মসজিদে আকসায় আজান দিলেন ফরাসি যুবক
ফরাসি যুবক মাহদি মুগিস উদ্দিন। তার স্বপ্ন মুসলমানদের তৃতীয় সম্মানিত স্থান বায়তুল মোকাদ্দাসে আজান দেবেন। নিজের ভেতরে পুষে রাখা স্বপ্ন পূরণে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে তিনি ফিলিস্তিনের মসজিদে আকসায় প্রথমবার ভ্রমণে এসেছেন। অবশেষে তিনি মসজিদে আকসার আঙিনায় আজান দিয়ে নিজের স্বপ্ন পূরণ করে- মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম আল কাসতালকে আজান দিয়ে স্বপ্ন পূরণের অনুভূতি প্রকাশ করে মুগিস বলেন, ‘পবিত্র মসজিদে আকসায় প্রথমবার আজান দেওয়ার অনুভূতি ছিল গভীর ভালোবাসায় পূর্ণ। এরপর আমি যখনই আজান দিয়েছি তখনই আমার মনে প্রথমবার আজান দেওয়ার অনুভূতি তৈরি হয়েছে।’
মুগিস উদ্দিন বলেন, ‘এবারই প্রথম আমি পবিত্র ভূমি ফিলিস্তিন ভ্রমণে আসি। এখানে এসে স্থানীয়দের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়েছি। এখানের পরিবেশ অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও আধ্যাত্মিকতায় পরিপূর্ণ। করোনা মহামারিতে পুরো বিশ্ব বিপর্যস্ত। এমন সময় এক সপ্তাহের জন্য আমরা এখানে ভ্রমণে এসেছি।’
পবিত্র এ মসজিদের মুয়াজ্জিন হওয়ার আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়ে মুগিস বলেন, ‘আমার আকাঙ্ক্ষা পবিত্র এ মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করা। এ দায়িত্ব আমি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করতে চাই। তাছাড়া পবিত্র মসজিদে আকসায় বার বার আজান দেওয়ার সুযোগ পাওয়ার আশা করি। পুনরায় আজানের সুযোগ পেলে আমি অত্যন্ত আনন্দচিত্তে তা পালন করব। আমি বিশ্বাস করি, মহান আল্লাহ আমার জন্য তা সহজ করবনে।’
এর আগে ২০১৪ সালে মুগিস উদ্দিন প্রথমবার ফ্রান্সের প্যারিস শহরের গ্র্যান্ড মসজিদে আজান দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘সুবিশাল মসজিদে জুমার দিন আজান দেওয়ার অনুভূতি ছিল খুবই আবেগঘন ও ভালোবাসায় ভরপুর। এবার মসজিদে আকসায় প্রথমবার আজান দিতে পেরে আগের সেই স্মৃতি ও অনুভূতি আমার মনে পড়ছে।’
ফিলিস্তিন ভ্রমণের অনুভূতি প্রকাশ করতে যেয়ে মুগিস বলেন, ‘পবিত্র এই নগরীতে প্রবেশ করে মুহূর্তেই ভ্রমণের সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। জেরুজালেম এসে প্রথমে আমি মসজিদে আকসা পরিদর্শন করি এবং তাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করি। এখানে জুমার নামাজে মানুষের অংশগ্রহণ ও ভালোবাসার দৃষ্টান্ত ভুলবার মতো নয়।’
নামাজে সবার অংশগ্রহণ নিয়ে তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনের দূর-দূরান্ত থেকে এ মসজিদে মুসল্লিরা নামাজ আদায়ের জন্য আসেন। তাছাড়া ফজরের নামাজের কোমল দৃশ্য অন্তরে গভীর রেখাপাত করে। আর নামাজে পঠিত দোয়ায়ে কুনুত সবার কানে ভিন্ন রকম অনুভূতি তৈরি করে। এমন দোয়া আমাদের দেশে সাধারণত শোনা যায় না।’