সর্বশেষ ভাষণে যা বললেন হাসান নাসরুল্লাহ
ইসরায়েলের হামলায় নিহত হওয়ার আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ সর্বেশষ ভাষণ দিয়েছেন। ওই ভাষণে তিনি গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলের হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং এই পরিস্থিতি পরবর্তীতে যুদ্ধে রূপ নিতে পারে বলেও সতর্ক করেন।
তিনি সর্বশেষ ভাষণে কী বলেছিলেন, তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
ওই ভাষণে নাসরুল্লাহ বলেন, লেবানন জুড়ে ইসরায়েলের মারাত্মক হামলার জবাব দিতে হবে। তিনি প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েলি আগ্রাসনের জন্য তাদেরকে এর শাস্তি পেতে হবে।
- গাজায় থেমে নেই ইসরায়েলি তাণ্ডব, আরও অর্ধশত নিহত
- ইসরায়েলি হামলায় লেবাননের ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত
- কে হবেন হিজবুল্লাহর পরবর্তী কর্ণধার? আলোচনায় ২ জন
তিনি সম্প্রতি লেবাননে পেজার হামলাকে হিজবুল্লাহর জন্য একটি বড় পরীক্ষা উল্লেখ করে বলেন, লেবানন জুড়ে ইসরায়েলের পেজার-রেডিও হামলায় ৩২ জন নিহত হয়েছেন। এতে হিজবুল্লাহর যোগাযোগ নেটওয়ার্কগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। এটি হিজবুল্লাহর জন্য একটি "বড় পরীক্ষা"।
তিনি এই হামলায় হিজবুল্লাহ সদস্যদের সতর্ক থাকার ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, এই হামলায় আমাদের আত্মবিশ্বাস হারালে চলবে না। হিজবুল্লাহ এই সংকট থেকে খুব শীঘ্রই "মাথা উঁচু করে" দাঁড়াবে।
"গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এতে ভেঙে পড়া চলবে না, তা যত বড় শক্তিশালী আঘাতই হোক না কেন। আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ আমাদেরকে এর থেকে রক্ষা করবেন এবং তাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করবেন।"- বলেছেন নাসরুল্লাহ।
নাসরুল্লাহ তার বক্তৃতায় গাজা এবং পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, "আমরা ইসরায়েলের সরকার, সেনাবাহিনী এবং তাদের জনগণকে বলছি, গাজায় আগ্রাসন যতদিন বন্ধ না হবে ততদিন লেবাননের যুদ্ধ চলবে। আমরা ১১ মাস ধরে এর সঙ্গে জড়িত এবং প্রয়োজনে এর সময় আরও বাড়বে।"
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েলের হামলায় হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে হিজবুল্লাহ। এক বিবৃতিতে লেবাননের সশস্ত্রগোষ্ঠীটি বলেছে, তারা গাজার সমর্থনে এবং লেবাননের প্রতিরক্ষায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মোকাবিলা চালিয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) থেকে লেবাননে ইসরায়েলের বিমান হামলায় এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজারেরও বেশি লেবানিজ। এই সংঘর্ষে দেশটির প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
এদিকে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের চলমান হামলায় ৪১ হাজার ৫৮৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সেখান থেকেও প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।