প্রধান যে দুটি মানদণ্ডে আমরা মানুষ মাপি



তানিম কায়সার, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় আমরা মানুষকে বিচার করি

ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় আমরা মানুষকে বিচার করি

  • Font increase
  • Font Decrease

আমরা সবাই অন্যের ব্যাপারে ধারণা করতে পছন্দ করি। কারো চেহারা সুরত, কথাবার্তা কিংবা পোশাক পরিচ্ছদ দেখে আমরা তার ব্যাপারে একটা মতামত পোষণ করি এবং পরবর্তীতে এই মতামতকে প্রতিষ্ঠিত করতে আমরা প্রত্যেকেই কমবেশি চেষ্টা করি। যদিও এই কাজ আমরা যে খুব একটা পছন্দ করি তা নয়। কিন্তু পছন্দ বা অপছন্দকে ছাপিয়ে আমরা সবাই এই কাজই করি। কিন্তু আপনি কি জানেন, আমরা যখনি কাউকে কোনো একটা মানদণ্ডে বিচার করি বা কেউ আমাদের কোনো একটা মানদণ্ডে বিচার করে তখন মূলত কোন বিষয়গুলো আমলে নিয়ে এই কাজ করা হয়? আজকে আমরা এই বিষয়েই জানার চেষ্টা করব।

হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক অ্যামি কুডি এমনি একটি গবেষণা চালিয়ে সেটির ফল প্রকাশ করেছেন তার একটি বইয়ে। কুডির রচিত অন্য সব বইয়ের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে। “Presence: Bringing Your Boldest Self to Your Biggest Challenges” নামের বইটিতে তিনি মানুষের একে অন্যকে ভালো মন্দের মানদণ্ডে বিচার করার বিষয় নিয়ে বেশ কিছু আলোচিত তথ্য উপাত্ত প্রদান করেছেন। সেখানে কুডি এমন দুটি বিষয় উল্লেখ করেছেন যে দুটি বিষয়কে ভিত্তি করেই মানুষ সাধারণত অন্যের ব্যাপারে নিজের ধারণা বা বিচারিক ক্ষমতার প্রকাশ করে থাকে।

বিষয় দুটি খুঁজে বের করতে তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৫ বছর। আর এ কাজে তাকে সাহায্য করেছেন সহকর্মী মনোবিজ্ঞানী সুসান ফিসকে এবং পিটার গ্লিক। দীর্ঘদিন এই গবেষণা করে তারা যা খুঁজে পেয়েছেন তা হলো :
১। আমি কি এই ব্যক্তিকে বিশ্বাস করতে পারি?
২। আমি কি এই ব্যক্তিকে সম্মান করতে পারি?

মনোবিজ্ঞানীদের ভাষায়, নিজেকে এই প্রশ্নগুলি জিজ্ঞেস করা যথাক্রমে একজন ব্যক্তির আন্তরিকতা এবং দক্ষতার বিচার করার উপায়। আর এই বিচার করার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য হলো কারো ব্যাপারে উপরের দুটি প্রশ্নের জবাবে হ্যাঁ অথবা না সূচক দুটি যথার্থ উত্তর পাওয়ার চেষ্টা করা। তবে, কুডির মতে, লোকেরা সাধারণত প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্র, বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রে এই বিষয়টি নিয়ে বেশি সচেতনতার পরিচয় দেয়। কিন্তু বাস্তব জীবনে নিজের জীবন সঙ্গী খোঁজার ক্ষেত্রে এই দুটি প্রশ্নকে খুব একটা মুখ্য হিসেবে বিবেচনা করে না। ফলে ব্যক্তিগত জীবনে সম্পর্কগুলোর চেয়ে কর্পোরেট জীবনের সম্পর্কগুলো তাদেরকে কম ভোগায়। তবে তিনি এও বলেন যে, এর ব্যতিক্রমও আছে। আর কে না জানে, ব্যতিক্রম কখনো উদাহরণ হতে পারে না। সে কারণেই ‘বিবর্তনবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে’ কুডি লিখেছেন, “কোনো ব্যক্তি আমাদের আস্থার যোগ্য কিনা, বা কোন ব্যক্তিকে আমরা বিশ্বাস করব আর কোন ব্যক্তিকে করব না সেটা জানা আমাদের বেঁচে থাকার এবং জীবনের লড়াইয়ে টিকে থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

আপনি আপনার নিজের কোনো সহকর্মীকে বিবেচনা করুন যিনি তাঁর কাজের ক্ষেত্রে দুর্দান্ত কিন্তু অফিসের চারপাশে বরফের মতো ঠান্ডা। কারো সাথে কোনো ঝগড়া বিবাদ নেই কিংবা মনোমালিন্য নেই। এমন কেউ খুব সহজেই আপনার আস্থা অর্জন করে নিতে সক্ষম হবার কথা ছিল। কিন্তু তা কি আসলে হয়? আবার অন্যদিকে আপনি প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন এমন কেউ যদি আপনাকে বিশ্বাস না করে তবে আপনি খুব বেশি দূরে যেতে পারবেন না; বরং আপনি তার সন্দেহের পাল্লায় পড়ে যেতে পারেন যদি বিশ্বাস অর্জন করতে গিয়ে আপনি কোনো ভুল করে বসেন। এ ব্যাপারে কুডি বলেন, প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্রে ভালো গুণাগুণ আছে এবং প্রশাসনিকভাবে তার দক্ষতাও প্রশ্নাতীত, এমন কাউকে লোকে সহজে বিশ্বাস করতে চায় না। কারণ তারা এটাকে একটা হুমকি হিসেবে মনে করে। এমন লোক বিশ্বাস অর্জনের চেষ্টা করলেও লোকে ভাবে নিশ্চয়ই তার কোনো স্বার্থ আছে। কিন্তু যখন এই বিশ্বাস অর্জিত হয় তখন এই হুমকিটাই উপহারে রূপান্তর হয়ে যায়। এমন সম্পর্ক অধিকাংশ সময়েই ভালো ফলাফল বয়ে আনে।

এই দুটি বিষয়ের বাইরেও আরো কিছু বিষয় আছে গুরুত্বপূর্ণ। যেটা আপনার ব্যাপারে লোকদের ভালো মন্দ বিচার করতে সাহায্য করে। তার মধ্যে অন্যতম হলো আপনার বাহ্যিক অবস্থা এবং নিজেকে প্রকাশের ভঙ্গি। কথায় আছে, “judging a book by its cover”—অর্থাৎ লোকে আগে বাহ্যিক দিকটা দেখে এবং পরে অন্যান্য গুণের বিচার করে। আপনি যদি মরগান ফ্রিম্যানের মতো সুদর্শন কিংবা আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন না হোন তবে আপনার শারীরিক উপস্থিতি আপনাকে অন্যের কাছে সহজভাবে বিশ্বাস বা সম্মান করতে বাধ্য করতে পারে না। অনেকেই দাবি করেন তারা বাহ্যিক সুন্দরকে বিবেচনায় নিয়ে কাউকে বিচার করেন না। অধিকাংশই এটা মিথ্যাই বলেন। কেননা ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় অন্যকে বিচারের ক্ষেত্রে নিজের চোখ এবং অন্যের রূপ প্রথমেই মানুষকে একটা ক্লু ধরিয়ে দেয়।

ব্র্যান্ডিড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী লেসলি জেব্রোভিটসের ২০১৭ সালে এমনি একটি বিষয় নিয়ে বিস্তর গবেষণা পরিচালনা করেন। যেখানে তিনি বোঝার চেষ্টা করেন একজন মানুষ আরেকজন মানুষের মধ্যে বাহ্যিক কোন গুণগুলো দেখে আকৃষ্ট হয়। সেই সমীক্ষা অনুসারে দেখা যায়, লোকেরা আপনার মুখের চারটি সংকেত বিশ্লেষণ করে আপনাকে বিচার করে। এগুলি হলো আপনার ভেতর থাকা শিশুসুলভতা, আপনার পরিচিতি, দৈহিক ফিটনেস এবং মানসিক দক্ষতা। এই চারটি বিষয় ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায়, আপনার ব্যাপারে অন্যজনকে বিচার করতে ভূমিকা পালন করে। এর মধ্যে কয়েকটি বিষয়কে আপনি চাইলেই কোনো পরিবর্তন করতে পারবেন না। কারণ এগুলো মানুষের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই মজুদ থাকে। তবে আপনি যে জায়গায় নিজের উন্নতি ঘটাতে পারেন সেটা হলো আপনার ‘মানসিক দক্ষতা’।

গবেষকরা বলেন আপনার অভিব্যক্তিতে কিছুটা উষ্ণতা এবং বাক্য বিনিময়ের সময় আপনার ঠোঁটের কোণায় এক চিলতে হাসি আপনার ব্যাপারে অন্যকে ইতিবাচক ধারণা পোষণে এবং অন্যকে আপনার প্রতি বিশ্বস্ত হতে সহায়তা করে।

   

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;

৪ লাখ বছর আগে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

  • Font increase
  • Font Decrease

৪ লাখ বছর আগে রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে নতুন এক গবেষণা থেকে জানা গেছে। এখান থেকে যাত্রা শুরু করে এই গোত্রের মানুষ পরে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায়।

নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, সাইবেরিয়ায় নতুন একটি এলাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে ৪ লাখ ১৭ হাজার বছর আগে হোমিনিনস (Hominins) গোত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল। এই গোত্রের মানুষ ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বাস করতেন। সেখান থেকে তারা উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায় বলে জানিয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের এক গবেষক।

১৬ এপ্রিল চেক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক জন জেনসেন এক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষণাবিষয়ক সংবাদ সাময়িকী নিউ সায়েন্সটিস্ট এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জন জেনসেন বলেন, আমরা আগে যে ধারণা করতাম, তারও আগে থেকে হোমিনিনস গোত্রের মানুষ সাইবেরিয়ার ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বসবাস করতেন। ৪ লাখ ১৭ বছর আগে থেকেই তারা এই এলাকায় বসবাস করতে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অবস্থান ছিল উত্তর অক্ষাংশে।

তিনি বলেন, আরেকটি আদিম গোত্রের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা আর্কটিক অঞ্চলে বাস করতেন। ৪৫ হাজার বছর আগে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

 

;