গাজায় নিহত আরও ৩০, শীতের তীব্রতায় দুর্বিষহ জীবন
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪৫ হাজার ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি অব্যাহত হামলায় মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে শীতের তীব্রতা ও হাসপাতালে হামলার ঘটনায় গাজার জনগণের দুর্ভোগ বাড়ছে। এরই মধ্যে ইসরায়েলের চলমান হামলায় কমপক্ষে আরও ৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৫ হাজার ৫১৪ জনে পৌঁছেছে বলে রোববার অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
ইসরায়েলি আগ্রাসন থেকে রক্ষা পায় নি গাজার শেষ হাসপাতালটিও। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) গাজার উত্তরাঞ্চলের সর্বশেষ সক্রিয় কামাল আদওয়ান হাসপাতাল জ্বালিয়ে দিয়েছে দখলদার ইসরায়েলের সেনারা। এরপর হাসপাতালের ভেতর থাকা প্রায় ৪০০ জনকে আটক করে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা। শনিবার তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন পায়ে হেটে জাবালিয়া আল-নোজলা এলাকায় আসেন। তারা জানিয়েছেন, আটকের পর ইসরায়েলি সেনারা রাইফেলের বাট দিয়ে তাদের মারধর করে। এছাড়া ঠাণ্ডার মধ্যে রাখা হয় অনেককে। যারমধ্যে আহত ও বয়স্ক ব্যক্তিরাও ছিলেন।
এই পরিস্থিতিতে মানবিক সহায়তার অভাব এবং চলমান শীতকালীন ঠাণ্ডা পরিস্থিতি গাজাবাসীর দুর্দশাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। স্থানীয় সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে ইতোমধ্যে এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে, যা এই শীত মৌসুমে মৃত শিশুর সংখ্যা পাঁচে পৌঁছেছে।
প্রায় ১৫ মাস ধরে চলমান এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত গাজায় ৪৫,৪৮৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,০৮,০৯০ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, হামাসের আক্রমণে ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত এবং ২০০-এরও বেশি মানুষ অপহৃত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।