আগস্টে আফগানিস্তানে প্রতিদিন গড়ে ৭৪ জনের মৃত্যু
চলতি বছরের আগস্ট মাসেই আফগানিস্তানে ৬১১টি সামরিক হামলায় ২ হাজার ৩০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসব বিচ্ছিন্ন হামলায় ১ হাজার ৯৪৮ জন আহত হয়েছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী শুধুমাত্র আগস্ট মাসেই প্রতিদিন গড়ে ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক পরিসংখ্যানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, নিহতদের বেশির ভাগই সামরিক যোদ্ধা হলেও এর মধ্যে তালেবান যোদ্ধার সংখ্যাই বেশি।
পরিসংখ্যানে জানানো হয়- মোট ২ হাজার ৩০৭ জনের মধ্যে ৯৭৪ জন তালেবান যোদ্ধা, সামরিক বাহিনীর ৬৭৫ জন, বেসামরিক নাগরিক ৪৭৩ জন, সরকারি কর্মকর্তা ২৩ জন, আল-কায়দার ১৭ জন, ইসলামিক স্টেট খোরাসানের ১৬ এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনীর ৩ জন মারা যায়।
তবে দেশটির তালেবান জঙ্গি সংগঠন ও আফগান সরকার এ পরিসংখ্যানের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
পরিসংখ্যানটির তথ্য মতে, সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটে ২৭ আগস্ট। সেদিন প্রাথমিক এক সামরিক বিমান হামলায় ১৬২ জন মারা যায় এবং ৪৭ জন আহত হয়।
গত আগস্টের প্রথম সপ্তাহে এক সহিংসতার পরে তালেবান ও সরকার বাহিনী উভয়ই মুসলিম জাতির সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা উপলক্ষে তিন দিনের অনানুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি পালন করে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিভিন্ন সহিংসতায় তিন দিনে মারা যায় ৯০ জন।
বেসামরিক নাগরিকদের জন্য সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ দিন ছিলো ১৮ আগস্ট। সেদিন এক ঘটনায় ১১২ জনের প্রাণহানি হয়। একইসঙ্গে কাবুলের একটি বিয়ে বাড়িতে আত্মঘাতী বোমা হামলায় মারা যায় ৯২ জন এবং আহত হন ১৪২ জন। পরে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানানো হয়।
আরও পড়ুন: কাবুলে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে নিহত ১০
এদিকে আফগানিস্তানের হতাহত কমিয়ে আনতে শান্তি চুক্তির উদ্দেশ্যে গত আট সেপ্টেম্বর আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ও তালেবান নেতাদের আমন্ত্রণ জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে বৈঠকের দুইদিন আগে ৫ সেপ্টেম্বর কাবুলে এক হামলায় এক মার্কিন সেনাসহ ১১ জন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তান শান্তি চুক্তির যোগ্যতা রাখে না: ট্রাম্প
এর প্রেক্ষিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প শান্তি চুক্তি বাতিল করে বলেন, 'এই গুরুত্বপূর্ণ শান্তি আলোচনার আগেও যদি তারা যুদ্ধ বিরতিতে রাজি না হয়ে নিরপরাধ ১২ জন মানুষকে হত্যা করতে পারে, তবে তারা এ অর্থবহ শান্তি আলোচনা করার মতো কোনো যোগ্যতা রাখে না।'
আরও পড়ুন: ট্রাম্প-তালেবান শান্তি আলোচনা বাতিল
যদিও শান্তি চুক্তির প্রধান মধ্যস্থতাকারী ও তালেবান শীর্ষ নেতা শের মোহাম্মদ আব্বাস স্টানিকজাই বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এই চুক্তির দরকার। আর এর জন্য আমাদের দরজা সবসময় উন্মুক্ত বলে মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: শান্তি চুক্তিতে আফগানিস্তানের দরজা উন্মুক্ত: আব্বাস