উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ বলেছেন, একজন সাংবাদিকের পেশার কাজের জন্য তার সাজা হতে পারে না। কারণ, সাংবাদিকতা অপরাধ নয়।
মঙ্গলবার ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট কমিটির উদ্দেশে বক্তব্য রাখার সময় এ মন্তব্য করেন অ্যাসাঞ্জ।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) অ্যাসাঞ্জের বক্তব্যের বরাত দিয়ে তুরস্কের বার্তাসংস্থা আনাদুলু আসান্সি এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার উইলিকিসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট কমিটির উদ্দেশে বক্তব্য রাখার সময় বলেন, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের সবাইকে হত্যা করতে চেয়েছিল। তারা আমার স্ত্রী এবং আমার ৬ মাসের শিশু সন্তানের ডিএনএ সংগ্রহ করতে চেয়েছিল।
অ্যাসাঞ্জ বলেন, সিআইএ আমাকে মামলায় ফাঁসিয়ে সাজা দোষী সাব্যস্ত করতে চেয়েছিল। কিন্তু একজন সাংবাদিকের তার পেশার দায়িত্বের কাজের জন্য সাজা দেওয়া যায় না। সাংবাদিকতা অপরাধ নয়। কারণ, মুক্ত সমাজ ও সমাজের তথ্য সরবরাহের স্তম্ভ হচ্ছে, সাংবাদিকতা।
বক্তব্য রাখার সময় সিআইএ তার বিরুদ্ধে যে সব কর্মকাণ্ড করেছে, তার বিবরণ দিয়ে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ বলেন, আমি যখন লন্ডনের ইকুডোরিয়ান দূতাবাসে আশ্রয় গ্রহণ করেছিলাম, তখন সিআইএ আমাকে অপহরণ করে হত্যা করতে চেয়েছিল।
অ্যাসাঞ্জ এ সময় আরো বলেন, এই পার্লামেন্ট নিশ্চয়ই সিআইএ’র বিচার বহির্ভূত হয়রানি ও গোপন অত্যাচার কেন্দ্র সম্পর্কে অবগত আছে।
তিনি আরো বলেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সিআইএ’র প্রাক্তন কর্মকর্তা জোশুয়া সুলটেকে ৪০ বছরের সাজা দিয়ে নির্জন স্থানে আটকে রেখে দেওয়া হয়েছে। তার ঘরের জানালা বন্ধ। তার কক্ষের দরজার সামনে ২৪ ঘণ্টা উচ্চ কম্পাঙ্কের মেশিনের শব্দ শোনানো হয়। সে কারণে তার চিৎকার কেউ শুনতেও পায় না।
অ্যাসাঞ্জ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাকে প্রত্যার্পণ করতে সিআইএ ডিরেক্টর মাইক পম্পের সহযোগিতায় মার্কিন সরকারের গ্রেফতারি পরোয়ানা দুই বছর ধরে গোপন রেখেছিল যুক্তরাজ্য।
অ্যাসাঞ্জের তার মতামত উল্লেখ করে বলেন, শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা স্বাধীনভাবে মতামত ব্যক্ত করতে পারেন। কিন্তু ইউরোপীয়ান ও অন্যান্য জাতিগুলির স্বাধীন মতামত ব্যক্ত করার অধিকার নেই। ইউরোপীয়নদেরও সে কারণে মার্কিনি গোপন আইন মেনে চলতে বাধ্য করা হয়। এমনকী এর বিরুদ্ধে তাদের আত্মরক্ষা করার কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি।