বিদ্রোহ দমনে হংকংয়ে কঠোর আইন পাস, সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন
বিদ্রোহ দমনে কঠোর করা হলো হংকংয়ের নিরাপত্তা আইন। হংকংয়ের পার্লামেন্টে পাস হওয়া এই আইনে অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
কর্তৃপক্ষ মনে করছে, দেশটিতে স্থিতিশীলতার জন্য এটি অতি প্রয়োজনীয়। তবে সমালোচকদের আশঙ্কা, এই আইন নাগরিক স্বাধীনতাকে আরও ক্ষুণ্ন করবে।
দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে হংকংয়ের পার্লামেন্ট এই আইন পাস করলো। অনুচ্ছেদ ২৩- কে একটি বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইন (এনএসএল) হিসেবে দেখা হয়, যা এর আগে চীন দ্বারা আরোপিত হয়েছে। এই আইনে হংকংয়ে বিচ্ছিন্নতা, বিদ্রোহ, সন্ত্রাসবাদ এবং বিদেশি বাহিনীর সঙ্গে যোগসাজশকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
হংকংয়ের নেতা জন লি বলেছেন, এই আইন সম্ভাব্য ‘নাশকতা’ ও ‘স্বাধীন হংকংয়ের ধারণাগুলো’ থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয়।
চীনের ভাইস প্রিমিয়ার ডিং জুয়েক্সিয়াং বলেছেন, নতুন আইনের দ্রুত প্রণয়ন হংকংয়ের ‘মূল জাতীয় স্বার্থ’ রক্ষা করবে এবং হংকংকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে মনোযোগ দেওয়ার অনুমতি দেবে।
২০২০ সালে এ রকম একটি আইন পাস হওয়ার পর থেকে এনএসএল-এর অধীনে অনেক লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে, যা সমালোচকদের মতে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের চীনের পরিচালক সারাহ ব্রুকস বলেছেন, নতুন আইন শহরে মানবাধিকারের ওপর আরেকটি বিপর্যয়কর ধাক্কা দিয়েছে। অন্যদিকে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ভারপ্রাপ্ত চীনা পরিচালক মায়া ওয়াং বলেছেন, এটি হংকংকে কর্তৃত্ববাদের একটি নতুন যুগে সূচনা করবে।
এদিকে হংকংয়ের নাগরিকরা অনুচ্ছেদ ২৩ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, বিশেষ করে আইনে বিস্তৃত এবং অস্পষ্ট সংজ্ঞার ব্যবহার নিয়ে। বেসামরিক কর্মচারী জর্জ বিবিসিকে বলেছেন, তিনি রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার সংজ্ঞা নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তিত। আমি খুব ভয় পাচ্ছি যে আমরা সহজেই (অপরাধের জন্য) অভিযুক্ত হতে পারি।
জর্জ আরও বলেন, আগের আইনটি কার্যকর হওয়ার পর থেকে তার সহকর্মীদের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ বিদেশে চলে গেছেন।