ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সোমবার (২ অক্টোবর) কিয়েভে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সমাবেশে বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের দৈর্ঘ্য ইউক্রেন মিত্রদের কাছ থেকে প্রাপ্ত সমর্থনের উপর নির্ভর করবে।
জেলেনস্কির অফিস থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে ওই বৈঠকে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিজয় সরাসরি আমাদের সহযোগিতার উপর নির্ভর করে। আমরা একসঙ্গে যতো তাড়াতাড়ি আরও শক্তিশালী এবং নীতিগত পদক্ষেপ নেব, ততো তাড়াতাড়ি এই যুদ্ধ শেষ হবে।’
বিজ্ঞাপন
জেলেনস্কি বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের রূপরেখা দিয়ে বলেছেন, রাশিয়া এবং ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞার ব্যবস্থা সম্প্রসারণসহ যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সাহায্য করা উচিত।
তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের পুনরুদ্ধারে অর্থায়নের জন্য রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদকে ইউক্রেনের জন্য বরাদ্দের ক্ষেত্রে নির্দেশ দেওয়ার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতির প্রধান জোসেপ বোরেল ইতিমধ্যে ইউক্রেনের নেতাকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছেন যে, ইইউ যতোদিন সময় লাগে ততোদিন ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত।
প্রসঙ্গত, ইইউয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সোমবার ব্লকটির সীমানার বাইরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ঐতিহাসিক সম্মেলনের জন্য জড়ো হয়েছেন।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর ২০তম মাসে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
জোসেপ বোরেল সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা ইউক্রেনে প্রার্থী দেশ এবং ইইউর ভবিষ্যত সদস্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি ঐতিহাসিক বৈঠকে আহ্বান করছি। আমরা এখানে ইউক্রেনের জনগণের প্রতি আমাদের সংহতি ও সমর্থন জানাতে এসেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ ইইউ-এর মধ্যেই নিহিত।’ এদিকে, ইইউয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ওই শীর্ষ সম্মেলনকে স্বাগত জানিয়েছে ইউক্রেন।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। কারণ, প্রথমবারের মতো ইইউয়ের পররাষ্ট্র বিষয়ক পরিষদ ব্লকের বর্তমান সীমানার বাইরে, কিন্তু এর ভবিষ্যতের সীমানার মধ্যে বৈঠকে বসতে চলেছে।’
ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হ্যাঙ্কে ব্রুইনস স্লট বলেছেন, ‘ইউক্রেনের সঙ্গে সংহতি প্রদর্শনের জন্য আজ আমাদের এখানে দেখা করা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ।’
ইউক্রেনের জনগণ ২০১৪ সালে মস্কোপন্থী শাসনকে উৎখাত করে ইইউপন্থী বিদ্রোহ করেছিল।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রুশ আগ্রাসনের কারণে ইইউয়ের ফাস্ট ট্র্যাক সদস্য হওয়ার জন্য চাপ দিয়েছেন।
রফিক উখিয়া শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী এক রোহিঙ্গা যুবক। ২০১৭ সালে নিজ দেশ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়।
৩২ বছর বয়সী রফিকের মতো আরও হাজার হাজার রোহিঙ্গা যুবক মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য ও আশপাশের বিভিন্ন রাজ্যে চলমান সংঘাতে ‘মাতৃভূমির টানে’ লড়াই করছেন। তারা সেখানে গিয়ে কয়েক দিন যুদ্ধ করে আবার ফিরে আসছেন শরণার্থী শিবিরে।
‘আমাদের জমি ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য লড়াই করতে হবে’-মিয়ানমার যুদ্ধে অংশ নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে এমনটাই বলেছেন রফিক।
রোহিঙ্গা, মিয়ানমারের উত্তর রাখাইনে বসবাসকারী এক অবাঞ্চিত রাষ্ট্রবিহীন জনগোষ্ঠীর নাম। মিয়ানমারের সরকার, সেনাবাহিনী, আর উগ্র বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে বাঁচতে ২০১৬ সালে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। পরবর্তীতে ২০২১ সাল থেকে মিয়ানমার জান্তা সরকার ও জাতিগত বিদ্রোহীদের একটি দীর্ঘমেয়াদী বিদ্রোহ বিস্তার লাভ করে৷ বর্তমানে বিদ্রোহীদের আক্রমণে দিশেহারা দেশটির জান্তা সরকার। আর এই বিদ্রোহীদের সঙ্গে নিজেদের আধিকার আদায়ে যোগ দিয়েছে রোহিঙ্গারা।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স এমন ১৮ জন রোহিঙ্গা যুবকের সঙ্গে কথা বলেছেন যারা বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরের অভ্যন্তরে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর উত্থানের বর্ণনা দিয়েছে। এবং বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা বিদ্রোহী, মানবাধিকার কর্মী এবং বাংলাদেশের কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলেছেন।
তারা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিভিন্ন সহায়তাকারী সংস্থাগুলোর করা রিপোর্ট নিয়েও কথা বলেছেন।
এছাড়াও রয়টার্স রোহিঙ্গা এবং আরাকান সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যর্থ আলোচনা, অর্থ ও নাগরিকত্বের দলিল, রোহিঙ্গা যোদ্ধাদের জান্তা কর্তৃক প্ররোচিত করা এমনকি বাংলাদেশের কিছু কর্মকর্তার সহযোগিতার বিষয়েও সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করছে।
বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, এরই মধ্যে সশস্ত্র গ্রুপটিতে যোগ দিয়েছেন তিন থেকে পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা।
যদিও সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কোন মন্তব্য করেনি, তবে রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গা যোদ্ধাদের প্ররোচনার কথা অস্বীকার করেছে মিয়ানমার জান্তা সরকার। সাহায্যের আবেদনের ভিত্তিতে মুসলিমদের (রোহিঙ্গা) নিজস্ব গ্রাম এবং অঞ্চলগুলো রক্ষা করতে প্রাথমিক সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক শাহাব এনাম খান বলেছেন, ‘কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে দুটি বড় রোহিঙ্গা জঙ্গি গোষ্ঠী- রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) এবং আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এর ব্যাপক সমর্থন রয়েছে বলে মনে হচ্ছে না।’
কিন্তু একটি নিরাপত্তা সূত্রের তথ্যমতে, শিবিরে এবং এর আশেপাশে প্রশিক্ষিত রোহিঙ্গা যোদ্ধা এবং অস্ত্রের উত্থানকে একটি টাইম বোমা বলে বিবেচনা করে বাংলাদেশ। সহিংসতা প্রবণ শরণার্থী শিবিরে প্রতি বছর প্রায় ৩০ হাজার শিশু চরম দারিদ্র্যের মধ্যে জন্ম নেয়।
শাহাব এনাম খান মনে করেন, শরণার্থীদের দারিদ্র্য কাজে লাগিয়ে তাদের জঙ্গি কার্যকলাপ এবং অন্যান্য় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেও ঠেলে দেয়া হতে পারে। তার মতে, ‘এটি তখন অঞ্চলের অন্য দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়বে।’
মংডুর জন্য লড়াই
বর্ষার মাঝামাঝি সময়ে নৌকায় চড়ে শরণার্থী শিবিরের কাছাকাছি এলাকা থেকে পশ্চিম মিয়ানমারের মংডু শহরে যান রোহিঙ্গা বিদ্রোহী আবু আফনা। তিনি জানিয়েছেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীই তার থাকার ব্যবস্থা এবং অস্ত্র সরবরাহ করেছিল। সমুদ্রতীরবর্তী শহরটি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য আরাকান আর্মির সঙ্গে লড়াই করছে সেনাবাহিনী। সেখানে অনেকক্ষেত্রে জান্তা সৈন্যদের সঙ্গে একই ঘরে থাকার ব্যবস্থা করা হয় রোহিঙ্গাদের।
আফনা বলেন, ‘যখন আমি জান্তার সাথে থাকতাম, আমি অনুভব করতাম যে আমি সেই লোকদের পাশে দাঁড়িয়ে আছি যারা আমাদের মা-বোনদের ধর্ষণ ও হত্যা করেছে।’
তবে মূলত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন জাতি আরাকান আর্মিকে সমর্থন করে। রাখাইনদের অনেকে রোহিঙ্গাদের নির্মূলে সেনাবাহিনীকেও সমর্থন দিয়েছিল।
চলতি বছর রয়টার্সের আরেকটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের অবশিষ্ট বসতিগুলোর একটি পুড়িয়ে দিয়েছে আরাকান আর্মি।এরপরই আরএসও এবং সেনাবাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে পরস্পরকে সহায়তা করার সমঝোতায় পৌঁছায়।
আবু আফনা বলেন, ‘আমাদের প্রধান শত্রু মিয়ানমার সরকার নয়, রাখাইন সম্প্রদায়।’
রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে যোদ্ধা হয়ে ফিরেছে
বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে লড়াই করার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে। আফনার দেয়ার তথ্যমতে, সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের অস্ত্র, প্রশিক্ষণ এবং নগদ অর্থ প্রদান করেছে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব প্রত্যয়নের কার্ডও দিয়েছে সেনাবাহিনী। রোহিঙ্গাদের জন্য এটি একটি বড় প্রলোভন। মিয়ানমারে বহু প্রজন্ম ধরে বসবাস করা সত্ত্বেও রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন ধরে দেশটির নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত। বাংলাদেশেও রোহিঙ্গাদের শরণার্থী শিবিরেই সীমাবদ্ধ থাকতে হয়, বাইরে আনুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানে তাদের কোনো সুযোগ নেই।
আবু আফনা বলেছেন, ‘আমরা টাকার জন্য যাইনি। আমরা কার্ড আর জাতীয়তা চেয়েছিলাম।’
জুনে রয়টার্সের দেখা একটি এইড এজেন্সির ব্রিফিং অনুসারে, আর্থিক প্রলোভনের সাথে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি, হুমকি এবং জবরদস্তি করে প্রায় ২ হাজার লোককে শরণার্থী শিবির থেকে নিয়োগ করেছে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী।
সংস্থাটির নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে এই ব্রিফিং দেখতে দেয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা এবং দুই রোহিঙ্গা যোদ্ধার মতে, যাদের যুদ্ধে আনা হয়েছিল তাদের অনেককে জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুও রয়েছে।
অর্থ সংকটে থাকা বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার ব্যাপারে অনিচ্ছা বাড়ছে। বিষয়টির সাথে সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি বলেছেন, বাংলাদেশের কিছু কর্মকর্তা বিশ্বাস করেন যে সশস্ত্র সংগ্রামই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার একমাত্র উপায়। তারা আরও বিশ্বাস করেন যে একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে সমর্থন করলে ঢাকা আরও সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে।
বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার মো. জেনারেল মো. মঞ্জুর কাদের ক্যাম্প পরিদর্শন করে রয়টার্সকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের উচিত রোহিঙ্গাদের তাদের সশস্ত্র সংগ্রামে সমর্থন করা। এতে জান্তা এবং আরাকান আর্মিকে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনার জন্য চাপ সৃষ্টি হবে এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন সহজ হবে।’
কাদের জানিয়েছেন, ‘পূর্ববর্তী বাংলাদেশ সরকারের (আওয়ামী লীগ সরকার) শাসনামলে কিছু গোয়েন্দা কর্মকর্তা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন করেছিলেন কিন্তু সামগ্রিক নির্দেশনা না থাকায় তা সমন্বিত উপায়ে হয়নি।’
আবু আফনা বলেন, ‘এই বছরের শুরুতে কয়েক ডজন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা মংডু উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য একটি জেটিতে নিয়ে গিয়ে নৌকায় করে সীমান্তের ওপারে পাঠিয়েছিল।’ আবু আফনার দাবি সেও এই গ্রুপের অংশ ছিল।
তখন বাংলাদেশি এক কর্মকর্তা তাদের বলেছিলেন, ‘এটা আপনার দেশ, আপনারা যান এবং সেটাকে পুনরুদ্ধার করুন।’
‘আমরা ভয়ের মধ্যে বেঁচে আছি’
মে মাসে স্ত্রী এবং চার সন্তানকে নিয়ে মংডু থেকে পালিয়ে আসা শরিয়ত উল্লাহ নামে এক রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়মিত রেশনের জন্য লড়াইয়ের বর্ণনা দিয়েছেন রয়টার্সকে।
মিয়ানমারে তিনি ধান ও চিংড়ি চাষ করতেন। তিনি জানান, সংঘাতের মধ্যে তার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়েই সবচেয়ে উদ্বিগ্ন তিনি। তিনি বলেন, ‘এখানে আমাদের কিছুই নেই। আমরা আতঙ্কের মধ্যে বাস করি।’
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা ভারী অস্ত্রে সজ্জিত এবং তারা আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে বেশ কঠিন লড়াই করেছিল। অন্যদিকে মংডুর এই যুদ্ধ ছয় মাস অতিবাহিত হয়েছে । যেখানে আরাকান আর্মির আক্রমণ ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে।
পরিস্থিতি সম্পর্কে জ্ঞান থাকা একজন বাংলাদেশী কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আরাকান আর্মি ভেবেছিল খুব শীঘ্রই তারা জয়ী হবে কিন্তু রোহিঙ্গাদের অংশগ্রহণের কারণে মংডুতে তারা ভুল প্রমাণিত হয়েছে।’
চলতি বছরের শুরুর দিকে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা এবং আরাকান আর্মির মধ্যে আলোচনার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু কিন্তু সে আলোচনা ভেস্তে গেছে বলে মনে করেন জেনারেল কাদের এবং মধ্যস্থতার সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তি।
এদিকে রোহিঙ্গা শিবিরে আরাকান আর্মির সহিংসতার কৌশল দেখে ঢাকা ক্রমশ হতাশ হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন। আরাকান আর্মির এ সহিংসতা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের রাখাইনে প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলছে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে রাজি নয় আরাকান আর্মি। তারা রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বসতি স্থাপনের বিরোধিতা করেছে।
অন্যদিকে কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে আরএসও এবং আরসা প্রভাব বিস্তারের জন্য নিজেদের মধ্যে লড়াই করছে। সংঘাতের ফলে সাধারণ বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, মানবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
মানবাধিকার গোষ্ঠী ফোর্টিফায় রাইটসের পরিচালক জন কুইনলি বলেছেন, ‘২০১৭ সালে শিবিরগুলো প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সহিংসতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে ছিল। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এই বছর কমপক্ষে ৬০ জনকে হত্যা করেছে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে তারা অপহরণ ও নির্যাতন করে এবং হুমকির মাধ্যমে হয়রানি করার চেষ্টা করে।’
এদিকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক তহবিল ফুরিয়ে আসছে বলেও সতর্কতা রয়েছে। নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের পরিচালক ওয়েন্ডি ম্যাকক্যান্স বাংলাদেশকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘শরণার্থী শিবিরের জন্য আন্তর্জাতিক তহবিল ১০ বছরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। শরণার্থীদের জীবিকার সুযোগ না দিলে অনেকে, বিশেষ করে তরুণরা, জীবিকার সুযোগ পাওয়ার জন্য বিভিন্ন সংগঠিত দলে জড়িয়ে পড়তে পারেন।’
ইসরায়েল-হিযবুল্লাহর মধ্যে রাতভর হামলা পাল্টা হামলা হয়েছে। ইসায়েল দক্ষিণ বৈরুতে হিজবুল্লাহর ঘাটিতে আঘাত হেনেছে। এরপর পাল্টা হামলায় ২৫০টি রকেট হামলা করেছে হিজবুল্লাহ।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ বৈরুতে ইসরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়ায় তেল আবিবের উদ্দেশ্যে ২৫০টি রকেট হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। এর মধ্যে কিছু রকেট ধ্বংস করতে পারলেও অধিকাংশই তেল আবিবে আঘাত হেনেছে। ফলে ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
হিজবুল্লাহ তারদের বিবৃতিতে বলেছে, দক্ষিণ ইসরায়েলে অবস্থিত আশদোদ নৌ ঘাটি লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে, এই হামলার জন্য ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, লাখ লাখ ইসরায়েলী হিজবুল্লাহর রকেট হামলার শিকার হয়েছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলে সর্বোচ্চ রকেট হামলার মধ্যে এটি একটি। এর আগে ২৪ সেপ্টেম্বর লেবানন থেকে ৩৫০টি রকেট হামলা হয়েছিল ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে।
চীন থেকে আসা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে চান নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই প্রেক্ষিতে বাণিজ্য যুদ্ধ নিয়ে হুশিয়ারি দিয়েছে চীনও
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অবৈধ মাদক ব্যবসা ও অভিবাসনের প্রতিক্রিয়ায় চীনসহ অন্যান্য দেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
এর প্রেক্ষিতে চীন থেকে এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ‘বাণিজ্য যুদ্ধে কেউ জিতবে না।’
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রে চীনের দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউ জানিয়েছে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্ক উভয় দেশের জন্যই উপকারী। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই শুল্ক আরোপ নিয়ে বিশেষ কিছু বলেননি তিনি।
লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় ভোট হবে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘নীতিগত’ অনুমোদন দেয়ার পর সিএনএন-কে এই তথ্য জানান নেতানিয়াহুর মুখপাত্র।
সূত্রটি জানায়, গত রোববার রাতে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি নিরাপত্তা বিষয়ক পরামর্শ সভায় নেতানিয়াহু সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির প্রতি তার সমর্থনের ইঙ্গিত দেন। সোমবার তার মুখপাত্র সিএনএন-কে জানান, ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা প্রস্তাবিত চুক্তির বিষয়ে মঙ্গলবার ভোট দেবে এবং এটি অনুমোদিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দুই পক্ষের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি আলোচনার বিষয়ে জানাশোনা আছে এমন সূত্রগুলো বলেছে, আলোচনা ইতিবাচকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। তবে তারা এ-ও স্বীকার করেছেন যে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ একে অপরের ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই সামান্য ভুলে আলোচনা ভেস্তে যেতে পারে।
তবে সোমবার সন্ধ্যার দিকে আলোচনার সঙ্গে পরিচিত একজন লেবানিজ কর্মকর্তা জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা আসতে পারে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ইসরায়েল এবং ইরান-সমর্থিত লেবানিজ গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে লড়াই শেষ করতে যুক্তরাষ্ট্র ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করেছে। এতে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার এবং ওই এলাকায় হিজবুল্লাহর উপস্থিতির অবসানের বিষয়টি রয়েছে বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পশ্চিমা কূটনীতিকের বরাতে বিবিসি বলেছে, এই চুক্তিতে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর খালি করা এলাকায় লেবাননের সেনাবাহিনীর উপস্থিতি জোরদার করা হবে।
তবে ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিরোধিতা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একে গুরুতর ভুল বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেণ, এখন হিজবুল্লাহকে সামরিকভাবে পেছনের দিকে নিয়ে যাওয়া এবং ধ্বংস করার একটি ঐতিহাসিক সুযোগ।