ইন্দোনেশিয়ান নারীর ২২ বার হজ-উমরার অবিস্মরণীয় স্মৃতি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ইন্দোনেশিয়ান হজযাত্রী মরিয়ম মোহাম্মদ মুনির, ছবি: সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়ান হজযাত্রী মরিয়ম মোহাম্মদ মুনির, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৬৪ সালে ছয় বছর বয়সী ইন্দোনেশিয়ান মরিয়ম মোহাম্মদ মুনির বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রথমবারের মতো হজপালন করতে সৌদি আরব যান। তারপর থেকে তিনি উমরা এবং হজপালনের জন্য আরও ২২ বার মক্কা-মদিনা ভ্রমণ করেছেন।

সুরাবায়া বিমানবন্দরের মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভ হলে মরিয়ম মুনির তার ২২ বার সৌদি আরব ভ্রমণের স্মৃতি ও অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে আলাপ করছিলেন সৌদি প্রেস এজেন্সির এক প্রতিনিধির সঙ্গে।

আলাপকালে তিনি বলেন, আজ থেকে ৬০ বছর আগে, তার পরিবার হজ করার জন্য প্রথম ভ্রমণ করেন, ভ্রমণটি ছিল বেশ ব্যয়বহুল। একটি পুরোনো জাহাজে করে সৌদি আরব আসতে পাঁচ থেকে আট মাস সময় লেগেছিল।

জাহাজগুলো প্রথমে জাকার্তা বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে। পরে ভারত, আরব সাগর এবং লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে জেদ্দা বন্দরে পৌঁছায়। তিনি বলেন, যাত্রাটি বিপদ, চ্যালেঞ্জ এবং ভয়ে পরিপূর্ণ ছিল। তবে, ফরজ ইবাদতপালনের বাধ্যবাধকতার জন্য তার পরিবারের ইচ্ছা ও সাধনা পথের কষ্ট সেভাবে দাগ কাটেনি। বরং এ সময়টা আমাদের আরও শক্তি জুগিয়েছে। কাবা দেখার ইচ্ছাকে প্রবল করেছে। মসজিদে নববিতে যাওয়ার এবং রাসুলের রওজা জিয়ারতের ভালোবাসা সব কষ্ট ভুলিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, মক্কা নগরিতে পৌঁছার পর আমাদের শরীর পুরোপুরি সতেজ হয়ে উঠে। আর মসজিদে নববিতে যেয়ে মনে হতো, আত্মা যেন সতেজ হয়ে উঠছে।

মুনির অতীতে হজকে ঘিরে ইন্দোনেশিয়ানদের বিভিন্ন ঐতিহ্য সম্পর্কেও কথা বলেন।

ইন্দোনেশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ হজপালনে সৌদি আরব যান

মরিয়ম মোহাম্মদ মুনির বলেন, হজযাত্রীরা সবাই জাকার্তায় জড়ো হবেন এবং যাত্রার আগে তাদের পরিবারের সদস্যদের বিদায় জানাবেন- এটাই আমাদের রীতি। হজ শেষ করে দেশে ফেরার পর হজযাত্রীদের পরিবার তাদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তন এবং তাদের ধর্মীয় যাত্রার পরিপূর্ণতা উদযাপন করে বিভিন্ন উপহার দিয়ে উষ্ণভাবে স্বাগত জানায়।

মরিয়মের মতে, উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মক্কায় ভ্রমণ এখন অনেক সহজ হয়েছে, যার ফলে পবিত্র নগরীতে উমার ও হজপালনকারীদের সংখ্যা বাড়ছে। অতীতের হজযাত্রাকে বর্তমান যাত্রার সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় ভিন্নতার জগৎ।

তিনি বলেন, এখন মনে হচ্ছে তারা এখানে (ইন্দোনেশিয়া) বসে মক্কায় পৌঁছেছে। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যা সৌদি সরকারের একটি অনুকরণীয় অর্জন। এ সময় মুনির সৌদি সরকারের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

জনসংখ্যার নিরিখে ইন্দোনেশিয়া হলো, সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি হজযাত্রী প্রতিবছর হজপালনে সৌদি আরব যান। চলতি বছর ইন্দোনেশিয়া থেকে ২ লাখ ৪১ হাজার হজযাত্রী সৌদি আরব যাবেন। ১২ মে থেকে দেশটির হজফ্লাইট শুরু হয়েছে।

   

উমরা পালনে মানতে হবে যেসব শর্ত



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পবিত্র কাবা, ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র কাবা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র উমরা পালনে আগ্রহীদের জন্য ইলেকট্রনিক ভিসা চালু করেছে সৌদি আরব। আবেদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ভিসা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে সৌদি আরবের হজ ও উমরা বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তবে উমরা পালনকারীদের বেশ কিছু শর্ত মানতে হবে। না হলেও এজেন্সিসহ যাত্রীকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। সৌদি আরবের উমরা এজেন্সির সূত্রে আরব নিউজের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নুসুক অ্যাপের মাধ্যমে উমরা পালনে আগ্রহীরা ই-ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমে আবেদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পাওয়া যাবে ভিসা। ভিসার মেয়াদ ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৯০ দিন করা হয়েছে। এ ছাড়া এ ভিসার জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রয়োজন নেই।

এমনকি নারীদের জন্য পুরুষ অভিভাবকের (মাহরাম) বাধ্যবাধকতাও আর থাকছে না।

নতুন উমরা ভিসা নীতি (১৪৪৬ হিজরি) অনুযায়ী ২৭ জুন (২০২৪) থেকে ভিসা দেওয়া শুরু হবে। বিদেশি উমরা যাত্রীরা ৪ জুলাইয়ের পর থেকে সৌদি আরব প্রবেশ করতে পারবেন। তবে ফ্লাইটের ২৪ ঘন্টা আগে গমনের সব তথ্য সৌদি আরবের উমরা কোম্পানিকে অবশ্যই প্রদান করতে হবে।

যদি কোনো গ্রুপ লিডার বা এজেন্সি গমনের তথ্য না জানিয়ে উমরাযাত্রীদের যাত্রা শুরু করে সৌদি নাক্বাবা (ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি) উমরা যাত্রীদের রিসিভ করবে এবং সৌদি নাক্বাবার হার অনুযায়ী যে চার্জ করা হবে তা গ্রুপ লিডার বা এজেন্সিকেই পরিশোধ করতে হবে।

৩০ দিনের বেশি থাকা নিষিদ্ধ, যদি কেউ এর চেয়ে বেশি সময় থাকেন, তাহলে উমরা কোম্পানিকে ২০০ রিয়াল জরিমানা দিতে হবে।

শ্রমিক এবং ইতিপূর্বে সৌদি আরব থেকে বহিষ্কৃতদের উমরা ভিসা দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

উমরা ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে যদি কেউ দেশে ফিরত না আসে তাহলে ৩০ হাজার রিয়াল সৌদি কোম্পানিকে জরিমানা বাবদ পরিশোধ করতে হবে।
উমরা যাত্রীদের অনুমোদিত হোটেলে থাকতে হবে। অননুমোদিত হোটেলে অবস্থান করলে এবং হজ-উমরা মন্ত্রণালয় কর্তৃক আরোপিত যেকোনো জরিমানা হলে তা উমরা যাত্রী, গ্রুপ লিডার ও এজেন্টকে পরিশোধ করতে হবে।

এদিকে সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, মন্ত্রণালয় উমরা পালনকারীদের সেবার মান বাড়াতে এবং তাদের সৌদিতে প্রবেশ আরও সহজ করতে ই-ভিসা চালুসহ অন্যান্য সেবা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মন্ত্রণালয় বলছে, উমরা প্রক্রিয়া সহজ, উন্নত মানের সেবা এবং পুণ্যার্থীদের সৌদির সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অভিজ্ঞতা সহজলভ্য করার লক্ষ্যে সৌদি ভিশন-২০৩০-এর অংশ হিসেবে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হজ পালনে যোগ্য ব্যক্তিরা সহজেই নুসুক অ্যাপের মাধ্যমে তাদের উমরা পালনের পরিকল্পনা সাজাতে পারবেন।

মক্কা ও মদিনায় আসা মুসলমানদের স্বাগত জানানোর প্রক্রিয়া সহজ করতে নুসুক অ্যাপ ব্যবহার করা হয়। এখন থেকে এ অ্যাপের মাধ্যমে ই-ভিসার আবেদন করতে পারবেন উমরাকারীরা। এ ছাড়া অ্যাপটিতে পরিবহন, আবাসনসহ বিভিন্ন সেবাও মিলবে প্ল্যাটফরমটিতে।

;

হাজিদের কেনাকাটায় ‘সাবধানী’ হতে বলল সৌদি আরব



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হাজিরা কেনাকাটা করছেন মক্কায়, ছবি: সংগৃহীত

হাজিরা কেনাকাটা করছেন মক্কায়, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শেষ হয়েছে চলতি বছরের পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা। এবার দেশ-বিদেশের ১৮ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ হজ পালন করেছেন। এই বিপুল সংখ্যক হজযাত্রীর মধ্যে ১৬ লাখই এসেছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে।

বিদেশ থেকে আসা হাজিরা নিজ নিজ দেশে ফিরতে শুরু করেছেন। এমতাবস্থায় বিদায়ী হজযাত্রীদের ‘যৌক্তিক পরিমাণে’ কেনাকাটার আহ্বান জানিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (২৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পবিত্র হজের আনুষ্ঠনিকতা শেষ করে আরও বেশি সংখ্যক বিদেশি মুসল্লি সৌদি আরব ছেড়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। এমন অবস্থায় নিজেদের ফিরে যাওয়ার ফ্লাইটে অনুমোদিত লাগেজের ওজন মেনে চলতে ‘যুক্তিসঙ্গতভাবে’ কেনাকাটা করতে বিদায়ী হজযাত্রীদের পরামর্শ দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।

সৌদি আরবের হজ মন্ত্রণালয় কেনাকাটার বিষয়ে নির্দেশনাও ঘোষণা করেছে এবং হজযাত্রীদের সেগুলো অনুসরণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন

দেড় মাসে চৌদ্দ লাখ জিয়ারতকারী রাসুলের রওজায়

বিদায়ী হজযাত্রীদের উদ্দেশে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক ইনফোগ্রাফে সৌদির হজ মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার পরে আপনারা আধ্যাত্মিক এই যাত্রার স্মৃতি হিসেবে স্যুভেনির কেনাকাটা করতে পারেন।’

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সৌদি আরবের পবিত্র শহর মক্কা ও মদিনায় এমন সব দোকান রয়েছে যেখানে হজযাত্রীরা বিভিন্ন জিনিস কেনাকাটা করতে পারেন।

এতে আরও বলা হয়েছে, ‘কেনাকাটার পর আপনারা ক্রয়ের রসিদ হাতে পাওয়া নিশ্চিত করুন। তবে মনে রাখবেন, ক্রয়কৃত জিনিস ও উপহারগুলো ভ্রমণের জন্য অনুমোদিত লাগেজের ওজনের বেশি হতে দেবেন না।’

এদিকে হজ ফ্লাইটের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত জেদ্দার কিং আবদুল আজিজ বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষ বিদায়ী হজযাত্রীদের বিমানবন্দরে নির্ধারিত বিক্রয় কেন্দ্রে জমজমের পানির প্যাকেট অর্ডার করার জন্য পরামর্শ দিয়েছে।

মূলত সৌদি আরব থেকে হজযাত্রা শেষে ফেরার পথে বিদেশি মুসল্লিরা ঐতিহ্যগতভাবে জমজমের পানি সঙ্গে করে নিজ নিজ বাড়িতে নিয়ে যান।

জমজমের পানি তথা বরকতময় এই পানির প্যাকেট কিনে বাড়ি ফেরার পর নিজেদের আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুদের উপহার হিসেবে দিয়ে থাকেন তারা।

;

দেড় মাসে চৌদ্দ লাখ জিয়ারতকারী রাসুলের রওজায়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
রিয়াজুল জান্নাতে নামাজ আদায় করছেন জিয়ারতকারীরা, ছবি: সংগৃহীত

রিয়াজুল জান্নাতে নামাজ আদায় করছেন জিয়ারতকারীরা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি হজ মৌসুমে গত ছয় সপ্তাহে বিশ্বের ১৪ লাখেরও বেশি মুসলিম হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা মোবারকে সালাম ও রিয়াজুল জান্নাতে নামাজ আদায় করেছেন।

রোববার (২৩ জুন) সরকারি পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা এসপিএর প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১ জিলকদ থেকে ১৪ জিলহজ অর্থাৎ দেড় মাসে ৭ লাখ ৬২ হাজার ১০১ জন পুরুষ এবং ৬ লাখ ৪১ হাজার ৫৩৯ জন নারী (মোট ১৪ লাখ ৩ হাজার ৬৪০ জন) রাসুলের রওজায় সালাম ও রিয়াজুল জান্নাতে নামাজ আদায় করেছেন।

রিয়াজুল জান্নাতের আয়তন ৩৩০ বর্গমিটার, এখানে প্রতি ঘন্টায় ৮০০ মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন। একজন দর্শনার্থী মাত্র ১০ মিনিট থাকার সুযোগ পান।

মসজিদে নববির মিম্বর থেকে শুরু করে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজার (যেখানে নবী কারিম সা.-এর ঘর ছিল) মধ্যবর্তী স্থানটুকুকে রিয়াজুল জান্নাত বা বেহেশতের বাগিচা বলা হয়। হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার ঘর ও আমার মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থানে বেহেশতের একটি বাগিচা বিদ্যমান।

হজ ও উমরাকারীরা নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা জিয়ারত এবং রিয়াজুল জান্নাতে নামাজ আদায়ের জন্য মদিনা সফর করেন। তবে রিয়াজুল জান্নাতে নামাজ আদায়ে ইচ্ছুকদের নির্দিষ্ট অ্যাপে আবেদন করে আগে থেকেই অনুমতি নিতে হয়।

গত বছরের ডিসেম্বরে রওজা শরিফ পরিদর্শনের নতুন নিয়ম জারি করে সৌদি আরব। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে বিশ্বের মুসলিমরা বছরে কেবল একবারের জন্য রিয়াজুল জান্নাত পরিদর্শন করতে পারবেন।

আরও পড়ুন

রওজা, কবর ও মাজারের পার্থক্য

মদিনার সেরা ৪ দর্শনীয় স্থান

নবী কারিম (সা.)-এর রওজা জিয়ারতের গুরুত্ব

সৌদি আরবের হজ ও উমরা বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসলামের দ্বিতীয় পবিত্রতম স্থানটি ৩৬৫ দিনই পরিদর্শন করতে পারবেন মুসলিমরা। এমনকি রওজা শরিফে সালামও পেশ করতে পারবেন। তবে একজন মুসলিম বছরে মাত্র একবার রিয়াজুল জান্নাত পরিদর্শনের অনুমতি পাবেন।

মন্ত্রণালয় বলেছে, একজন মুসলিম তার সর্বশেষ পরিদর্শনের অনুমতির ৩৬৫ দিন পর রিয়াজুল জান্নাত পরিদর্শনের জন্য নুসুক বা তাওয়াক্কালনা অ্যাপের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

চলতি বছর বিশ্বের প্রায় ১৮ লাখ মুসলিম হজ পালন করেছেন। এছাড়া বছরজুড়ে ওমরাযাত্রীরা মসজিদে নববিতে গমন করেন।

সৌদির সরকারি এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (রমজান মাসসহ) রওজা মোবারক জিয়ারত করেছেন ৭ কোটি ৪৫ লাখের বেশি মুসলিম। গত বছর ২৮ কোটিরও বেশি মুসলিম রওজা মোবারক জিয়ারত করেন।

;

এবার হজে তীব্র গরমে ১৩০১ জনের মৃত্যু: সৌদি আরব



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গরম থেকে বাঁচতে মাথায় পানি দিচ্ছেন এক হাজি, ছবি: সংগৃহীত

গরম থেকে বাঁচতে মাথায় পানি দিচ্ছেন এক হাজি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র হজ পালন করতে প্রতি বছর লাখ লাখ মুসলমান সৌদি আরবে যান। তবে বহু মুসল্লির মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে চলতি বছর বাড়তি শোকাবহ হয়ে উঠেছে। সৌদি আরব বলছে, এবার হজ চলাকালীন ১ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন।

রোববার (২৩ জুন) রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিভিশনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহাদ বিন আবদুর রাহমান আল-জালাজেল বলেন, মৃতদের ৮৩ শতাংশ ছিলেন অননুমোদিত, যারা তীব্র গরমের মধ্যে অনেক দূর পথ হেঁটেছেন।

তবে সৌদি আরব রোববারের আগ পর্যন্ত মৃত্যুর বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেনি বা মৃত্যুর সংখ্যা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও তথ্য প্রদান করেনি।

ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহাদ আল-জালাজেল বলেন, হজের সময় হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য অবকাঠামোগুলোতে প্রায় ৫ লাখ হজযাত্রীর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি হজযাত্রীর হজ করার অনুমোদন ছিল না।

ফাহাদ আল-জালাজেল বলেন, অনিবন্ধিত হজযাত্রীদের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত তাঁবু এবং অফিসিয়াল হজ পরিবহনের মতো সুবিধা ব্যবহারের সুযোগ নেই। আল্লাহ ক্ষমা করুন এবং মৃতদের প্রতি রহম করুন। তাদের পরিবারের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা জানাই।

এর আগে, কায়রোর দুই কর্মকর্তা জানান, মৃতদের অর্ধেকেরও বেশি মিসর থেকে এসেছিলেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অননুমোদিত হজযাত্রীদের সৌদি আরব ভ্রমণ করার সুযোগ করে দেওয়ায় ইতোমধ্যে মিসর ১৬ ট্র্যাভেল এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল করেছে।

গত শুক্রবার জর্ডান বলেছে, তারা বেশ কয়েকজন ট্রাভেল এজেন্টকে আটক করেছে যারা পারমিটবিহীন হজযাত্রীদের মক্কায় ভ্রমণে সহায়তা করেছিল। এদিকে তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ দেশটির ধর্মমন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছেন।

হজের সময় মৃত্যুর ঘটনা বিরল নয়। পাঁচ দিনের হজযাত্রায় অংশ নিতে কখনও কখনও বিশ লাখেরও বেশি মানুষ সৌদি আরবে ভ্রমণ করেছেন। অতীতে অসংখ্য মানুষ হজ করতে এসে পদদলিত হয়ে ও সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

মক্কা ও শহরটির আশেপাশের পবিত্র অবস্থানগুলোতে এ বছরের হজের সময় দৈনিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৬ থেকে ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল বলে জানিয়েছে সৌদি আরবের জলবায়ু বিভাগ।

তবে সৌদি আরবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বিত প্রচেষ্টায় হজ মৌসুম সফলভাবে শেষ হয়েছে। কোনো মহামারি বা ব্যাপক রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়নি। আর মৃতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বয়স্ক এবং দীর্ঘস্থায়ীভাবে অসুস্থ ব্যক্তি ছিলেন।

আরও পড়ুন

২০২৫ সালের হজের কোটা ঘোষণা

তিনি যোগ করেন, ‘আমাদের আন্তরিক সমবেদনা তাদের পরিবারের প্রতি। অননুমোদিত হওয়ায় প্রাথমিকভাবে মৃতদের শনাক্ত করা যায়নি। পরে প্রযুক্তির সহায়তায় লাশ শনাক্ত শেষে মৃতের পরিবারকে অবহিত করা হয়েছে। তাদের দাফন হয়েছে যথাযথ প্রক্রিয়ায় এমনকি মৃত্যুর শংসাপত্রও প্রদান করা হয়েছে।

এ সময় তিনি লাশ শনাক্ত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করেন। তিনি যোগ করেন, এখনও কিছু অসুস্থ ব্যক্তি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সৌদি মন্ত্রী আরও বলেন, হজযাত্রীদের জন্য আমাদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার চালু আছে। আমাদের প্রদত্ত স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ওপেন হার্ট সার্জারি, কার্ডিয়াক ক্যাথেটারাইজেশন, ডায়ালাইসিস এবং জরুরি চিকিৎসা। হজের সময় ৩০ হাজার রোগী অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা পেয়েছে এবং ৯৫ জনকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের সেবা দেওয়া হয়েছে।

;