ফ্রান্স থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বেড়াতে এসে খুঁজে পেলেন বিশাল হীরা
মার্কিন মহাকাশযানের চাঁদের উদ্দেশ্যে উৎক্ষেপণের দৃশ্য দেখার উদ্দেশ্যে ফ্রান্স থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেড়াতে এসেছিলেন জুলিয়েন নাভাস। সেই দৃশ্য দেখার পরে নিউ অরলিন্সেঘুরতে যান নাভাস। সেখানে যাওয়ার পথেই শোনেন আরকানসাসের ক্রেটার অব ডায়মন্ডস স্টেট পার্কের কথা। যেখানে টিকিট কেটে হিরার খোঁজ করার পাশাপাশি হিরা পেলে তা নিজের সঙ্গে নিয়েও যাওয়া যায়। এমন কথা শুনে নাভাসের মধ্যে আগ্রহ জাগিয়ে তোলে এই পার্ক। আর ভাগ্য নাভাসের এতই সুপ্রসন্ন যে ওই পার্কেই গিয়েই খুঁজে পান ৭ দশমিক ৪৬ ক্যারেটের বিশাল এক হীরা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন আরকানসাস স্টেট পার্কসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, ১১ জানুয়ারি নাভাস পার্কে পৌঁছে টিকিট কিনে হীরা খোঁজার জন্য সাধারণ যন্ত্রপাতি ভাড়া করেন। এবং ১৯৭২ সালে ক্রেটার অব ডায়মন্ডসকে স্টেট পার্কে রূপান্তরিত করার পর নাভাস পেয়ে যান পার্কটিতে পাওয়া অষ্টম বৃহত্তম হীরা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নাভাসের বক্তব্যও উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে হিরা খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে তিনি জানান, ‘৯টার দিকে পার্কে ঢুকি এবং খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করি। এটি বেশ কষ্টকর এক কাজ ছিলো। এভাবেই চলতে থাকার পরে বিকেলের আমি মূলত মাটির ওপরের অংশের দিকে মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য রাখছিলাম কিছু পাওয়া যায় কি না। পার্কে দিন কয়েক আগেই এক ইঞ্চির বেশি বৃষ্টি হওয়ায় বৃষ্টি পড়ায় এটি ধুলাবালি ধুয়ে নিয়ে যায় এবং ওপরের দিকে থাকা ভারী পাথর, খনিজ এবং হীরা উন্মুক্ত করে দেয়।’
এসময় পার্কের ডায়মন্ড ডিসকভারি সেন্টারে হাজির হন নাভাস খোঁড়াখুঁড়িতে পাওয়া রত্নটি নিয়। সেখানে তাঁকে জানানো হয়, ৭ দশমিক ৪৬ ক্যারেটের একটি বাদামি হীরা পেয়েছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নাভাস বলেছিলেন যে তিনি স্তব্ধ হয়ে যান হীরাটি আবিষ্কার করে। আর কী খুঁজে পেয়েছেন তা তাঁর বাগ্দত্তাকে জানাতে উন্মুখ হয় ওঠেন। পাথরটি গাঢ় চকলেট বাদামি রঙের এবং মার্বেলের মতো গোলাকার। ক্রেটার অব ডায়মন্ডসকে স্টেট পার্কে পাওয়া অষ্টম বৃহত্তম হীরা। নাভাস তাঁর বাগ্দত্তার নামানুসারে হীরাটির নাম রাখেন ক্যারিন ডায়মন্ড।
নাভাসের ভাগ্য ভালো ব্যাখ্যা করে, অ্যাসিস্ট্যান্ট পার্ক সুপারিনটেনডেন্ট ওয়েইমন কক্স বলেন, পার্কের অনেক বড় হীরা ওপরের দিকে পাওয়া গেছে এবং পার্কটির পক্ষ থেকে অনুসন্ধানের সুবিধার জন্য ৩৭.৫ একর জায়গার মাটিতে কিছু কাজ করা হয়েছে। মাটি আলগা করতে এবং প্রাকৃতিক ক্ষয়কে ত্বরান্বিত করতেই এটা করা হয়।
ক্রেটার অব ডায়মন্ডস স্টেট পার্ক ৯১১ একর জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠে। এর মধ্যে দর্শনার্থীদের রত্ন অনুসন্ধানের জন্য উন্মুক্ত আছে ৩৭.৫ একর এলাকা। এই পার্কটিতে ১৯৭২ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি হীরা পাওয়া গেছে।