হাওয়াইয়ে দাবানলে নিহত কমপক্ষে ৩৬
মাউই থেকে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়া দাবানলে হাওয়াই দ্বীপে অন্তত ৩৬ জন মারা গেছে। ওই দাবানল ও নিহতের খবর নিশ্চিত করেছেন হাওয়াই দ্বীপের কর্মকর্তারা।
দ্বীপের প্রধান পর্যটন গন্তব্য লাহাইনা শহরে ওই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে বিবিসি। দূরবর্তী হারিকেনের প্রবল বাতাস আগুনের শিখাকে উস্কে দেয় বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। দাবানলটি মাউইয়ের আশেপাশের পুরো এলাকাকে পুড়িয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে।
দাবানলের কারণে হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে এবং দ্বীপটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
দাবানল ভয়াবহ আকার ধারণ করার পর সেখানে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। কিছু লোক এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
সঙ্গী এবং ছয় বছরের ছেলেকে নিয়ে একটি নিরাপদ আশ্রয়ে পালানো কামুয়েলা কাওয়াকোয়া মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, ‘আমরা সময়মতো বেরিয়ে যেতে পেরেছি। সেখানে বসে থেকে আমার শহরকে পুড়ে ছাই হতে দেখা খুব কষ্টকর বিষয় ছিল। কিন্তু, আমি কিছুই করতে পারছিলাম না। আমি অসহায় ছিলাম।’
মাউইতে পাঁচটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দ্বীপটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য। তাই পর্যটকদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
হাওয়াইয়ের লেফটেন্যান্ট গভর্নর সিলভিয়া লুক সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি নিরাপদ জায়গা নয়।’
ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা এখনও আগুনের সঙ্গে লড়াই করছেন এবং হেলিকপ্টারগুলো উপরে থেকে আগুনের উপর পানি ফেলছে।
দ্বীপের পশ্চিম দিকর হাওয়াইয়ান দ্বীপপুঞ্জের শুধুমাত্র একটি প্রধান রাস্তা খোলা রয়েছে।
মাউই কাউন্টি সরকার বুধবার (৯ আগস্ট) দেরীতে এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আগুন নেভানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকার মধ্যেই লাহাইনাতে দাবানলে আজ মোট ৩৬ জন নিহতের সন্ধান পাওয়া গেছে।’
আগুনে বিধ্বস্ত হয়েছে লাহাইনা এবং ভিডিওতে দেখা গেছে যে, বিচফ্রন্ট রিসোর্ট সিটিতে আগুন জ্বলছে।
বাসিন্দা মেসন জার্ভি রয়টার্সকে বলেন, ‘আমার দেখা সবচেয়ে খারাপ বিপর্যয় ছিল এটি। লাহাইনার পুরোটাই পুড়ে গেছে। এটি একটি সর্বনাশ।’ তিনি নিউজ এজেন্সিকে শহরের ধ্বংস ও কালো জলপ্রান্তরের ছবি দেখান।
লাহাইনার আশেপাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে এবং একজন সিনিয়র শিক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, তারা শহরের একটি শতাব্দী প্রাচীন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্ভাব্য ক্ষতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
হেলিকপ্টার পাইলট রিচার্ড ওলস্টেন অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, ‘এটি ভয়ঙ্কর। আমি এখানে ৫২ বছর ধরে কাজ করছি। আমি এর আগে এমন ভয়াবহ কিছু দেখিনি। আমাদের চোখে জল ছিল।’