অরুণ জেটলি: ভারতীয় রাজনীতির মেধাবী পুরুষ



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম  
অরুণ জেটলি

অরুণ জেটলি

  • Font increase
  • Font Decrease

দক্ষিণ এশিয়ার সমকালীন রাজনীতি, বিশেষ করে ভারতের খোঁজ-খবর যারা রাখেন, তাদের কাছে বেশ কিছু নেতার মুখ খুবই চেনা। নিজের দেশের গণ্ডি পেরিয়ে উপমহাদেশ জুড়ে পরিচিতি পাওয়া তেমন রাজনীতিবিদদের অন্যতম একজন ছিলেন অরুণ (মহারাজ কৃষাণ) জেটলি।   

তুখোড় ছাত্রনেতা থেকে তীক্ষ্ণতা সম্পন্ন আইনজীবীর পরিচয় ছাপিয়ে অরুণ জেটলি ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে রেখেছেন স্থায়ী স্বাক্ষর। প্রায়-নিঃস্ব অবস্থা থেকে কেন্দ্রীয় রাজনীতির শীর্ষে আরোহণের পথে জনমত ও মিডিয়া অ্যাক্টিভিজমের ক্ষেত্রে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) যে কয়জন নেতা মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের মধ্যে বাজপেয়ী ও আদভানীর পর পরই নাম আসে অরুণ জেটলি ও সুষমা স্বরাজের।

গত ৬ আগস্ট সুষমা স্বরাজের মৃত্যুর ১৮ দিনের মাথায় ২৪ আগস্ট ৬৬ বছর বয়সে চিরবিদায় নিলেন অরুণ জেটলি। অবশ্য ৯ আগস্ট তিনি অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখান থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা হয় নি তার। কয়েক দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ২৪ আগস্ট দ্বিপ্রহরে তার জীবনাবসান হয়।  

ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি শিবিরে এই মৃত্যুজনিত বেদনা গভীর ক্ষত ছড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শোক জানিয়ে বলেছেন যে, তিনি 'বিশ্বস্ত বন্ধু' হারিয়েছেন। বিজেপি'র পক্ষ থেকে অরুণ জেটলির মৃত্যুকে বর্ণনা করা হয়েছে 'মধ্যাহ্নে সূর্যাস্ত' শিরোনামে।

অরুণ জেটলি ছিলেন দলের অন্যতম মুখপাত্র। মিডিয়া ও বিতর্কে দলের নীতি ও আদর্শ তুলে ধরতে লাগাতার সফলতা দেখিয়েছেন তিনি। বিগত বছরগুলোতে তার যুক্তি ও বাচনভঙ্গি প্রায়-অখ্যাত বিজেপি নামক দলটির প্রতি মানুষের মনোযোগ ও আগ্রহ বাড়িয়েছে। নিজের দল ও রাজনীতি সম্পর্কে একটি ইতিবাচক মনোভাব ও আস্থাজনক বার্তা পৌঁছে দিতে অরুণ জেটলি ছিলেন সফল ও পারঙ্গম।            

অরুণ জেটলিকে বলা হতো 'ট্রাবলশুটার’, ‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’ এবং 'কিং মেকার'। মাঠের রাজনীতির চেয়ে কৌশল ও পরিকল্পনার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন উজ্জ্বলতর৷ ফলে তিনি নিজে নির্বাচনে লড়েছেন হাতে গোনা কয়েকটি। এমনকি, ২০১৪ সালে প্রবল মোদী হাওয়াতেও অমৃতসর কেন্দ্র থেকে লোকসভা ভোটে লড়ে কংগ্রেস প্রার্থী অমর সিং-এর কাছে পরাজিত হন তিনি। তবে তাকে গুজরাত থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত করে আনা হয় দলের পক্ষ থেকে। সর্বাবস্থায় তিনি বিজেপির অপরিহার্য নেতা ও  মোদীর ঘনিষ্ঠ বৃত্তে থেকে গিয়েছেন বরাবর।

ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থার সময় জেলখানায় রাজনীতির হাতে খড়ি হওয়া তরুণ আইনজীবী অরুণ জেটলি জেল খেটেছেন ১৯ মাস। আর সেই ১৯ মাসেই এমন এমন রাজনৈতিক গুরুদের সংস্পর্শে আসেন তিনি, যে তার জীবনদর্শনই বদলে যায়। সে তালিকায় ছিলেন জয়প্রকাশ নারায়ণ, অটলবিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আডবাণী, নানাজি দেশমুখের মতো প্রবাদ প্রতিম নেতারা। 

জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর এবিভিপি (অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ)-এর সর্বভারতীয় সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। এর পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ওকালতির সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে রাজনীতিকেও কেরিয়ার হিসাবে বেছে নেন তিনি।

রাজনীতিকে কেরিয়ার হিসাবে বেছে নিলেও, নির্বাচনে লড়ার ক্ষেত্রে অবশ্য ততটা সাফল্য পাননি অরুণ জেটলি। অরুণ জেটলি নিজে অবশ্য শেষ বার ভোটে জিতেছিলেন ১৯৭৪ সালে দিল্লির ছাত্র সংসদের নির্বাচনে। তার পর থেকে তিনি চলে গিয়েছিলেন মঞ্চের পিছনে।

পরের চার দশক ধরে তিনি ‘ব্যাকরুম স্ট্র্যাটেজিস্ট’। বহু নির্বাচনেই দলের হয়ে রণকৌশল এবং প্রচার কৌশল তৈরির কারিগর ছিলেন তিনি। কিন্তু, নিজে ভোটে লড়েননি, অন্যদের লড়িয়ে জিতিয়ে এনেছিলেন।

লোকসভা নির্বাচনে (২০১৪ সালে) দেশ জুড়ে প্রবল মোদি ঝড়েও কিন্তু অরুণ জেটলি পপুলার ভোটে জিততে পারেন নি। পাঞ্জাবের অমৃতসর থেকে ভোটে লড়ে পরাজিত হন তিনি। তাতে অবশ্য মোদি বা দলের কাছে তার গুরুত্ব কমেনি। প্রথম মোদি সরকারের অর্থ মন্ত্রক তো বটেই প্রতিরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও ছিল অরুণ জেটলির কাঁধে। কিন্তু, শরীরে বাসা বেঁধেছিল মারণ রোগ। একটু একটু করে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরেও আসতে থাকেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ২০১৯ সালের ভোটে আর দাঁড়াননি তিনি।

তারপরেও তাকে মন্ত্রিত্ব দেওয়ার কথা উঠলে তিনি তা সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেন শারীরিক কারণ দেখিয়ে। ২৮ ডিসেম্বর ১৯৫২ সালে দিল্লিতে আইনজীবী পিতা মহারাজ কৃষাণ জেটলি ও মাতা রতন প্রভা জেটলির ঘরে  জন্ম গ্রহণকারী এই নেতা রাজধানীর সরব রাজনীতি থেকে দূরেই থেকেছেন শেষ দিনগুলো। স্মৃতিচারণ করেছেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তাল ঘটনাক্রম আর সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের।

স্ত্রী সঙ্গীতা, যার পিতা ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের অর্থমন্ত্রী গিরিদরী লাল দুর্গা এবং দুই আইনজীবী সন্তান, পুত্র রোহন ও কন্যা সোনালি ছাড়াও পুরো দিল্লিতে ছড়িয়ে ছিল তার অসংখ্য আত্মীয়, পরিজন ও গুণগ্রাহী। তথাপি তিনি শেষ জীবনের অসুস্থতার কারণে রাজনীতি ও সামাজিক ভিড় এড়িয়ে নিভৃতচারীর মতো জীবনযাপন করেন।          

দিল্লির অভিজাত আবাসিক এলাকা গ্রেটার কৈলাশের বাড়ির নির্জনে অরুণ জেটলির জীবনাবসানে কেবল বিজেপি নয়, ভারতীয় রাজনীতি এক মেধাবী পুরুষকে হারিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া হারিয়েছে একজন উচ্চাঙ্গের রাজনৈতিক নেতা ও সুশিক্ষিত-সুদক্ষ ব্যক্তিত্বকে। 

   

ফিলিস্তিনকে আজ স্বীকৃতি দিতে পারে আয়ারল্যান্ড



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনকে আজ বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে ‘রাষ্ট্র’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে আয়ারল্যান্ড সরকার।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, চলতি সপ্তাহেই ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য দেশ আয়ারল্যান্ড, স্পেন, স্লোভেনিয়া এবং মাল্টা একসঙ্গে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পরিকল্পনা করছে। ইউরোপের এই দেশগুলোর নেতারা মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির জন্য দ্বি–রাষ্ট্রীয় সমাধান অপরিহার্য।

আইরিশ সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, দ্বি-রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিই দুদেশের মধ্যে শান্তি বয়ে আনতে পারে। বুধবার আইরিশ প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের দ্বি-রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত জানাবেন।

এদিকে, মঙ্গলবার (২১ মে) ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে পশ্চিমা বিশ্বের এমন পরিকল্পনাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দ্বি-রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দুদেশের মধ্যে শান্তির পরিবর্তে সন্ত্রাসবাদ এবং সংঘাত আরও বাড়াবে। আপনারা হামাসের হাতের পুতুল হয়ে যাবেন না।’

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় নিহতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। উদ্বাস্তু হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। হাজার হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার পাশাপাশি গাজায় দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্যসংকট। এমন পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পক্ষে অনেক দেশই সোচ্চার হচ্ছে। বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে ইসরায়েলকে নিয়েও সমালোচনা তীব্র হচ্ছে। ইসরায়েরের ব্যাপারে ইউরোপের অনেক দেশ তাদের অবস্থান পরিবর্তন করছে। তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে।

;

ইরানের পরবর্তী নেতা হতে পারেন খামেনির ছেলে মোজতবা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর দেশটিতে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। রাইসির মৃত্যুর আগে থেকেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ছেলেকে তার পিতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উত্তরসূরির সম্ভাব্য প্রার্থী বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতিবেদন- দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস।

৫৫ বছর বয়সী মোজতবা খামেনি ইরানের রাজনীতিতে অন্তরালের মানুষ হিসেবে পরিচিত। তবুও রাজনীতিতে মোজতবা খামেনির একটি শক্তিশালী প্রভাব রয়েছে। রাইসির মৃত্যুর আগে শীর্ষ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উত্তরসূরি হিসেবে তার নামই বার বার উঠে এসেছিল। কিন্তু রাইসির আকস্মিক মৃত্যুর পর মোজতবা খামেনি ইরানের পরবর্তী নেতা হতে যাচ্ছেন সেই জল্পনা আরও বেড়েছে। তবে অনেক বিশ্লেষক বলেছেন, ৮৫ বছর বয়সী সর্বোচ্চ নেতার অবসর এবং তার জায়গায় নতুন উত্তরসূরি আসার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

অনেকেই মনে করছেন রাইসির মৃত্যু শুধু নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সূচনাই করবে না একইসাথে আয়াতুল্লাহ খামেনির স্থলাভিষিক্ত হওয়ার নির্বাচনকেও নতুন মোড় দেবে।

ক্লেমসন ইউনিভার্সিটির লেকচারার আরাশ আজিজি বলেন, ২০০৯ সালের দিকে মানুষ সর্বপ্রথম মোজতবা খামেনীকে একজন সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসাবে কথা বলতে শুরু করে। তখন আমি এটিকে একটি সস্তা গুজব বলে মনে করেছিলাম। কিন্তু এখন আর তেমনটা নয়। এটা এখন খুব স্পষ্ট যে, মোজতবা খামেনী একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। তিনি অসাধারণ কারণ তিনি জনসাধারণের চোখে প্রায় সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য ছিলেন।

আরাশ আজিজি আরও বলেন, ইরানের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি ক্রমবর্ধমান অংশ প্রকাশ্যে মোজতবা খামেনীকে সমর্থন করতে শুরু করেছে।
মোজতবা খামেনি আয়াতুল্লাহর আলী খামেনীর ছয় সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় পুত্র। তিনি একজন রক্ষণশীল হার্ড-লাইনার হিসেবে পরিচিত। মোজতবা খামেনি ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসলামী প্রজাতন্ত্রের করণিক এবং রাজনৈতিক অভিজাতদের মধ্যে বেড়ে ওঠেন এবং পরবর্তীতে শক্তিশালী বিপ্লবী গার্ডের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এখন, তিনি তার বাবার অধিদপ্তর পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন বলে মনে করা হয়।

কিন্তু অনেক বিশ্লেষক আবার মনে করছেন খামেনি তার ছেলেকে উত্তরসূরী করবেন না। কারণ আয়াতুল্লাহ খামেনি নিজের ছেলেকে উত্তরসূরি করলে তাতে মনে হতে পারে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচনে গণতন্ত্র বজায় নেই এবং এখানে বংশানুক্রমিক ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
মোজতবা খামেনি কোমে অবস্থিত ইরানের সবচেয়ে বড় সেমিনারিতে পড়ান। তবে রাজনৈতিক কৌশলে তিনি অনেক পারদর্শী বলে মনে করা হয়। ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর উপর তার বড় প্রভাব রয়েছে। এছাড়া ইরানের গোয়েন্দা বাহিনীর সঙ্গেও তার রয়েছে গভীর যোগাযোগ। সর্বপরী ইরানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে মোজতবা খামেনির উচ্চ-স্তরের যোগসূত্র রয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

আয়াতুল্লাহ খামেনি তার ছেলেকে উত্তরাধিকার বিবেচনার তীব্র বিরোধী ছিলেন বলে বার্তা সংস্থা আইএলএনএকে বলেছেন সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচনকারী বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্য আলেম মাহমুদ মোহাম্মদী আরাঘি।

চলতি বছরের শুরুর দিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার উত্তরাধিকার বিষয়ে আলোচনায় খামেনি এমন মনোভাব প্রকাশ করেন বলে জানান তিনি।

ইরানের নীতি অনুযায়ী, সর্বোচ্চ নেতার আসন শুন্য হলে বিশেষজ্ঞদের সমাবেশকে সর্বসম্মতিক্রমে সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচন করতে হবে। ততদিন পর্যন্ত তারা দেশ পরিচালনার জন্য তিন বা পাঁচ সদস্যের নেতৃত্ব পরিষদ বেছে নিতে পারবে।

;

মানবপাচারে ভিন্ন কৌশল, ভিয়েতনাম হয়ে মালয়েশিয়া



মাজেদুল নয়ন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, সাউথ-ইস্ট এশিয়া ব্যাংকক, থাইল্যান্ড
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মানবপাচারের নতুন নতুন পথ ধারাবাহিক ভাবে সৃষ্টি করেন পাচারকারীরা। বিভিন্ন দেশের সীমান্তের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং ইমিগ্রেশনকে ফাঁকি দিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথ তৈরি করছে পাচারকারীরা। পূর্বে কম্বোডিয়া থেকে থাইল্যান্ড হয়ে মালয়েশিয়া পাচার করা হতো বাংলাদেশিদের। তবে সম্প্রতি ভিয়েতনাম থেকে থাইল্যান্ড হয়ে মালয়েশিয়া প্রবেশ করানো হচ্ছে।

সম্প্রতি মানবপাচারের শিকার একজন নারীর সঙ্গে কথা হয় বার্তা২৪.কম এর। তিনি জানান, প্রথমে থাইল্যান্ড নিয়ে যাওয়ার কথা বলে দালাল। সেখানে ৩ দিন রেখে পাঠানো হবে ভিয়েতনাম। এরপর সেখান থেকে মালয়েশিয়া প্রবেশ করানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এ বাবদ দালালকে ৪ লাখ টাকা দেয়া হলেও, থাইল্যান্ড ইমিগ্রেশন থেকে ফেরত পাঠানো হয় ওই তরুণীকে।

গত রোববার (১৯ মে) মালয়েশিয়ায় উদ্ধার করা হয় ৫ জন বাংলাদেশিকে। এদেরকে থাইল্যান্ড হয়ে ভিয়েতনাম বিমানে নেওয়া হয়। এরপর আবারো থাইল্যান্ডে প্রবেশ করানোর পর নদী পথে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করানো হয়।

ভিয়েতনাম হয়ে মানবপাচারের এই চক্রটি বড় বলেই ধারনা করছে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ। কুয়ালালামপুরের জালান সুলতান ইসমাইল থেকে মানবপাচারের এই চক্রের সঙ্গে জড়িত ৮ জনকে আটক করা হয়।

মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক রুসলিন জুসোহ বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে একটি পার্কিং এরিয়াতে পাচারে ব্যবহৃত গাড়িকে অনুসরণ করা হচ্ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে গাড়িটি পালাতে চেষ্টা করে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে গাড়িটি আটক করতে সক্ষম হয় তারা।

রুসলিন জানান, গাড়িটির চালক একজন ৩০ বছর বয়সী বাংলাদেশি, যে কিনা পাচার করা মানুষদের কুয়ালালামপুর নিয়ে এসেছে। গাড়ির ভেতর পাচার হওয়া ২ জন বাংলাদেশিকে উদ্ধার করা হয়।

জালান সুলতান ইসমাইলের পেরাডুয়া মাইভি পার্কিং স্টেশনটি মানবপাচারের হস্তান্তর এলাকা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই সময় অভিযানে সেখান থেকে আরও ৫ জনকে আটক করা হয়। এছাড়াও ১০টি বাংলাদেশি পাসপোর্ট এবং নগদ ৫০০ রিঙ্গিত বা ১২ হাজার টাকা পাওয়া যায় চক্রটির কাছে।

মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ জানিয়েছে, পাচারকারীরা এই বাংলাদেশিদের ভিয়েতনাম থেকে থাইল্যান্ড নেওয়ার পর সেখান থেকে কেলানতানে প্রবেশ করানো হয় নদী পথে। এরপর গণপরিবহন ব্যবহার করে তাদেরকে কুয়ালালামপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।

সব মিলিয়ে ২ মাসের এই পাচার কাজের জন্য শিকার ব্যক্তিদের কাছ থেকে সাড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা নেওয়া হয়।

;

১৬০টিরও বেশি ভূমিকম্পে কাঁপল ইতালির নেপলস



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় নেপলসে ১৬০টিরও বেশি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় ও রাতে এ ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়।

এদিকে ভূমিকম্পের পর ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। নেপলসের আশপাশের এলাকায় অনেকগুলো বাড়িঘর খালি করা হয়েছে এবং অনেক স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ মে) রাতে বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ ইতালির নেপলসের আশপাশের এলাকায় একের পর এক ভূমিকম্পের পর বাড়িঘর খালি করা হয়েছে এবং অনেক স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার সন্ধ্যায় এবং রাতে সেখানে ১৬০ টিরও বেশি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ৪.৪ মাত্রার কম্পনটি পোজুলি শহরের কাছে স্থানীয় সময় রাত ৮টার কাছাকাছি হয়। ইতালির ভূপদার্থবিদ্যা ও আগ্নেয়গিরির জাতীয় ইনস্টিটিউট আইএনজিভি বলেছে, গত ৪০ বছরের মধ্যে এটি এ অঞ্চলে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প।

নেপলসের মেয়র গাইতানো মানফ্রেদি স্বীকার করেছেন, একের পর এক কম্পনে বাসিন্দারা আতঙ্কিত হতে পারেন। তবে তিনি বলেছেন, কর্মকর্তারা তাদের বিষয়ে দেখছেন।

ভূমিকম্পের পর পোজুলিতে শতাধিক তাঁবু তৈরি করা হয় এবং কিছু বাসিন্দা রাতের অধিকাংশ সময় রাস্তায় কাটায়। কেউ কেউ আবার অন্যত্র আত্মীয়দের কাছে চলে যায়।

এছাড়া স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, গত কয়েক মাসে যে নিম্নস্তরের ভূমিকম্প হয়েছে তার কারণে বেশ কয়েকটি পরিবার পুরোপুরি এলাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবছে। 

;