দুই হাজার ধনীর হাতে সাড়ে চারশ কোটি দরিদ্রের সম্পদ
২০১৯ সালে পৃথিবীর দুই হাজার ১৫৩ জন ধনীর কাছে যে অর্থ ছিল তা ৪০৬ কোটি দরিদ্রের সকল অর্থসম্পদের সমান। সোমবার (২০ জানুয়ারি) ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামে দারিদ্র্য বিমোচনে নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফাম এ তথ্য জানিয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের দাভোসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে অক্সফাম জানায়, পৃথিবীতে দুই হাজার ১৫৩ জন ধনীর কাছে যে অর্থ রয়েছে তা ৪০৬ কোটি দরিদ্র সকল অর্থ-সম্পদের সমান। এছাড়া বিশ্বব্যাপী নারীরা বেতন বা স্বীকৃতি ছাড়াই প্রতিদিন ১২.৫ বিলিয়ন ঘণ্টা কাজ করে। প্রতিবেদনে অক্সফাম অনুমান করে যে, নারীদের অবৈতনিক কাজ বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রতি বছর ১০.৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার যুক্ত করে, যা প্রযুক্তি ইন্ডাস্ট্রির মোট অর্থের তিনগুণ।
ভারতে অবস্থিত অক্সফাম শাখার প্রধান অমিতাভ বেহার আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সকে জানান, আজ আমরা যে অর্থনীতি দেখছি তার লুকানো কারিগর নারীরা। এটি মহিলাদের অবৈতনিক যত্নের কাজ আমাদের বুঝা উচিত। এটি পরিবর্তন করা দরকার।
বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বৈষম্যের মাত্রা তুলে ধরার জন্য অমিতাভ বেহার ভারতের বিহার রাজ্যের বুচু দেবী নামে এক মহিলার কথা উল্লেখ করেন। বেহার বলেন, ওই নারী প্রতিদিন ১৬ থেকে ১৭ ঘণ্টা কাজ করছেন। যার মধ্যে রয়েছে রান্না করা, বাচ্চাদের স্কুলের জন্য প্রস্তুত ও পানি আনার জন্য ৩ কিলোমিটার হাঁটা। কিন্তু এর জন্য তারা খুব সামান্য বেতন পান। এদিকে ধনীরা নিজস্ব প্লেন, ব্যক্তিগত জেট ও সমৃদ্ধ জীবনধারা নিয়ে দাভোসে উপস্থিত হচ্ছেন।
তিনি জানান, এরকম কাজ বুচু দেবী শুধু একা করেন না। এটি শুধু ভারতের একার চিত্র নয়, বিশ্বব্যাপী নারীরা যে কাজ করছে তারও চিত্র একই। আমাদের এই ব্যবস্থার পরিবর্তন করা দরকার এবং ধনীদের এই রাজত্ব অবসান করতে হবে।
বেহার আরও বলেন, এই অবস্থার প্রতিকারের জন্য সরকারকে সর্বোপরি নিশ্চিত করা উচিত যে ধনীরা তাদের কর ঠিকমত প্রদান করে কিনা। এছাড়া সরকারকে বিশুদ্ধ খাবার পানি, স্বাস্থ্য সেবা ও উন্নত মানের স্কুলের ব্যবস্থা করতে হবে।
আপনি যদি পুরো বিশ্বের দিকে তাকান তবে মাত্র ৩০টি দেশকে দেখবেন যাদের জনগণ রাস্তায় নেমে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। প্রতিবাদকারীরা জানায়, তারা এই বৈষম্যকে মেনে নেবে না এবং এমন শর্ত নিয়ে বাঁচতে চায় না।