দুবাইয়ে কপ-২৮ জলবায়ু সম্মেলন শুরু আজ

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘ আয়োজিত জলবায়ু সম্মেলন কপ (কনফারেন্স অফ দ্য পার্টিজ) এর ২৮তম আসর সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে । এ সম্মেলন চলবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

৭০ হাজারের বেশি প্রতিনিধি নিয়ে আয়োজিত হচ্ছে এবারের কপ সম্মেলন। তবে এই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য কিংবা চীনের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান কেউ অংশ নিচ্ছেন না। 

মূলত বায়ুমণ্ডলে অধিক কার্বন নিঃসরণে প্রভাবশালী এই দেশগুলোকেই বেশি দায়ী করা হয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পৃথিবীতে ৫৫ ভাগেরও বেশি ক্ষতিকর কার্বন নিঃসরণ করছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও রাশিয়া।

বিজ্ঞাপন

এদিকে কার্বন নির্গমনের জন্য দায়ী জীবাশ্ম জ্বালানির অন্যতম তেল। এর অন্যতম বড় উৎপাদক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। আর সেই দেশেই শুরু হয়েছে কার্বন নির্গমন কমানো নিয়ে আলোচনা।

এছাড়া কপ-২৮ এর সভাপতি করা হয়েছে আমিরাতের জাতীয় তেল কোম্পানি অ্যাডনকের প্রধান নির্বাহী সুলতান আল-জাবেরকে। তাই সম্মেলন সফল করতে তিনি সৎভাবে কাজ করতে পারবেন কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে তেল ও গ্যাস উত্তোলনের সময় কার্বন নির্গমন কমাতে কোম্পানিগুলোর সহায়তা চান আল-জাবের।

জানা গেছে, এবারের সম্মেলনে আগের যেকোনো সম্মেলনের চেয়ে অনেক বেশি ব্যবসায়ী অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ব্রিটেনের রাজা চার্লসও সম্মেলনে অংশ নেবেন।

অপরদিকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে কয়লা, তেল ও গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ করা উচিত, নাকি জলবায়ুর ওপর শিল্পের প্রভাব কমাতে প্রযুক্তি উদ্ভাবনে গুরুত্ব দেওয়া উচিত; তা নিয়ে দেশগুলোর মধ্যে বিভাজন রয়েছে। সম্মেলনে সেই বিভাজন এবার আরও স্পষ্ট হতে পারে।

তাই তেল ও গ্যাস উত্তোলনের সময় কার্বন নির্গমন কমাতে কোম্পানিগুলোর সহায়তা চান আল-জাবের।

২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার ব্যাপকভাবে বাড়াতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। সে জন্য এই সম্মেলনে একটি চুক্তি করতে চায় তারা। ইতোমধ্যে শতাধিক দেশ এ পরিকল্পনার পক্ষে রয়েছে বলেও বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন। তবে চীন-ভারত এ পরিকল্পনায় এখনো পুরোপুরি সমর্থন দেয়নি।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের যেসব দেশে খরা, বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিচ্ছে তাদের সেই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে তহবিল গঠন চূড়ান্ত করার চেষ্টা করা হবে এই সম্মেলনে। ইতোমধ্যে এর খসড়াও তৈরি হয়েছে।

১৭৬০ সালের পর ইউরোপে যখন শিল্পবিপ্লবের সূচনা তখন থেকেই প্রকৃতির বিপদের শুরু। তখন থেকেই পৃথিবীতে কার্বন নিঃসরণ শুরু হয়। এর ফলে দিন দিন বাতাসের উষ্ণতা বেড়েছে; হয়েছে বায়ুদূষণ।  

পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ২১০০ সাল নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা অন্তত ১ দশমিক ৬২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। এর ফলে একবিংশ শতাব্দী শেষে পৃথিবীর বুক থেকে প্রায় অর্ধশত দেশ সমুদ্রপৃষ্ঠে তলিয়ে যাবে। 

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদীভাঙন, বন্যা, খরা, দাবানল বেশি হচ্ছে বলেও মনে করেন তারা।