৯ দিনে উমরা পালনকারীর সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে
করোনার তাণ্ডবে বিপর্যস্ত বিশ্ব ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সৌদি আরব ৭ মাস পর ৪ অক্টোবর থেকে পবিত্র উমরা চালুর অনুমতি দিয়েছে। উমরা চালুর প্রথম ৯ দিনে ৫০ হাজারের অধিক মানুষ পবিত্র উমরা সম্পন্ন করেছেন। দিনশেষে এ সংখ্যা ৫৪ হাজারে পৌঁছবে।
সোমবার (১২ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি মানুষ উমরা সম্পন্ন করেছেন বলে হারামাইন সূত্রে প্রকাশ। তবে এখনও মসজিদে হারাম পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি, ১৮ অক্টোবর থেকে মসজিদে হারাম নামাজের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। ওই দিন থেকে দৈনিক ১৫ হাজার মানুষ উমরা পালনের সুযোগ পাবেন।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গত মার্চ থেকে পবিত্র উমরার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় সৌদি আরব। মহামারির কারণে এবার মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সমাবেশ হজও সীমিত আকারে পালিত হয়েছে। করোনার প্রকোপ কমে আসায় ৪ অক্টোবর সকাল থেকে উমরা পালনকারীদের জন্য মসজিদে হারাম খুলে দেওয়া হয়। ওই দিন থেকে দৈনিক ৬ হাজার মুসল্লি উমরা পালন করছেন।
২২ সেপ্টেম্বর পুনরায় উমরা শুরুর ঘোষণার সময় সৌদি আরবের হজবিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ বেনতেন জানিয়েছিলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে খুবই সতর্কতার সঙ্গে এবং সুনির্দিষ্ট সময়ের ভেতরে উমরা পালন করা হবে। উমরা পালনকারীদের কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত করা হবে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উমরা পালনকারীদের পবিত্র কাবা তাওয়াফ করতে হবে। আপাতত কাবা শরিফ স্পর্শ ও হাজরে আসওয়াদে চুমো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।’
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে উমরাযাত্রীদের কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হচ্ছে। মসজিদে হারামের প্রবেশপথ এবং ভেতরের বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে থার্মাল ক্যামেরা। যাতে নিয়মিত তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। এসব নিয়ম মেনেই উমরা পালনকারীরা উমরা সম্পন্ন করছেন।
এমনিতে বছরের যেকোনো সময় মুসলমানরা উমরা করতে মক্কা ও মদিনায় যেতে পারেন। ২০১৯ সালে সব মিলিয়ে ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষ উমরা পালন করেছেন। প্রতিবছর বিভিন্ন দেশের ২০ লাখের বেশি হজ করার সুযোগ পেলেও এবার সৌদি আরবে বসবাসরত মাত্র কয়েক হাজার মুসলমান সে সুযোগ পেয়েছেন।
পবিত্র উমরার কার্যক্রমকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে সৌদি সরকার বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে শুধুমাত্র সৌদি আরবে অবস্থানরতরা উমরা পালনের সুযোগ পেয়েছেন ৪ অক্টোবর থেকে। একদিনে ৬ হাজার জন আলাদা আলাদা ছয়টি সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তারা উমরা পালন করছেন।
দ্বিতীয় ধাপ ১৮ অক্টোবর থেকে শুরু হবে। এ সময়ে একদিনে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার জনকে উমরার জন্য মসজিদে হারামে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। এই দিন থেকে মসজিদে হারামে ৪০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায়েরও সুযোগ পাবেন।
তৃতীয় ধাপ ১ নভেম্বর থেকে সৌদি আরবে অবস্থান করা এবং বিদেশ থেকে আসা উমরাযাত্রীদের মক্কার মসজিদে হারামে ঢুকতে দেওয়া হবে। তখন প্রতিদিন ২০ হাজার মানুষ উমরা পালন এবং ৬০ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারবেন।
চতুর্থ ধাপে করোনা মহামারি দূর হওয়ার পর মসজিদে হারাম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।