যে আত্মা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে ধন্য হয়

  • মাহমুদ আহমদ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

আল্লাহতায়ালাকে সন্তুষ্ট করাই একজন মুমিনের প্রধান লক্ষ্য উদ্দেশ্য হয়ে থাকে আর এ লক্ষ্যে সে তার জীবন পরিচালনা করে। তার প্রতিটি প্রদক্ষেপ থাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুমিনদেরকে শান্তিপ্রাপ্ত আত্মা বলে সম্বোধন করেছেন। যারা আল্লাহতায়ালার আদেশ-নিষেধ মেনে জীবন পরিচালনা করে তাদেরকে তিনি এই ইহজীবনেই জান্নাতের সাদ উপভোগ করান।

বিজ্ঞাপন

আল্লাহপাক যাদের প্রতি সন্তুষ্ট তাদেরকে তিনি এই বলে আহ্বান জানান, ‘হে শান্তিপ্রাপ্ত আত্মা! তুমি তোমার প্রভু-প্রতিপালকের দিকে সন্তুষ্ট হয়ে এবং তার সন্তুষ্টি প্রাপ্ত হয়ে ফিরে আস। অতএব তুমি আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর।’ (সুরা আল ফজর, আয়াত: ২৭-৩০)

আল্লাহতাআলার অমোঘ বিধানের কাছে যারা সমর্পিত আর আল্লাহপাকের নির্দেশের আলোকে কোন কাজ করতে গিয়ে যদি কেউ কোন দুঃখ কষ্ট বরণ করে তাহলে তাকে আল্লাহতায়ালা বিনা প্রতিদানে কখনই ছাড়েন না। আমরা যদি নবী-রাসুলদের (আ.) জীবনের দিকে লক্ষ্য করি তাহলে এমনটিই দেখতে পাই। তারা কতই না দু:খ-কষ্ট সহ্য করেছেন, এরফল স্বরূপ আল্লাহপাকের নৈকট্য তারা লাভ করেছেন।

বিজ্ঞাপন

আমরা যারা দূর্বল, আমরাতো সামান্য পরীক্ষা আসলেই অস্থির হয়ে যাই আর মনে হয় মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। চিৎকার চেঁচামেচিঁ করে সারা পাড়া মহল্লা মাথায় তুলার উপক্রম হয়ে যায়। এই যে মহামারি করোনায় সমগ্র বিশ্ব আক্রান্ত এসময় আমরা যদি ধৈর্য ধারণ না করে অস্থিরতা দেখাতাম তাহলে কি সব ঠিক হয়ে যেত? অবশ্যই না। বিপদে ধৈর্য ধারণ করার শিক্ষাই আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের দিয়েছেন।

এ বিষয়ে হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘কোন মুসলমান প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কোন বিপদাপদ, কোন দুঃখ বেদনা, কোন উদ্বেগ উৎকন্ঠা, এমনকি কাঁটার সামান্য এক খোঁচা লাগার কষ্টও ভোগ করে না বরং আল্লাহতায়ালা তার এই কষ্টকে তার পাপের প্রায়শ্চিত্তে পরিণত করে দেন।’ (সহি মুসলিম)

অপর এক হাদিসে হজরত সুহাইব বিন সিনান (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের রয়েছে বিস্ময়কর এক সম্পর্ক, তার প্রতিটি কাজই কল্যাণমণ্ডিত হয়ে থাকে। এই অনুগ্রহ কেবলমাত্র মুমিনের জন্যই নির্ধারিত। যদি সে কোন আরাম-আয়েশ, সুখ স্বাচ্ছ্যন্দ লাভ করে তা হলে সে আল্লাহতাআলার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আর তার কৃতজ্ঞতার এই প্রকাশ তার জন্য আরও অধিক কল্যাণ লাভের কারণ হয়। আবার যদি তার কোন দুঃখ-কষ্ট, অভাব বা ক্ষতি হয়ে যায় তবুও সে ধৈর্য ধারণ করে, তার এই কর্মপদ্ধতিও তার জন্য মঙ্গল ও কল্যাণের নিমিত্তে পরিণত হয়। কেননা, ধৈর্যধারণে তার এই দৃঢ়তায় পূণ্যই অর্জিত হয়।’ (সহি মুসলিম)

আল্লাহতায়ালা আমাদের সকলকে প্রকৃত ইসলামি শিক্ষায় জীবন পরিচালনার তৌফিক দান করুন, আমিন।

লেখক: ইসলামী গবেষক ও কলামিস্ট, ই-মেইল- [email protected]