নিচে নামায় বেঁচে গিয়েছি, পেনাংয়ে বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশি শ্রমিক

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, সাউথ-ইস্ট এশিয়া, বার্তা২৪.কম,ব্যাংকক
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পেনাংয়ে বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশি শ্রমিক

পেনাংয়ে বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশি শ্রমিক

'কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। তাই উপরের তলা থেকে নিচে আসি একটু জিরিয়ে নেয়ার জন্য। এ সময়ই বিকট শব্দে ভবনটি ধসে পড়ে৷ আর কয়েক মিনিট দেরি হলে আমাকেও সঙ্গীদের মতো মারা যেতে হতো। আমি ভাগ্যবান যে বেঁচে গিয়েছি।' 

মালয়েশিয়ার পেনাং প্রদেশে ভয়াবহ ভবনধসে বেঁচে যাওয়া ৪৩ বছর বয়সী বাংলাদেশি মহিদুল ইসলাম স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানান।

বিজ্ঞাপন

পেনাংয়ে ভূমিধসে এখন পর্যন্ত ৩ জন বাংলাদেশি নিহতের খবর পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও এখনো উদ্ধার কাজ চলছে। গত মঙ্গলবার রাতে পেনাংয়ের বায়ান লেপাস জেলার বাতু মং এলাকায় এই ভবন ধসের ঘটনা ঘটে।

মহিদুল বলেন, 'নির্মাণাধীন ওয়্যারহাউজের উপরের তলায় অন্য চারজনের সঙ্গে আমিও মেঝের কাজ করছিলাম। আমি একটু বিশ্রামের জন্য বিরতি  নিয়ে বাইরে আসি। তখনই এই ঘটনা ঘটে ৷' 

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, 'হঠাৎ বিকট শব্দে আওয়াজ হলে ভয় পেয়ে যাই। পরে পেছনে এসে দেখি আমাদের নির্মানাধীন ভবনটি ধসে পড়েছে ৷' 

তিনি জানান, 'এই নির্মাণাধীন ভবনে গত তিন মাস ধরে কাজ করছিল তারা। সকলে বন্ধু হয়ে গিয়েছিলাম। গতকালও একসঙ্গে কাজ শুরু করেছিলাম। সত্যি ভাবতেই খুব কষ্ট হচ্ছে!' 

৩৮ বছর বয়সী, আরেকজন বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশি শ্রমিক বলেন, 'আমি নিচের ফ্লোরে কাজ করছিলাম। হঠাৎ ভবন নড়ে ওঠে এবং উপর থেকে  চিৎকারের শব্দ আসে ৷ আমি লাফ দিয়ে ভবন থেকে বেরিয়ে আসি। মুহুর্তের মধ্যেই ধসে পড়ে ভবনটি ৷' 

তিনি বলেন, 'ধ্বংস স্তুপ থেকে একজন শ্রমিক বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়। কিন্তু গুরুতর আহত ছিলেন এবং পরে তিনি মারা যান।' 

গত মঙ্গলবার রাত ৯ টা ৪৫ মিনিটে এই ভবনধসের ঘটনা ঘটে। পেনাং উপ পুলিশ প্রধান ডেপুটি কমান্ডার দাতুক মোহাম্মদ ইউসুফ জান মোহাম্মদ বলেন, ভবনের ভেতর ৯ জন আটকে ছিল। এর মধ্যে ৫ জনকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।

ঘটনাস্থলে ১৪ টন ওজন এবং ১২ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি স্তম্ভ আরও ১৪ টি স্তম্ভের উপর ধসে পড়লে ভবনটি ধসে যায়। নির্মাণ স্থানটিতে ১৮ জন শ্রমিক ছিলেন।

পেনাং ফায়ার এন্ড রেস্কিউ বিভাগের উপ পরিচালক জুলফাহমি সুতাজি বলেন, উদ্ধার কাজে দেরি হচ্ছে এবং কঠিন হয়ে পড়েছে কারণ পড়ে যাওয়া স্তম্ভগুলো খুবই ভারি। সেগুলো সরাতে বেগ পেতে হচ্ছে। আমাদের আরও বড় ও শক্তিশালী উদ্ধার যন্ত্র প্রয়োজন সেগুলো সরাতে এবং আটকে পড়াদের কাছে পৌছাতে।