দোয়া কবুলের বিশেষ কয়েকটি মুহূর্ত

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আল্লাহর সাহায্য লাভের বড় মাধ্যম দোয়া, ছবি: সংগৃহীত

আল্লাহর সাহায্য লাভের বড় মাধ্যম দোয়া, ছবি: সংগৃহীত

প্রতি মুহূর্তে, প্রতিটি কর্মে বান্দা আল্লাহতায়ালার সাহায্যের মুখাপেক্ষী। তার সাহায্য ছাড়া বান্দার কোনো কাজ সফলতার মুখ দেখে না। আর আল্লাহতায়ালার সাহায্য লাভের বড় একটি মাধ্যম হলো- দোয়া। দোয়া করলে আল্লাহতায়ালা কবুল করেন। বান্দাকে সাহায্য করেন, প্রার্থিত বস্তু দান করেন। বান্দার আশা পূরণ করেন।

যদি রিজিক হালাল হয়, একাগ্রতার সঙ্গে দোয়া করা হয় এবং দোয়া করার পর ফলাফলের জন্য তাড়াহুড়া না করা হয়, তাহলে আল্লাহতায়ালার প্রতিশ্রুতি রয়েছে, তিনি অবশ্যই দোয়া কবুল করবেন।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের প্রতিপালক বলেছেন, আমাকে ডাকো; আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। নিশ্চয়ই অহংকারবশে যারা আমার ইবাদত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তারা লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। -সূরা মুমিন : ৬০

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘(হে নবী!) আমার বান্দাগণ যখন আপনার কাছে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, তখন (আপনি তাদেরকে বলুন,) আমি তো নিকটেই। কেউ যখন আমাকে ডাকে, আমি তার ডাকে সাড়া দিই। সুতরাং তারাও আমার (আনুগত্যের) ডাকে সারা দিক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে এসে যায়।’ -সূরা বাকারা : ১৮৬

বিজ্ঞাপন

সুতরাং দোয়া কবুল করার ব্যাপারে দয়াময় আল্লাহর ওয়াদা রয়েছে। এতে সময়, স্থান ও অবস্থার কোনো ভেদাভেদ নেই। বান্দা যে অবস্থায় এবং যে সময়ই বিনয়ের সঙ্গে আল্লাহর দিকে রুজু হয় এবং কায়মনোবাক্যে তার নিকট নিজের আরজি পেশ করে, আল্লাহতায়ালা তা শোনেন এবং কবুল করেন।

দোয়া কবুলের এই প্রতিশ্রুতি দয়াময় আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ। এই অনুগ্রহকে তিনি আরও বৃদ্ধি করেছেন দিন-রাতের বিশেষ কিছু অংশকে সম্মানিত করেছেন এবং ওই সময়গুলোতে দোয়া কবুলের অতিরিক্ত আশ্বাস দিয়েছেন। ফলে এসব মুহূর্তকে কাজে লাগিয়ে আমরা আরও বেশি উপকৃত হতে পারি এবং আল্লাহতায়ালার কাছ থেকে নিজের প্রয়োজন চেয়ে নিতে পারি।

দিন ও রাতের বিভিন্ন অংশে দোয়া কবুলের কথা বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এমনই কয়েকটি মুহূর্ত হলো-

আজানের সময়
হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.) বলেন, নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘দুই সময়ের দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না অথবা (তিনি বলেছেন,) খুব কমই ফেরত দেওয়া হয়- ১. আজানের সময়, ২. জেহাদের সময়, যখন তুমুল লড়াই চলতে থাকে।’ -সুনানে আবু দাউদ : ২৫৪০

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যখন নামাজের জন্য আজান দেওয়া হয় তখন আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয় এবং দোয়া কবুল করা হয়। - মুসনাদে আবু ইয়ালা : ৪০৭২

হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, হজরত রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন নামাজের জন্য আহ্বান করা হয় তখন আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয় এবং দোয়া কবুল করা হয়। -মুসনাদে আহমাদ : ১৪৬৮৯

আজানের জবাব দেওয়ার পর
আজানের সময় করণীয় পাঁচটি আমলের কথা হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে। একটি হলো- আজানের জবাব দেওয়া তথা মোয়াজ্জিনের সঙ্গে সঙ্গে আজানের কালেমাসমূহ উচ্চারণ করা। আজানের জবাব দেওয়ার একটি ফজিলত হলো- তার পরে দোয়া কবুল হয়।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, ‘এক সাহাবি জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! মোয়াজ্জিনগণ (আজান দিয়ে) আমাদের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে নিচ্ছেন। (আমাদেরও এমন কোনো আমল বলে দিন।)
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, মোয়াজ্জিনেরা যা বলে তোমরাও তা বলো। এরপর দোয়া করো, তোমার দোয়া কবুল করা হবে। -সুনানে আবু দাউদ : ৫২৪

আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়
দোয়া কবুলের বিশেষ একটি মুহূর্ত হলো- আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়। হাদিস শরিফের ভাষ্যমতে ওই সময়ের দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না।

হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণনা করেন, নবী কারিম (সা.) বলেছেন, আজান ও ইকামতের মাঝের সময় যে দোয়া করা হয় তা ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। তাই (ওই সময়) তোমরা দোয়া করো। -সহিহ ইবনে খুযায়মা : ৪২৫