উমরা পালনে আসা মুসল্লিদের পথনির্দেশ, বিভিন্ন মাসয়ালা, ধর্মীয় পরামর্শ ও ফতোয়া দেওয়ার জন্য আগে থেকেই বিভিন্ন ভাষার মুবাল্লিগ (ধর্ম প্রচারক, ধর্মীয় পরামর্শক) নিয়োজিত আছেন।
আগে অল্প কয়েকটি ভাষায় ধর্মীয় নানা বিষয়ে সেবা দেওয়া হলেও এখন ২১ ভাষায় এ সেবা দেওয়া হচ্ছে। এটা বায়তুল্লাহ শরিফে আগত ইবাদতকারী ও উমরাকারীদের জন্য এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
বিজ্ঞাপন
মসজিদে হারামের পরিচালক সূত্রে আরব নিউজ জানিয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত জিয়ারত ও উমরা পালনকারীদের উদ্ভুত নানা সমস্যা ও প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য এসব মুবাল্লিগরা নিয়োজিত। মসজিদে হারামের বিভিন্ন পয়েন্টে মোবাল্লিগরা ২১ ভাষায় দিনরাত ২৪ ঘণ্টা উমরা পালনকারীদের এ সেবা দিয়ে থাকেন।
জুমার খুতবা, প্রয়োজনীয় দোয়া, কোরআন-হাদিসের রেফারেন্স, ফতোয়া এবং অন্যান্য প্রচারণা সম্পর্কিত বিষয়াদি অনুবাদের জন্য মসজিদে হারামের মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগ এ সব অনুবাদক নিয়োগ দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
মসজিদে হারামের জুমার নামাজের খুতবা প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়। মসজিদে হারামের বিভিন্ন পয়েন্টে লাউড স্পিকারের মাধ্যমে খুতবা অনুবাদ করে শোনানোর পাশাপাশি নির্দিষ্ট অ্যাপ ব্যবহার করে এ খুতবা শোনার ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া মসজিদের হারামের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এফ.এফ রেডিওর মাধ্যমে খুতবার অনুবাদ, বিভিন্ন মাসয়ালাসহ, কোরআন তেলাওয়াত শোনার ব্যবস্থা রয়েছে।
অনুবাদ বিভাগের পরিচালক মাশারি আল মাসউদি এ বিষয়ে বলেন, মসজিদে হারামের খুতবা, দরস এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর উমরাকারীদের নিজ নিজ ভাষায় দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। যেন সহজে তারা ইবাদত সম্পন্ন করতে পারেন।
তিনি বলেন, আপাতত ২১ ভাষার মুবাল্লিগ অনুবাদকগণ বিশেষ ইউনিফর্মে মসজিদে হারামের বিভিন্ন প্রাঙ্গণে নিয়োজিত রয়েছেন এবং উমরাকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন।
মাশারি আল মাসউদি আরও বলেন, মসজিদে হারামের খুতবা পাঁচ ভাষায় (ইংরেজি, উর্দু, মালয়, ফার্সি এবং বাংলা) অনুবাদ করা হয়।
শেরে বাংলা একে ফজলুল হক সম্মাননা-২০২৩ পেলেন লেখক সম্পাদক ও সংগঠক কবি মুনীরুল ইসলাম। একজন সফল সংগঠক হিসেবে তাকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়।
সম্প্রতি রাজধানীর পরীবাগের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে ‘উদীয়মান বাংলাদেশ’-এর একটি অনুষ্ঠানে তার হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়।
এ সময় দেশের বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক, ভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন।
আলেম লেখক ও কবি মুনীরুল ইসলাম একজন জাত লেখক। এ পর্যন্ত সাহিত্যের বিভিন্ন বিষয়ে তার ৮০টির মতো গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে তিনি আলেম লেখকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরামের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি পর্যায়ক্রমে সংগঠনটির সহ-সাধারণ সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক এবং সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি সম্পাদনা কেন্দ্রের পরিচালক এবং সাহিত্য সাময়িকী লেখকপত্রের নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
২০০৩ সালে ঢাকায় আসার আগে সরকার অনুমোদিত সেবামূলক সংগঠন ‘আল-এহসান পরিষদ কুমিল্লা’-এর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে এসেছেন। এর আগেও তিনি লেখালেখি ও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় অবদান রাখার জন্য অনেক সম্মাননা পদক ও পুরস্কার লাভ করেছেন।
স্বামী-স্ত্রী একে অপরের আজীবন সঙ্গী। তাই তাদের জীবন চলার পথে মান-অভিমান, ভুল-ভ্রান্তি স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু এই স্বাভাবিক বিষয়ই অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে যখন তা দাম্পত্য কলহে রূপ নেয়।
এ কলহের সময় কোনো পক্ষ সম্পর্কে ফাটল ধরানোর জন্য নানা অনৈতিক কাজও করে। অনেক সময় জাদু-টোনার আশ্রয় নেয় কেউ কেউ। আবার তৃতীয় কোনো পক্ষ শত্রুতার কারণে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক নষ্ট করতে কাজ করে।
স্বামী-স্ত্রী যাদের ওপর জাদু করা হয়, অনেকক্ষেত্রে তারা বুঝতে পারে না। এটাকে স্বাভাবিক মনে করে তারা সারাক্ষণ ঝগড়া করতে থাকে! আমাদের দেশে ছেলের মা, মেয়ের মা থেকে শুরু করে আত্মীয়রা নানা কারণে দম্পতির ওপর কালো জাদু করে। কয়েকটি লক্ষণ থাকলে বুঝা যায় তাদের ওপর কালো জাদু করা হয়েছে। এর কয়েকটি হলো-
১. অতিরিক্ত ঝগড়া করা। স্বামী-স্ত্রী যদি হঠাৎ করে কয়েকদিন ধরে উল্লেখযোগ্য কোনো কারণ ছাড়া সারাক্ষণ শুধু ঝগড়া করে, এটা অন্যতম লক্ষণ।
২. যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়া হঠাৎ করে স্বামী/স্ত্রীর প্রতি ঘৃণা তৈরি হয়। একজন আরেকজনের ভালো কথা শুনলেই রাগ ওঠে। রান্না করলে পছন্দ হয় না। তার কোনো কিছুই পছন্দ হয় না। তাকে দেখতে কুৎসিত লাগে।
৩. সহবাসে অনীহা দেখা যায়, আগে এ রকম হতো না। কিন্তু হঠাৎ দেখা যায়, কোনো একজন আগ্রহ পাচ্ছে না।
৪. হঠাৎ করে দেখা যাচ্ছে, একজন আরেকজনের প্রতি অতিরিক্ত মুগ্ধ হয়ে পড়েছে। স্বাভাবিক ভালোবাসা অস্বাভাবিক পর্যায়ে চলে গেছে। অফিসে, কাজে যেতে ভালো লাগে না। সারাক্ষণ স্ত্রীর সঙ্গে থাকতে ইচ্ছে করে। এই ধরনের জাদু করে স্ত্রী পক্ষের কেউ বা স্ত্রী!
স্বামী-স্ত্রী জাদু-টোনা ও বদনজর থেকে রক্ষা পেতে কী করতে পারেন?
১. নিয়মিত আমল করার কোনো বিকল্প নেই। জামাতে নামাজ আদায়, পরিপূর্ণ পর্দা, নামাজের পর আয়াতুল কুরসি, সূরা নাস, সূরা ফালাক পড়া ও ঘুমানোর পূর্বে সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়া।
২. স্ত্রীর কপালে ডান হাত রেখে এই দোয়া পড়া- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা জাবালতাহা আলাইহি, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা, ওয়ামিন শাররি মা জাবালতাহা।’ -সুনানে আবু দাউদ : ২১৬০
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে তার মধ্যকার কল্যাণ ও তাকে আপনি যে কল্যাণ সহকারে সৃষ্টি করেছেন তা কামনা করছি। আর আমি তার মধ্যকার অকল্যাণ ও তাকে আপনি যে অকল্যাণ সহকারে সৃষ্টি করেছেন তা থেকে আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
৩. বাসররাতে স্ত্রীকে নিয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়তে হয়। না পড়ে থাকলে এখনো পড়তে পারেন। নামাজ শেষে এই দোয়াটি দেখে দেখেই পড়ুন- ‘আল্লাহুম্মা বারিক লি ফি আহলি, ওয়া বারিক লিআহলি ফি; আল্লাহুম্মারজুকহুম মিন্নি, ওয়ারজুকনি মিনহুম; আল্লাহুম্মাজমায়া বাইনানা মা জামায়াতা ফি খাইরিন; ওয়া ফাররিক বাইনানা ইজা ফারাকাতা ফি খাইরিন।’ -আল মুজামুল কাবির : ৮৯৯৩
অর্থ : হে আল্লাহ! আমার পরিবারে আমার স্বার্থে বরকত দিন এবং আমার মাঝে পরিবারের স্বার্থে বরকত দিন। হে আল্লাহ! তাদের আমার পক্ষ থেকে রিজিক দান করুন এবং আমাকে তাদের পক্ষ থেকে রিজিক দান করুন। হে আল্লাহ! যে কল্যাণ আপনি জমা করেছেন, তা আপনি আমাদের মাঝে জমা করুন। আর যদি আপনি কল্যাণকে পৃথক করেন, তাহলে আমাদের মাঝে পৃথক করুন।’
৪. সহবাসের পূর্বের একটি দোয়া আছে। বেশিরভাগ স্বামী-স্ত্রী এই আমলে অবহেলা করেন। মুখস্থ না থাকলে দেখে দেখেই দোয়াটি পড়তে পারেন- ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইতানু ওয়া জান্নিবিশ শাইতানা মা রাজাকতানা।’ -সহিহ বোখারি : ৭৩৯৬
৫. স্বামী-স্ত্রীর বদনজর লাগতে পারে। তাদের সুখ দেখে অনেকেই হিংসায় পুড়ে। এটা থেকে হেফাজত থাকতে দুইজনই দোয়া পড়বেন। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) তার নাতি হজরত হাসান ও হজরত হুসাইন (রা.)-এর জন্য এই দোয়াটি পড়তেন। হজরত ইবরাহিম (আ.) তার দুই ছেলের জন্যও দোয়াটি পড়তেন।
প্যাকেজ ঘোষণার পরও হজ নিবন্ধনে তেমন সাড়া নেই। মন্ত্রণালয় হজ প্যাকেজ ঘোষণার পর চূড়ান্ত নিবন্ধনের জন্য তাড়া দিলেও বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলো অনেকটা গুটিয়ে রয়েছে। হাবের নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধের প্রভাব পড়ছে হজ নিবন্ধনেও। এই সময়ে এজেন্সিদের হজ নিবন্ধনে সময় পার করার কথা থাকলেও তাদের সময় ব্যয় করতে হচ্ছে নেতৃত্ব ধরে রাখার পেছনে।
সোমবার (৪ নভেম্বের) সন্ধ্যা পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন মাত্র ১০ হাজার ১৫৩ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধিত হজযাত্রী ২ হাজার ৮৭০ জন ও বেসরকারি মাধ্যমে ৭ হাজার ২৮৩ জন।
এদিকে সোমবার (৪ নভেম্বর) ২০২৫ সালের হজ প্যাকেজের আলোকে চূড়ান্ত নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগ। বিজ্ঞপ্তিতে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে হজের জন্য চূড়ান্ত নিবন্ধনের সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে হজের সব ধরনের লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।
চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে হজপালনের সুযোগ পাবেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ ১ লাখ ১৭ হাজার জন হজে যাবেন।
হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশনের বাংলাদেশের (হাব) কর্তৃত্ব দখলে হজ এজেন্সির সাধারণ সদস্যদের দু’টি গ্রুপ মাঠে নেমেছে। বিগত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী হাসিনার পতনের পর হাবে সাবেক সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম ও আরও একজন সদস্য হাব থেকে পদত্যাগ করেন। পরে বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সির মালিকবৃন্দের আহবায়ক মো. আখতার উজ্জামান ও সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলীসহ অন্যান্য হাব সদস্যরা হাবের কমিটির বিরুদ্ধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নানা অনিয়মের অভিযোগ উত্থাপন করেন।
ফলে গত ১৫ অক্টোবর চলমান অস্থিরতা ও অসন্তোষ দূরীকরণের লক্ষ্যে সরকার হাবের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি বাতিলপূর্বক হাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ দাউদুল ইসলামকে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে। সরকার আগামী ১২০ দিনের মধ্যে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে হাবের নির্বাচিত কমিটির নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হাবে প্রশাসক নিয়োগে বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সির মালিকবৃন্দ সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। অন্যদিকে ‘সাধারণ হজ এজেন্সির মালিকবৃন্দ’-এর ব্যানারে আরেক গ্রুপ মানববন্ধন করে হাবে প্রশাসক নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছে। এর বিপরীতে হাবের সাবেক কমিটির নেতৃবৃন্দ হাবে প্রশাসক নিয়োগের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় চরম বিপর্যয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট এবং দীর্ঘ শুনানিও হয়েছে। হজ এজেন্সিগুলোর সদস্যদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি হওয়ায় সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে অধিকাংশ হজ এজেন্সিগুলোর মাঝে চরম উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। এর প্রভাব দেখা দিয়েছে হজ নিবন্ধনে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন হজ এজেন্সির মালিক বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘হাবে প্রশাসক থাকলে হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা দেখা দেব। সরকারও বিব্রত অবস্থায় পড়বে এবং হজযাত্রীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
এবার হজ প্যাকেজে যা যা থাকবে ইতোমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ হজ প্যাকেজ-১ এর মূল্য ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা এবং অন্যটির মূল্য ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সাধারণ হজ প্যাকেজ-১ মসজিদে হারাম থেকে ৩ কিলোমিটারের মধ্যে এবং মদিনায় মসজিদে নববি হতে দেড় কিলোমিটারের মধ্যে আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে। মসজিদে হারামে যাতায়াতের জন্য থাকবে বাসের ব্যবস্থা। এই প্যাকেজে মিনায় তাঁবুর অবস্থান হবে সবুজ জোনে (জোন-৫, পাথর নিক্ষেপের জায়গা থেকে পৌনে ৫ কিলোমিটার দূরে) এবং মিনা-আরাফায় ‘ডি’ ক্যাটাগরির সার্ভিস পাওয়া যাবে।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় সাধারণ হজ প্যাকেজ-২ মক্কায় মসজিদে হারাম থেকে দেড় কিলোমিটারের মধ্যে এবং মদিনায় মার্কাজিয়া এলাকায় আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। এই প্যাকেজটিতে মিনায় তাঁবুর অবস্থান হবে হলুদ জোনে (জোন-২, পাথর নিক্ষেপের জায়গা থেকে সোয়া দুই কিলোমিটার দূরে) এবং মিনা-আরাফায় ‘ডি’ ক্যাটাগরির সার্ভিস পাওয়া যাবে।
উভয় প্যাকেজের হজযাত্রীরা মক্কার হোটেল কিংবা বাড়ি থেকে বাসযোগে মিনার তাঁবুতে এবং মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফা-মিনা ট্রেনে যাতায়াতের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া, মিনা এবং আরাফায় মোয়াল্লেম খাবার পরিবেশন করবে। দুটি প্যাকেজেই মক্কা ও মদিনায় বাড়ি বা হোটেলে এটাচড বাথরুমসহ প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৬ জনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে। হোটেলে থাকবে রেফ্রিজারেটরের ব্যবস্থা। এছাড়া হজযাত্রীদের মক্কা, মদিনা ও জেদ্দায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে ওষুধ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে।
প্যাকেজের বাইরে প্রত্যেক হজযাত্রীকে খাবার বাবদ ন্যূনতম ৪০ হাজার টাকার সমপরিমাণ সৌদি রিয়াল এবং কোরবানি বাবদ ৭৫০ সৌদি রিয়াল আবশ্যিকভাবে সঙ্গে নিতে হবে। এ ছাড়া, অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করে মক্কা ও মদিনার বাড়ি বা হোটেলে ২, ৩ ও ৪ সিটের রুম এবং শর্ট প্যাকেজের সুবিধা গ্রহণ করা যাবে।
হজের লেনদেন ব্যাংকে করার আহ্বান হজের যাবতীয় লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে করার আহ্বান জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিবন্ধনের জন্য সরকারি মাধ্যমের প্রাক-নিবন্ধিত হজযাত্রী ভাউচার তৈরি করে প্যাকেজ মূল্যের অর্থ সোনালী ব্যাংকে জমা দিয়ে নিবন্ধন সনদ গ্রহণ করবেন। প্যাকেজ নির্বাচন করে চূড়ান্ত নিবন্ধনের টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হবে। নিবন্ধনের পর আর প্যাকেজ পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে না। তাই বাড়ি বা হোটেলে ২, ৩ বা ৪ সিটের রুম ও শর্ট প্যাকেজে যাতায়াতের সিদ্ধান্ত আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। হজযাত্রীরা এয়ারলাইন্সের ইকোনোমি ক্লাসে গমনাগমন করবেন।
নিবন্ধনের পর হজে না গেলে ব্যয়িত অর্থ কর্তনের পর অবশিষ্ট অর্থ ফেরত প্রদান করা হবে এবং হজের খরচ কোনো কারণে বৃদ্ধি পেলে তা প্যাকেজ মূল্য হিসেবে গণ্য হবে এবং হজযাত্রীকে পরিশোধ করতে হবে। সৌদি আরবে হুইল চেয়ার ব্যবহারের প্রয়োজন হলে নিজ উদ্যোগে হুইল চেয়ার সংগ্রহ ও ব্যবহার করতে হবে।
বেসরকারি মাধ্যমে হজযাত্রী নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সরকার অনুমোদিত ‘সাধারণ হজ প্যাকেজ’ গ্রহণপূর্বক উন্নতমানের হোটেল, মিনা-আরাফায় উন্নত জোন ও সার্ভিস গ্রহণের ভিত্তিতে এজেন্সি সর্বোচ্চ ১টি বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে।
প্যাকেজ মূল্য ও প্রতিশ্রুত সেবার বিস্তারিত উল্লেখপূর্বক হজ এজেন্সি-হজযাত্রীর সঙ্গে লিখিত চুক্তি করতে হবে। হজে যাওয়ার জন্য প্রতিনিধির পরিবর্তে এজেন্সির মালিকের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা এবং হজের টাকা নগদ জমা না দিয়ে হজ কার্যক্রমে এজেন্সির নির্ধারিত ‘ব্যাংক হিসাবে’ জমা দিতে হবে।
সিলেটের উছমানপুর জামে মসজিদ। অনেকের কাছে এটি ‘গায়েবি মসজিদ’ হিসেবে পরিচিত। প্রায় পাঁচ শ বছর আগে সুলতানি আমলে নির্মিত এই মসজিদটিকে ঘিরে নানা মিথ আছে। আয়তনে খুব ছোট এই মসজিদে নামাজ পড়তে পারেন মাত্র ৫০ জন। সুলতানি আমলে ১৫৩০ থেকে ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মসজিদটি নির্মিত হয়।
প্রচলিত আছে, একসময় মসজিদটি টিলা ও জঙ্গলের আড়ালে হারিয়ে যায়। দীর্ঘদিন পর জঙ্গল ও টিলা কেটে মসজিদ আবার পুনরুদ্ধার করা হয়। সেই থেকে এটি ‘গায়েবি মসজিদ’ নামে পরিচয় পায়।
মসজিদটি দেখতে অনেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে। জানা গেছে, একসময় নবাব আলীবর্দী খান এবং পরে সুবাদার নজমুদ্দৌলা মীর নজমুদ্দীন আলী খান মসজিদের ব্যয় নির্বাহের জন্য গ্রামের বিশিষ্টজন সৈয়দ খয়রুল্লাহকে ১৮০১ সালে সনদের মাধ্যমে (ফারসি ভাষার সনদ জেলা কালেক্টরেটে সংরক্ষিত আছে) কিছু জমি দান করেন, যাতে জমির আয় দিয়ে মসজিদ পরিচালনা করা যায়। পরবর্তী সময়ে খয়রুল্লাহর বংশধররা ১৯৯৫ সালে মসজিদসহ মসজিদের ভূ-সম্পত্তি ওয়াকফ তালিকাভুক্ত করেন।
ওসমানীনগরের উছমানপুরের গায়েবি মসজিদটি চতুর্ভুজ আকৃতির। এর দৈর্ঘ্য ৩২ ফুট ও প্রস্থ ৩২ ফুট। চতুর্ভুজ আকৃতির হলেও ওপর দিকে উঠতে উঠতে ক্রমেই গোল হয়ে গম্বুজের সঙ্গে গিয়ে মিশেছে এর কাঠামো। মসজিদের দেয়াল ও ছাদে প্রাচীন আমলের নকশার কারুকাজ। দুই দিকে একটি করে জানালা এবং পূর্ব দিকে বিশাল প্রবেশ দ্বারের সঙ্গেই দুই পাশে আরো দুটি ছোট প্রবেশ দ্বার আছে। নানা গবেষণা ও স্থাপত্যবিদদের পর্যালোচনা বলছে, এটি সুলতানি আমলের মসজিদ।
শুধু সিলেটে নয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আছে কথিত অনেক গায়েবি মসজিদ। যেমন- দীর্ঘদিন পর আবিষ্কৃত হওয়া ময়মনসিংহের নান্দাইলের মুশুল্লি ইউনিয়নের নগরকুচুরী গ্রামে প্রায় এক হাজার ২০০ বছর আগের গায়েবি মসজিদে সহসাই ভেসে এলো আজানের ধ্বনি। লোকবিশ্বাস, শাহ সুলতান কমরুদ্দিন রুমির (রহ.) সময়ে মসজিদটি অলৌকিকভাবে তৈরি হয়। এটি লোকবিশ্বাসের গায়েবি মসজিদ। মসজিদের আছে পুরনো শিল্পসুষমা, ইটগুলো সাধারণের চেয়ে ভিন্ন আকৃতির এবং দেয়ালের প্রস্থ দেড় হাত।
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের রূপসা গ্রামে আছে গায়েবি মসজিদ। মসজিদসংলগ্ন মাজার থেকে অনুমিত, কোনো এক দরবেশ ইবাদতের জন্য সবার অলক্ষে মসজিদটি নির্মাণ করেন। লোকবিশ্বাস- এখানের মসজিদ, মাজার গায়েবিভাবে তৈরি হয়েছে।
বরিশালের বাকেরগঞ্জে আছে নিয়ামতি গায়েবি মসজিদ। জনশ্রুতি আছে, প্রায় ২০০ বছর আগে জিনেরা এক রাতে মসজিদটি তৈরি করে দেয়।
কিশোরগঞ্জের গুরাই ইউনিয়নের শাহি মসজিদ ৪০০ বছরের প্রাচীন এবং লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, মসজিদটি গায়েবিভাবে নির্মিত।
জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানি এলাকায় ৫০০ বছর আগে গড়ে ওঠে একটি গায়েবি মসজিদ। জানা যায়, এলাকায় আগত কোনো এক পীর-ফকির ইবাদতের জন্য নির্জনস্থান বেছে নেন, তার অলৌকিক ক্ষমতায় এক রাতে মসজিদটি নির্মিত হয়ে যায়।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ছোট কুমিরা ইউনিয়নের মসজিদ্দা গ্রামের হাম্মাদিয়া মসজিদ, চট্টগ্রামের দ্বিতীয় প্রাচীন মসজিদ। কে বা কারা কবে মসজিদটি বানিয়েছে- তা কারো জানা নেই, তাই গোলাপি রঙের এ মসজিদটিকে সাধারণ মানুষ গায়েবি মসজিদ হিসেবে জানে।
ফটিকছড়ি উপজেলার হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের ফকিরপাড়ায় আছে একটি গায়েবি মসজিদ। প্রায় সাড়ে ৩০০ বছর আগে মোগল আমলের কিছু সুফিসাধক মসজিদটি নির্মাণ করেন।
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা গ্রামে আছে প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন ভাঙা মসজিদ। সুবেদার ইসলাম খাঁ ১৬১৫ সালে এখানে একটি শাহি মসজিদ নির্মাণ করালেও তা কালেরগর্ভে হারিয়ে যায়। ১৮৮০ সালে সহসাই মসজিদটির সন্ধান মেলে। তখন থেকেই মসজিদটি পরিচিত ভাঙা মসজিদ, গায়েবি মসজিদ নামে।
কথিত আছে, জিলাদপুরে (মৌলভীবাজার, শ্রীমঙ্গল) মসজিদ বানানোর জমিতে মাপজোখ করতে করতেই সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়ে যায়। কিন্তু পরের দিন সকালে সবাই দেখে সেখানে সুন্দর একটি মসজিদ তৈরি হয়ে গেছে। হাজার বছরের প্রাচীন এ মসজিদটি এলাকাবাসীর কাছে গায়েবি মসজিদ ও অলৌকিকত্বের প্রতীক।
প্রায় ২০০ বছর আগের কথা, সীতাকুণ্ডের বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের দারোগারহাটের কৃষক আবদুল গফুর শাহের পেশা ছিল গরু-বাছুর পালন। একদিন তার একটি বাছুর পাহাড়ে হারিয়ে গেলে তা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক দিন পর পাহাড়ের উঁচুস্থান থেকে বাছুরের ডাক শুনে গফুর গিয়ে দেখেন সেখানে একটি নামাজের স্থান। জনমানবহীন এ স্থানে কে নামাজ আদায় করেন, এ রহস্য ক্রমে ঘনীভূত হয়। তখন তিনি সেখানে একটি মসজিদ তৈরি করলেন। এরপর পাহাড় থেকে নিয়মিত আজানের ধ্বনি শোনা যেত। এভাবেই মসজিদটির নাম হয় গায়েবি মসজিদ।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজারে রয়েছে সুলতানি আমলের ১৯টি মসজিদ। ৭০০ বছরের প্রাচীন এমসজিদগুলো মাটিচাপা পড়ে ছিল, এখনো সাতটি মসজিদ রয়েছে মাটির নিচে। মসজিদগুলোর অন্যতম- সাতগাছিয়া আদিনা মসজিদ, গলাকাটা মসজিদ, হসিলবাগ মসজিদ, নুনগোলা মসজিদ, জোড় বাংলা মসজিদ ইত্যাদি। এই মসজিদগুলো এলাকায় বারোবাজার মাটির নিচের গায়েবি মসজিদ নামে পরিচিত। মসজিদগুলোর প্রত্ন ও পর্যটন গুরুত্ব রয়েছে।