অসিয়ত দ্বারা কারও ক্ষতি করা পাপ
ইসলামি শরিয়তের অন্যতম মূলনীতি হচ্ছে, ‘নিজে ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া, অন্যের ক্ষতি না করা।’
এ প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু সিরমাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি (কোনো মুসলিমকে) কষ্ট দেবে, আল্লাহতায়ালা তাকে কষ্ট দেবেন এবং যে ব্যক্তি (কোনো মুসলিমকে) বিপদে ফেলবে, আল্লাহতায়ালা তাকে বিপদে ফেলবেন। -ইবনে মাজাহ : ২৩৪২
তার পরও মানুষ অন্যের ক্ষতি করে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় কিংবা জেনে-বুঝে। তন্মধ্যে জেনে-বুঝে পরিকল্পনা করে, মনে জেদ কিংবা ক্ষোভ পুষে ক্ষতি করার অন্যতম একটি উপমা হলো, শরিয়ত স্বীকৃত ওয়ারিশদের (উত্তরাধিকার) সবাইকে অথবা বিশেষ কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করা। কেউ এমন করলে সে নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রদত্ত কঠিন সাবধান বাণীর আওতায় পড়বে।
অসিয়তের মাধ্যমে নানাভাবে ক্ষতি হতে পারে। যেমন, কোনো ওয়ারিশকে তার ন্যায্য অংশ থেকে বঞ্চিত করা অথবা একজন ওয়ারিশকে শরিয়ত যেটুকু দিয়েছে তার বিপরীতে তার জন্য অসিয়ত করা কিংবা এক তৃতীয়াংশের বেশি অসিয়ত করা ইত্যাদি। যদিও ইসলামের বিধানে সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ পরিমাণ অসিয়ত করা জায়েজ। এর চেয়ে বেশি অসিয়ত করা জায়েজ নয়। তবে যদি অসিয়তকারীর মৃত্যুর পর ওয়ারিশরা এক-তৃতীয়াংশের বেশি সম্পদেও অসিয়ত অনুমোদন করে, তাহলে সে অসিয়ত বৈধ হবে। তবে শর্ত হচ্ছে- ওয়ারিশরা প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে।
যে সব দেশে ইসলামি বিচার ব্যবস্থা চালু নেই, সেখানে একজন পাওনাদার অনেকক্ষেত্রেই মানব রচিত বিধানের কারণে তার শরিয়ত প্রদত্ত অধিকার লাভে সমর্থ হয় না। মানব রচিত বিচার ব্যবস্থা তাকে উকিলের মাধমে লিখিত অন্যায় অসিয়ত কার্যকর করতে আদেশ দেয় এবং সে তা কার্যকর করতে বাধ্য হয়। ইসলামের বিধানমতে, অসিয়ত অসিয়তকারীর মৃত্যুর পর কার্যকর হয়।