ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানলো ইরান
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) কর্তৃক ইরানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং বিপ্লবী গার্ডের উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় ব্লকটির সমালোচনা করেছে তেহরান।
রাশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের মিত্র দেশগুলোর কাছে ড্রোন সরবরাহ করার অভিযোগ তুলে ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মাদ রেজা আশতিয়ানি এবং বিপ্লবী গার্ডের বিদেশি অপারেশন শাখা কুদস ফোর্সের কমান্ডার ইসমাইল কানিকে লক্ষ্য করে শুক্রবার (৩১ মে) ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইইউ।
ব্লকটির নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর একটি কমান্ড সেন্টার, একটি এভিয়েশন ফার্মের প্রধান এবং কাভান ইলেক্ট্রনিক্স বেহরাদ কোম্পানিও রয়েছে বলে জানা গেছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের এমন পদক্ষেপকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করে বলেছে, ব্লকটি অযৌক্তিক এবং ভিত্তিহীন অজুহাতের উপর ভিত্তি করে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
এদিকে, হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর আগামী মাসের আগাম নির্বাচনকে সামনে রেখে জন্য বৃহস্পতিবার (৩০ মে) থেকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের নিবন্ধন শুরু করেছে তেহরান।
রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ ওয়াহিদি।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসাবে দেখা রাইসির আকস্মিক মৃত্যুর পর এই নির্বাচন দেশটির কট্টরপন্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার সূত্রপাত করেছে।
পাঁচ দিনের নিবন্ধন প্রক্রিয়ার পরে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচাই-বাছাই করবে ইরানের গার্ডিয়ান কাউন্সিল।
ভাহিদি ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভিকে বলেছেন, ‘যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াটি সাত দিনব্যাপী চলবে এবং যোগ্য প্রার্থীদের হাতে নির্বাচনী প্রচারণার জন্য প্রায় দুই সপ্তাহ সময় থাকবে। আগামী ১১ জুন যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করবে গার্ডিয়ান কাউন্সিল।
এদিকে, দেশটির মধ্যপন্থী রাজনীতিবিদরা ১২ সদস্যের কট্টরপন্থী গার্ডিয়ান কাউন্সিলের বিরুদ্ধে কট্টরপন্থী প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের অযোগ্য ঘোষণা করার অভিযোগ করেছেন।
মধ্যপন্থী রাজনীতিবিদরা বলেছেন, ব্যালটে কম আগ্রহ এবং রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের কারণে ভোটাররা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।
উল্লেখ্য, ইরানে পারমাণবিক এবং পররাষ্ট্রনীতির মতো সমস্ত রাষ্ট্রীয় বিষয়ে খামেনিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন। তবে, নির্বাচিতে প্রেসিডেন্ট ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবিলার দায়িত্বে থাকেন।
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট পদে পারভিজ ফাত্তাহ এবং সাঈদ জলিলি নিবন্ধন পেতে পারেন বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। এই দুজনই খামেনির খুবই ঘনিষ্ঠ বলে জানা গেছে।
অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার এবং সাবেক পার্লামেন্ট স্পিকার এবং খামেনির একজন উপদেষ্টা আলী লারিজানিকেও প্রেসিডেন্ট পদের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ইরানের গণমাধ্যমে।