ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন
আলেম-উলামা ও গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল আচরণের অনুরোধ
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে রাজনৈতিক কারণে। তবে দেশের মানুষ যেভাবে মন্দির পাহারা দিয়েছে, তা সম্প্রীতির ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে আছে। সম্প্রীতির এ বন্ধন বজায় রাখতে আলেম-উলামা, মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জিন ও গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল আচরণের বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন অন্তবর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন।
তিনি বলেন, এ দেশটা আমার-আপনার সবার। সবাই মিলে বাংলাদেশ ও এই সমাজ। এখানে বিভেদ, হানাহানি ও দুর্বৃত্তপনার কোনো স্থান নেই।
শনিবার (১৭ আগস্ট) রাতে বার্তা২৪.কম-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর মুফতি এনায়েতুল্লাহর সঙ্গে একান্ত আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনার প্রকৃত চিত্র পেতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা প্রতিবেদন দিলে বোঝা যাবে মাঠের বাস্তবচিত্র। তবে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে কিছু মিডিয়ায় অতিরঞ্জিত সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, যা কাম্য নয়।
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, যে কারণে আমার দেখতে পাচ্ছি মাদ্রাসার ছাত্র, আলেম-উলামা থেকে শুরু করে শান্তিকামী মানুষ রাত জেগে মন্দির পাহারা দিচ্ছেন। বিদেশি গণমাধ্যমে এসব নিয়ে নিউজও প্রচার হয়েছে। মিলেমিশে একত্রে থাকা, একসঙ্গে চলা- এটাই আমাদের বাংলাদেশের আসল চিত্র। এর অন্যথা ভাবার কোনো সুযোগ নেই। কোনো দুর্বৃত্তের জায়গা নেই সমাজে বলে মন্তব্য করেছেন ধর্ম উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন।
দায়িত্ব গ্রহণের পর এক সপ্তাহের বেশি সময় কেটে গেছে। এই সময়ে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে কী ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে? কোন কাজকে প্রাধান্য দিচ্ছেন- এমন প্রশ্নে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আমরা শৃঙ্খলা রক্ষা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজকে অগ্রাধিকার দিয়েছি।
হজের খরচ কমানো প্রসঙ্গে প্রচারিত হওয়া তার একটি বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপদেষ্টা বলেন, আমি হজ-উমরার খরচ কমাবো কিংবা এত টাকায় হজ-উমরা করা যাবে সুনির্দিষ্টভাবে এ কথা বলিনি। আমি বলেছি, হজের খরচ কীভাবে কমানো যায়, সেটা নিয়ে কাজ করব। হজের দুষ্টু সিন্ডিকেট ভাঙব। হজের মতো ইবাদত যেন ধর্মপ্রাণ মানুষ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পালন করতে পারে সেই চেষ্টাটা করব।
অভিযোগ রয়েছে, ইসলামিক ফাউন্ডেশন দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি তার স্বকীয়তা হারিয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের হারানো গৌরব ফেরাতে আপনার বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে কি-না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন অনেক আগেই গতি হারিয়েছে। অথচ প্রতিষ্ঠানটির অনেক কিছু করার ছিল। অনেক অযোগ্য ও দলবাজ এখানে জেঁকে বসে আসে। এটা চলবে না। আমি এই প্রতিষ্ঠানকে একটি প্রাণবন্ত ও গতিশীল প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাই।
অপর এক প্রশ্নের জবাব ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, চাঁদ দেখা কমিটির আধুনিকায়ন করার ইচ্ছা রয়েছে। মাঝরাতে ঈদ ও রোজার ঘোষণা দেওয়া আমাদের জন্য বিব্রতকর। আশা করি, এ অবস্থার অবসান ঘটবে।