বৃটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট হ্যাক করতে সক্ষম চীন
বৃটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিসের ওয়েবসাইট হ্যাক করার সক্ষমতা আছে বলে দাবি করেছে চীনের সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান আই-সুন। প্রতিষ্ঠানটির ফাঁস হওয়া ডকুমেন্টে এসব তথ্য জানা গেছে।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বৃটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং নিরাপত্তা বিভাগগুলোর সাইবার নিরাপত্তা প্রদানকারী বহু বেসরকারি কোম্পানির মধ্যে আই-সুন অন্যতম। এর সাংহাই প্রধান কার্যালয়ে প্রায় ২৫ জন কর্মকর্তা আছেন। গত ১৬ই ফেব্রুয়ারি গিটহাব নামের একটি অনলাইন ডেভেলপার প্লাটফর্ম এর সাহায্যে ৫৭৭টি ডকুমেন্ট এবং চ্যাট লগ ফাঁস হয়েছে।
নিরাপত্তা বিষয়ক তিনটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলেছে, এই তথ্য ফাঁসের বিষয়টি সত্য। তাদের গবেষণায় দেখা যায়, আই-সুন গত আট বছর ধরে বৃটেন, ফ্রান্স এবং এশিয়ার বেশ কিছু দেশ-যেমন তাইওয়ান, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে ডাটা সংগ্রহ করেছে এবং ডাটা ভেঙে দেওয়ার কাজ করেছে। দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানকে ভিয়েতনাম পুলিশের ওয়েবসাইটের এক্সেস এনে দিতে দেয়া হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার ডলার। আরেকটি ঘটনায় টুইটারে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে দিতে একটি সফটওয়্যারের পিছনে খরচ করা হয়েছে এক লাখ ডলার।
আই-সুনের যেসব ডাটা ফাঁস হয়েছে তার মধ্যে আছে বৃটিশ সরকারের এজেন্সিসমূহ, থিংক ট্যাংক, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দাতব্য সংস্থাসমূহ। অন্যদিকে তারা সফলতার সঙ্গে এশিয়া ও ইউরোপের সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে হ্যাক করেছে বলেও ইঙ্গিত দিচ্ছে অন্য ডকুমেন্টগুলো। তবে এটা নিয়ে কোনো রকম সমঝোতা হয়েছে কিনা তা পরিষ্কার নয় বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এসব তথ্য ফাঁসকারীর পরিচয় জানা যায়নি। এ বিষয়ে অবহিত নয় বলে জানিয়েছে বৃটেনে অবস্থিত চীনের দূতাবাস। তারা বলেছে, আইন অনুযায়ী যেকোনো রকম সাইবার হামলার বিরোধী এবং এর বিরুদ্ধে লড়াই করছে চীন। চীনা পুলিশ এবং আই-সুন ডাটা সংগ্রহ বা এ বিষয়ে তদন্ত করছে।
‘বস লু’ এবং বৃটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অজ্ঞাত একজন কর্মকর্তার মধ্যে তারিখহীন একটি চ্যাট হয়। আই-সুন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এটাকে টার্গেট করে। অজ্ঞাত অংশগ্রহণকারী বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সফওয়্যারের প্রবেশের সুবিধা পেয়েছেন। এ সময় বস লু তাদেরকে অন্য একটি সংগঠনের দিকে দৃষ্টি দিতে বলেন। প্রতিদ্বন্দী আরেকটি কন্ট্রাক্টরকে এ কাজ দেয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। আরেকটি চ্যাটলগে দেখা যায় একজন ব্যবহারকারী বৃটেনের টার্গেটের একটি তালিকা পাঠায় আই-সুনকে। এর মধ্যে আছে বৃটিশ অর্থ মন্ত্রণালয়, চ্যাথাম হাউস, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।