জান্তার বিরুদ্ধে বাড়ছে মিয়ানমারের কূটনৈতিক বিদ্রোহ!
মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে দেশটির কূটনীতিকদের বিদ্রোহ আরও প্রশস্ত হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনা সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জাতিসংঘকে আহ্বান জানানোর পর দূতকে বহিষ্কার করে নতুন একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হলে তিনিও পদত্যাগ করেছেন। ফলে আগের জনই ওই দায়িত্বে বহাল থাকছেন। এদিকে গত বুধবার ৩৮ বিক্ষোভকারীকে হত্যার পর এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ওয়াশিংটনের মিয়ানমার দূতাবাস।
১ ফেব্রুয়ারি ভোরে মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক গণ বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীরা সেনা শাসনের অবসান এবং দেশটির নির্বাচিত নেতাদের মুক্তির দাবি করছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দেশটির অভ্যুত্থান এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস নিপীড়নের নিন্দা জানালেও তা উপেক্ষা করছে সেনা সরকার।
গত শনিবার জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের দূত কিয়াও মোয়ে তুনকে বহিষ্কার করা হয়। তার বদলে জাতিসংঘের ডেপুটি দূত তিন মং নাইংকে নিয়োগ দেওয়া হলেও পদত্যাগ করেন তিনি। বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের জাতিসংঘ মিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই পদে কিয়াও মোয়ে তুনই বহাল থাকবেন।
এদিকে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীদের ওপর বুধবার গুলি চালিয়ে কমপক্ষে ৩৮ জনকে হত্যা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এ দিনটিকে রক্তক্ষয়ী দিন হিসেবে অ্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। এক মাসের চলমান বিক্ষোভে এক দিনে নিহতের সংখ্যা এটাই সর্বোচ্চ। এ তথ্য জানায় বিবিসি।
তবে ওয়াশিংটন দূতাবাস এখনও জান্তা সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। দূতাবাসের বিবৃতিতে অভ্যুত্থানের সরাসরি নিন্দা জানানো হয়নি আর বলা হয়েছে, দূতাবাস মিয়ানমার রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করা অব্যাহত রাখবে।
মার্কিন মানবাধিকার প্রধান মিশেল বাচেলেট মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ব্যাচলেট জানিয়েছেন, ২৯ জন সাংবাদিকসহ ১৭০০ জনেরও বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে ক্ষমতাসীন সামরিক কাউন্সিলের একজন মুখপাত্রকে ফোন করলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
নিউইয়র্কের জাতিসংঘে মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্বকারীদের নিয়ে সংঘর্ষের বিষয়টি রোধ করা হয়েছিল - আপাতত - জান্তার প্রতিস্থাপনের পদ ছাড়ার পরে এবং মিয়ানমার মার্কিন মিশন নিশ্চিত করেছে যে রাষ্ট্রদূত কিয়াউ মো তুন চাকরিতে রয়েছেন।
শনিবার কানাউ মো তুনকে বরখাস্ত করার পর জান্তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণ পরিষদের দেশগুলিকে অভ্যুত্থান ফিরিয়ে দিতে “প্রয়োজনীয় কোনও উপায়” ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছিল।
তবে গত মাসে অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে পদত্যাগ করেন দূতাবাসের এক কূটনীতিক। এছাড়া অন্তত তিন কূটনীতিক ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে মিয়ানমারের সেনা সরকারের বিরুদ্ধে চলমান নাগরিক অসহযোগ আন্দোলনে শামিল হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।