অন্যের দোষ গোপন রাখার ফজিলত
দোষ-ত্রুটি নেই- এমন মানুষের খোঁজ পাওয়া কঠিন। মানুষ তার জীবনে নানারকম দোষের কাজ করে। পরে ভুল বুঝতে পেরে আবার মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়। সঠিক পথে ফিরে আসে। কিন্তু অন্যের দোষ নিয়ে চর্চা। অন্যের গোপন বিষয় অনুসন্ধান। অন্যের দোষ ছড়ানো। এ সবই পাপ। ইসলামের দৃষ্টিতে এগুলো নাজায়েজ। আল্লাহর কাছে চরম অপছন্দনীয় কাজ।
চারদিকে তাকালে, চোখ-কান খোলা রাখলে খারাপ লাগে। কারণ অধিকাংশ মানুষ অন্যের দোষের গল্পে ব্যস্ত। কোথাও আড্ডা হচ্ছে। কান পাতলে শুধুই দোষের কথা শোনা যায়। যারা অন্যের দোষ-ত্রুটি নিয়ে আলোচনা করে। একটু খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে, ওই দোষ তাদের মধ্যে আরও বেশি পরিমাণে বিদ্যমান।
সৃষ্টিকর্তা দয়াময় আল্লাহতায়া কি বলেছেন- দেখুন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা অন্যের গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না।’ -সুরা হুজুরাত : ১২
‘যারা বিনা অপরাধে বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীদের কষ্ট দেয়, তারা অবশ্যই মিথ্যা অপবাদ এবং স্পষ্ট অপরাধের বোঝা বহন করে।’ -সুরা আহযাব : ৫৮
মানুষ অন্যের দোষ খুঁজতে, দোষ নিয়ে আলোচনা করতে পছন্দ করে। এটা কুপ্র্রবৃত্তি, মন্দ স্বভাব- যা শয়তান উসকে দেয়। এমন অবস্থা সৃষ্টি হলে, মনকে বুঝাতে হবে- আমার মধ্যেও তো নানা দোষ রয়েছে। আমি কেন অন্যের বিষয় নিয়ে কথা বলতে যাবো? শুধু শুধু পাপ অর্জন করবো কেন? হোক না আলোচনা। চুপ থাকুন। কারও বিষয় জানতে চাইলে বলে দিন, আমি ওসব জানি না। তাই বলতে পারছি না। জানলেও সেটা গোপন রাখলে কেমন উপকার হবে এবার জেনে নিন।
‘দুনিয়াতে যদি কোনো বান্দা অপর কোনো বান্দার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখে তবে কেয়ামতের দিন মহান আল্লাহ ওই বান্দার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন।’ -সহিহ মুসলিম
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘তোমরা মুসলমানদের দোষ-ত্রুটি, ভুলভ্রান্তি খুঁজে বের করো না। যে ব্যক্তি অন্যের দোষ খুঁজে বেড়ায় ও প্রকাশ করে দেয়, স্বয়ং আল্লাহ তার দোষ প্রকাশ করে দেন। আর আল্লাহ যার দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করেন তাকে নিজের বাড়িতেই লাঞ্ছিত করেন।’ -সুনানে আবু দাউদ : ৪৮৮০
অন্যের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখা একটি মহৎ গুণ। এই গুণ অর্জনে সবার সচেষ্ট হওয়া দরকার। পাশাপাশি দোষ-ত্রুটি খোঁজা এবং গালগল্পের যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। তা রোধ করা অতি প্র্রয়োজন।