মেঘনাদ সাহা : বিশ্বমানের বাঙালি বিজ্ঞানী



যাকওয়ান সাঈদ, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
মেঘনাদ সাহা [অক্টোবর ৬, ১৮৯৩ - ফেব্রুয়ারি ১৬, ১৯৫৬]

মেঘনাদ সাহা [অক্টোবর ৬, ১৮৯৩ - ফেব্রুয়ারি ১৬, ১৯৫৬]

  • Font increase
  • Font Decrease

পৃথিবীবিখ্যাত সব বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি আমাদের কাছে বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার নামটাও খুব পরিচিত। এর কারণটি হলো, তিনি শুধুমাত্র একজন বিজ্ঞানীই নন, বরং তিনি একজন বাঙালি বিজ্ঞানী। বিজ্ঞান বিষয়ে বিশ্বের দরবারে আমাদের যেই বিশেষ-বিশেষ কিছু গর্বের জায়গা রয়েছে, সেখানে মেঘনাদ সাহার নামটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এই ফিচারটি মেঘনাদ সাহাকে নিয়ে। পাঠের সুবিধার্থে ফিচারটিকে কয়েকটি ফুটনোটের মধ্যদিয়ে উপস্থাপন করা হলো।

১.
শুরুতেই মেঘনাদ সাহার বিজ্ঞানবিশ্বে এত বৃহৎভাবে সমাদৃত হবার কারণটি উল্লেখ করা যাক। অর্থাৎ, যে থিওরিটির কারণে তিনি বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত হয়ে ছিলেন, সেটিকে ব্যাখ্যা করা যাক। তার এই থিওরিটির নাম ছিল, ‘ল অব থার্মার আইওয়ানাইজেশন’। মূলত, জ্যোতি-পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাসে এই তত্ত্বটি ছিল এক নতুন সংযোজন।

‘ল অব থার্মার আইওয়ানাইজেশন’-এর সরল ব্যাখ্যাটা হলো, সূর্য এবং গ্যালাক্সিতে যেসব নক্ষত্র রয়েছে, এদের সবার চারপাশেই ঘিরে আছে একটি গ্যাসীয় পদার্থ। এই গ্যাসীয় পদার্থকে ভাগ-ভাগ করলে দেখা যাবে, আবার এর মধ্যেই রয়েছে কয়েকটি বিশেষ ধরনের মৌলিক পদার্থ। যেমন বিদ্যুৎনিরপেক্ষ পরমাণু, যাকে বলা হয় নিউট্রাল অ্যাটম। অথবা যেমন আছে, আয়ন। মেঘনাদ সাহার সূত্রটি হলো, সূর্য ও নক্ষত্রের পার্শ্ববর্তী ওই গ্যাসীয় পদার্থের মধ্যে কতভাগ নিউট্রাল অ্যাটম রয়েছে, বা কতভাগ আয়ন রয়েছে, সেটার পরিমাণ নিশ্চিত করা। নক্ষত্রের বর্ণালি বিশ্লেষণে মেঘনাদের এই আবিষ্কারটি ছিল সবচাইতে প্রথম।

২.
মেঘনাদ সাহার জন্ম বাংলাদেশে, ১৮৯৩ সালের ৬ অক্টোবর, তৎকালীন ঢাকা জেলার বিক্রমপুরে। গ্রামের নাম, শ্যাওরাতলী। তার পিতার নাম ছিল জগন্নাথ সাহা, আর মায়ের নাম ভুবনেশ্বরী দেবী। পেশায় তার পিতা ছিলেন একজন নিম্নআয়ের মুদি দোকানদার। ফলত, মেঘনাদ সাহার পড়াশোনার আর্থিক ভার গ্রহণ করা তার পক্ষে কঠিন ছিল।

তারা যে গ্রামে থাকতেন, সেটি ছিল আদতেই অজপাড়াগাঁ। সেখানে একটা হাইস্কুল পর্যন্ত ছিল না। তাই মেঘনাদ সাহাকে পড়াশোনার জন্য ভর্তি হতে হয়েছিল তার গ্রাম থেকে এগারো কিলোমিটার দূরের আরেকটি গ্রামে, শিমুলিয়ায়। যেহেতু বইপত্র বা পড়াশোনার খরচ আয়ত্তে নেওয়ার সাধ্য তার বাবার ছিল না, তাই তাকে পড়তে হয়েছিল অন্য একজন ব্যক্তির দয়ায়। অনন্তকুমার দাস নামক একজন চিকিৎসক তার পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ১৯০৫ সালে মেঘনাদ শিমুলিয়া গ্রামের স্কুল থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করে ঢাকায় এসে কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হলেন।

বলতে গেলে, সবকিছু ভালোই চলছিল, কিন্তু সেই একই সময়ে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন আরম্ভ হলো। সেই আন্দোলন স্বাভাবিকভাবে প্রসারিত হলো কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্রদের মধ্যেও। ছাত্রদের এই আন্দোলনে জড়িয়ে যাওয়ার ব্যাপারগুলো ব্রিটিশ সরকার জানতে পেরেছিল। সেইসময় ঘটনাচক্রে বাংলার লাটসাহেব কলেজিয়েট স্কুল পরিদর্শন করতে আসলেন। অন্যদিকে লাটসাহেবের আসাকে কেন্দ্র করে ছাত্ররা স্কুল বয়কট করল। এই বয়কটকারীদের মধ্যে মেঘনাদ সাহাও ছিলেন। ফলত, বাকিদের সঙ্গে তাকেও স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হলো।

৩.
ঘটনার প্রেক্ষিতে, মেঘনাদ সাহাকে অন্য আরেকটি স্কুলে ভর্তি হতে হলো। সেটি ছিল ঢাকার কিশোরীলাল জুবিলি স্কুল। এই স্কুল থেকেই তিনি প্রবেশিকা অর্থাৎ ম্যাট্রিক পাশ করলেন, ১৯০৯ সালে। মেঘনাদ ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী একজন ছাত্র। সেবছর পূর্ববাংলার প্রবেশিকা-পরীক্ষার্থী সকল ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন।

এরপর, ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট সম্পন্ন করে মেঘনাদ চলে গেলেন কলকাতায়। উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে তিনি বিখ্যাত প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হলেন। মূলত, জীবনের এই পর্বে এসেই তিনি অবারিতভাবে বিজ্ঞানের জগতের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে গেলেন। এখানেই তিনি সহপাঠী হিসেবে পেলেন সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে। আর তার শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন জগদীশ চন্দ্রবসু, এবং আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ।

সামনের সারিতে মাঝখানে জগদীশ চন্দ্র বসু, তার ডান পাশে মেঘনাদ সাহা


৪.

উচ্চশিক্ষা সমাপ্ত হলে যখন চাকরির ব্যাপার আসলো, তখন মেঘনাদ সাহা চাইলেন একটি সরকারি চাকরি যোগাড় করতে। তার মেধা, এবং যেই সাফল্যের সঙ্গে তিনি উত্তীর্ণ হয়েছিলেন, তাতে করে সরকারি কোনো পোস্টে তার চাকরি হলে বরং সরকারেরই উপকার হতো। কিন্তু বিপত্তি হলো যে, পুলিশ কিভাবে যেন জানতে পারল কলেজে পড়ার সময়ে তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়েছিলেন। কার্যত সরকারি কোনো জায়গায় তার চাকরি আর হলো না। এমনিতে তিনি সত্যিকার অর্থেই তৎকালীন বিপ্লবী সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। বিপ্লবী বাঘা যতীনের সঙ্গে তার বিশেষ সম্পর্ক ছিল।

তবে এই কথা বলতেই হয় যে, মেঘনাদ সাহার পক্ষে যেহেতু কোনো সরকারি কর্মক্ষেত্রে চাকরি করার সুযোগ হলো না, এই না-হওয়াটাই তাকে বিশ্বের দরবারে সমাদৃত করেছিল। নহেতু, সর্বোচ্চ তিনি একজন বড়মাপের সরকারি আমলা হতেন, কিন্তু জগৎময় খ্যাতিসম্পন্ন একজন বিজ্ঞানী হওয়া তার পক্ষে কখনোই সম্ভব হতো না।

৫.
সেই সময়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় নিজ উদ্যোগে ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ অব সায়েন্স’ প্রতিষ্ঠিত করলেন। তিনিই মেঘনাদ সাহাকে ডেকে নিয়ে সেখানে গণিতের প্রভাষক পদে চাকরি দিলেন। একই সময়ে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে সত্যেন্দ্রনাথ বসুও গণিত বিভাগে চাকরি পেয়েছিলেন।

সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সঙ্গে সহশিক্ষক হয়ে তার এই যে কাজ আরম্ভ করার সময়টা, এই সময়টাকে সবচাইতে ভালোভাবে বর্ণনা করেছেন বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী আচার্য দেবেন্দ্রমোহন বসু। এই পর্বে বরং, আচার্য দেবেন্দ্রমোহনের ভাষ্যেই মেঘনাদ সাহাকে জানা যাক—

“১৯১৯ সালে বার্লিন থেকে ফিরে এসে যখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে যোগ দিলাম, সেখানে সতীর্থ হিসেবে পেলাম দুই তরুণকে। বললাম, বিজ্ঞানে পাশ্চাত্য দেশগুলোতে অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটে চলেছে। বললাম বার্লিনে আমার অভিজ্ঞতার কথা। বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয় তখন আলোকিত করে রেখেছেন এক একজন দিকপাল বিজ্ঞানী। যাদের মধ্যে আছেন ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক, আলবার্ট আইনস্টাইন, ভারবুর্গ, মার্ক্স বর্ন, ওয়াল্টার লার্নাস্ট। কোয়ান্টাম তত্ত্ব এবং আপেক্ষিকবাদ নিয়ে চলছে নানান গবেষণা। লক্ষ করলাম মেঘনাদ এবং সত্যেন্দ্রনাথ আমার কথাগুলো যেন গিলছেন। বার্লিন থেকে দুটো বই এনেছিলাম। প্ল্যাঙ্কের লেখা Thermodynamik এবং Warmesstrahlung—বই দুটির মধ্যে ডুবে গেলেন সত্যেন্দ্রনাথ। কিন্তু মেঘনাদ মুখর হয়ে উঠলেন। বিদেশে কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যা এবং তাপ বলবিদ্যার ওপর সাম্প্রতিক খবরাখবর জানার নিয়মিত আলোচনা করতে লাগলেন তিনি। বিশেষ করে ‘থার্মাল আইওনাইজেশন’ এবং কিভাবে তার সাহায্যে নক্ষত্রের আলোক বর্ণালির চরিতাবলি ব্যাখ্যা করা যায় তার ওপর। আমার তখনই মনে হয়েছিল, শুধু তত্ত্ব নিয়ে চিন্তাভাবনা করেই মেঘনাদ ক্ষান্ত হতে চান না, তত্ত্বের পরীক্ষালব্ধ ফলাফল এবং তার প্রয়োগের দিকেই তার আগ্রহ বেশি।”

৬.
এই সময়ে মেঘনাদ সাহা বিজ্ঞানের নানা বিষয় নিয়ে প্রচুর পরিমাণে প্রবন্ধ লিখতে শুরু করেন। এইসব প্রবন্ধগুলোকে একইভাবে মেঘনাদের গবেষণাসম্ভারও বলা যায়। তিনি সেইসময়ে যেসব পত্র-পত্রিকাতে লেখালেখি করতেন সেগুলো হলো, অ্যাস্ট্রনমিকাল জার্নাল, ফিজিক্যাল রিভিউ, জার্নাল অব দি এশিয়াটিক সোসাইট অব বেঙ্গল, জার্নাল অব দি ডিপার্টমেন্ট অব সায়েন্স, ইত্যাদি।

৭.
১৯১৯ সালে মেঘনাদ সাহা স্কলারশিপ নিয়ে লন্ডনে চলে যান। সেখানে গিয়ে ইম্পেরিয়াল কলেজ অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজিতে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী অধ্যাপক ফাউলারের অধীনে কাজ করার সুযোগ লাভ করেন। যা মেঘনাদের জীবনে অন্যতম একটা টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে কাজ করেছে। এই সময়ে তিনি কেমব্রিজের পৃথিবীবিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার জে. জে. থমসনের সান্নিধ্যও লাভ করেছিলেন।

এই লন্ডনে থাকাকালীনই তার ‘ইকুয়েশন অব থার্মাল আইওনাইজেশন’ নামক বিখ্যাত গবেষণাটি প্রকাশিত হয়, ‘ফিলসফিক্যাল’ ম্যাগাজিনে। এই গবেষণাটিই তাকে বিজ্ঞানবিশ্বে খ্যাতিবান করে তুলেছিল। এবং এর কারণেই পরবর্তীতে রয়াল সোসাইটি তাকে ফেলো নির্বাচিত করেছিল।

৮.
পরের বছর, ১৯২০ সালে তিনি বার্লিন গিয়েছিলেন। সেখানে থাকাকালেই আশুতোষ মুখোপাধ্যায় তাকে জানান যে, তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। এই খবরটি তার জন্য খুব তৃপ্তির ছিল। পক্ষান্তরে এটাই ঘটল যে, তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে জয়েন করবার কিছুদিন পরেই বুঝতে পারলেন এখানে কাজ করা খুব সহজ ব্যাপার নয়। কেননা, ব্রিটিশ সরকার কখনোই কাউকে ইচ্ছাস্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিত না।

এই কারণেই তিনি বেশিদিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে পারেননি। লাহোর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার জন্য আমন্ত্রণপত্র এলো, তখন তিনি সেখানে চলে গেলেন। সেখানেই তিনি ১৯২৩ সাল থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।

১৯২১ সালে বার্লিনে মেঘনাদ সাহা


তবে হ্যাঁ, এর মধ্যেও তিনি নানা জায়গায় নানান সংযুক্তির মধ্য দিয়ে বিজ্ঞানের প্রসারে কাজ করে গেছেন। ১৯৩৩ সালে পুনরায় কিছুদিনের জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে একটি পারমাণবিক গবেষণাগার গড়ে তুলেছিলেন তিনি। যার নাম দিয়েছিলেন ‘ইন্সটিটিউ অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স’। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সাহা ইন্সটিটিউ অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স’।

এছাড়া, ১৯৩১ সালে তিনি উত্তর প্রদেশে বিজ্ঞান একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আর ১৯৩৫ সালে, তারই উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ‘ইন্ডিয়ান সায়েন্স নিউজ এসোসিয়েশন’। আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় ছিলেন এই প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি, আর মেঘনাদ সাহা ছিলেন এটির সাধারণ সম্পাদক।

৯.
১৯৪৩ সালে দামোদরে বিরাট একটি বন্যার ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতের বন্যা-নিরসন প্রক্রিয়া নিয়ে মেঘনাদ ভাবতে আরম্ভ করেন। দামোদর নদীতে বাঁধ দেবার প্রকল্প হাতে নেন। ওই সময়েই তিনি বুঝেছিলেন যে, বন্যার সংকট নিরসনে বিদ্যুৎ-উৎপাদনের বিকল্প নেই। কেননা, একটি সমৃদ্ধশালী দেশ গড়তে হলে চাই প্রচুর পরিমাণ বিদ্যুৎ। সেই প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই তিনি এলাহাবাদে একটি সভার অঅয়োজন করেন। যার সভাপতি হয়েছিলেন জওহরলাল নেহেরু।

মেঘনাদ সাহাই সেই সভাতে বিদ্যুৎ-উৎপাদন বাড়ানোর জন্য একটি পরিকল্পনা কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই কমিটি গঠিত হলে সেটারও সভাপতি হয়েছিলেন জওহরলাল নেহেরু।

১০.
শেষজীবনে মেঘনাদ সাহা রাজনীতির সঙ্গেও জড়িয়েছিলেন। তার এই রাজনীতিতে জড়িয়ে যাওয়া নিয়ে নানা মহলেই সমালাচনার সূত্রপাত হয়েছিল, বা সকলে এই বিষয়টি ভালোভাবে দেখেননি। অনেকেই মনে করেছেন, মেঘনাদ সাহার এটির প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু মেঘনাদের তরফে এই রাজনীতিতে জড়িয়ে যাবার পেছনে যুক্তি ছিল। তিনি মনে করতেন, স্বাভাবিকভাবেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে রাষ্ট্রের দায়িত্ব নেবে বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সেটা বাস্তবায়ন করতে হলে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যেই সাহায্য প্রয়োজন, সেটা কিভাবে আনা সম্ভব? যদি না প্রশাসনিক ক্ষমতাকে কাজে লাগানো যায়। আর, সেই অর্থেই, প্রশাসনিক ক্ষমতাকে কাজে লাগানোর জন্যই রাজনীতি করবার প্রয়োজন রয়েছে।

   

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;

নওগাঁয় কালের সাক্ষী কয়েক শ বছরের পুরোনো বটগাছ



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামে বট ও পাকুড় গাছের মেল বন্ধন প্রায় ৩০০ বছরের অধিক সময়ের। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে রহস্যময় এই বট গাছটি। প্রায় ৫ থেকে ৬ একর জমির ওপরে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এই পুরাতন বটগাছটি।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বট ও পাকুর মিলে বিশাল জায়গাজুড়ে কাল্পনিক এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। বট গাছের কাণ্ড থেকে কাণ্ড শাখা থেকে প্রশাখা মাটিয়ে লুটে পড়ে আরেক বটগাছের জন্ম দিয়েছে। কাণ্ডগুলো দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এটির মূল শাখা কোনটি। লতা থেকে মাটিতে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে আরেকটি বটগাছ এভাবে অনেকটা জায়গাজুড়ে এক অন্যরকম সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছে স্থানটি। বটগাছের নিচে ও পাশে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালি মন্দির যেখানে কয়েকদিন পর পর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেন তারা।

মুরাদপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সাহা ( ৫০) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আসলে এই গাছটির সঠিক বয়স কত সেটি আমরা কেউ জানিনা। আমার বাবা-দাদা তারাও এখানে পূজা করতেন তবে তারা আমাদেকে সঠিক বয়স বলতে পারেনি। আমার দাদার মুখে শুনেছি উনার ছোটবেলাতে সেখানে গিয়ে খেলাধুলা করতেন সে সময় গাছটি ঠিক এমন-ই ছিল। তবে অনুমান করা যায়, এই গাছের বয়স প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের অধিক হতে পারে।

একই গ্রামের গৃহবধূ লাইলী বেগম ( ৫৫) বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর হলো আর তখন থেকেই এই গাছটি দেখে আসছি। বাড়ি কাছে হওয়ায় প্রতিদিন আশেপাশে আসতে হয় বিভিন্ন কাজে। মূল গাছটি আমরা অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। একটা গাছ থেকে এতগুলো গাছের সৃষ্টি হয়েছে দেখতে ভালোই লাগে। তবে যদি এটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে আরো কয়েকশ বছর টিকবে বলে মনে করি।

হালঘোষপাড়া থেকে আসা রায়হান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, শুনেছিলাম এখানে অনেক পুরাতন বটগাছ আছে আজকে দেখতে আসলাম। চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে এমন বটগাছ আমাদের এলাকায় নেই। দেখে খুব ভালো লাগছে এখন থেকে মাঝেমধ্যেই আসব।


কল্পনা রানী ( ৪৮) বলেন, আমার স্বামীর বাবার মুখ থেকে শুনেছি এটির বয়স প্রায় ৩০০ বছরের অধিক। কিছুদিন পর পর এখানে পূজা হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে পূজা দেয়। এমন সুন্দর বটগাছ আমি কোনোদিন দেখিনি।

বিমল সাহা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা প্রতিদিন আমরা এখানে এসে ক্রিকেট খেলি। এতো পুরাতন একটি বটের গাছ দেখতে পেয়ে আমাদের খুব ভালো লাগে।

এ বিষয়ে নওগাঁ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এনায়েতুস সাকালাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রাকৃতিকভাবে একেকটা উদ্ভিদের আয়ু একেক রকম হয়ে থাকে সেরকম বটগাছ দীর্ঘজীবি উদ্ভিদ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গায় ৫০০ বছর বা অধিক সময়ের বেশি বেঁচে থাকে। এই উদ্ভিদগুলোর অভিযোজন ক্ষমতা অনেক বেশি ও পরিবেশের সাথে এদের খাপখাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও বেশি এবং যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে এরা মোকাবিলা করতে সক্ষম। বটগাছ গুলো বেশি পানি না পেলেও দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে আবার খুব বেশি তাপমাত্রা বা তাপমাত্রা নিচে নেমে গেলেও এ ধরনের উদ্ভিদ সে সময় টিকে থাকতে পারে সেজন্য অনেক সময় বিল্ডিং বাড়ির দেয়ালেও এদের বিস্তার দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, বট গাছগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে সেটি হলো ওপরের দিকে একটু বেড়ে অনেকদিকে বিস্তার লাভ করে বেশ বড় জায়গা দখল করে তখন এই উদ্ভিদগুলোর ওপরের অংশের ভার বহন করার জন্য ঠেসমূল গঠন করে তারা। মূল কাণ্ড থেকে আস্তে আস্তে মাটিতে ঠেসমূল নেমে আসে তখন ধীরে ধীরে মোটা হতে থাকে। মূল যে কাণ্ডটা তার থেকে বয়সের সাথে সাথে আরো তৈরি হয় যাতে গাছের ভার বহন করতে সক্ষম হয় এবং এভাবে বিশাল জায়গাজুড়ে একে একে বিস্তার লাভ করে কাণ্ডগুলো। বটগাছে এ ধরনের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায় কিন্তু পাকুড় জাতীয় গাছে কম লক্ষ্য করা যায়।

;