ভারতে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ২৩৩



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। রাতভর উদ্ধার অভিযান চলার পর একাধিক কামরা থেকে উদ্ধার হয়েছে মৃতদেহ। অনেককেই উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই আবহে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ বালাসোর জেলার বাহানগা বাজার রেল স্টেশনের কাছে আপ শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে যায়। দুর্ঘটনার তীব্রতা এতই ছিল যে যাত্রীবাহী ট্রেনটির ইঞ্জিন উঠে যায় এক মালগাড়ির ওপর। ট্রেনের অধিকাংশ বগি ছিটকে পড়ে পাশের লাইনে। এই সময় উলটো দিক থেকে আসা যশবন্তপুর-হাওড়া হামসফর এক্সপ্রেসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে করমণ্ডলের লাইনচ্যুত বগিগুলিকে। তিনটি ট্রেনের এই সংঘর্ষে মৃত্যু মিছিল জারি রয়েছ।

শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩৩ হয়েছে। এদিকে হাসপাতালে ভরতি অনেক যাত্রীর অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। এই আবহে তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

এদিকে এই দুর্ঘটনার পর স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে রেলের সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং পরিকাঠামো নিয়ে। এই আবহে ঠিক কী কারণে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ওড়িশার বালাসোর জেলার বাহানগা বাজার রেল স্টেশনের কাছে ১২৮৪১ আপ শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের একাধিক বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এর জেরে সেই ট্রেনের বি২, বি৩, বি৪, বি৫, বি৬, বি৭, বি৮, বি৯, এ১ এবং এ২ কোচ উলটে যায়। এছাড়া ট্রেনের ইঞ্জিন এবং বি১ কোচটি লাইন থেকে ছিটকে যায়। এই দুর্ঘটনার জেরে যশবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেসেরও বেশ কয়েকটি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে।

সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, এক রেল কর্মকর্তা জানান, প্রথমে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। সেই সময় অন্য লাইনে ছিল ডাউন যশবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেস। আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কোচের সঙ্গে এই আবহে ধাক্কা লাগে বেঙ্গালুরু থেকে আসা ট্রেনটির। এদিকে এই দুর্ঘটনার পর সারা রাত কেটে গেলও এখনও দুর্ঘটনাস্থলে চলছে উদ্ধারকাজ।

জানা গেছে, আহতদের অনেককেই বালাসোরের হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। এদিকে যাদের পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক, তাদের কটকের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। আজ দুর্ঘটনাস্থলে যাবেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দুর্ঘটনাস্থলে যেতে পারেন বলে জানা গেছে।

   

অনাহারে মৃত্যুঝুঁকিতে ৩ লাখ গাজাবাসী: জাতিসংঘ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসরায়েলের হামলা ও অবরোধে গাজা উপত্যকার কিছু অংশে চরম খাদ্য ঘাটতি দুর্ভিক্ষের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে দুর্ভিক্ষ ও অনাহারে উত্তর গাজার ৩ লাখ মানুষ মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়তে পারেন বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ। 

বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেস ক্ল্যাসিফিকেশন (আইপিসি) জানিয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি ও ত্রাণসহায়তা নিশ্চিত করতে হবে। জাতিসংঘের বিভিন্ন তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে আইপিসি

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আইপিসি বলেছে, গাজার উত্তরাঞ্চলের কিছু অংশের ৭০ শতাংশ মানুষ সবচেয়ে মারাত্মক পর্যায়ের খাদ্য ঘাটতিতে রয়েছে। কোনো অঞ্চলে ২০ শতাংশ মানুষ এই মাত্রায় খাদ্যসংকটে থাকলে তাকে দুর্ভিক্ষ বলে বিবেচনা করা হয়। আর গাজার উত্তরাঞ্চলে সেই অবস্থার ৩ গুণেরও বেশি মানুষ খাদ্য সংকটে রয়েছেন।

গাজায় ১১ লাখ মানুষ খাদ্যের ‘বিপর্যয়কর’ ঘাটতিতে রয়েছে এবং প্রায় ৩ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছেন। তবে মৃত্যুর হারের পর্যাপ্ত তথ্য নেই আইপিসির কাছে।  

প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা উপত্যকার কিছু অংশে চরম খাদ্য ঘাটতি দুর্ভিক্ষের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। তাই তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতি ও যুদ্ধের কারণে বিচ্ছিন্ন উত্তরাঅঞ্চলে খাদ্য সরবরাহ করা না হলে সেখানে বহু মানুষের মৃত্যু আসন্ন। 

আইপিসি সংস্থাটির অনুমান, দুর্ভিক্ষের কারণে যে হারে মানুষ মরতে শুরু করে, গাজায়ও সেই পরিস্থিতি শুরু হয়ে যাবে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ক্ষুধা, অপুষ্টি আর বিভিন্ন রোগে সাধারণত প্রতি ১০ হাজার জনে ২ জন মারা যায়।

দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধে যেসব পদক্ষেপ প্রয়োজন তার মধ্যে গাজার সমগ্র জনসংখ্যার জন্য মানবিক সহায়তার প্রবেশের পাশাপাশি ও বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড শুরু এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রয়োজ বলে মনে করছে আইপিসি।

 

;

বাংলাদেশে পাঠাতে পেঁয়াজ কিনছে ভারত



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য দেশের কৃষকদের কাছ থেকে ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ কিনছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের রপ্তানি সংস্থা ন্যাশনাল কো অপারেটিভ এক্সপোর্ট লিমিটেড (এনসিইএল)। প্রতি কেজি ২৯ রুপি (বাংলাদেশি টাকায় ৩৮ টাকা ৪০ পয়সা) দরে এই পেঁয়াজ পাঠানো হবে বাংলাদেশে।

ভারতের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে এরই মধ্যে পেঁয়াজ কেনাও শুরু করেছে সরকার। শিগগিরই বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশগুলোতে পাঠানো হবে এই পেঁয়াজ।

নিজেদের অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত ডিসেম্বরে পেঁয়াজ রপ্তানিতে সাড়ে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ডিসেম্বরের শুরুতে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ থাকবে।

তবে কূটনৈতিক পর্যায়ে বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশের সরকারের পক্ষ থেকে একাধিকবার পেঁয়াজ পাঠানোর অনুরোধের পর ‘বিশেষ বিবেচনায়’ ভারতীয় পেঁয়াজের ওপর নির্ভরশীল দেশগুলোতে মোট ৬৪ হাজার ৪০০ টন পেঁয়াজ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এই ৬৪ হাজার ৪০০ টন পেঁয়াজের মধ্যে বাংলাদেশের ভাগে পড়েছে ১ হাজার ৬৫০ টন।

রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার জারি থাকায় সরকারি উদ্যোগেই এসব পেঁয়াজ পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

এদিকে ভারতের বেরসরকারি পেঁয়াজ রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন, একদিকে ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং অন্যদিকে রমজান মাসের জেরে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ভারতীয় পেঁয়াজের পুরোনো ক্রেতা বাংলাদেশ, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে হু হু করে। এ পরিস্থিতিতে চোরাকারবারিদের মাধ্যমে ভারত থেকে প্রতিদিন পেঁয়াজ পাচার হচ্ছে।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারকে এ ইস্যুতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রপ্তানিকারকরা। সেই চিঠিতে তারা বলেছেন, গত ৮ ডিসেম্বরের নিষেধাজ্ঞার পর থেকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে যত পেঁয়াজ ছিল, তার প্রায় ৫০ শতাংশই চোরা পথে দেশের বাইরে গিয়েছে।

এই অভিযোগের যথার্থতা নিয়ে অবশ্য সংশয় রয়েছে। কারণ ‘পেঁয়াজের রাজধানী’ বলে পরিচিত রাজ্য মহারাষ্ট্রে পাইকারি পর্যায়ে মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম রাখা হচ্ছে সর্বনিম্ন ৭ রুপি থেকে সর্বোচ্চ ১৬ রুপি। ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম ওঠানামা করছে ১০ থেকে ২০ রুপির মধ্যে।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা দরে। কয়েক দিন আগে অবশ্য এ দর ১২০ টাকা ছুঁয়েছিল।

;

হামাসের শীর্ষ সামরিক নেতা নিহত



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় হামাসের ডেপুটি মিলিটারি কমান্ডার মারওয়ান ইসা মারা গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা বিয়ষক উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার (১৮ মার্চ) হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে জ্যাক সুলিভান জানান, হামাস নেতা ইসা এক সপ্তাহ আগে মধ্য গাজার নুসিরাত শরণার্থী শিবিরের নীচে একটি টানেল কমপ্লেক্সে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জেরে এ পর্যন্ত সেখানে হামাসের যত সেনা ও কমান্ডার নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে পদ-পদবির হিসেবে সর্বজ্যেষ্ঠ কমান্ডার ছিলেন মারওয়ান ইসা। হামাসের সামরিক শাখা, ইজেদিন আল-কাসাম ব্রিগেডের ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন তিনি। এছাড়া ইসরায়েলের মোস্ট ওয়ান্টেড এর তালিকায়ও তার নাম রয়েছে।

ইসা ১৯৮৭ সালে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলন ‘ইন্তিফাদা’র সময় ইসরায়েলে গ্রেফতার হন এবং ৫ বছর কারাভোগ করেছিলেন । পরে ১৯৯৭ সালে সন্ত্রাসী তৎপরতার অভিযোগে গাজায় তৎকালী ক্ষমতাসীন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) সরকারের হাতে গ্রেফতার হয়ে ২০০০ সাল পর্যন্ত কারাগারে ছিলেন তিনি।

৭ অক্টোবর থেকে হামাসের অনেক ঊর্ধ্বতন নেতাকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। হামাসের রাজনৈতিক নেতা সালেহ আল-আরৌরি বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠ দাহিয়েহতে বিস্ফোরণে মারা গেছেন।

এদিকে সোমবারের ব্রিফিংয়ে জ্যাক সুলিভান বলেন, ইসার মতো হামাসের অন্যান্য সামরিক কমান্ডাররাও গাজায় টানেলের নিচে আত্মগোপন করে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে তিনি এটাও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, হামাসের যেসব শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে আছে তাদের অনুসন্ধানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সহায়তা করবে।

একইসাথে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের হতাহত হওয়ার উচ্চ হারেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুলিভান। সেই সঙ্গে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত শহর রাফায় সামরিক অভিযান চালানো থেকে ইসরায়েলি বাহিনীকে বিরত থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

;

দূষিত ১০০ শহরের মধ্যে ৯৯টিই এশিয়ার, শীর্ষে বাংলাদেশ



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
দূষিত ১০০ শহরের মধ্যে ৯৯টিই এশিয়ার, শীর্ষে বাংলাদেশ

দূষিত ১০০ শহরের মধ্যে ৯৯টিই এশিয়ার, শীর্ষে বাংলাদেশ

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত ১০০ শহরের মধ্যে ১টি ছাড়া সবগুলোই এশিয়া মহাদেশের। যার মধ্যে বাংলাদেশ সবার শীর্ষে, এরপরেই রয়েছে পাকিস্তান ও ভারত।

সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ু দূষণের সবচেয়ে বড় কারণ জলবায়ু সংকট। যা বিশ্বব্যাপী ১ বিলিয়ন মানুষকে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলেছে।

দূষিত ১০০ শহরের মধ্যে ৮৩টি ভারতের। এসব শহর বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (আইকিউএয়ার- IQAir) প্রতিবেদন অনুসারে, ১০ বারের মতো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বায়ুর মানদণ্ড অতিক্রম করেছে।

গবেষণা বলছে, সূক্ষ্ম কণা পদার্থ (PM2.5, এগুলো ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট কণা) দূষণকারীর দীর্ঘমেয়াদি এক্সপোজার, তবে মারাত্মক ক্ষতিকর। ৭ হাজার ৮০০ শহরের মধ্যে মাত্র ৯ শতাংশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বায়ুর মানদণ্ডের রেখেছে। বায়ুর মান সাধারণত, পিএম ২.৫ এর বার্ষিক মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি হওয়া উচিত নয়।

আইকিউএয়ার’র গ্লোবাল সিইও ফ্রাঙ্ক হামস বলেন, আমরা দেখছি আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বায়ু দূষণের প্রভাব রয়েছে। সবচেয়ে বেশি দূষণের শহরগুলোতে মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রোগে ভুগছে।

তিনি বলেন, সাধারণত দূষিত বায়ুতে শ্বাস নিলে PM2.5 ফুসফুসের টিস্যুতে আক্রমণ করে। রক্ত ​​​​প্রবাহে প্রবেশ করতে পারে। এটি জীবাশ্ম জ্বালানির পোড়ানো, ধুলো ঝড় এবং দাবানল থেকে হয়। এর ফলে হাঁপানি, হৃদরোগ এবং ফুসফুসের রোগ, ক্যান্সার এবং অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রজনিত রোগ দেখা দেয়। এছাড়া শিশু বুদ্ধিবিকাশ বাধাগ্রস্ত করে।

উত্তর ভারতের বিহার রাজ্যের বেগুসরাই শহর গত বছর বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল। যার গড় বার্ষিক PM2.5 ঘনত্ব ১১৮.৯; যা ডব্লিউএইচও’র মানদণ্ডের ২৩ গুণ বেশি। এটি IQAir র‍্যাঙ্কিংয়ে ভারতের গুয়াহাটি, দিল্লী এবং মুল্লানপুর, পাঞ্জাবও দূষিত শহরের তালিকায় রয়েছে।

Caption

 

এশিয়ার দূষিত বায়ু দেশ

২০২৩ সালে বাংলাদেশের গড় বায়ুর গুণমান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) সুরক্ষা মানদণ্ডকে প্রায় ১৬ বার অতিক্রম করেছে। বায়ুর এই মান বাংলাদেশকে সবচেয়ে খারাপ দূষিত বায়ুর দেশ করে তুলেছে। পাকিস্তান এবং ভারত দূষিত বায়ু দেশ হিসেবে বাংলাদেশের পরেই অবস্থান করছে। এর মধ্যে বায়ু দূষণে শীর্ষ ১০ শহরের মধ্যে ভারতেরই ৯টি।

প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতের মোট জনসংখ্যা ১.৩ বিলিয়ন, এর মধ্যে ৯৬ শতাংশ মানুষ ডব্লিউএইচও’র মানদণ্ডের থেকে সাত গুণ বেশি বায়ুর মান নিয়ে বসবাস করছে।

বায়ু দূষণে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অঞ্চল মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া। গত বছর দূষণে শীর্ষ চারটি দেশটি হলো- বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত এবং তাজিকিস্তান।

দক্ষিণ এশিয়া সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানকে নিয়ে। কারণ জনবহুল শহরের তালিকায় বিশ্বের মধ্যে ৫তম লাহোর, নয়াদিল্লি ৬ষ্ঠ এবং ঢাকা ২৪তম স্থানে রয়েছে।

IQAir গড় বায়ুর গুণমান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২৩ সালে ১৩৪ দেশের ৭ হাজার ৮১২টি শহরের মধ্যে ৯২.৫ শতাংশই ডব্লিউএইচও ’র PM2.5 মানদণ্ড অতিক্রম করেছে। মাত্র ১০টি দেশ এবং অঞ্চলের ‘স্বাস্থ্যকর’ বায়ুর গুণমান ছিল। এগুলো হলো- ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, পুয়ের্তো রিকো, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, বারমুডা, গ্রেনাডা, আইসল্যান্ড, মরিশাস এবং ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়া।

বায়ু দূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে। গত বছরের নভেম্বরে বিএমজে-তে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ু দূষণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী ৫১ লাখ মানুষ মারা যায়। এদিকে, ডব্লিউএইচও বলেছে, ঘরোয়া বায়ু দূষণের প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা গেছে।

আইকিউএয়ার রিপোর্টে বলছে, জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানো, মানব সৃষ্ট এবং জলবায়ু সংকট বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ।

সূত্র: সিএনএন

;