রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সামরিক সহযোগিতা নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওল।
তিনি বলেন, মস্কো ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে যে সামরিক সহযোগিতা গড়ে উঠছে, তা বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
তিনি এমন সময় এই মন্তব্য করলেন যখন মাত্র একদিন আগে সোমবার (২৮ অক্টোবর) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে জানায় যে, উত্তর কোরিয়ার ১০ হাজার সৈন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের বরাত দিয়ে সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইম এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওল অভিযোগ করেন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে ক্রমাগত সামরিক সহযোগিতা বিশ্বশান্তির জন্য হুমকিস্বরূপ।
এদিকে, সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে, উত্তর কোরিয়ার ১০ হাজার সৈন্য প্রশিক্ষণের জন্য রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছে।
ইয়ুন সুক ইওল বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ তৃতীয় বছরে পড়েছে। এরই মধ্যে উত্তর কোরিয়া রাশিয়ায় অস্ত্র সরবরাহ করেছে এবং তাদের সৈন্য রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এর আগে জানিয়েছিল, উত্তর কোরিয়ার ‘এলিট ফোর্স’ রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে।
রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সামরিক সহযোগিতা বিশ্ব ও আঞ্চলিক হুমকিস্বরূপ উল্লেখ করে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওল আরো বলেন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার ‘অবৈধ’ সামরিক সহযোগিতা বিশ্বশান্তির জন্য যেমন হুমকিস্বরূপ, তেমনি কোরীয় অঞ্চলের জন্যও হুমকিস্বরূপ। আমাদের জাতীয় স্বার্থের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ।
তিনি বলেন, এ জন্য আমরা সবধরনের যাচাই-বাছাই করে এর পাল্টা কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা আমরা গ্রহণ করবো। আমরা ধীরে ধীরে সেগুলো বাস্তবায়ন করবো।
ইয়ুন সুক ইওল বলেন, আমরা কী ধরনের পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো, তা নির্ভর করবে, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সামরিক সহযোগিতা কী রূপ নেয়, তার ওপর।
এদিকে, উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কোরিয়ার সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি মঙ্গলবার জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চোয়ি সন হুই মস্কোর উদ্দেশে যাত্রা করেছেন। তবে রাশিয়ার সঙ্গে কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু জানায়নি।
দক্ষিণ কোরিয়া অস্ত্র রফতানিকারক একটি দেশ। রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া মধ্যে সামরিক সহযোগিতার বৃদ্ধির কারণে দক্ষিণ কোরিয়া ইউক্রেনে সরাসরি অস্ত্র সরবরাহ করবে কিনা, তা নির্ভর করবে দেশটির অভ্যন্তরীণ নীতির ওপর। এর আগে পাশ্চাত্যের দেশগুলি ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহের জন্য দক্ষিণ কোরিয়াকে অনুরোধ জানিয়েছিল।
দক্ষিণ কোরিয়া ইতোমধ্যে ইউক্রেনের বন্ধুরাষ্ট্র পোলান্ডের কাছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ট্যাংক ও এয়ার ক্রাফট বিক্রি করেছে।