জেনে নিন Next 6 years ফিচার সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

জেনে নিন Next 6 years ফিচার সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

জেনে নিন Next 6 years ফিচার সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

‘জীবনের পরের ছয়টি বছরের কেমন যাবে’ এটা জানতে Next 6 years (নেক্সট সিক্স ইয়ারস) শিরোনামে একটা ফিচার চলছে দেদারসে।

ধার্মিক-অধার্মিক নির্বিশেষে অনেকেই সেটা গ্রহণ করছেন। অনেকে স্রেফ মজা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেটা শেয়ার দিচ্ছেন; বিশ্বাস থেকে নয়। আপনার এই মজাটা খুব সহজেই বিশ্বাসে রূপান্তরিত হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

যেমন ধরুন- next 6 years ফিচারটাতে আপনি দেখলেন ২০২২ সালে অনেক টাকা পাবেন, ২০২৪ সালে গাড়ি কিনবেন, ২০২৫ সালে বিয়ে হবে, ২০২৬ সালে সন্তানের বাবা হবেন।

সময়মতো আপনার তাকদির অনুযায়ী এ রকম কিছু একটা ঘটে গেল। কিংবা কোনো একটা মিলে গেল। যেমন আপনি ২০২৪ সালে একটা গাড়ি কিনলেন, অথবা ২০২৫ সালে আপনি বিয়ে করলেন কিংবা ২০২৬ সালে আপনি সন্তানের বাবা হলেন। অর্থাৎ কোনো একটা বিষয় সাল মোতাবেক মিলে গেল।
তখন সর্বপ্রথম আপনার মাথায় এটা আসবে, হ্যাঁ, ওই গেমটার কথা তো মিলে গেছে! ভবিষ্যত বাণী সত্য হয়েছে। আপনি না চাইলেও আপনার মন-মস্তিষ্ক তাকদিরের আগে এটাকে মনে করিয়ে দেবে।

বিজ্ঞাপন

অনেকে অবশ্য এখনও এমন প্রত্যাশা করতে পারেন, এখানে মজার ছলে হলেও দেওয়া ভবিষ্যত বাণী যেন পূরণ হয়। যেমন, কেউ দেখলো ২০২৫ সালে সে বিলিওনিয়ার হবে। তখন সে মনে মনে আশা করে, আহ্! যদি এটা সত্যি হতো!

একজনকে দেখলাম, সে ফেসবুকে লিখেছে, এরকম কিছু একটা ঘটলে সে মসজিদে অনেক অনেক টাকা দান করবে এবং প্রচুর সংখ্যক ফকিরদের খাওয়াবে।

এমন মনোভাবের প্রেক্ষিতে দুইটা পয়েন্ট উল্লেখ করছি।

১. কেউ শুধু ট্যাপ করেন, অর্থাৎ মজার জন্য জিজ্ঞেস করেন; কিন্তু বিশ্বাস করেন না। আপনার ক্ষেত্রে এই হাদিসটা, ‘যে ব্যক্তি গণকের কাছে গিয়ে কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করল, চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার নামাজ কবুল হবে না।’-সহিহ মুসলিম : ৫৭১৪

গণকের কাছে এসে তাকে কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করে কিন্তু তার কথায় বিশ্বাস করে না। এটা হারাম। এ ধরণের লোক সম্পর্কে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওপরের কথা বলেছেন।

২. আরেক শ্রেণির লোকে আছে, তারা এসব জিজ্ঞেস করে, জানতে চায় এবং বিশ্বাস করে। স্পষ্টতই এটা কুফুরি। কারণ সে ইলমে গায়েবের (ভবিষ্যতের জ্ঞান) দাবিতে গণককে বিশ্বাস করেছে। অর্থাৎ মানুষ ইলমে গায়েব জানে বলে বিশ্বাস করছে। অথচ আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘বলুন, আকাশ এবং জমিনে আল্লাহ ছাড়া গায়েবের সংবাদ অন্য কেউ জানে না।’ -সুরা আন নামল : ৬৫

এক্ষেত্রে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস হলো, ‘যে ব্যক্তি কোনো গণকের নিকট গমন করে, তার কথায় বিশ্বাস করল- সে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর অবতীর্ণ বিষয় (কোরআন-হাদিস)-এর সঙ্গে কুফুরি করল।’ -তিরমিজি : ১৩৫

এ ধরণের মানুষ তওবা না করে মারা গেলে কুফুরি অবস্থায় তার মৃত্যু হবে। দেখুন, আগ্নেয়গিরির কিনারে কেউ গিয়ে উঁকি দিয়ে দেখে না, জীবনের শঙ্কার ভয়ে। যে বিষয়গুলো ক্ষতিকর, জীবনের জন্য হুমকি কিংবা বিশাল ক্ষতির সম্ভাবনা রাখে- সেগুলো থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখাই মানসিক সুস্থতার পরিচায়ক।

আধুনিক এ যুগে এসে শিরক করার জন্য কষ্ট করে গণকের কাছে যেতে হয় না। একদম প্রস্তুত থাকে আঙ্গুলের ডগায়। জাস্ট Tap to Play। শয়তান তার দলবল নিয়ে কৌশলে এভাবেই সরলমনা মানুষের ঈমানে আক্রমণ করে।

সুতরাং আপনার বন্ধু-বান্ধব কিংবা পরিচিত কেউ অজ্ঞতাবশত এ রকম কিছু করে থাকলে তাকে তওবার জন্য বলুন। একজন মুসলমানকে হলেও জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করুন। আল্লাহ আমাদের কল্যাণ করুন।