মুমিনের আশা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতীক

  • মুফতি উমর ফারুক আশিকী, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আমলই জান্নাতে প্রবেশের মূল চাবিকাঠি, ছবি: সংগৃহীত

আমলই জান্নাতে প্রবেশের মূল চাবিকাঠি, ছবি: সংগৃহীত

মুমিন মুসলমানের জীবনের সর্বোচ্চ লক্ষ্য জান্নাত। জান্নাত হলো- আল্লাহর প্রতিদান, যা সৎকর্মশীল বান্দাদের জন্য সংরক্ষিত। কিন্তু জান্নাতে প্রবেশ করা সহজ নয়। এর জন্য প্রয়োজন আল্লাহর বিধান মোতাবেক জীবন যাপন করা এবং নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতের অনুসরণ করা।

জান্নাতের বহু দরজা
জান্নাতের একটিমাত্র দরজা নয়, বরং বহু দরজা রয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর মুত্তাকিদের জন্য রয়েছে উত্তম আবাস- চিরস্থায়ী জান্নাত। এর দরজাগুলো তাদের জন্য খোলা থাকবে। তারা সেখানে বসবে হেলান দিয়ে। সেখানে তারা নানা রকম ফলমূল ও পানীয় চাইবে।’ -সুরা সাদ : ৪৯-৫১

বিজ্ঞাপন

হাদিস শরিফে এসেছে যে, জান্নাতের আটটি দরজা রয়েছে। প্রতিটি দরজার নামকরণ করা হয়েছে বিশেষ আমলের সঙ্গে। যেমন-

বাবুস সালাত (নামাজের দরজা): নিয়মিত ও খুশু (একনিষ্ঠতা) নিয়ে নামাজ আদায়কারীদের জন্য।

বাবুল জিহাদ (জিহাদের দরজা): আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীদের জন্য।

বাবুর রাইয়ান (রোজাদারদের দরজা): রোজা রাখার সওয়াবের জন্য।

বাবুস সাদাকা (দানের দরজা): অন্যকে দান করে সাহায্যকারীদের জন্য।

বাবুল ঈমান (ঈমানের দরজা): সত্যিকারের ঈমানদারদের জন্য।

বাবুল-কাজিমিন আল-গায়িজ ওয়াল আফিনা আনিন্নাস (রাগ দমন ও মানুষের ভুল ক্ষমা করা লোকদের দরজা): রাগ দমনকারী ও ক্ষমাশীল ব্যক্তিদের জন্য।

বাবুর-রাজিয়্যিন (সন্তুষ্টদের দরজা): আল্লাহর ওপর সন্তুষ্ট এবং আল্লাহ যাদের ওপর সন্তুষ্ট তাদের জন্য।

বাবুত তাওবা (ক্ষমাপ্রার্থনার দরজা): তাওবা করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের জন্য।

এই বিষয়টি থেকে আমরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা পেতে পারি-

আমলের গুরুত্ব: জান্নাতের দরজাগুলো আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, আমলই আমাদের জান্নাতে প্রবেশের মূল চাবিকাঠি। সুতরাং সর্বদা সৎকর্মের প্রতি মনোযোগী হতে হবে।

বিভিন্ন আমলের প্রতি মনোযোগ: কোনো একটি আমলে সীমাবদ্ধ না থেকে, আমাদেরকে বিভিন্ন আমলের প্রতি সমানভাবে মনোযোগী হতে হবে। কারণ, প্রতিটি আমলের জন্য জান্নাতে আলাদা স্থান রয়েছে।

আল্লাহর প্রতি ভরসা: জান্নাত পাওয়ার জন্য আমাদেরকে আল্লাহর প্রতি অবিচল ভরসা রাখতে হবে। কারণ, জান্নাত আল্লাহর অনুগ্রহের ফল।

আশা ও আকাঙ্ক্ষা: জান্নাতের বিভিন্ন দরজা আমাদেরকে আশা ও আকাঙ্ক্ষা দিয়ে অনুপ্রাণিত করে। আমরা যদি সৎকর্ম করতে থাকি, তাহলে অবশ্যই আল্লাহ আমাদেরকে জান্নাতের কোনো একটি দরজা দিয়ে প্রবেশ করাবেন।

প্রতিযোগিতার মনোভাব: জান্নাতের বিভিন্ন দরজা আমাদের মধ্যে একটি সুস্থ প্রতিযোগিতার মনোভাব জাগিয়ে তুলতে পারে। আমরা যেন সবাই জান্নাতের উত্তম স্থান পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করি।

জান্নাতের দরজা মুমিনদের জন্য একটি সুন্দর আশা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। এই দরজাগুলো আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, আমলই জান্নাতে প্রবেশের মূল চাবিকাঠি।

সুতরাং আসুন, সবাই মিলে সৎকর্মের মাধ্যমে জান্নাতের উত্তম স্থান পাওয়ার জন্য চেষ্টা করি।