজ্ঞতা। সুস্থতা ধরে রাখার রহস্যও ফাঁস করলেন সকলের কাছে। ব্রিটিশ নাগরিক জন বন্ধুদের কাছে ‘দ্য লিজেন্ডনামেই পরিচিত। একই নামে তাকে আখ্যায়িত করছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো

জন স্টারব্রুক জানান, তিনি এখনো সপ্তাহের ৬ দিনই জিমে যাতায়াত করেন। বিশেষ কোনো খাদ্যাভাস নেই তার। খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি রাখতে পছন্দ করেন- এই যা। তাছাড়া প্রতিদিন সকালে পোরিজ খান তিনি। তবে তিনি কখনো ধূমপান করেননি। অ্যালকোহলও খুব সীমিত পরিমাণে সেবন করতেন। মূলত এই বয়সেও এটা সবল থাকার পেছনে বংশ পরম্পরায় পাওয়া নিজের জীন আসল কারণ- বিশ্বাস করেন জন।

কারণ যাই হোক, প্রানবন্ত এই বৃদ্ধ বিশ্ববাসীকে অবাক করেছে। তার মতোই দৃঢ় মানসিকতা ধরে রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন যুবক-যুবতীরা।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

;

প্রশ্ন আর উত্তর যেন পরস্পরের সাংঘর্ষিক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রশ্ন থাকে এক আর তার উত্তর হয় ভিন্ন। এমন উত্তরপত্রের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়। এবার এমনই এক উত্তরপত্রের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে রীতিমতো সবাই অবাক! তবে এই ঘটনার জন্ম দেওয়া দেশটি বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতের একটি হিন্দি পরীক্ষায় ঘটেছে এমন কাহিনী।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রকাশিত ভিডিওতে পরীক্ষার্থীর এমন উত্তর দেখে শিক্ষককেও হাসতে দেখা যায়। 

ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা হয়েছে @n2154j অ্যাকাউন্টের একটি আইডি থেকে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি প্রশ্ন ছিল এমন, সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ (যৌগিক ব্যঞ্জনবর্ণ) কী? এই প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষার্থীটি একটি খাদ্য রূপক দিয়ে উত্তর দিল: "মাটার পনির এবং সব মিশ্র সবজি একত্রিত একটি খাবার।"

আরেকটি প্রশ্ন ছিল "অতীত কাল কাকে বলে?" এর উত্তরে ওই পরীক্ষার্থি লিখেছে, "যখন অতীত আমাদের অতীতের আকারে আসে, তখন তাকে অতীত কাল বলা হয়।"

ভিডিও অনুযায়ী আরও একটি প্রশ্ন ছিল "বহুবচন কাকে বলে?" এর উত্তরে সে লিখেছে "যে পুত্রবধূ তার শ্বশুরবাড়ির কথা শোনে তাকে বহুবচন বলে।"

শিক্ষার্থীটির এমন উত্তর শুনে হাসিতে ফেটে পড়েন শিক্ষক। এমন উত্তরগুলোকে শিক্ষক ভুল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যদিও এমন উত্তরের জন্য তাকে পুরোপুরি হতাশ করা হয়নি। তাকে ১০ মার্কের মধ্যে ৫ নম্বর দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষক পরে তার উত্তরপত্রে লিখে দিয়েছিলেন, এই ৫ মার্ক তোমার মস্তিষ্কের জন্য, ছেলে।

ভিডিওটি দেখে সবাইকে হাসির ইমোজি দিতে দেখা যায়। সম্পূর্ণ নম্বর না পাওয়ায় অনেকেই যুক্তি দিয়ে লিখেছেন, ছাত্রটি তার কৌতুক প্রতিভার জন্য পূর্ণ নম্বর পাওয়ার যোগ্য।

তবে এমন ঘটনা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, ছাত্র এবং শিক্ষকের হাতের লেখা সন্দেহজনকভাবে একই রকম।

অন্য এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, "প্রশ্ন এবং উত্তর একই হাতের লেখা"। 

;

ফেনী শহরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া



মোস্তাফিজ মুরাদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

'কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে-আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে' জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই মনোমুগ্ধকর গানে ফুটে উঠেছে কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য। কৃষ্ণচূড়া যেন প্রকৃতিকে দান করেছে লাল আভার অপরূপ সৌন্দর্যের মহিমা। সাথে গ্রীষ্মের উত্তাপে শহরে সৌরভ ছড়াচ্ছে নানা জাতের ফুল। তীব্র তাপদাহের পর কালবৈশাখী, এরপর মাঝারি বৃষ্টির মধ্যে ফুলের আগমন। এতে রঙের উল্লাসে মেতে উঠেছে ফেনী শহরবাসী।

ফেনী শহরের কোর্ট বিল্ডিং, এলজিইডি, পুলিশ লাইন, নবীন চন্দ্র সেন কালচারাল সেন্টার, ফেনী সরকারি কলেজ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া। এটি একদিকে প্রকৃতিকে যেমন সাজিয়েছে অপরূপ সৌন্দর্যে, অন্যদিকে এর সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে তরুণ-তরুণী, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষসহ ফুলপ্রিয় পথচারীদের। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে, সরকারি দফতরসহ স্কুল-কলেজে কৃষ্ণচূড়া গাছের লাল ও উজ্জ্বল সবুজ পাতার সংমিশ্রণ দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে চারপাশ।


কৃষ্ণচূড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ফুলের ঘ্রাণে মুখরিত হয়ে আছে পুরো শহর। শহরের মূল সড়কের ডিভাইডারে পৌরসভার উদ্যোগে লাগানো হাসনাহেনা, রজনিগন্ধা, গন্ধরাজসহ নানা জাতের ফুল গাছে ফুল ফুটেছে। এটি একদিকে বাড়িয়েছে সৌন্দর্য অন্যদিকে হেঁটে কিংবা রিকশায় চলাচল করলে পাওয়া যায় এসব ফুলের সুঘ্রাণ।

ফেনী শহরের কৃষ্ণচূড়ার অপরূপ সৌন্দর্য দেখে ফুলপ্রিয় পথিকরা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিকে অনন্য সাজে সাজিয়েছে। এই ফুলের সৌন্দর্যের কারণে পথচারীরা একবার হলেও এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এর গাছের উপর নজর দিবে। পাশাপাশি তীব্র গরমে অন্যান্য ফুলের সুঘ্রাণে চারপাশ মুখরিত হওয়াতে ক্লান্তিতা কিছুটা হলেও কমছে।


তারা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুলের এই নান্দনিক দৃশ্য দেখতে এর গাছ রোপণ করা জরুরি। রাস্তা প্রশস্তকরণ, ঘর-বাড়ি নির্মাণসহ নানা প্রয়োজনে গাছ কেটে ফেলা হয়। অন্যান্য গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া রোপণ করলে একদিকে যেমন সৌন্দর্য বাড়াবে অন্যদিকে পরিবেশ বান্ধব হবে।

সাজিদ হাসান নামের এক পথচারী বলেন, কৃষ্ণচূড়া একদিকে যেমন প্রকৃতিতে অপরুপ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে, আরেকদিকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমাবে। সারাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে, আমার মতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে এই গাছটিও যুক্ত করা উচিত। তীব্র গরমের পর বৃষ্টি হলো, এরপর শহরে নানা রঙের ফুলের দেখা মিলছে, ফুলের ঘ্রাণে চলাচল করতেই ভালো লাগছে।

ফারজানা ইয়াসমিন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ফুলের সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। অন্যান্য ফুলের পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ফুল আমার অনেক ভালো লাগে। আমাদের কলেজে বকুল তলা আছে, ক্যান্টিনের পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে। সুযোগ পেলেই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করি।

অনিক মোহন নামে একজন বলেন, রিকশায় করে যখন বাসায় ফিরি, শহরের রাস্তার মাঝে ভিডাইভারে লাগানো নানা জাতের ফুলের ঘ্রাণ মনকে আনন্দিত করে। রাতের বেলা শহর যখন নিস্তব্ধ হয়ে যায়, তখন এ ফুলের সৌন্দর্য কয়েকশ’ গুণ বেড়ে যায়।

সড়কের পাশে কৃষ্ণচূড়া লাগানো হলে সৌন্দর্য বাড়বে বলে মনে করেন পথচারী মিনহাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য যে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে, ওই গাছগুলোর জায়গা কৃষ্ণচূড়ার গাছ লাগালে রাস্তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে।

একই কথা বলেন শহরের ব্যবসায়ী নাদিম আহমেদ। তিনি বলেন, সৌন্দর্য ও পরিবেশের কথা বিবেচনা করে এই গাছ রোপণ করা উচিত আমাদের। তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে অন্যন্যা গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া গাছ রোপণ করার উদ্যোগ নিতে হবে। যেগুলো শহরে আছে তাতেই সৌন্দর্য বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ, আরও যদি লাগানো যায় ফুলে ফুলে ভরে উঠবে আমাদের শহর।

কৃষ্ণচূড়া মাদাগাস্কারের শুষ্ক পত্রঝরা বৃক্ষের জঙ্গলে পাওয়া যায়। যদিও জঙ্গলে এটি বিলুপ্ত প্রায়, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এটি জন্মানো সম্ভব হয়েছে। সৌন্দর্যবর্ধন গুণ ছাড়াও, এই গাছ উষ্ণ আবহাওয়ায় ছায়া দিতে বিশেষভাবে উপযুক্ত। কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় কম (সর্বোচ্চ ১২ মিটার) হলেও শাখা-পল্লবে এটি বেশি অঞ্চল ব্যাপী ছড়ায়।

শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে গেলেও, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ থাকে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের রং উজ্জ্বল লাল। পত্র ঝরা বৃক্ষ, শীতে গাছের সব পাতা ঝরে যায়। বাংলাদেশে বসন্ত কালে এ ফুল ফোটে। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। পাপড়িগুলো প্রায় ৮ সেন্টিমিটারের মত লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়া জটিল পত্র বিশিষ্ট এবং উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০ টি উপপত্র বিশিষ্ট। কৃষ্ণচূড়ার জন্মানোর জন্য উষ্ণ বা প্রায়-উষ্ণ আবহাওয়ার দরকার। এই বৃক্ষ শুষ্ক ও লবণাক্ত অবস্থা সহ্য করতে পারে।

জানা যায়, অপরূপ সৌন্দর্য ছড়ানোর পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর পাতা, মূলের বাকল ও ফুল ভেষজ গুণাগুণ সম্পূর্ণ, যা জ্বর ও খুশকি নিরাময়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। ভেষজটি হেমিপ্লেজিয়া, আর্থরাইটিস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। কৃষ্ণচূড়া গাছের শিকড়, বাকল এবং ফুল সবই পরজীবী সংক্রমণ নিরাময়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।

;

হলুদ আভায় মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সূর্যমুখী 



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: প্রাণের উচ্ছ্বাসে সূর্যমুখী

ছবি: প্রাণের উচ্ছ্বাসে সূর্যমুখী

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃদু বাতাসে দোল খাচ্ছে সূর্যমুখী। বাস্তব জীবনের নিস্তব্ধতা ভাঙছে তার হলুদ আভায়। মৌমাছির আলিঙ্গন পেতে ছড়াচ্ছে উষ্ণ মুগ্ধতা। হলুদের কারুকার্যে বিমোহিত হচ্ছে পথিকের মন। লুকায়িত সৌন্দর্য প্রকৃতির মাঝে তুলে ধরে প্রবল আকর্ষণে টানছে দর্শনার্থীদের। সবুজ পাতা ভেদ করা সেই অনিন্দ্য হাসি যেন কৃষকের মুখেরই প্রতিচ্ছবি। সূর্যমুখী ফুল চাষে জনপ্রিয়তা বাড়ছে কৃষকদের মাঝে।

সূর্যমুখী এক ধরনের একবর্ষী ফুলগাছ। সূর্যমুখী গাছ লম্বায় ৩ মিটার (৯ দশমিক ৮ ফুট) হয়ে থাকে। ফুলের ব্যাস ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি) পর্যন্ত হয়। এই ফুল দেখতে কিছুটা সূর্যের মতো এবং সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে বলে এর এরূপ নামকরণ করা হয়েছে। ফুলের বীজ হাঁস-মুরগির খাদ্যরূপে ও তেলের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

জানা যায়, বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের উৎস হিসেবে ১৯৭৫ সাল থেকে এ ফুলের চাষ শুরু হলেও কৃষকের মাঝে জনপ্রিয়তা পায় নি বহুদিন। পরে ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। বর্তমানে রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া, নাটোর জেলা, পাবনা, নওগাঁ, দিনাজপুর, গাজীপুর, টাঙ্গাইল প্রভৃতি জেলাতে এর ব্যাপক চাষ হচ্ছে।

সূর্যমুখীর বাঁধভাঙা হাসি আর প্রাণের উচ্ছ্বাস

সোমবার (১২ মে) সকালে সরেজমিনে নওগাঁ সদর উপজেলার মুক্তির মোড় কেন্দ্র শহীদ মিনারের পাশে দেখা যায়, সূর্যমুখী বাতাসে; দুলছে আলোর প্রতিফলনে পাপড়িগুলো যেন চকচকে হলুদ আভা ছড়াচ্ছে। মৌমাছি এক ফুল থেকে অন্যফুলে মধু আহরণে ছুটাছুটি করছে আর এসব দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হচ্ছে পথচারীরা। এছাড়াও নওগাঁর বেশ কিছু অঞ্চলে চাষ হচ্ছে সূর্যমুখী। একদিকে যেমন ফুলগুলো সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে তেমনি বীজ থেকে ভোজ্য তেল উৎপাদনে ভূমিকা রাখছে সূর্যমুখীর বীজ। সূর্যমুখী গাছ শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। 

প্রতিদিন ভোরে সূর্যমুখী বাগানের সকল গাছ অনেকটা পূর্বদিকে মুখ করে থাকে। যেদিকে সূর্য দেখা দেয় এবং ধীরে ধীরে ওপরে উঠতে থাকে। সূর্যের সাথে সাথে সূর্যমুখীগুলোও ধীরে ধীরে নিজেদের দিক পাল্টাতে থাকে। সূর্য যেদিকে যায় তারাও সেদিকে যায়। সবসময়ই এগুলো সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে। সূর্য যখন পশ্চিম দিকে অস্ত যায় তারাও তখন পশ্চিম দিক বরাবর থাকে। অস্ত যাওয়ার পরে তারা রাতব্যাপী আবার উল্টো দিকে ঘুরে পূর্বমুখী হয়। এভাবে শুকিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের এই চক্র চলতেই থাকে।

সূর্যের সাথে সাথে নিজেদের দিকও পাল্টাতে থাকে সূর্যমুখী

তবে সবার মাঝে একটি প্রশ্ন অনেক সময় ঘুরপাক খায় যে সূর্যমুখী ফুল কেন সূর্যে দিক হয়ে থাকে! সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের একটি দল সূর্যমুখীর এই দিক পরিবর্তন সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্যের রহস্য উন্মোচন করেছেন। তাদের গবেষণা থেকে বেরিয়ে আসে সূর্যমুখীরা তাদের নিজস্ব সার্কাডিয়ান চক্রে আবদ্ধ। এই চক্র সচল থাকার কারণে সূর্যমুখীরা সব সময় সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে। গবেষকরা সায়েন্স জার্নালে তাদের গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশ করেছেন। সার্কাডিয়ান চক্র বা সার্কাডিয়ান ঘড়িকে অনেক সময় ‘দেহঘড়ি’ নামেও ডাকা হয়। মানুষের মাঝেও এই চক্র বিদ্যমান। যেমন প্রত্যেক মানুষেরই দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম চলে আসে।

পথচারী রায়হান বলেন, ফুল শুভ্রতার প্রতীক ও পবিত্র। ফুলকে যারা ভালোবাসে তাদের মনটাও সুন্দর। সূর্যমুখী ফুল সব ফুলের চেয়ে আলাদা কারন সূর্যের দিক মুখ করে বেশিরভাগ থাকে এ ফুল। বিশেষ করে দুপুর শুরু হলে সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে এ ফুল যা দেখতেও খুব সুন্দর লাগে তাছাড়া এ ফুলের বীজ থেকে তেল হয় যা অনেক স্বাস্থ্যকর।

ক্ষুদে শিক্ষার্থী আফরিন (১০) জানায়, আমি ফুল খুবই ভালোবাসি আর সূর্যমুখী ফুলগুলো হলুদ হবার কারনে আরো বেশি ভালো লাগে। নামটা যেমন সুন্দর তেমনি মুগ্ধতাও ছড়ায়। ফুলগুলো থেকে তেল হয় তাই কোনোভাবেই নষ্ট করা যাবে না। আমরা দূর থেকে দেখেই শান্তি পাই।

সূর্যের সাথেই একাত্মতা সূর্যমুখীর

স্থানীয় বাসিন্দা আরেফিন তুহিন বলেন, স্বল্প পরিসরে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য যারা সূর্যমুখী ফুলের গাছ লাগিয়েছে তারা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। ফুল মানেই সুন্দর সূর্যমুখীও এটিএ ব্যাতিক্রম নয়। মাঝে মাঝে যখন ফুলের দিকে চোখ যায় খুব ভালোলাগা কাজ করে। এ ফুল দেখতে যেমন সুন্দর এটির তেল ও খুব পুষ্টিকর।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে চলতি অর্থবছরে সূর্যমুখী চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ হেক্টর ও অর্জন হয়েছে ৬৫ হেক্টর এবং মোট উৎপাদন হয়েছে ১০০ মেট্রিক টন। 

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বার্তা২৪.কমকে বলেন- সূর্যমুখী একদিকে যেমন শুভ্রতার প্রতীক আবার অন্যদিকে বীজ থেকে তেল উৎপাদন হয় আবার মধুও পাওয়া যায়। বাজারে যে ভৈজ্যতেল গুলো রয়েছে যেমন, সয়াবিন,সরিষা, পাম-ওয়েল ইত্যাদি এগুলোর চেয়েও অনেক বেশি পুষ্টিগুণ আছে সূর্যমুখীর তেলে যা স্বাস্থ্যকর এবং স্বাস্থ্যর জন্য খুবই উপকারী। আমরা বেশি বেশি উৎপাদনে কৃষকদের সব রকম পরামর্শ দিয়ে থাকি।

;