করোনার বিস্তারে কমছে বায়ুদূষণ

  • নুসরাত জাবীন বিভা, নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

প্রাত্যহিক কাজ এবং ভ্রমণের ওপর করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়ায় কিছু দেশ এবং অঞ্চলে বায়ু দূষণকারী ও তাপমাত্রা বৃদ্ধিকারী গ্যাসের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমতে দেখা গেছে।

নিউইয়র্কের গবেষকরা বিবিসিকে জানান, তাদের গবেষণায় দেখা গেছে গত বছরের তুলনায় কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছি কমেছে, যার অনেকাংশই মূলত গাড়ি থেকে নির্গত হয়। বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধিকারী গ্যাস কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনও অনেক কমেছে।

বিজ্ঞাপন

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে, নিউইয়র্কে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা পাঁচ থেকে দশ শতাংশ কমেছে এবং একইসঙ্গে মিথেনের মাত্রাও কমেছে।

বৈশ্বিক মহামারির কারণে বিশ্বের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে এ ধরনের গ্যাস নির্গমন কমে যাওয়ার বিষয়টি মোটেই বিস্ময়কর নয়। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে মহামারি শেষে এগুলোর মাত্রা দ্রুত বেড়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন

জলবায়ু বিষয়ক ওয়েবসাইট কার্বন ব্রিফের এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত দুই সপ্তাহে চীনে এনার্জি ব্যবহার ও নির্গমন ২৫ শতাংশ কম হয়েছে, যা চীনের বার্ষিক সামগ্রিক কার্বন নির্গমনের উপর ১ শতাংশ প্রভাব ফেলবে।

চীন এবং উত্তর ইতালি এই দুই জায়গাতেই নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের পরিমাণও কমে গেছে। নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড গাড়ি এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পর্কিত যা মারাত্মক বায়ু দূষক এবং শক্তিশালী তাপমাত্রা বৃদ্ধিকারী রাসায়নিক।

কমেছে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড

বিমান উড্ডয়নে নিষেধাজ্ঞা জারি এবং লাখ লাখ মানুষ বাড়িতে বসে কাজ করায় বিভিন্ন দেশে গ্যাস নির্গমন কমে যাচ্ছে।

ইস্ট অ্যাংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কোরিনে লে কুয়েরে বলেন, মহামারি কতদিন পর্যন্ত স্থায়ী হবে এবং বিশেষ করে আমেরিকায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মন্থরগতি কতটা সময় ধরে চলবে, তার ওপর দূষণের নিম্নমাত্রা নির্ভর করবে। কিন্তু আমি মনে করি এবছর আমরা বৈশ্বিক গ্যাস নিঃসরণে উল্লেখযোগ্য কিছু দেখতে পাবো। যদি মহামারি আরো তিন চার মাস স্থায়ী হয় তাহলে অবশ্যই কিছু হ্রাস হবে।

মহামারি কেটে গেলে অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে তা, কার্বন নির্গমন ও বায়ুদূষণের ক্ষেত্রে বিরাট পার্থক্য সৃষ্টি করবে।

এর আগে ২০০৮-০৯ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার সময় জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের কারণে কার্বন নিঃসরণ পাঁচ শতাংশ কমে গিয়েছিল।

তবে অনেকে আবার বলছেন যদি বেশি সময় ধরে মহামারি চলে তাহলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে যে কোনো পদ্ধতি অবলম্বন করা হতে পারে। পরিবেশের ওপর কী প্রভাব পড়ছে তা তেমন বিবেচনা করা হবে না।