ইন্দিরা গান্ধীর অন্তিম দিন



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

৩৪ বছর আগের একটি দিন। ৩১ অক্টোবর। ১৯৮৪ সাল। স্থান নয়া দিল্লির ১ নম্বর আকবর রোড।। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন।

বাসভবনের বাগানের একটি পথ দিয়ে হাঁটছিলেন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তিনি যখন সতবন্ত সিং ও বেয়ন্ত সিংয়ের প্রহরাধীনে উইকেট গেট দিয়ে বের হচ্ছিলেন, তখন তারা তার ওপর গুলি ছোড়েন। সাব-ইন্সপেক্টর বেয়ন্ত সিং সাইড আর্ম থেকে তিনটি গুলি ছোড়েন ইন্দিরা গান্ধীর তলপেটে। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সতবন্ত সিং তার স্টেনগান থেকে ৩০ রাউন্ড গুলি ছোড়েন। গুলি করার পর উভয়েই তাদের অস্ত্র হাত থেকে ছুড়ে ফেলেন।

বেয়ন্ত সিং ছিলেন ইন্দিরা গান্ধীর খুবই প্রিয় দেহরক্ষী। তাকে তিনি চিনতেন ১০ বছর ধরে। ঘটনার সময় অন্য খুনি সতবন্ত সিংয়ের বয়স ছিল মাত্র ২১ বছর। ঘটনার মাত্র পাঁচ মাস আগে তাকে ইন্দিরার প্রহরী নিয়োগ করা হয়। ১৯৭০-এর দশকে ইন্দিরা গান্ধী ভারতে জরুরি অবস্থা জারি করেন। তখন স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলনরত হাজার হাজার শিখকে আটক করে কারাগারে রাখা হয়। তখন বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র শিখেরা মাঝেমধ্যেই সন্ত্রাসী হামলা চালাত। ভারতীয় সরকারের কাছে এরা ছিল সন্ত্রাসী।

১৯৮৪ সালের জুনে ইন্দিরা গান্ধী আদেশ দেন শিখদের স্বর্ণমন্দিরে সামরিক অভিযান চালিয়ে এই মন্দিরকে বিচ্ছিন্নতাবাদী-মুক্ত করতে। কারণ বলা হচ্ছিল, এই বিচ্ছিন্নতাবাদী শিখেরা স্বর্ণমন্দিরে অস্ত্রের মজুদ গড়ে তুলছে। এই সামরিক অভিযানের নাম ‘অপারেশন ব্লু স্টার’। এরই জেরে ইন্দিরা গান্ধীকে প্রাণ হারাতে হয়। ওই বছর শিখবিরোধী দাঙ্গা চলে ভারতে। শিখ ধর্মাবলম্বী দেহরক্ষী ইন্দিরা গান্ধীকে হত্যা করার পর এর প্রতিক্রিয়ায় এ দাঙ্গা বাধে। এক হিসাবে এ দাঙ্গায় ৮ হাজারের মতো লোক নিহত হয়। শুধু দিল্লিতেই নিহত হয় ৩ হাজার। দাঙ্গা চলে ৩১ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত।

ভারতের প্রথম ও এখন পযন্ত একমাত্র প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর জন্ম রাজনৈতিক পরিবারে। বেড়ে ওঠা ও ধ্যান-ধারণার গঠনও রাজনীতিকেন্দ্রিক। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পিতা জওহরলাল নেহেরুর রাজনৈতিক ঐতিহ্যকে তিনি ধরে রেখেছিলেন। হয়েছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রীও। তার পুত্রও দেশের প্রধানমন্ত্রী হন। এমন নজির বিশ্বে বিরল। তার পুত্রবধু ও নাতি দেশের সর্বপ্রাচীন ও সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে ইন্দিরা শুধু একজন ব্যক্তি নন, তারচেয়েও বেশি।

রাজনীতি, প্রেম, ব্যক্তিগত বেদনা, সন্তান বিয়োগের শোক সয়েও তিনি শক্ত হাতে দেশ ও দলের হাল ধরে রেখেছিলেন। আবেগহীন লৌহকঠিন ব্যক্তিত্বের প্রতিমূর্তি ছিলেন তিনি। আর দশটা সাধারণ মেয়ের মতো করে সাধারণ চিন্তার ফুরসত ছিল না ইন্দিরা গান্ধীর। তবে হাজারো ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি লিখে গেছেন বেশকিছু গ্রন্থ। ‘দ্য ইয়ার্স অফ চ্যালেঞ্জ’ (১৯৬৬-৬৯), ‘দ্য ইয়ার্স অফ এনডেভার’ (১৯৬৯-৭২), ‘ইন্ডিয়া (লন্ডন)’ (১৯৭৫) এবং ‘ইন্ডে (লুসানে)’ (১৯৭৯) নামের সংকলন গ্রন্থগুলোয় তার বহু লেখা ও বিভিন্ন সময়ে প্রদত্ত ভাষণ স্থান পেয়েছে।

বিশ্বের বহু বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডক্টরেট ডিগ্রিতে সম্মানিত করেছে। ছাত্রজীবনের উজ্জ্বল সফলতার সুবাদে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ও তাকে বিশেষভাবে সম্মান জানিয়েছে। একইভাবে কর্মজীবনেও তিনি বহু কৃতিত্ব ও সাফল্যের নজির রেখে গেছেন। ১৯৭২ সালে ইন্দিরা গান্ধীকে ‘ভারতরত্ন’ ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে লাভ করেন ‘মেক্সিকান অ্যাকাডেমি পুরস্কার’ (১৯৭২)। ১৯৭৩ সালে ইন্দিরাকে দেওয়া হয় এফ এ ওর দ্বিতীয় বার্ষিক পদক। তিন বছর পর ১৯৭৬ সালে লাভ করেন নাগরী প্রচারিণী সভার সাহিত্য বাচস্পতি (হিন্দি) পুরস্কার। ১৯৫৩ সালে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাদার্স অ্যাওয়ার্ডে সম্মানিত হন। কূটনীতিতে বিচক্ষণতার জন্য ইতালির আইবেলা ডি এস্ট পুরস্কার ও ইয়েল ইউনিভার্সিটির হোল্যান্ড মেমোরিয়াল প্রাইজ পান। ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক ওপিনিয়নের এক জনমত সমীক্ষার নিরিখে ১৯৬৭ ও ১৯৬৮ সালে পরপর দুবার ‘বিশ্বের সেরা মহিলা’ খেতাবে তাকে সম্মানিত করা হয়। একইভাবে ১৯৭১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্যালাপ পোল সার্ভের বিচারে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি প্রশংসিত ব্যক্তি হিসেবে তাকে সম্মান জানানো হয়। শুধু মানুষ নয়, প্রাণী ও জীবজন্তুর প্রতি তার বিশেষ যত্নের স্বীকৃতিতে আর্জেন্টাইন সোসাইটি ১৯৭১ সালে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করে তাকে।

শুধু ভারতের প্রেক্ষাপটেই নয়, সারা বিশ্বের সামনেই ইন্দিরা একজন বিস্ময়কর নেতা। একজন নারীর প্রতিকৃতির মধ্যে তার ব্যক্তিত্বের পরতে পরতে ছিল নেতৃত্বের ঈর্ষণীয় গুণাবলি। ছিল সঙ্কট ও সমস্যার পাহাড় ডিঙানোর শক্তি ও সাহস। প্রতিপক্ষকে পরাজিত করার ক্ষমতা আর ইতিহাসে নিজের নাম লিপিবদ্ধ করার অদম্য প্রতীতি।

 

   

নাইজেরিয়ায় বন্দুকধারীদের হামলায় নিহত ৪০



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নাইজেরিয়ার প্লাতিউ ওয়েস রাজ্যের বন্দুক হামলায় অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

বুধবার (২২ মে) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নাইজেরিয়ার উত্তর-মধ্য মালভূমি রাজ্যের জুরাক গ্রামে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন ৪০ জন। নিহতদের প্রায় সবাই খনিতে কাজ করতেন। বন্দুকধারীরা মোটরবাইকে করে এসে আকস্মিক হামলা চালিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, গ্রামের লোকজনের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছে এবং বাড়ি-ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে।

টিমোথি হারুনা নামে এক বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেছেন, 'তারা অনেক মানুষকে হত্যা করেছে এবং অনেককে অপহরণ করেছে। অনেকে বন্দুকের গুলিতে আহত হয়েছেন। তারা আমাদের বাড়িঘরও জ্বালিয়ে দিয়েছে।'

রাজ্যের তথ্য কমিশনার মুসা আশোমস এক বিবৃতিতে জানান, ‘এ হামলায় আর কেউ হতাহত হয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ জনের নিহতের তথ্য নিশ্চিত হয়েছি। যারা প্লাতিউ রাজ্যের জুরাক সম্প্রদায়ের মানুষ।’

নাইজেরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় প্রায়ই যাযাবর পশুপালক এবং মেষপালকদের মধ্যে বিরোধের কারণে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। এতে বেশ কয়েক বছর ধরে শত শত মানুষ হতাহতের শিকার হয়েছেন। মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চারণভূমিতে পানির প্রবেশাধিকার এবং অন্যান্য সম্পদ যেমন রাজ্যের ধাতব মজুত নিয়ে দুপক্ষের বিরোধের কারণে উত্তেজনা বাড়ছে।

;

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির ঘোষণা নরওয়ে, স্পেন ও আয়ারল্যান্ডের



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরাতে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপের দেশ নরওয়ে, স্পেন ও আয়ারল্যান্ড।

বুধবার (২২ মে) নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গহর স্টোর প্রথমে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিবেন বলে ঘোষণা দেন। এর পরপরই আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস বলেন, তার দেশও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।

সংবাদ সম্মেলনে নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গহর স্টোর বলেন, একটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানই সর্বোত্তম পথ। তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি না থাকলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আসতে পারে না।

নরওয়ে আগামী ২৮ মে, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে বলে ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী জোনাস গহর স্টোর।

আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আয়ারল্যান্ডও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। তিনি বলেন, স্বীকৃতি না থাকলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আসতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, আজ আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেন ঘোষণা করছে আমরা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছি। আমরা এখন সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য জাতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব। আমি নিশ্চিত যে আগামী সপ্তাহে আরও অনেক দেশ এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণে আমাদের সাথে যোগ দেবে, বলেন তিনি।

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেন, তার দেশের মন্ত্রী পরিষদও আগামী ২৮ মে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে।

এদিকে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে থেকে তার দেশের রাষ্ট্রদূতদের অবিলম্বে ইসরায়েলে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

ইসরায়েল বলছে, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে ইউরোপীয় দেশগুলোর স্বীকৃতি চরমপন্থা ও অস্থিতিশীলতাকে ইন্ধন দেবে।

;

রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের আগে যা ঘটেছিল, জানালেন প্রত্যক্ষদর্শী



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্তের আগে কী ঘটেছিল, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফ গোলাম হোসেইন ইসমাইলি।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরনাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঘটনার দিন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদোল্লাহিয়ানকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির পাশেই আরেকটি হেলিকপ্টারে থাকা ইসমাইলি বলেন, আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান প্রেসিডেন্ট রাইসি। যেখানে উপস্থিত ছিলেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও।

সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদোল্লাহিয়ানসহ অন্য কর্মকর্তারা।

সোমবার (২০ মে) রাষ্ট্রীয় টিভিতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গোলাম হোসেইন ইসমাইলি বলেন, আমাদের পুরো বহরের দায়িত্বভার ছিল প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির পাইলটের ওপর। বাঁধ উদ্বোধন শেষে যাত্রা শুরুর ৪৫ মিনিট পর রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের পাইলট অন্য দুটি হেলিকপ্টারের পাইলটকে সংকেত দেন আরও উঁচুতে উঠে ভ্রমণ করার। মূলত তিনি কাছাকাছি থাকা ঘন মেঘ এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলেন।

ইসমাইল আরও বলেন, ওই সময় হঠাৎ রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি উধাও হয়ে যায়। ঘন মেঘের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার ৩০ সেকেন্ড পর আমাদের পাইলট প্রথম খেয়াল করেন, প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি দেখা যাচ্ছে না। এরপর আমাদের পাইলট বৃত্তাকারে ঘুরতে থাকেন। হেলিকপ্টারটি খুঁজতে থাকেন।

তিনি বলেন, আমরা রেডিও ডিভাইসের মাধ্যমে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করার বেশ কয়েকবার চেষ্টা করি। কিন্তু তা সফল হয়নি। এরপর আমাদের হেলিকপ্টারটি উচ্চতা কমিয়ে আনে এবং পাশের একটি তামার খনিতে অবতরণ করে।

এসময় ‘অদৃশ্য হয়ে যাওয়া’ হেলিকপ্টারে থাকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদোল্লাহিয়ান ও প্রেসিডেন্ট রাইসির নিরাপত্তা ইউনিটের প্রধানকে বারবার কল করা হয়। কিন্তু তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

ওই কর্মকর্তা বলেন, তবে অন্য দুটি হেলিকপ্টারের পাইলটরা প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টারের দায়িত্বে থাকা ক্যাপ্টেন মোস্তাফাভির সঙ্গে যোগাযোগ করারা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

ইসমাইলি বলেন, জটিল ওই পরিস্থিতিতে শুধু রাইসির হেলিকপ্টারে থাকা ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনির মুখপাত্র মোহাম্মদ আলী আল-হাশেমের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়। তার (আল-হাশেম) অবস্থা ভালো ছিল না। তিনি শুধু জানান, একটি উপত্যকায় তাদের হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা যখন বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারের অবস্থান খুঁজে পাই, তখন মরদেহের অবস্থা দেখে বুঝতে পারি, প্রেসিডেন্ট রাইসিসহ অন্য ব্যক্তিরা তাৎক্ষণিকভাবে শহীদ হয়েছেন। তবে একমাত্র আলে-হাশেম হয়তো ঘণ্টাখানেক বেঁচে ছিলেন।

এর আগে, ইরানের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, পার্বত্য অঞ্চলে বৈরী আবহাওয়ায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ান নিহত হয়েছেন।

গত রোববার (১৯ মে) দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকার কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হেলিকপ্টারটি। দুর্ঘটনার পরপরই প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীদের উদ্ধারে অংশ নেয় ৪০টি দল। তবে দুর্ঘটনাস্থলে ভারী বৃষ্টিপাত ও ঘন কুয়াশার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়। অঞ্চলটি পাহাড়-পর্বতে ভরপুর হওয়ায় দীর্ঘ ১৮ ঘণ্টার অভিযান শেষে রাইসির হেলিকপ্টারের খোঁজ পান উদ্ধার কর্মকর্তারা।

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানায়, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বেল ২১২ মডেলের একটি হেলিকপ্টার বহন করছিল। এই মডেলটি যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি। ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পরে যুক্তরাষ্ট্রের এটি ইরানের কাছে বিক্রি করার কথা নয়। সে হিসেবে উড়োযানটি অন্তত ৪৫ বছরের পুরনো।

এর আগেও আকাশপথে দুর্ঘটনায় দেশটির অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। প্রতিরক্ষা ও বিভিন্ন সময়ে পরিবহনমন্ত্রী, ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড ও সেনাবাহিনীর কমান্ডার বিমান বা হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।

;

পরোয়ানা জারি হলেই নেতানিয়াহুকে গ্রেফতারের ঘোষণা নরওয়ের



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গণহত্যা এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্ভাব্য গ্রেফতারি পরোয়ানার মুখে আছেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি রাজনৈতিক ও সামরিক নেতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পথে রয়েছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।

বুধবার (২২ মে) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার (২০ মে) আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খান। আইসিসির ওয়েবসাইটেও আবেদনের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার এবং হামাসের অন্য দুই নেতার বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন করেছেন তিনি।

এ পরিস্থিতিতে পরোয়ানা জারি হলেই নেতানিয়াহুকে গ্রেফতারের চমকপ্রদ ঘোষণা দিয়েছে নরওয়ে। দেশটি বলছে, আইসিসির ওয়ারেন্ট জারি হলে নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করতে তারা বাধ্য।

অন্যদিকে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা ঠেকাতে জরুরি বৈঠক করেছেন নেতানিয়াহু। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদনের তীব্র নিন্দা জানিয়ে ইসরায়েল বলেছে, এটি নজিরবিহীন অপমান।

এই আবেদনের প্রেক্ষিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মন্তব্য করেছেন, ইসরায়েল এবং হামাসকে এক কাতারে দেখা ঠিক নয়।

তবে নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ এইডে বলেছেন, হেগ ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলে এবং তারা নরওয়েতে আসলে তাদের গ্রেফতার করতে বাধ্য থাকবে তার দেশ। নরওয়ের একটি অনলাইন সংবাদপত্র বলেছে, নেতানিয়াহু নরওয়ে সফরে আসলে তাকে (গ্রেফতার করে) প্রত্যর্পণ বা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে সমর্পনের ঝুঁকি রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ এইডে।

এখন হামাস ও ইসরায়েলি নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয় বিবেচনা করবেন আইসিসির বিচারপতিদের একটি প্যানেল। মূলত করিম খানের অফিসের উপস্থাপিত প্রমাণগুলো মূল্যায়ন করবেন তারা। পরোয়ানা জারি হলে আদালতের রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো সুযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আটক করতে বাধ্য থাকবে।

;