গোল্ডেন গেট ব্রিজে ‘আত্মহত্যা প্রতিরোধমূলক নেট’ তৈরি
প্রায় ৮৭ বছর পর সান ফ্রান্সিসকোর গোল্ডেন গেট ব্রিজে ‘আত্মহত্যা’ প্রতিরোধের ব্যবস্থা হিসেবে বিশেষ নেট তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এতে এই সেতুটি থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে মৃত্যুবরণ করা মানুষের সংখ্যা কমবে বলে আশাবাদী তারা।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) বৃটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সান ফ্রান্সিসকো শহরে ১৯৩৭ সালে গোল্ডেন গেট ব্রিজ খোলার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার মানুষ ব্রিজ থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছে। যে পরিবারগুলো তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছে কয়েক দশক ধরেই তারা প্রশাসনকে এ সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।
তারই ধারাবাহিকতায় আত্মহত্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে বিশেষ এই নেট নির্মাণ শুরু হয়। প্রায় ১ দশমিক ৭ মাইল (২ দশমিক ৭ কিমি) দীর্ঘ সেতুটির প্রায় ৯৫ শতাংশ জুড়ে স্থাপন করা হয়েছে প্রতিরক্ষা নেট। নেট ইতিমধ্যেই এর উদ্দেশ্যমূলক প্রভাব ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছে গোল্ডেন গেট ব্রিজ হাইওয়ে এবং ট্রান্সপোর্টেশন ডিস্ট্রিক্ট।
গোল্ডেন গেট ব্রিজে এক বছরে গড়ে প্রায় ৩০টি আত্মহত্যার ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু ২০২৩ সালে নির্মাণাধীন থাকা অবস্থাতে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ১৪টি, যা আত্মহত্যার গড় সংখ্যাকে অর্ধেকেরও বেশি কমিয়ে এনেছে বলে জানান তারা।
গোল্ডেন গেট ব্রিজ হাইওয়ে অ্যান্ড ট্রান্সপোর্টেশন ডিস্ট্রিক্ট এক বিবৃতিতে বলেছে, নেটের উদ্দেশ্য হলো ব্রিজ থেকে ঝাঁপিয়ে পড়া ব্যক্তিদের মৃত্যুর সংখ্যা কমানো। নেট হলো বিশেষ নকশা যা মানুষকে লাফ দেওয়া থেকে বিরত রাখবে, হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিদের যত্ন এবং আশার প্রতীক হিসেবে কাজ করবে এবং মরতে চাওয়া ব্যক্তিটিকে দ্বিতীয়বার বাঁচার সুযোগ করে দিবে।
কেভিন হাইন্স ব্রিজ থেকে লাফ দেওয়ার পরে বেঁচে থাকা প্রায় ৪০ জনের মধ্যে একজন। পরবর্তীতে তিনি আত্মহত্যা প্রতিরোধ আইনজীবী হয়ে উঠেন। মিঃ হাইনসও নেটের পক্ষে প্রচারণা চালানোদের একজন।
তিনি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, ‘যদি সেদিন নেট থাকত, তাহলে আমাকে পুলিশ থামিয়ে দিত এবং অবিলম্বে প্রয়োজনীয় সাহায্য পেতাম। এতে এমনটা ঘটতো না আর কখনই আমার পিঠের তিনটি কশেরুকা ভেঙে যেত না। আমি যে পথে ছিলাম সেই পথ থেকেও ফিরে আসতাম’।