জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করলো মিয়ানমার
মিয়ানমারের সামরিক সরকার এখনো অভ্যুত্থানবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য অর্থ এবং অস্ত্রের লেনদেন করছে বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ব্যাংকটির তত্ত্বাবধানে থাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করে।
রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার (২৯ জুন) জান্তা সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদকের প্রতিবেদনে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদন মিয়ানমারের বেসামরিক নাগরিকদের স্বার্থ এবং মিয়ানমার ও অন্যান্য দেশের সম্পর্কের মারাত্মক ক্ষতি করেছে।’
মিয়ানমারের মানবাধিকার বিষয়ক রিপোর্টার টম অ্যান্ড্রুস গত বুধবার এক প্রতিবেদনে বলেছেন, জান্তাকে বিচ্ছিন্ন করার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা সামরিক সরঞ্জাম কেনার ক্ষমতাকে ক্ষুন্ন করেছে বলে মনে হচ্ছে। তবুও তারা গত এক বছরে ২৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের অস্ত্র, প্রযুক্তি, উৎপাদন সরঞ্জাম এবং অন্যান্য অস্ত্র আমদানি করেছে।
এই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, মিয়ানমারের এসব সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ের পেছনে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশী থাইল্যান্ডসহ আন্তর্জাতিক ব্যাংকের সহায়তা রয়েছে।
২০২১ সালে নোবেল বিজয়ী অং সান সু চির সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের পর থেকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী একাধিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে এবং একটি বিধ্বস্ত অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার জন্য লড়াই করছে।
পশ্চিমা দেশগুলো মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী, ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসার ওপর একাধিক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, দেশটির সঙ্গে লেনদেনে নিয়োজিত স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলো সমস্ত ব্যবসায়িক সম্পর্ক এবং লেনদেনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সিঙ্গাপুর থেকে রপ্তানি ২০২২ সালে ১১০ মিলিয়ন ডলার থেকে মাত্র ১০ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। তবে থাইল্যান্ডের কোম্পানিগুলো আংশিকভাবে সেই শূন্যস্থান পূরণ করেছে। দেশটি ২০২৩ সালে মিয়ানমারের কাছে ১২০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র ও উপকরণ স্থানান্তর করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ।
এদিকে, থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, দেশটির ব্যাংকিং এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো অন্যান্য বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো প্রোটোকল অনুসরণ করে এবং তারা জাতিসংঘের প্রতিবেদনটি খতিয়ে দেখবে।