ইউক্রেনের শিশু হাসপাতালে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, নিহত অন্তত ২০

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ইউক্রেনের বিশেষায়িত শিশু হাসপাতলে রুশ রাহিনীর হামলায় নিহত অন্তত ২০জন।  ছবি - আল জাজিরা

ইউক্রেনের বিশেষায়িত শিশু হাসপাতলে রুশ রাহিনীর হামলায় নিহত অন্তত ২০জন। ছবি - আল জাজিরা

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের বিশেষায়িত শিশু হাসপাতালসহ বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। এতে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৭০ জন। সোমবার (৮ জুলাই) কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরায় থেকে এ তথ্য জানা যায়।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, বিভিন্ন ধরনের ৪০ টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে রুশ বাহিনী। অতে অনেকগুলো বাণিজ্যিক ভবন, অবকাঠামো ও একটি শিশু হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষের বরাতে আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, রুশ বাহিনীর ছোঁড়া কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র রাজধানী কিয়েভ, ক্রিয়েভ রিহ, ডিনিপ্রোসহ বেশ কয়েকটি শহরে আঘাত হেনেছে। এসময় কিয়েভে নয়জন, ক্রিয়েভ রিহে ১০ জন ও ডিনিপ্রোহ শহরে ১ জন নিহত হন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন,‘কিয়েভের খমাদিত জাতীয় বিশেষায়িত শিশু হাসপাতালে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে। ইউক্রেনের রাজধানীতে রাশিয়ার আক্রমণগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে খারাপ হামলা। শিশুদের হাসপাতালকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে এবার। দেশটির সবচেয়ে বড় শিশু হাসপাতাল এটি ।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কিয়েভে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে নয়জন। আহত হয়েছেন আরও ৩৩ জন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’

কিয়েভ হামলার প্রত্যক্ষদর্শী ৩৩ বছর বয়সী স্বিতলাকা ক্রাভচেঙ্কো বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন,‘আমরা একটা বিস্ফোরণের শব্দ শুনি। এরপর আমার স্বামী ভিক্টোরসহ ধ্বংসাবশেষ থেকে বেরিয়ে আসি। আমি তখন শ্বাস নিতে পারছিলাম না। আমাদের সঙ্গে ২ মাসের বাচ্ছা ছিল। তার মুখের উপর কাপড় দিয়ে ডেকে দিয়েছিলাম, যেন শ্বাস নিতে পারে। তিনি বলেন, নিচে নেমে দেখি আমাদের গাড়িটি ধ্বংসস্তূপের নীচে পুরোপুরি চাপা পড়ে আছে।’

কিয়েভের ওখমাদিত শিশু হাসপাতালের ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেক মানুষ আটকা পড়েছে বলে জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তিনি নিজস্ব এক্স (টুইটার) একাউন্টের এক বর্তায় লিখেছেন, ডাক্তার ও সাধারণ মানুষরা ধ্বংসস্তূপ থেকে আহতদের উদ্ধারে সাহায্য করছে। কত জন লোক ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।’

তিনি আরও লিখেন, ‘বিভিন্ন ধরনের ৪০ টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে। অনেগুলো আবাসিক ভবন, অবকাঠামো ও একটি শিশু হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

অন্যদিকে রাশিয়া বলছে, তারা শুধুমাত্র ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চলায়। তবে শিশু হাসপাতালটিতে হামলার বিষয়ে মন্তব্য করেনি রাশিয়া।

মধ্য ইউক্রেনের ক্রিয়েভ রিহ শহরেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। এটি দেশটির প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির আদি শহর। ক্রিয়েভ রিহের প্রশাসনিক প্রধান ওলেক্সান্ডার ভিলকুল আল-জাজিরাকে বলেন, ‘এখানে ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৩১ জন ‘

দক্ষিণ-মধ্য ইউক্রেনের ডিনিপ্রোতেও রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলায়। সেখানের গভর্নর সেরহি লাইসাক জানান, রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং আরও ছয়জন আহত হয়েছেন।

ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় বেসরকারি জ্বালানি উৎপাদনকারী সংস্থা বলছে, সর্বশেষ রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কিয়েভের তিনটি বিদ্যুৎ সাবস্টেশন এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত চার মাসে রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।