বছরে আয় ৩১২ কোটি টাকা, তবুও মনে শান্তি নেই!

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বছর ঘুরলেই ৩১২ কোটি টাকা আয় করেন। তবে ইনি কোনও ধনকুবের ব্যবসায়ী নন। তিনি শুধু ইউটিউবে ভিডিও বানান। কয়েকশো কোটি উপার্জন। তবু এই ধনকুবের ইউটিউবারের মনে শান্তি নেই। মনে সর্বদা খচখচানি। ভুগতে থাকেন জটিল অপরাধবোধে।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই অশান্তির কথা জানিয়েছেন তিনি। কেন এমন হয়, তার জবাবও দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

বিজ্ঞাপন

ইউটিউবারের বক্তব্য, অর্থের অভাব নেই তার। তবে এত উপার্জন মাঝেমধ্যেই অর্থহীন মনে হতে থাকে তার। মনে হয়, বিশ্রী রকমের বেশি উপার্জন করছেন তিনি।

তিনি জানিয়েছেন, তার নিরন্তর মনে হতে থাকে এত অর্থ উপার্জন ঠিক নয়। তিনি ঠকাচ্ছেন! ইউটিউবে মার্কিপ্লায়ার নামে পরিচিত এই ধনকুবের ইউটিউবার। তবে তার আসল নাম মার্ক এডওয়ার্ড ফিশবাচ। বয়স সবে ৩৩।

বিজ্ঞাপন

হাওয়াই দ্বীপের হনুলুলুতে থাকতেন মার্কের বাবা-মা। তবে মার্ক জন্ম থেকেই আমেরিকার বাসিন্দা। সেখানেই পড়াশোনা, ক্যারিয়ারও।

প্রথম জীবনে অত্যন্ত গরিব ছিলেন মার্ক। কষ্ট করেই তাকে লেখাপড়া করিয়েছেন বাবা-মা। মার্কের বন্ধুরা বলেন, নিজেদের আর্থিক অবস্থা নিয়ে প্রায়ই ঠাট্টা করতেন তিনি।


২০০৮ সালে বাবাকে হারান। তারপর আমেরিকার ওহায়োর সিনসিনাটির কলেজে পড়াশোনার জন্য ভর্তি হন। গানবাজনারও শখ ছিল। একটি গানের দলে ট্রাম্পেট বাজাতেন মার্ক। কলেজে পড়তে পড়তেই ইউটিউবে আগ্রহ জাগে। ২০১২ সালের মার্চ মাসে প্রথম ইউটিউব ভিডিও বানিয়েছিলেন ২৩ বছরের যুবক মার্ক। তার পর ইউটিউবে মন দেবেন বলে পড়াশোনা অসম্পূর্ণ রেখেই কলেজ ছেড়ে দেন।

ঠিক দশ বছর কেটেছে তারপর থেকে। ২০২২ সালে মার্ক এখন বিপুল সম্পত্তির মালিক। তার সম্পত্তির মূল্য প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। সিনসিনাটি ছেড়েছেন বহু দিন। তবে এখন লস অ্যাঞ্জেলসের অভিজাত পাড়ার বাসিন্দা। বিশাল বাংলোর মালিক। হলিউডের তারকাদের বাড়ি সাজান যারা, তেমনই এক তারকা অন্দরসজ্জা বিশারদ বাড়ি সাজিয়েছেন তার।

মার্কের ইউটিউব চ্যানেলের নামও মার্কিপ্লায়ার। সেই চ্যানেলে মূলত তার নিজের অভিনীত কমেডি শো, হরর গেম কিংবা ভিডিও গেমের সমাধানের ভিডিও তৈরি করেন মার্ক। সেই ভিডিও থেকেই কোটি কোটি উপার্জন তার।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই সাফল্যের গোপন কথা জানতে চাওয়া হয়েছিল মার্কের কাছে। সেখানেই এই অর্থোপার্জন প্রসঙ্গে মার্ক বলেন, আমি এত উপার্জন করার জন্য অপরাধবোধে ভুগি। আমার মনে হয়, ইউটিউব থেকে অর্থোপার্জনের যে পদ্ধতি তার ভুল ফায়দা নিচ্ছি আমি। এতটা না হলেও হত।

মার্কের চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা বর্তমানে ৩ কোটি ৩০ লাখ। মার্ক বলেছেন, এই সাফল্যকে অস্বীকার করার ক্ষমতা আমার নেই। কিন্তু আমার বলতে একটুও বাধা নেই যে, এত সাফল্য আমি চাইনি। আমি শুধু নিজের পছন্দের কাজ করতে চেয়েছিলাম। আর তা থেকে পাওয়া অর্থে একটু ভাল থাকতে চেয়েছিলাম।

মার্ক জানিয়েছেন, এখন তার সব আছে। মাথার উপরে ছাদ, খাবারের নিত্য জোগান... অতিরিক্ত অর্থ তাই নিজের কাছে না রেখে দিয়ে দেন তিনি। কখনও যাদের প্রয়োজন হয় তাদের। আবার কখনও তার মতো ইউটিউবার বন্ধুদের ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন। যাতে তারা সুদিন দেখতে পান।

ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ভাল উদ্দেশ্যের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে নাম করেছেন মার্কস। ফোর্বসের অল্পবয়সী প্রভাবশালীদের তালিকাতেও নাম উঠেছে তার। এ ছাড়াও ক্যানসার গবেষণা, রূপান্তরকামীদের সমর্থনে বহুবার দরাজহস্ত হয়েছেন মার্ক।

এখন ইউটিউব চ্যানেলের পাশাপাশি একটি নিজস্ব পোশাকের ব্র্যান্ডও চালু করেছেন মার্ক। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, তার যা আছে তা দিয়ে অনেকের ভাল করতে চান তিনি। তাতে যদি তার মনের কুণ্ঠা কিছুটা কমে।